Ajker Patrika

হাসিনার পতনে দায়ী ‘গ্যাং অব ফোর’, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আ. লীগ নেতারা

আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ১৮: ২১
হাসিনার পতনে দায়ী ‘গ্যাং অব ফোর’, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আ. লীগ নেতারা

বাংলাদেশে অতিসম্প্রতি গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো দল আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। তাদের একজন বলেছেন, ‘আমি আপনার সঙ্গে দেখা করতে পারব না’। আরেক জন বলেছেন, ‘আমি আত্মগোপনে আছি, ফোনে কথা বলতে পারি’, অপর একজন বলেছেন, ‘নিরাপদ কোনো স্থানে আমি আপনার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করব’ এবং অন্য এক নেতা বলেছেন, ‘আপনার গতিবিধি নজরদারি করা হবে, তাই আমি আপনার সঙ্গে দেখা করতে পারব কি না জানি না।’ 

এই নেতারা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রতিশোধের শিকার হওয়ার শঙ্কায় আত্মগোপন করেছেন। এই নেতাদের সঙ্গে কথা বলার সময় একটি অভিন্ন সুর পেয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। তাদের মতে, ‘শেখ হাসিনা দল ও জনগণকে পরিত্যাগ করেছেন।’ তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘আপা (হাসিনা) আমাদের ছেড়ে গেছেন।’ 

আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, পুলিশের নিষ্ঠুরতায় জনগণের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তা আমরা বুঝেছিলাম। বিএনপিকে নির্বাচনের তরী ওঠানো গেলে হয়তো সেই ক্ষোভ থামানো যেত। তাতে আমরাই আবার জিতে ক্ষমতায় থাকতে পারতাম। 

দলীয় নেতা–কর্মীদের পরিত্যাগ করে শেখ হাসিনার চলে যাওয়ায় পর একই অনুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং করছেন আরও অনেকে। তাদের দাবি, ৫ আগস্টের ঘটনাবলি তাঁরা আগে থেকে টের পাননি। সেদিন শেখ হাসিনা তাঁর বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ছেড়ে ভারত চলে যান। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ ভারতে অবস্থান করছেন। 

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য, এমনকি ঘনিষ্ঠ সহযোগীদেরও পুরোপুরি বিস্মিত করেছে। এক নেতা বলেন, ‘আমরা টেলিভিশনের খবর থেকে এটা জানতে পেরেছিলাম।’ 

সবকিছু ফেলে এভাবে শেখ হাসিনার প্রস্থান আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের জীবন বিপদের মধ্যে ফেলেছে। ‘বিক্ষোভকারী, বিএনপি—জামায়াতের কর্মী ও সুযোগসন্ধানীরা’ আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দলীয় কার্যালয়গুলো লক্ষ্য করে হামলা চালায়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘ (৫ আগস্ট শেখ হাসিনা চলে যাওয়ার পর) আমরা একটা সময়ই শুধু বাড়ি থেকে বের হওয়ার সুযোগ পাই। সেটি সেনাপ্রধান যখন বেলা তিনটার দিকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ও মানুষ তা শুনতে টেলিভিশনের পর্দায় নজর রাখছিল।’ আরেক নেতা ও লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা ধরা পড়লে লোকজন আমাদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারত।’ 

আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে শেখ হাসিনার সরকার বিরোধী দলের নেতাদের নিশানা করে, কারাগারে পাঠায়, মারধর করে, ভয়ভীতি দেখায় ও হয়রানি করে। কিন্তু পরে হঠাৎই পরিস্থিতি উল্টে যায়। 

সাম্প্রতিক ঘটনার (শেখ হাসিনার পতন ও দেশত্যাগ) খানিকটা পেছনে তাকালে দেখা যাবে, ঘটনাপ্রবাহে কেউ কেউ (হাসিনা সরকারের) বিশেষ করে গত জুলাইয়ে শিক্ষার্থী ও বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে ৩–৪ আগস্ট ছাত্র–জনতা রাস্তায় নেমে আসে। ৫ আগস্ট বিক্ষোভকারীরা কারফিউ ভাঙে। সেদিনই সরকারের পতন ঘটে। 

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের জন্য আত্মগোপনে থাকা ওই নেতাদের একজন দলের অভ্যন্তরীণ একটি স্বার্থন্বাষীগোষ্ঠীকে দায়ী করে বলেছেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) আমাদের কথা শোনেননি।’ এই গোষ্ঠীকে ‘গ্যাং অব ফোর’ বলে আখ্যায়িত করেন নেতাদের একজন। তিনি বলেন, গোষ্ঠীটি শেখ হাসিনাকে বাস্তব অবস্থা বুঝতে দেয়নি। 

এই চার নেতা হলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। 

আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেন, ‘চারজনের এই দল তাঁর (হাসিনা) পতনের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছে। এই ব্যক্তিদের ওপর তাঁর ছিল অন্ধবিশ্বাস। তাঁর যে সহজাত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ছিল, তা তিনি তাঁদের কারণে হারিয়েছেন।’ 
 
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিকে না আনা শেখ হাসিনার একটি ‘বড় ভুল’ হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। সূত্রগুলো বলেছে, আওয়ামী লীগের কিছু নেতা মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে লন্ডনে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। 

একটি সূত্রের ভাষ্য, ‘আড়ালে থাকা একটি চ্যানেলের মাধ্যমে প্রস্তাবও দেওয়া হয় (বিএনপিকে নির্বাচনে আনার)। আমাদের ধারণা, তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় চ্যানেলটি ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের এক বছর আগেই ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়...কিন্তু শেখ হাসিনা ওই প্রস্তাবে সবুজ সংকেত দেননি।’ 

আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার বিষয়টি শেখ হাসিনার প্রত্যাখ্যান করা ছিল ‘সাংঘাতিক ভুল’। কেননা, একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বিএনপিকে নির্বাচনে আনা গেলে বিরোধীদের রাগ–ক্ষোভ হয়তো মিটে যেত। 

ওই নেতা আরও বলেন, ‘দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, পুলিশের নিষ্ঠুরতায় জনগণের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তা আমরা বুঝছিলাম। বিএনপিকে নির্বাচনী তরিতে ওঠানো গেলে সেই ক্ষোভ হয়তো থামানোও যেত। তাতে আমরাই আবার জিততে পারতাম এবং দল ক্ষমতায় থাকত।’ 

নেতা–কর্মীরা মনে করেন, বিশেষ করে গত জানুয়ারির নির্বাচনে জেতার পর শেখ হাসিনা আরও একগুঁয়ে হয়ে ওঠেন ও কোনো পরামর্শ শোনেননি। এ প্রসঙ্গে ওই নেতা বলেন, ‘টানা চতুর্থবার জিতে তিনি (হাসিনা) অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন এবং কোটা সংস্কার নিয়ে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলনে সৃষ্ট ক্ষোভের মাত্রা বুঝতে ব্যর্থ হন।’ 

সূত্রগুলো বলেছে, কৌশলে কিছু নেতা শেখ হাসিনাকে জুলাইয়ের শুরুতে ছাত্র বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। তবে তা প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। (হাসিনা সরকারের) কফিনে শেষ পেরেকটি বসে তখন, যখন একই মাসে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা ছাত্রনেতাদের তুলে নিয়ে যান এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে ও আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারে জোরপূর্বক প্রতিশ্রুতি আদায় করে ছেড়ে দেন। 

এ কৌশল হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়ায়। কর্মসূচি প্রত্যাহারে কীভাবে জোরপূর্বক প্রতিশ্রুতি আদায় করা হয়েছে, ছাত্রনেতারা সেই বিষয় জনসমক্ষে প্রকাশ করে দেন। এটি পরপর কিছু ঘটনার সূত্রপাত ঘটায় এবং শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। শেখ হাসিনার পতনের পর জীবনাশঙ্কায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা–কর্মী ও বুদ্ধিজীবী দেশজুড়ে বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নেন। 

আশ্রয় নেওয়া এই ৬২৬ জনের মধ্যে ছিলেন নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতা, ৫ জন বিচারক, বেসামরিক প্রশাসনের ১৯ কর্মকর্তা, ২৮ পুলিশ কর্মকর্তা, বিভিন্ন পদের ৪৮৭ জন পুলিশ সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ নানা পেশার ১২ জন ও ৫১টি পরিবার। ঘটনাচক্রে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টাকালে আটক হন শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। 

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা আত্মগোপন করেছেন, কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন। নেতারা বলছেন, ৭৫ বছরের পুরোনো যে দল টানা ১৫ বছরের বেশি দেশ শাসন করেছে, তারাই এখন অস্তিত্ব সংকটে। 

এদিকে দল গোছানোর ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের প্রথম পদক্ষেপ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাদের একজন বলেন, ‘দলকে পুনর্গঠনে তাঁকে (হাসিনা) তৃণমূল পর্যায়ের লোকজন বাছাই করতে হবে, তাঁদের মধ্যে থাকবেন কিছু তরুণ আওয়ামী নেতা; মাঠপর্যায়ে যাদের ব্যাপারে মানুষের আস্থা আছে, লোকজনের সঙ্গে যাদের যোগাযোগ আছে এবং অবশ্যই পরিবারের (হাসিনা) প্রতি অনুগত...এ যাত্রা দীর্ঘ হবে।’ 

এ নেতা আরও বলেন, ‘আমাদের শক্ত ঘাঁটি ও কর্মীবাহিনী আছে। অনেকে বিপথগামী হয়েছেন, যেমনটা ঘটেছে সুবিধাবাদীদের ক্ষেত্রে। সমর্থকদের মধ্যেও এমনটা থাকবে। কিন্তু আমাদের অন্তত এমন কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী থাকা দরকার; যারা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে ও নির্বাচন যখনই হোক, তাতে অংশ নেবে। এখন এটাই প্রয়োজন।’ 

এ পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরার বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রুহুল কবির রিজভীর মতো কয়েকজন নেতার ভূমিকার দিকে ইঙ্গিত করেন তিনি। বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে থাকাকালে ও তারেক রহমান বিদেশে অবস্থানকালে বিএনপির দুর্গ সামলেছেন তাঁরা। 

দেশে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগবিরোধী মনোভাব বিরাজ করায় শেখ হাসিনার পরিবার ও এর উত্তরসূরি সজীব ওয়াজেদ জয়ের খুব কম বক্তব্য-বিবৃতি দেওয়া উচিত বলে মনে করেন দলটির নেতারা। 

আওয়ামী লীগের নেতাদের একজন বলেন, ‘লোকজন এখনো ক্ষেপে আছেন। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সময় দিতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার বা বিএনপি কিংবা জামায়াতের নেতৃত্বাধীন সরকার যে–ই কয়েকটা বছর ক্ষমতায় থাকুক, আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা আছে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের আবার সংগঠিত হওয়ার কথা ভাবতে হবে।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করে এনসিপির প্রতিনিধিদল। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করে এনসিপির প্রতিনিধিদল। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ দলটির অন্যান্য নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানায়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের চলমান সংলাপের অংশ হিসেবেই এনসিপির সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এনসিপিও পরে ফেসবুক পোস্টে একই কথা জানায়।

বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ অংশীদারত্বের বিভিন্ন দিক, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি, নির্বাচনকালীন পরিবেশসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ঠেকাতে হাসনাত আবদুল্লাহ একাই যথেষ্ট: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ১০
হাসনাত আবদুল্লাহ। ফাইল ছবি
হাসনাত আবদুল্লাহ। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ঠেকাতে হাসনাত আবদুল্লাহ একাই যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এনসিপির স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের নিয়ে গঠিত ‘ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) আত্মপ্রকাশ’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

জুলাইয়ের চেতনায় উদ্বুদ্ধ নতুন এ সংগঠনে চিকিৎসকদের পাশাপাশি নার্স, টেকনোলজিস্ট, জনস্বাস্থ্যবিদ ও ফিজিওথেরাপিস্ট রয়েছেন। কমিটি ঘোষণা করেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। এ সময় আরও ছিলেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা।

সভায় নাসীরুদ্দীন বলেন, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) নাকি আওয়ামী লীগের লকডাউন। আগামীকাল সব দল মাঠে থাকবে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসকে ঠেকাতে হাসনাত আবদুল্লাহ একাই যথেষ্ট।

একটি দল ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে বেরিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন এনসিপির এ নেতা। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হতে চাইলেও একটি দল এই প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে গেছে। বাংলাদেশের বড়সংখ্যক মানুষ সংস্কার চায় বলেই ১০০ বছর চেষ্টা করেও বিএনপি গণভোট ঠেকাতে পারবে না।

সভায় তাসনিম জারা বলেন, ‘স্বৈরাচারের সময়ে জুলাই বিপ্লবে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিতে নিষেধ করা হয়। অথচ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজই ছিল মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া। সেখানে রাজনৈতিক পরিচয়নির্ভর করার কথা নয়। এই যে স্বাস্থ্য খাতেও রাজনৈতিক ছায়া, এটি আমরা কখনোই চাই না। স্বাস্থ্য খাতের আমূল পরিবর্তন দরকার। এই সময়ে এসেও আমাদের হাসপাতালগুলোতে রোগীদের মেঝেতে থাকতে হয়। এ দেশে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া শুধু ক্ষমতাধরদের জন্য সহজ, কিন্তু এটি তো হওয়ার কথা ছিল না। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও এমন চিত্র দুঃখজনক। এই ভঙ্গুর অবস্থা থেকে আমাদের পুরো চিত্র বদলে ফেলতে হবে।’

তাসনিম জারা আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাবনা দিয়েছে, তার কোনোটাই আমরা বাস্তবায়ন করতে দেখিনি। আমাদের প্রাথমিক চিকিৎসাব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। রোগী ধনী, গরিব যে-ই হোক, সেবা পাওয়াটাই মুখ্য হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হুমকি-ধমকি না দিয়ে চলুন জনগণের মুখোমুখি হই: তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারকে হুমকি-ধমকি না দিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথে অগ্রসর হতে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার দলের পক্ষ থেকে আবারও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোগীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই—চলুন, বর্তমান দুর্বল অন্তর্বর্তী সরকারকে হুমকি-ধমকি না দিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জনগণের মুখোমুখি হই।’

আজ বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই আহ্বান জানান। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে বিএনপি।

তারেক রহমান বলেন, জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্র যখন প্রস্তুত হচ্ছে, তখন কয়েকটি রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কার্যত গণতন্ত্রকামী জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধেই মনে হয় অবস্থান নিচ্ছে বা নিয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের মনে হয় একটি কথা গুরুত্বসহকারে মনে রাখা উচিত। নিজ দলের বাইরের সমর্থকদের বাইরে এক বিশালসংখ্যক অরাজনৈতিক জনগোষ্ঠী রয়েছে। এই জনগোষ্ঠীর দিকে নজর দেওয়া প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করি। মাসের পর মাস আলোচনা হয়েছে, কিন্তু এই বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট আলোচনা কতটুকু হয়েছে, সেটি এখন বড় প্রশ্ন।’

আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিরাজমান সংকটকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ আখ্যা দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি মনে করি, এই সংকট তৈরি করা হয়েছে উদ্দেশ্যমূলকভাবে। অর্থাৎ বাংলাদেশের গণতন্ত্রে উত্তরণের যে পথ, সেই পথকে বাধাগ্রস্ত করা; বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে সংস্কারের জন্য যে নির্বাচন হওয়া দরকার, সেই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা; জনগণের ভবিষ্যৎকে একটা অনিশ্চিত অবস্থায় ফেলা।’

সংকট মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই আজকে এই জায়গা থেকে একমত হয়ে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেইসব চক্রান্তকে রুখে দিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সুগম করি।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, সেলিমা রহমান, হাফিজউদ্দিন আহমেদ, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জামায়াতের সঙ্গে আইএমএফের প্রতিনিধিদলের বৈঠক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ বুধবার জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক করে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বুধবার জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক করে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল। ছবি: আজকের পত্রিকা

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধিদল। আজ বুধবার রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াতের প্রচার বিভাগ জানায়, বৈঠকে আইএমএফের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন অ্যাডভাইজার টু দ্য বাংলাদেশ মিশন চিফ ক্রিস পাপাজর্জিউ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আইএমএফের ঢাকার আবাসিক প্রতিনিধি ম্যাক্সিম ক্রিশকো, ডেপুটি চিফ অব মিশন আইভো ক্রেজনার ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক তাওহিদ এলাহি।

জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, শিক্ষাবিদ ড. আবদুর রব ও শফিউল্লাহ।

জামায়াত জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশের টেকসই অর্থনীতি, বিভিন্ন আর্থিক খাত, করব্যবস্থা ও সামাজিক খাতের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত