Ajker Patrika

অপহরণ মামলায় জামিন পেয়ে ফুল হাতে ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে ছাত্রলীগ নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ জুন ২০২৩, ২০: ২০
অপহরণ মামলায় জামিন পেয়ে ফুল হাতে ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে ছাত্রলীগ নেতারা

চাঁদা না পেয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে অপহরণের মামলায় গত ২৭ মে গ্রেপ্তার হন ছাত্রলীগের দুই নেতা। তাঁরা ঢাকা কলেজের নর্থ হলের আবাসিক ছাত্র। 

গ্রেপ্তার ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা জামিনে বেরিয়ে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফের সঙ্গে ফুল হাতে দেখা করেছেন। এ সময় জামিনে বের হওয়া ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফকে ফুল হাতে দেখা যায়। 

জামিনে বেরিয়ে ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা শোডাউন করেছেন বলেও জানা গেছে। 

তবে ফুল গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘আমি তাদের ফুল দিয়ে বরণ করিনি। কলেজের জুনিয়র-সিনিয়ররা মিলে আমার রুমে এসে ফুল দেওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু আমি গ্রহণ করিনি। আর তারা যখন রুমে আসে তখন আমার এক আত্মীয় অসুস্থ, তাঁকে নিয়ে আলাপ করছিলাম।’ 

অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘তারা কিছুদিন আগে একটা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল বলে জেনেছি। কয়েক দিন কারাগারেও ছিল। যেহেতু বিষয়টা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখছে তাই এই বিষয়ে আমাদের করার কিছু নেই।’ 

এর আগে গত ২৭ মে গ্রেপ্তার হন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসম্পাদক জনি হাসান এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক এস এম শফিক। ২৫ মে রাতে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ঢাকা কলেজের হলে আটকে রেখে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। 

জামিনে বেরিয়ে গলায় ফুলের মালা জড়িয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতা। ছবি: আজকের পত্রিকা নিউমার্কেট থানায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অয়ন সিগমাইন্ড নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার হিসেবে কাজ করেন ভুক্তভোগী মো. মেহেদী হাসান। প্রতিষ্ঠানটি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ করে। অভিযুক্তরা ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করেন এবং ভুক্তভোগী মেহেদীর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না দেওয়ায় ২৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজ এলাকা থেকে প্রতিষ্ঠানটির লাগানো সিসি ক্যামেরাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে যান। রাতে সিয়াম ও রমজান দুই ছাত্রলীগ কর্মী মেহেদীকে ফোন করে বিষয়টি জানান। খুলে নিয়ে আসা ক্যামেরা ফেরত পেতে হলে তাঁদের ঢাকা কলেজে যেতে বলেন তাঁরা। তৌকির নামে এক কর্মচারীকে ঢাকা কলেজে পাঠান মেহেদী। 

ক্যামেরা ফেরত নিতে আসা তৌকিরকে জিম্মি করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা না পেলে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরে ভুক্তভোগী মেহেদী ঢাকা কলেজের নর্থ হলে আসলে তাঁকেও জিম্মি করা হয়। ছাত্রলীগের নেতাদের নেতৃত্বে মেহেদী ও তৌকিরকে হলে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছে থাকা নগদ টাকা, এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেন। রাতে মারধর করে তৌকিরকে ছেড়ে দিলেও মেহেদীকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের কারণে মেহেদীর অবস্থা বেগতিক দেখে পরদিন শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা কলেজ থেকে বের করে নিউমার্কেটের গাউছিয়া মোড়ে কৌশলে ফেলে রেখে পালিয়ে যান।

এই সময় নিউমার্কেট থানার টহল পুলিশকে বিষয়টি জানালে তারা মেহেদীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী মেহেদী বাদী হয়ে জনি হাসান, এস এম শফিকসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নম্বর (১৮/৮৫)।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন ছাত্রলীগের কর্মী মো. গোলাপ হোসেন, মোহেরাব হোসেন সিয়াম, অর্বণ, মো. রমজান, গোপাল, রাব্বী তালুকদার, মো. বেল্লাল হোসেন, তারিফ, সালমান, মো. রায়হান, মাসুম, ফাহিম, শাহীন।

ঢাকা কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মামলার আসামিরা সবাই ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সবাই নর্থ হলের আবাসিক ছাত্র। জনি ও শফিক নিউমার্কেটসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত