Ajker Patrika

বক্তব্যের সুযোগ না পেয়ে সম্মেলন ছাড়লেন আ.লীগ নেতারা, চটলেন কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক ও ঢাবি প্রতিনিধি
বক্তব্যের সুযোগ না পেয়ে সম্মেলন ছাড়লেন আ.লীগ নেতারা, চটলেন কাদের

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের বার্ষিক যৌথ সম্মেলন। সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয় সম্মেলন। সম্মেলনের শুরু থেকেই মঞ্চে ছিলেন ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চার আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও বি এম মোজাম্মেল হক।

১১টার পরে সম্মেলনের উদ্বোধক আল নাহিয়ান খান বক্তব্য রাখেন। ১৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে দেওয়া বক্তব্যের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেন উপস্থিত অতিথিদের নাম ঘোষণায়। পরে সম্মেলনে সভাপতিত্ব করা ঢাকা উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন আবারও উপস্থিত অতিথিদের নাম বলেন। পরে তিনি সঞ্চালক হিসাবে দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান, উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সাইদুর রহমান হৃদয় ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদের নাম ঘোষণা করেন। সঞ্চালক মেহেদি পাঁচ মিনিটের বেশি বক্তব্য রাখেন।

সাড়ে ১১টার দিকে আমন্ত্রিত অতিথিদের উত্তরীয় পড়িয়ে দেন মহানগর ছাত্রলীগের নারী নেতারা। তাদের ক্রেস্টও দেওয়া হয়। সেখানে ব্যয় হয় ১০ থেকে ১৫ মিনিট। ওই সময় সম্মেলনের প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের উপস্থিত হননি। তিনি উপস্থিত হন ১১টা ৫০ মিনিটের পরে। তাঁর আসার পরে বক্তা হিসাবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীরের নাম ঘোষণা করলে তিনি মাইকের সামনে বক্তব্য দিতে দাঁড়ান। এ সময় মঞ্চে থাকা আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সঞ্চালক হৃদয়ের সঙ্গে কথা বলেন। হৃদয় পরে প্রধান অতিথির নাম ঘোষণা করেন।

বেলা ১২টার পরে ওবায়দুল কাদের বক্তব্য শুরু করলে মঞ্চ থেকে চলে যান জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক। ওবায়দুল কাদের ২৬ মিনিটের বেশি সময় বক্তব্য দিলেও চলে যাওয়া নেতারা আর উপস্থিত হননি। তাঁর বক্তব্য শেষে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ করেন। রীতি অনুযায়ী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়।

ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যে বলেন, আজকের নানকের (জাহাঙ্গীর কবির নানক) মতো আপনাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান, ছাত্রলীগের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সময়ের অভাবে বক্তৃতা করতে পারলে না। আপনারা মাইক ধরলে ছাড়েন না। পরেতো বলবেন খেয়াল থাকে না। আজকে জুমার দিন এটা খেয়াল থাকে নাই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এই ছাত্রলীগ আমরা চাই না। সুশৃঙ্খল করুন। সুসংগঠিত করুন। কথা শুনবে না এই ছাত্রলীগ আমাদের দরকার নাই। অপকর্ম করবে এই ছাত্রলীগ দরকার নাই। দুর্নামের ধারা থেকে ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এটাই অঙ্গীকার।

আমন্ত্রিত অনেকেই বক্তৃতা করতে পারেননি বলে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নেতারা বক্তৃতা করতে পারেননি তাহলে দাওয়াত দিলেন কেন? একটু একটু করেও বলতে পারল না? আপনারা দুজনেই এক ঘণ্টা! মনে নেই আজ শুক্রবার? লেখকের না হয় মনে নেই। জয়ের কি মনে ছিল না? এটা কোন ছাত্রলীগ? 

এ সময় নেতা কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকলে ওবায়দুল কাদের বলেন, যার নামে স্লোগান দেবেন তাকে নেতা বানাব না। নেত্রীকে বলে দিব। স্লোগান যে দিবে সে বাদ। বলে দিচ্ছি।

সম্মেলন থেকে চলে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর কবির নানক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা চলে আসি নাই তো। আমরা আগেই কাদের ভাইকে বলে রাখছি রওনা করব। চট্টগ্রাম যাব। আমরা এখন চট্টগ্রামের পথে।’

বাহাউদ্দিন নাছিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যখন প্রধান অতিথি বক্তব্য রাখবে তখন আমরা চলে যাব, এটা আগ থেকে নির্ধারণ করা ছিল। এটা আলোচনা নয় সিদ্ধান্ত ছিল।’

আবদুর রহমান বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাননি। অন্যদিকে বিএম মোজাম্মেল হক কল রিসিভ করেননি।

এ ছাড়া সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা ছাড়াও মহানগর ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত