Ajker Patrika

আরে ব্যাটা তোর সাহস থাকলে দেশে ফিরে আয়: তারেকের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৩, ১৯: ২১
আরে ব্যাটা তোর সাহস থাকলে দেশে ফিরে আয়: তারেকের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আরে ব্যাটা তোর যদি সাহস থাকে তাহলে বাংলাদেশে ফিরে আয়, আমরা একটু দেখি।’

আজ রোববার নরসিংদীর মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি নেতারা কোথায় তা জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে খালেদা জিয়া জেলে। আমি দয়া করে তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছি, আমার ক্ষমতাবলে। তার ছেলে তারেক জিয়া, রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে লন্ডন গিয়ে বসে আছে। এত টাকা কোথা থেকে পায়? জনগণের টাকা আত্মসাৎ করেছে। পালিয়ে থাকে লন্ডনে। ওখান থেকে আগুন জ্বালাতে বলে। আরে ব্যাটা তোর যদি সাহস থাকে তাহলে বাংলাদেশে ফিরে আয়, আমরা একটু দেখি।’

প্রাথমিক হতে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনা মূল্যে বই বিতরণসহ শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি জানি খালেদা জিয়া বা এরা (বিএনপি) চায় না এ দেশে শিক্ষা হোক। এরা যদি চাই তো আজকে নভেম্বর মাসে পরীক্ষার সময়...সামনে নির্বাচন, আগেভাবে পরীক্ষা দেবে। সেই ব্যবস্থা যখন নিচ্ছে, তখন বিএনপি দেয় অবরোধ, হরতাল, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারে। সামনে আসার সাহস নাই। এখন তারা কোন গলি থেকে বের হয়ে বিভিন্নভাবে বাসের ভেতরে, স্কুটারে, অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দিচ্ছে, মানুষ পোড়াচ্ছে।’
 
শেখ হাসিনা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষা বন্ধ করে অবরোধ করে তারা কী করতে পারবে? সরকার হটাবে। কীভাবে সরকার হটাবে? চোরাগোপ্তা মেরে সরকার হটানো যায় না। মানুষ যদি সঙ্গে না থাকে তাহলে আন্দোলন হয় না। বিএনপি হচ্ছে সন্ত্রাসীদের দল, জামায়াত হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের দল। তাদের কথা এ দেশের মানুষ শোনে না। তাদের কিছু লোক আছে, তারাই নাচানাচি করে।’

২৮ অক্টোবর বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশকে যেভাবে প্রকাশ্য পিটিয়ে হত্যা করেছে (বিএনপি), এটা তো চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন তারা করে যাচ্ছে। বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস যুগ যুগ ধরে মানুষ দেখেছে।’

উপস্থিত জনতার উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আপনারা দেখেছেন কীভাবে ইসরায়েলিরা ফিলিস্তিনের হাসপাতালে বোমা মেরে নারী ও শিশু হত্যা করেছে। খালেদা জিয়া-তারেক জিয়ার চ্যালাবেলারা অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা মহিলার ওপর আক্রমণ করেছে। তাহলে ওরা ইসরায়েলের জারজ সন্তান কি না, সেটাই আমার প্রশ্ন। ওরা তো তাদের কথাই মানতেছে।’
 
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনাদের আহ্বান করব, অগ্নিসন্ত্রাসীদের যাকে যেখানে পাবেন আগে তাকে ধরেন। কেউ যদি ও রকম অগ্নিসন্ত্রাস, বাসে আগুন দিতে যায়, ওগুলোকে ধরে আগে ওই আগুনে ফেলে দেবেন। তাহলে যদি ওদের শিক্ষা হয়। না হয় শিক্ষা হবে না। দুই-একটা চোরাগোপ্তা হামলা করে মানুষ মেরে ওরা এ দেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।’

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট থেকে বাড়িয়ে ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটে বাড়ানো হয়েছিল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরে তা কমিয়ে ৩ হাজার মেগাওয়াটে নামানো হয়েছিল বলেও দাবি করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মানুষ সামনের দিকে এগোয়, কিন্তু পেছন দিকে যায়—এটা তো জানতাম না। বিএনপি ক্ষমতায় আসা মানেই হলো পেছনে যাওয়া, আরও খারাপ অবস্থায় যাওয়া।’

বিদ্যুৎ ব্যবহারে জনগণকে মিতব্যয়ী হওয়ার অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সরকার আমলে পোশাকশ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এবার ১২ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে। ৫৬ শতাংশ বেতন বাড়ানো হয়েছে। তাহলে তাদের আপত্তিটা কোথায়? গত ১৪ বছরে শ্রমিকদের বেতন ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা করি জনগণের জন্য কাজ। আর বিএনপি-জামায়াত জোট জানে ধ্বংস করা। ওদের শুধু একটাই কথা, নিজে শুধু খাবে। মানুষ আর মানুষ না, তাদের অবহেলা করবে। আমাদের কাজ মানুষের কল্যাণ করা।’

জনগণের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নিজেরা চিন্তা করে দেখেন, যখন নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন, নৌকা ক্ষমতায় এসেছে তখন আপনার এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ আমার পরিবার। সেই অনুযায়ী আপনাদের জন্য কাজ করছি। আমি আপনাদের কাছে দোয়া চাই। আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই, আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবার সেবা করার সুযোগ দেবেন কি না? আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন। এ সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীরা হাত তুলে সমর্থন জানান। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। অগ্নিসন্ত্রাসী, খুনি এরা যেন আর কখনো বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।’

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যাকে প্রার্থী দেব, নৌকা মার্কা দেব ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার জন্য কাজ করতে হবে।’
 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা ‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ভয় নাই ওরে ভয় নাই/নিঃশেষে প্রাণ, যে করিবে দান/ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’ আবৃত্তি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য আমি যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। প্রয়োজনে বাবার মতো, মায়ের মতো নিজের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েও বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করব।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা কাজী মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত