Ajker Patrika

কিশোরগঞ্জ-৩ আসন নৌকা ছাড়া আর কাউকে না দেওয়ার ঘোষণা শেখ হাসিনার

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২: ৩৫
কিশোরগঞ্জ-৩ আসন নৌকা ছাড়া আর কাউকে না দেওয়ার ঘোষণা শেখ হাসিনার

‘কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে আমাদের কোনো প্রার্থী নাই যেহেতু জাতীয় পার্টিকে দিয়ে দিতে হয়েছে। বারবার দিতে হচ্ছে। এটা সত্যি আমাদের নৌকা যারা, তাদের জন্যে এটা খুব দুঃখের। তবে এবারই শেষ! ভবিষ্যতে আমরা আর কাউকে দেব না’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের সভাপতির এমন বক্তব্যে আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ করেছেন দলের নেতা-কর্মীরা। 

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি নির্বাচনী প্রচারণা সভায় যুক্ত হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার মানুষের উদ্দেশে এ ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।

সাধারণ ভোটার ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে করিমগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে নৌকা মার্কার ছয়জন, লাঙ্গল মার্কার একজন ও স্বতন্ত্র চারজন প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে তাড়াইল উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে নৌকার তিনজন, লাঙ্গল মার্কার তিনজন ও স্বতন্ত্র একজন প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। দুই উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নে লাঙ্গল মার্কায় মোট চারজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এতেই প্রমাণিত হয় যে এ আসনের ভোটাররা লাঙ্গল মার্কার কোনো জনপ্রতিনিধি চান না।

বিগত জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ বলছে, স্বাধীনতা-পরবর্তী ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের এম এ কুদ্দুস। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের দুটি নির্বাচনে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ড. মিজানুল হক বিজয়ী হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা কবির উদ্দিন আহমেদ এ আসন থেকে নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত চারদলীয় জোট প্রার্থী হিসেবে ড. এম ওসমান ফারুক এই আসন থেকে নির্বাচিত হন। অবশ্য ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে ড. এম ওসমান ফারুকের বাবা ড. এম ওসমান গণি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ১৯৮৬, ১৯৮৮, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের পাঁচটি জাতীয় নির্বাচনে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। অবশ্য সর্বশেষ তিনটি নির্বাচনে তিনি মহাজোট প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় এখানে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। এবারও একইভাবে আওয়ামী লীগ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। 

এদিকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। আসন সমঝোতার কারণে এ আসনে নৌকার প্রার্থী মো. নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু এখানে মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগের চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাঁরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রচার-প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছেন। নৌকার ছাড়ের পরও ভোটের মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন তাঁরা। আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংককে নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করছেন তাঁরা। এ ছাড়া চার স্বতন্ত্র প্রার্থী এক জোট হয়ে যাবেন বলেও জানা গেছে। শিগগিরই আলোচনা করে একজনকে নিয়ে মাঠে নামবে করিমগঞ্জ-তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ রকম পরিস্থিতিতে এবার জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়া সহজ হবে না বলে মনে করছেন এলাকার সাধারণ মানুষ ও ভোটাররা। 

কিশোরগঞ্জের সভায় উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকাকরিমগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপকমিটির সদস্য এরশাদ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটি আসনের জন্য নৌকা প্রতীকের ভোট চেয়েছেন। বাকি রইল একটি আসন কিশোরগঞ্জ-৩। যেখানে নৌকার পরিবর্তে লাঙ্গল। উনি কথা দিয়েছেন আগামী দিনে নৌকা দেওয়া হবে। আর জাতীয় পার্টির জন্য ছাড় দেওয়া হবে না, এবারই শেষ।’

তিনি আরও বলেন, ‘নেত্রীর আজকের এই ঘোষণাকে সাধুবাদ জানাই। কারণ, ২০০৮ থেকে ২০২৩ এবং দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন এর মেয়াদ আরও ৫ বছর যুক্ত করা হয় তাহলে হবে ২০২৮। তার মানে ২০০৮ সালে জন্ম নেওয়া বাচ্চার বয়স হবে ২০ বছর। অথচ তারা নৌকা মার্কা কী চিনবে না। অতএব, এটা আমাদের আসনের জন্য একটা অশনিসংকেত ছিল নৌকা না পাওয়া। আমাদের নতুন ভোটার বা তরুণ প্রজন্ম প্রায় অর্ধেক। অতএব, এই আসনটি দ্রুত নৌকাকে ফিরিয়ে দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।’ 

আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নাসিরুল ইসলাম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই কথা বলার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনাকে করিমগঞ্জ ও তাড়াইল উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’ 

তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন বলেন, ‘নেত্রীর এই কথার জন্য তাড়াইলবাসী আনন্দ-উল্লাস করছে। তবে লাঙ্গল এবার আর পাস করবে না।’

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নুর মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১১ নভেম্বরের মধ্যেই সিদ্ধান্ত, অন্যথায় ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে—সরকারকে গোলাম পরওয়ার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ২২
রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে বৃহস্পতিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে বৃহস্পতিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: আজকের পত্রিকা

নির্বাচনের আগে গণভোট ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দাবি নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ আন্দোলনরত আটটি দল।

যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর পক্ষে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আগামী ১১ তারিখ ঢাকায় আমরা মহাসমাবেশ করব। ১১ তারিখ ঢাকায় লক্ষ লক্ষ জনতার উপস্থিতির আগে আমাদের পাঁচ দাবির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন। অন্যথায় সেদিন ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান শেষে রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচনের আগে গণভোট এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ করেন জামায়াতে ইসলামীসহ আট দলের নেতা-কর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পল্টন থেকে মিছিল নিয়ে মৎস্য ভবন মোড় পর্যন্ত আসেন তাঁরা। পরে সেখান থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল স্মারকলিপি নিয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করে।

যমুনায় প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেওয়ার বিষয়ে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক স্মারকলিপি গ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল, মহাপরিচালককে স্মারকলিপি দেব না। আমাদের দাবি ছিল, প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেব। পরে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে আমাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।’

গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা আট দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আদিলুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। স্মারকলিপি পড়ে শুনিয়েছি। শিল্প উপদেষ্টা আমাদের দাবির সঙ্গে দ্বিমত করেননি। তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের পাঁচ দাবি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।’

গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘শিল্প উপদেষ্টা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক আলোচনার কথা।’

এ সময় জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিসসহ আট দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ের পর আজকের কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন গোলাম পরওয়ার।

জামায়াত ছাড়া যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

তাদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হচ্ছে—জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও ওই আদেশের ওপর চলতি মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা; ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রয়োজনে নির্বাচন দুই মাস পরে করেন, কিন্তু গণভোট ছাড়া হবে না: গাজী আতাউর রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পল্টনে সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টনে সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিগগিরই গণভোটের তারিখ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান। তিনি বলেন, ‘দ্রুতই গণভোটের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট এক সঙ্গে হবে না। দুইটার তফসিলও এক সঙ্গে হবে না। আমরা নভেম্বরে গণভোটের বিষয় বারংবার বলেছি। যদি নভেম্বর গণভোট করতে না পারেন তাহলে যেদিনই দেন গণভোট আগে হতে হবে। প্রয়োজনে জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে না, দুই মাস পরে করেন। কিন্তু গণভোট ছাড়া কোনো জাতীয় নির্বাচন হবে না। রাষ্ট্র সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।’

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনে পাঁচ দাবিতে স্মারকলিপি প্রদানের আগে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘বিএনপি সংস্কারকে বারংবার বাধাগ্রস্ত করেছে। তারা রাষ্ট্র সংস্কার চায় না, সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি চায় না। তাদের সিনিয়র নেতাদের কথাবার্তায় এটা বারংবার স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের পরে দেশকে আর কোনো অবস্থায় আগের পরিস্থিতিতে ফিরে যেতে দেওয়া যাবে না। তাই সংস্কার করতেই হবে। সে জন্য অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ দিতে হবে এবং জুলাই সনদের আইনিভিত্তি নিশ্চিত করতে তফসিলের আগেই গণভোট দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর আমাদের রাজপথে নামতে হবে, দাবি আদায়ে আন্দোলন করতে হবে তা আমরা ভাবি নাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের বাধ্য করেছে। তাদের তিনটা অঙ্গীকার ছিল। আমরা বলব, সেই অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করুন। সংস্কারের জন্য কমিশন হয়েছে, ঐকমত্য কমিশন হয়েছে, জুলাই সনদ হয়েছে, সনদে সাক্ষর হয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছে, সংস্কার বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়েও সকলে একমত হয়েছে; এখন গড়িমসি কীসের? আগামী ১০ তারিখের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি না হলে আমরা ঢাকায় লোকে লোকারণ্য করে সমাবেশ করব ইনশা আল্লাহ।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা আরও বলেন, ‘যারা বলে সংস্কার চায় না, তাদের সঙ্গে সমঝোতা করতে বলেন? যারা দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে, যারা পুরোনো বন্দোবস্ত টিকিয়ে রাখতে চায়, তাদের সঙ্গে সমঝোতা করতে বলেন? এটা তামাশা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক দিনে যে পরিমাণ চাঁদাবাজি হয়, তা দিয়ে প্রতিদিন একটা গণভোট করা যাবে: তাহের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ২১
রাজধানীর পল্টন মোড়ে জমায়েতে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর পল্টন মোড়ে জমায়েতে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে এক দিনে যে পরিমাণ চাঁদাবাজি হয়, তা দিয়ে প্রতিদিন একটা করে গণভোটের আয়োজন করা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঁচ দফা দাবিতে আট দলের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার আগে রাজধানীর পল্টন মোড়ে এসব কথা বলেন তিনি।

আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আরও বলেন, ‘গণভোট দিতে হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও গণভোটের সময় থাকবে। এক দিনে যে পরিমাণ চাঁদাবাজি হয়, তা দিয়ে প্রতিদিন একটা গণভোট দেওয়া যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রাজপথে এসেছি। প্রয়োজনে আবারও রক্ত দেব। জুলাইয়ের অর্জন সনদকে ব্যর্থ হতে দেব না।’

সরকার চালাকি শুরু করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা চালাকি করলেও আমরা আমাদের দাবি আদায় করব, দাবি আদায়ে বাধ্য করা হবে।’

সময়ক্ষেপণ সরকারকে বিপদে ফেলবে বলে মন্তব্য করেন নায়েবে আমির।

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারকে তার ভূমিকা পালন করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার জন্য বললেই হবে না। বড় দলকে বলব, আপনারা আলোচনার জন্য কমিটি গঠন করুন। দ্রুত বিএনপির পক্ষ থেকে আলোচনার জন্য আসুন।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার জামিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩৫
সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম পান্না। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম পান্না। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শাহবাগ থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিন ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের বেঞ্চ পৃথক শুনানির মাধ্যমে তাঁদের ছয় মাসের জামিন দেন।

লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না এবং মঞ্জুরুল আলমের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম ইব্রাহিম খলিল।

গত ২৯ আগস্ট রাজধানীর শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও ঢাবি অধ্যাপক কার্জনসহ ১৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর থেকে কারাগারে রয়েছেন লতিফ সিদ্দিকী।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২৮ আগস্ট রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির অডিটোরিয়ামে ‘মঞ্চ ৭১’ এর ব্যানারে একটি গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত থেকে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী দেশকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দেন এবং অন্যদের প্ররোচিত করেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া ৭০ থেকে ৮০ জনের মধ্যে ১৬ জনকে আটক করে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত