Ajker Patrika

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন ৭ দলের নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২: ০০
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন ৭ দলের নেতারা

দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে সাতটি রাজনৈতিক দল ও হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক হয়।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে বের হয়ে কথা বলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘আজকের বৈঠক ছিল দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে। আমরা উপদেষ্টামণ্ডলীকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। স্বাধীনতার পর থেকে যারাই ক্ষমতায় ছিল, তারা জনপ্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। যে লাউ সে-ই কদু করে নির্বাচন দিলে এবারও জাতির প্রত্যাশা পূরণ হবে না। ঐকমত্য কমিশনে ২৬টি দল পিআরের পক্ষে মত দিয়েছে। দেশের দুর্নীতি, সন্ত্রাস, ভোট ডাকাতি, এককভাবে নির্বাচন ও ডামি প্রার্থী—এগুলো মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না দিলে গণভোটের ব্যবস্থা করেন। জিয়াউর রহমান, এরশাদ সাহেবকে চায় কি চায় না, এর জন্য গণভোট হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, এসব বিষয়ে চিন্তাভাবনা উনারা করবেন।’

আশরাফ আলী আকন আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। এখনই সন্ত্রাস বন্ধ করতে পারে না, যখন ৩০০ আসনে নির্বাচন হবে, তখন সন্ত্রাস, জাল ভোট কীভাবে বন্ধ করবে? লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই।

আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ১৪ দলের সব দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়ে ইসলামী আন্দোলনের নেতা আরও বলেন, ‘পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের আগে সংস্কার চাই, বিচার চাই। সংস্কার ও বিচার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সঠিক নির্বাচন যাতে না হয়, এ জন্য একটা শক্তি ষড়যন্ত্র করছে, এ জন্য তিনি আমাদের ডেকেছেন।’

এলডিপির সেক্রেটারি জেনারেল রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কী কী পদক্ষেপ নিতে পারি, এসব জানতে চেয়েছেন। আমরা বলেছি, আমাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থা উন্নতিকল্পে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। বিগত সরকার তাদের লোক এমনভাবে বসিয়েছে যে প্রশাসনের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত আছে। একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’

রেদোয়ান আহমেদ বলেন, লটারি করে ট্রান্সফার বিষয়টি শিশুসুলভ। দেশের কোথায় কেমন অবস্থা, তার ওপর নির্ভর করে দক্ষতার সঙ্গে বিবেচনা করে বদলি করতে হবে। অস্ত্র যেসব লুণ্ঠন হয়েছিল, সেগুলো এখনো পুরোপুরি উদ্ধার করা যায়নি। এই অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা না গেলে মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক থাকবে না।

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রসঙ্গে এলডিপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের একটা পক্ষশক্তি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা একটা নির্বাচন করবেন বলে জাতিকে আশ্বস্ত করেছেন। যুগে যুগে কালে কালে নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারে। পিআর পদ্ধতি ইংল্যান্ড আমেরিকা ভারতে নাই। আজকে যারা পিআর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করছেন, তাঁরা ঐকমত্য কমিশনের শুরুতে এই আলোচনা করেননি। এখন সরকার যখন একটা শিডিউল ঘোষণা করেছেন, তখন তাঁরা এই কথা বলছেন। আমরা পিআর নয়, আসনভিত্তিক নির্বাচনের পক্ষে।’

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুর রহমান ইসলামাবাদী বলেন, ‘আমরা দাবি জানিয়েছি, সংবিধানে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করতে। জুলাই সনদে শাপলা চত্বরে যে গণহত্যা হয়েছে, তা অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছি। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের চিহ্নিত ক্রিমিনাল ও দোসর যারা, তাদের গ্রেপ্তার করুন। প্রশাসনের মধ্যে যারা আছে, তাদের বহিষ্কার করুন।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বদ্ধপরিকর। একটা উৎসবমুখর নির্বাচন তাঁরা আয়োজন করতে চান। তাই তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পরামর্শ ও সহযোগিতা চেয়েছেন। আমরা দুটি বিষয় বলেছি। একটা হচ্ছে, সরকার যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, রাষ্ট্র পুনর্গঠন যথার্থ হয়নি। সে কারণে নানান সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে রাজনৈতিক মহলে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। নির্বাচনের পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, দ্বিতীয়ত, ঐকমত্য কমিশনে যে রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিনিধিত্ব করেছে, তাদের নিয়ে এবং নির্বাচনসংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন প্রয়োজন। এতে যেখানে যে ঘটনাগুলো ঘটবে, সেই কমিটির সবাই মিলে ঠিক করবে। এখন থেকে এটার কাজ শুরু করা দরকার। বিচারকে আরও দৃশ্যমান করা যেমন জরুরি, তেমনি সংস্কার কীভাবে হবে, সেগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধের জায়গা দেখা যাচ্ছে। আমরা বলেছি, যেসব বিষয় সংবিধান সংশ্লিষ্ট নয়, সেগুলো অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে পারে।’

বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন এখন বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ মন্তব্য করে সাকি আরও বলেন, ‘সংবিধান একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত্তি। সংবিধানে প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। একটা সংসদ গঠন ছাড়া কোনোভাবেই সংস্কার সম্পন্ন করতে পারব না।’

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘আমরা বলেছি, সরকারের কার্যক্রমে শৃঙ্খলার অভাব দেখতে পাচ্ছি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় দেখা গেছে, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়হীনতা আছে। এটা ঠিক না হলে নির্বাচন নিয়ে সংশয় কাটবে না। এসব ঘটনায় সরকারের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।’

মঞ্জু আরও বলেন, ‘জাতীয় ও জেলা উপজেলা পর্যায়ে একটা সমন্বিত কমিটি করার কথা বলেছি, যাতে আসনভিত্তিক সংকট সমাধানে তারা ভূমিকা রাখতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তাঁদের পুরো টিমে নিরপেক্ষ নির্বাচনের অভিজ্ঞতার একজনও নেই। আমরা বলেছি, যাদের পূর্বে নিরপেক্ষ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আছে, তাদের চুক্তিভিত্তিক হলেও নিয়োগ দেওয়ার কথা বলেছি। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচন যে চ্যালেঞ্জ, এটা সবাই মিলে ফেস করা ছাড়া কোনো উপায় নাই।’

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে আজ দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটির কথা বলা হয়েছিল, আইন উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি আজ রাতেই প্রকাশ করা হবে। আজ সকালে আমি ঢাকা মেডিকেলে গিয়েছিলাম, নুর কথা বলতে পারছেন না। কথা বললে গলা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। আমাকে নুর বলেছেন, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। নুরুল হক নুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া হবে, এটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।’

রাশেদ খান আরও বলেন, ‘যারা এখন প্রশাসন ও বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান, তারা কি আপনার সরকারে আনুগত্য প্রকাশ করছে? সহযোগিতা করছে? আমরা দেখছি, করছে না। তাই আমরা বলেছি, এখানে দুটি সরকার কাজ করছে, একটি অন্তর্বর্তী সরকার, আরও একটা অদৃশ্য সরকার। গণভোটের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণভোটের সুযোগ নেই। এখন যেহেতু রাজনৈতিক মহলে গণভোটের দাবি উঠেছে, সে ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা কী হবে?’

নির্বাচনের বিষয়ে এ নেতা বলেন, নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে? সরকারের পক্ষ থেকে এটা স্পষ্ট করা হলে ধোঁয়াশা কেটে যায়। প্রতিটা দল যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, সে জন্য আস্থা তৈরি করা দরকার।

নুরের স্ত্রী মারিয়া আক্তার বলেন, ‘আমাকে মাননীয় উপদেষ্টা ডেকেছিলেন নুরের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য। উনি খবর নিয়েছেন এবং যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, তার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থার বিবেচনা করে তাকে বাইরে উন্নত চিকিৎসার কথা বলেছেন। গতকাল দুপুর পর্যন্ত ভালো ছিল, কিন্তু বিকেল থেকে আবারও নাক থেকে ব্লিডিং হচ্ছে। কথা বলতে গেলে হঠাৎ চুপ হয়ে যাচ্ছে। এখনো শারীরিক অবস্থা ভালো না।’

বৈঠকে অংশ নেওয়া সাতটি দল হলো—এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় গণফ্রন্ট। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ ধারাবাহিক সংলাপকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের। ফাইল ছবি
সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের। ফাইল ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে মতপার্থক্য কাটাতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ চেয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক আটটি রাজনৈতিক দল। এ সংলাপে রেফারির ভূমিকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে চেয়েছেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের।

যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস অফিসে সমমনা আট দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন তাহের। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ হলে সেখানে রেফারির অভাব হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে, বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা এখানে একটা রেফারির ভূমিকা পালন করবেন আগের মতো, এটা আমরা আশা করি।’

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত না দিতে পারলে সরকার নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তাহের বলেন, ‘আমরা যে ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, তাতে হঠাৎ করে একটি দল বিরোধিতা করছে। আমরা আশা করি, তারা তাদের দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে গণভোট আগে আর পরে করে লাভ নেই; বরং গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ নির্বাচনের দিন হ্যাঁ বা না ভোটে কারও মনোযোগ থাকবে না।’

তাহের আরও বলেন, ‘আমি গতকালকে দলগুলোর মধ্যে একটি আলোচনার আহ্বান করেছিলাম। আজকে উপদেষ্টা পরিষদও সে রকম একটি আহ্বান দলগুলোর কাছে জানিয়েছে। আমরাও দেখতে চাই, প্রধান দলগুলো এই আহ্বানে যেন সাড়া দেয়। তারাও যদি আমাদের মোত একইভাবে সাড়া দেয়, তাহলে একটা রাস্তা বেরিয়ে আসবে।’

প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেবে ৮ দল

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দফা দাবিতে পঞ্চম পর্বের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের শরিক সমমনা আটটি রাজনৈতিক দল। আগামী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় গণমিছিল করে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেবে তারা।

রাজধানীর পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘আমাদের আটটি দলের পাঁচ দফা দাবিতে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছি। অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগেই পৃথকভাবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট করতে হবে। আরপিও সংশোধন করা হলে আমরা সেটা মানব না। অর্থাৎ আরপিও আগের মতোই রাখতে হবে। এগুলোই এখন আমাদের মূল দাবি।’

এসব দাবিতে ৬ নভেম্বর বেলা ১১টায় গণমিছিল করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, দাবি আদায় না হলে ১১ নভেম্বর রাজধানীতে সমাবেশ করবেন তাঁরা।

নতুন কর্মসূচি ঘোষণার আগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও ডেভেলপমেন্ট পার্টির শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকার সাপলুডু খেলছে: আখতার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আখতার হোসেন। ফাইল ছবি
আখতার হোসেন। ফাইল ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার সাপলুডু খেলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আখতার বলেন, ‘অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে লক্ষ করছি, নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে সনদ দিয়ে। সরকার নিজেরা উদ্যোগ (সনদ বাস্তবায়নে) না নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ঠেলে দিয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার সাপলুডু খেলছে।’

সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারি করতে হবে বলে দাবি করে আখতার বলেন, ‘সংস্কার ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে। অতি দ্রুত সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির দাবি জানাই।’

এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, বিএনপি সংস্কার বাস্তবায়নের পথে বাধা হচ্ছে। সংস্কারকে ধারণ করে না বিএনপি। সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ নির্বাচনকে ভন্ডুল করতে চাচ্ছে। কিন্তু জনগণ এটা হতে দেবে না। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারি করতে হবে।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, দলীয় মতামত গণভোটে যাওয়া উচিত না। কোন দিন আদেশ জারি করবেন, সেটা সরকারকে জানাতে হবে। প্রধান উপদেষ্টাকে এই আদেশ জারি করতে হবে। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে আদেশ জারি করা হলে ছাত্র-জনতা আবার মাঠে নামবে।

আসনের লোভ দেখিয়ে গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র নষ্টের জন্য একটি দল উঠেপড়ে লেগেছে। গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা জনগণ রুখে দেবে।

বিএনপির আসন ঘোষণা প্রসঙ্গে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া তিন আসনে প্রার্থী হওয়ায় শুভেচ্ছা। তাঁর মাধ্যমে গণতন্ত্র আরও সুসংহত হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের ফসল হিসেবে যেহেতু তিনি নির্বাচন করতে পারছেন, সেহেতু সংস্কার বাস্তবায়নে এগিয়ে আসুন।’

নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে আমরা স্বাগত জানাই। আসেন, আমরা সবাই মিলে গণতন্ত্র চর্চা করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭-৮ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে পারে এনসিপি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৭
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শিগগির প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে। ৭- ৮ নভেম্বরের দিকে এই তালিকা ঘোষণা করা হতে পারে বলে এনসিপি সূত্রে জানা গেছে।

আজ সোমবার সন্ধ্যার পর বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে এনসিপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণাসংক্রান্ত সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি সত্য নয় বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষার এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কোনো প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করিনি। তবে ৭-৮ নভেম্বরের দিকে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারি। এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নেতা বলেন, প্রাথমিকভাবে ৭০-১০০ জনের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। কিছু আলাপ চলছে। তবে সেটা এখনো চূড়ান্ত নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টিভির ব্রেকিং নিউজে এনসিপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে যা বললেন তাজনুভা জাবীন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তাজনুভা জাবীন। ছবি: সংগৃহীত
তাজনুভা জাবীন। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ২৩৭ আসনের বিপরীতে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এর কিছু সময় পরই দেশের কিছু বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণার খবর প্রচার করা হয়। এ নিয়ে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনুভা জাবীন।

এক ফেসবুক পোস্টে জাবীন বলেছেন, ‘যাদের প্রার্থী তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হলো, তাদেরটা ব্রেকিং নিউজে জায়গা পেল না, কিন্তু ঠিক একই দিন একই সময় যারা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা নিয়ে ব্রেকিং নিউজ যাচ্ছে।’

জাবীন আরও লেখেন, ‘ব্রেকিং নিউজের পেছনের রাজনীতি কী? কী বয়ান মানুষের কাছে দেওয়ার জন্য কারা এত ব‍্যাকুল?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত