Ajker Patrika

বাংলাদেশের জন্য যারা বেইমান, ভারতের জন্য তারা বন্ধু: রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ২৩: ০৬
বাংলাদেশের জন্য যারা বেইমান, ভারতের জন্য তারা বন্ধু: রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

শিক্ষা, চিকিৎসা, বাণিজ্য ও তিস্তার পানি বণ্টন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের রাজনীতি এবং জাতীয় নির্বাচনেও সরাসরি হস্তক্ষেপ করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। আর এই হস্তক্ষেপ করা সম্ভব হয় ভারতের সাহায্যে বাংলাদেশের ক্ষমতায় বসে থাকা গোষ্ঠীর কারণে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। 

আজ শুক্রবার রাজধানীর প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আয়োজনে ‘আগ্রাসন-আধিপত্যবাদ মোকাবিলায় রাষ্ট্র সংস্কারের রাজনীতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রায়োরিটি হবে যে ভারত আমার এখানে আসতে চায় আসবে, আমার ওপর দিয়ে যেতে চায় যাবে। কারণ, আমার প্রায়োরিটি তো আমার দেশ, আমার বাণিজ্য, আমার মানুষের সুবিধা, আমার যোগাযোগ। কিন্তু আমাদের দেশে যারা সরকার হিসেবে এল, তারা আসলে তার প্রায়োরিটিকে ভারতের জায়গায় নিয়ে যায়। তারা বন্ধুত্বের নামে বেইমানি করে এই দেশের মানুষের সঙ্গে। ওরা বেইমানকে এই দেশে ক্ষমতায় রাখতে পছন্দ করে। ভারতের রাজনীতির, পররাষ্ট্রনীতির সবচেয়ে বড় ক্ষতিকর দিক আমাদের জন্য হচ্ছে—আমাদের জন্য যারা বেইমান, ভারতের জন্য তারা বন্ধু। তারা তাদের বন্ধু রাষ্ট্র বলে। ভারতের জনগণ আমাদের বন্ধু, কিন্তু ভারত রাষ্ট্র আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র না। ভারত রাষ্ট্র ভারতের জনগণের জন্যও বন্ধু রাষ্ট্র না।’ 

বাংলাদেশ ও ভারতের ক্ষমতাসীনরা যথাক্রমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও হিন্দুত্ববাদের চেতনা বিক্রি করে দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে। ভারতের বিজেপি যখন হিন্দুত্ববাদের কথা বলে, তখন সে এটা আসলে হিন্দুদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কথা বলে, হিন্দুধর্মের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কথা বলে। কিন্তু সে আসলে যে হাতিয়ার ব্যবহার করে, সেটার নাম হচ্ছে হিন্দুত্ববাদ। সেটা আসলে হিন্দুদের পক্ষের কোনো বিষয় না। বাংলাদেশে যেমন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে, তারা আসলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনো মানুষ না। তারা আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটাকে ব্যবহার করে এখানকার মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা সেটাকে জনগণের সামনে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য, জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন করার জন্য। অতএব, এই ব্যাপারগুলো আমাদের পরিষ্কার করে বোঝা দরকার।’ 

আলোচনা সভায় বক্তারা বাংলাদেশের ওপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারের স্বরূপ বোঝাতে রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক নানা সমীকরণ তুলে ধরেন। সভায় মূল বক্তব্য পাঠ করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আগ্রাসনবাদী শক্তিগুলোর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বিভিন্ন মাত্রায় বিদ্যমান। এসবের মধ্যে বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ইন্ডিয়ার আগ্রাসনের চেহারা সবচেয়ে কদাকার ও বিকট। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির অবনমন দেখতে চাচ্ছে বিজেপি-আরএসএস। ইন্ডিয়ার আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারও নতুনভাবে বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির চাষাবাদ চলছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও অস্থিরতা যত বেশি বাড়বে বিজেপি-আরএসএস গোষ্ঠী তত বেশি লাভবান হবে। দুর্ভাগ্যজনক সত্য হচ্ছে, এই মুহূর্তে তাদের স্বার্থের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের গদি রক্ষার সমীকরণ একদম মিলে গেছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ইস্যুভিত্তিক পপুলিস্ট অ্যাক্টিভিজম, সাম্প্রদায়িক বিভাজন কিংবা ইন্ডিয়ার জনগণ বাংলাদেশের জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায়—এমন কোনো কিছুই দিন শেষে এ দেশের জনগণের পক্ষে আসবে না। বাংলাদেশের জনগণের প্রধান লড়াই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রাখা মাফিয়াদের বিরুদ্ধে, সেই লড়াইয়ের পথ কেবল রাষ্ট্র সংস্কারের পথ। কারণ, রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে।’ 

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মিডিয়া ও প্রচার সমন্বয়ক সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলটির রাজনৈতিক সমন্বয়ক ফরিদুল হক, অর্থনৈতিক সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রীতম দাশসহ অনেকেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বাধা

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে ঠিকাদারের ‘আত্মহত্যা’

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত