আলোময় বিশ্বাস
নিরহঙ্কার, সদাহাস্য মিতা হক এমন একজন শিল্পী, যাঁর কণ্ঠ রবীন্দ্রসংগীতের ভারবস্তুর রস অনাহত রেখে এগিয়ে চলে; গানটিকে ঐশ্বর্যে এমন এক উচ্চমাত্রায় জাগিয়ে তোলে, যেখানে আমরা অনন্য এক সুরের মিতার দেখা পাই, আর সেখানেই সব শ্রোতার ভালোবাসা অনন্য তাৎপর্যে তাঁকে ছুঁয়ে থাকে।
মিতা হকের জন্ম ১৯৬২ সালে, যখন আইয়ুববিরোধী আন্দোললে উন্মাতাল পূর্ব বাংলা, আন্দোলনের হাওয়া লেগেছে কেরানীগঞ্জের ভাওয়াল মনোহরিয়া গ্রামের আবু তৈয়ব মাজহারুল হক সাহেবের বাড়িতেও। জনাব মাজহারুল হক মিতা হকের পিতামহ, যিনি ছিলেন ১৯৪৬ সালে বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির এমএলএ। এ বাড়িতেই মিতা হক তাঁর স্থায়ী নিবাস গড়ে তুলেছিলেন। অনেক পরিবর্তন দেখতে দেখতে মিতার জীবন এগিয়ে চলেছে, এখন মনোহরিয়া গ্রামটি প্রায় ঢাকা শহরেরই অংশ।
মিতার জন্ম এমন এক পরিবারে, যেখানে কণ্ঠে কথা ফোটার আগে সুর খেলেছে। এই সুরের গুরু আর কেউ নন, তাঁরই বড় চাচা সংগীতাচার্য ওয়াহিদুল হক, যাঁকে বাঙালিসমাজ রবীন্দ্রসংগীত ও রবীন্দ্রগবেষণার অন্যতম পুরোধা পুরুষ হিসেবে গণ্য করে। বাঙালি সংগীত-সংস্কৃতি জগতে ওয়াহিদুল হক একেবারেই আলাদা এ কারণে যে তিনি শুধু আত্মমগ্ন হয়ে সংগীত শিক্ষা দেননি, বরং সংগীত শিক্ষা দিতে গিয়ে সংগীতের বাইরের দরজা-জানালাও খুলে রেখেছেন, যেন অন্য সব আলোও সেখানে প্রবেশ করে। ওয়াহিদুল হকের হাত ধরেই মিতার সংগীতযাত্রা–এ এক পরম প্রাপ্তি; মিতার মনন গঠনে ওয়াহিদুল হকের ভূমিকাই প্রধান।
একটু কান পেতে দাঁড়াতে হবে যদি মিতার কণ্ঠ গেয়ে ওঠে ‘দীর্ঘ জীবনপথ’। কারণ, এই সুর মিতা আপনিই পেয়ে যান পারিবারিক পরিসরে পায়চারী করতে করতে। ‘তোমার এই মাধুরী ছাপিয়ে আকাশ ঝরবে’ গানখানি যেন কবিগুরু যত্নে লুকিয়ে রেখেছিলেন মিতাকে দিয়ে গাওয়াবেন বলে। রবীন্দ্রনাথের গানের চিত্রকল্প অনুধাবনে মিতার গানের আগে কান তৈরি হয়ে ছিল। বাহ্যিক অবয়বে মিতাকে অতি সাধারণ মনে হলেও তিনি অত্যন্ত উচ্চ রুচির কণ্ঠশিল্পী। রাজনৈতিক দৃষ্টিতে তিনি প্রগতিশীল সাম্যের ও মানবতার পক্ষে পরিবারের ঐতিহ্যকেই লালন করেছেন।
মিতা অনেক যত্ন নিয়ে, বুঝে গান করতেন। ফলে এই গানের শক্তি অনেক, যা শ্রোতাকে ছুঁয়ে থাকে, স্পর্শকাতর করে রাখে। নাম-যশের জন্য নয়, অর্থ প্রাপ্তির জন্য নয়, স্বতঃস্ফূর্ত আবেগই তাঁর সংগীতের পথ নির্মাণ করেছে। বড় চাচার মতোই তিনি জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ ও ছায়ানটের সাথে থেকে নিরলস কাজ করে গেছেন বাঙালি সংস্কৃতি ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য।
মাত্র ১১ বছর বয়সে বার্লিন বিশ্ব শিশু উৎসবে যোগ দিয়ে সেখানে গান করেছিলেন।
পরিণত মিতা ছিলেন গানের শিক্ষক। তিনি ছায়ানটে গান শেখান, নিজের হাতে গড়ে তুলেছিলেন সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘সুরতীর্থ’। রাষ্ট্রীয় সম্মাননা হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক, শিল্পকলা একাডেমির রবীন্দ্র পদক। এসব ছাপিয়েও বড় বিষয় হলো, রবীন্দ্রসংগীত জগতে মিতা হক এমন একটি নাম, যাঁকে সবাই ভালোবাসে; তাঁর দরাজ কণ্ঠ, তাঁর বিনয়-উজ্জ্বল মুখ, তাঁর নির্মল হাসি, নিরহঙ্কার ব্যক্তিত্ব–সবার কাছে তাঁকে ‘নিকট আত্মীয়’ হিসেবে পরিগণিত করেছে।
নিরহঙ্কার, সদাহাস্য মিতা হক এমন একজন শিল্পী, যাঁর কণ্ঠ রবীন্দ্রসংগীতের ভারবস্তুর রস অনাহত রেখে এগিয়ে চলে; গানটিকে ঐশ্বর্যে এমন এক উচ্চমাত্রায় জাগিয়ে তোলে, যেখানে আমরা অনন্য এক সুরের মিতার দেখা পাই, আর সেখানেই সব শ্রোতার ভালোবাসা অনন্য তাৎপর্যে তাঁকে ছুঁয়ে থাকে।
মিতা হকের জন্ম ১৯৬২ সালে, যখন আইয়ুববিরোধী আন্দোললে উন্মাতাল পূর্ব বাংলা, আন্দোলনের হাওয়া লেগেছে কেরানীগঞ্জের ভাওয়াল মনোহরিয়া গ্রামের আবু তৈয়ব মাজহারুল হক সাহেবের বাড়িতেও। জনাব মাজহারুল হক মিতা হকের পিতামহ, যিনি ছিলেন ১৯৪৬ সালে বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির এমএলএ। এ বাড়িতেই মিতা হক তাঁর স্থায়ী নিবাস গড়ে তুলেছিলেন। অনেক পরিবর্তন দেখতে দেখতে মিতার জীবন এগিয়ে চলেছে, এখন মনোহরিয়া গ্রামটি প্রায় ঢাকা শহরেরই অংশ।
মিতার জন্ম এমন এক পরিবারে, যেখানে কণ্ঠে কথা ফোটার আগে সুর খেলেছে। এই সুরের গুরু আর কেউ নন, তাঁরই বড় চাচা সংগীতাচার্য ওয়াহিদুল হক, যাঁকে বাঙালিসমাজ রবীন্দ্রসংগীত ও রবীন্দ্রগবেষণার অন্যতম পুরোধা পুরুষ হিসেবে গণ্য করে। বাঙালি সংগীত-সংস্কৃতি জগতে ওয়াহিদুল হক একেবারেই আলাদা এ কারণে যে তিনি শুধু আত্মমগ্ন হয়ে সংগীত শিক্ষা দেননি, বরং সংগীত শিক্ষা দিতে গিয়ে সংগীতের বাইরের দরজা-জানালাও খুলে রেখেছেন, যেন অন্য সব আলোও সেখানে প্রবেশ করে। ওয়াহিদুল হকের হাত ধরেই মিতার সংগীতযাত্রা–এ এক পরম প্রাপ্তি; মিতার মনন গঠনে ওয়াহিদুল হকের ভূমিকাই প্রধান।
একটু কান পেতে দাঁড়াতে হবে যদি মিতার কণ্ঠ গেয়ে ওঠে ‘দীর্ঘ জীবনপথ’। কারণ, এই সুর মিতা আপনিই পেয়ে যান পারিবারিক পরিসরে পায়চারী করতে করতে। ‘তোমার এই মাধুরী ছাপিয়ে আকাশ ঝরবে’ গানখানি যেন কবিগুরু যত্নে লুকিয়ে রেখেছিলেন মিতাকে দিয়ে গাওয়াবেন বলে। রবীন্দ্রনাথের গানের চিত্রকল্প অনুধাবনে মিতার গানের আগে কান তৈরি হয়ে ছিল। বাহ্যিক অবয়বে মিতাকে অতি সাধারণ মনে হলেও তিনি অত্যন্ত উচ্চ রুচির কণ্ঠশিল্পী। রাজনৈতিক দৃষ্টিতে তিনি প্রগতিশীল সাম্যের ও মানবতার পক্ষে পরিবারের ঐতিহ্যকেই লালন করেছেন।
মিতা অনেক যত্ন নিয়ে, বুঝে গান করতেন। ফলে এই গানের শক্তি অনেক, যা শ্রোতাকে ছুঁয়ে থাকে, স্পর্শকাতর করে রাখে। নাম-যশের জন্য নয়, অর্থ প্রাপ্তির জন্য নয়, স্বতঃস্ফূর্ত আবেগই তাঁর সংগীতের পথ নির্মাণ করেছে। বড় চাচার মতোই তিনি জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ ও ছায়ানটের সাথে থেকে নিরলস কাজ করে গেছেন বাঙালি সংস্কৃতি ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য।
মাত্র ১১ বছর বয়সে বার্লিন বিশ্ব শিশু উৎসবে যোগ দিয়ে সেখানে গান করেছিলেন।
পরিণত মিতা ছিলেন গানের শিক্ষক। তিনি ছায়ানটে গান শেখান, নিজের হাতে গড়ে তুলেছিলেন সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘সুরতীর্থ’। রাষ্ট্রীয় সম্মাননা হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক, শিল্পকলা একাডেমির রবীন্দ্র পদক। এসব ছাপিয়েও বড় বিষয় হলো, রবীন্দ্রসংগীত জগতে মিতা হক এমন একটি নাম, যাঁকে সবাই ভালোবাসে; তাঁর দরাজ কণ্ঠ, তাঁর বিনয়-উজ্জ্বল মুখ, তাঁর নির্মল হাসি, নিরহঙ্কার ব্যক্তিত্ব–সবার কাছে তাঁকে ‘নিকট আত্মীয়’ হিসেবে পরিগণিত করেছে।
মব ভায়োলেন্স তথা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ সহিংসতাই যেন কথিত নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের পথ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে উল্টো এর সাফাই গাওয়ায় এমন ধারণার উদ্রেক হওয়াটা কি খুব অস্বাভাবিক? মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের...
১৩ ঘণ্টা আগেউত্তেজনা একটি রোগ। এটি সংক্রামকও বটে। হঠাৎ করে আমাদের দেশ ও সমাজে উত্তেজনা এত বেড়েছে যে শান্তিতে থাকা যাচ্ছে না। আমরা বাস করি দেশের বাইরে অথচ এই দূরদেশেও সে উত্তেজনার আঁচ দেখতে পাচ্ছি। যত দিন যাচ্ছে, নিজেদের ভেতর অশান্তি আর গন্ডগোল যেন বেড়েই চলেছে। এর নিরসন কোথায় বা কীভাবে তা সম্ভব...
১৩ ঘণ্টা আগেবর্তমান সময়ে ঢাকা মহানগরীসহ যেকোনো শহর এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা যেভাবে জ্যামিতিক হারে বাড়ছে, তাতে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব পায়ে চালিত রিকশাকে জাদুঘরে দেখতে যাওয়ার সময় চলে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে তর্ক বা বিতর্কে যাওয়া যেতেই পারে, তবে আমার লেখার উদ্দেশ্য এর কোনোটিই...
১৩ ঘণ্টা আগেশুনলে মনে হয় রসিকতা। কিন্তু বাস্তবটা এতটাই তিক্ত যে চোখ কপালে ওঠে। গাজীপুরের শ্রীপুরে এক্স সিরামিকস লিমিটেড নামের একটি কারখানা, যাদের বিরুদ্ধে নদী দখল ও দূষণের একাধিক অভিযোগ প্রমাণসহ রয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের নথিতে, তারা কিনা পেয়েছে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন...
১৩ ঘণ্টা আগে