সম্পাদকীয়
চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ছোট্ট গ্রাম সাড়ে পাঁচআনি। এখানেই বড় হচ্ছে সোহান—মাত্র সাড়ে পাঁচ বছরের এক বিস্ময়বালক, যার পায়ের জাদু দেখে বিস্মিত হচ্ছে দেশজুড়ে মানুষ। রেইনবো ফ্লিক, প্রতিপক্ষকে কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়া কিংবা মিনিটের পর মিনিট পায়ে বল রাখা—যে কৌশল আমরা সাধারণত বড় মাপের আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের কাছেই দেখতে পাই, তা এক শিশুর পায়ে যেন অনায়াসেই ফুটে উঠছে।
‘চাঁদপুরের বিস্ময়বালক হতে চায় মেসি’ শিরোনামে আজকের পত্রিকায় শনিবার প্রকাশিত খবরটি পড়ে মন ভালো হয়ে যাওয়ার কথা সবারই। এমন প্রতিভা আমাদের দেশে প্রতিদিন এবং ঘরে ঘরে জন্ম নেয় না। ফুটবলের প্রতি সোহানের অনুরাগ শুরু হয় এক বছর বয়সেই, দাদার দেওয়া প্রথম বল হাতে পেয়ে। এরপর বাবার সাইকেলের গ্যারেজের সামনে প্রতিদিনের অনুশীলনই তার প্রথম ‘একাডেমি’ হয়ে ওঠে। কোনো কোচ নেই, নেই আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা; কিন্তু আছে একনিষ্ঠতা, খেলাটার প্রতি ভালোবাসা, আর বাবার স্বপ্ন।
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সোহানের খেলার ভিডিও শুধু সাধারণ মানুষকেই নয়, সাবেক জাতীয় ফুটবল অধিনায়ক আমিনুল হক ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও আকৃষ্ট করেছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তাঁরা সোহানের পড়াশোনা ও খেলার যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এই সহায়তা প্রশংসনীয়, তবে প্রশ্ন হলো—একজন শিশুর ভবিষ্যৎ কেন কেবল ব্যক্তিগত অনুদানের ওপর নির্ভর করবে?
বাংলাদেশে ফুটবলে যে প্রতিভার ঘাটতি নেই, সোহানের মতো উদাহরণই তার প্রমাণ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, প্রতিভা বিকাশের জন্য আমরা এখনো সুসংগঠিত জাতীয় পরিকল্পনা গড়ে তুলতে পারিনি। ছোট শহর বা গ্রামীণ অঞ্চলে প্রতিভা খুঁজে বের করা, প্রশিক্ষণ দেওয়া, পুষ্টি ও সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা—এসব কাজ সরকারি উদ্যোগেই হওয়া উচিত। কেবল শহরমুখী বা ক্লাবনির্ভর পদ্ধতিতে ফুটবলের ভিত্তি মজবুত হবে না।
আমাদের ইতিহাস বলে, সঠিক পরিচর্যা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বিশ্বমঞ্চে জায়গা করে নেওয়া অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু সেই পরিচর্যা যদি কেবল কিছু ‘সৌভাগ্যবান’ শিশুর জন্য সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে অসংখ্য সম্ভাবনাময় প্রতিভা হারিয়ে যাবে অচেনা অন্ধকারে।
সোহানের গল্প তাই শুধু একটি শিশুর ফুটবল স্বপ্ন নয়, বরং আমাদের ক্রীড়াকাঠামোর প্রতিচ্ছবি। আমরা কি প্রস্তুত সেই কাঠামো বদলে দিতে, যাতে প্রতিটি সোহান তার স্বপ্নপূরণের সুযোগ পায়? নাকি আমরা কেবল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েক দিন উচ্ছ্বাস দেখিয়ে আবার ভুলে যাব?
বাংলাদেশ যদি সত্যিই ফুটবলকে জাতীয় গর্বে পরিণত করতে চায়, তাহলে আজ থেকেই প্রতিভা শনাক্তকরণ ও বিকাশের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। প্রান্তিক এলাকার মাঠে দাঁড়িয়ে সোহানের মতো শিশুদের চোখে যে স্বপ্ন জ্বলছে, সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে পারে কেবল সমন্বিত জাতীয় উদ্যোগ।
সোহানের পায়ে বল এখনো ঘুরছে। হয়তো একদিন সেই বল ঘুরবে বিশ্বকাপের সবুজ মাঠে—যদি আমরা আজই তাকে ও তার মতো প্রত্যেক প্রতিভাকে সুযোগ করে দিতে পারি।
চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ছোট্ট গ্রাম সাড়ে পাঁচআনি। এখানেই বড় হচ্ছে সোহান—মাত্র সাড়ে পাঁচ বছরের এক বিস্ময়বালক, যার পায়ের জাদু দেখে বিস্মিত হচ্ছে দেশজুড়ে মানুষ। রেইনবো ফ্লিক, প্রতিপক্ষকে কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়া কিংবা মিনিটের পর মিনিট পায়ে বল রাখা—যে কৌশল আমরা সাধারণত বড় মাপের আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের কাছেই দেখতে পাই, তা এক শিশুর পায়ে যেন অনায়াসেই ফুটে উঠছে।
‘চাঁদপুরের বিস্ময়বালক হতে চায় মেসি’ শিরোনামে আজকের পত্রিকায় শনিবার প্রকাশিত খবরটি পড়ে মন ভালো হয়ে যাওয়ার কথা সবারই। এমন প্রতিভা আমাদের দেশে প্রতিদিন এবং ঘরে ঘরে জন্ম নেয় না। ফুটবলের প্রতি সোহানের অনুরাগ শুরু হয় এক বছর বয়সেই, দাদার দেওয়া প্রথম বল হাতে পেয়ে। এরপর বাবার সাইকেলের গ্যারেজের সামনে প্রতিদিনের অনুশীলনই তার প্রথম ‘একাডেমি’ হয়ে ওঠে। কোনো কোচ নেই, নেই আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা; কিন্তু আছে একনিষ্ঠতা, খেলাটার প্রতি ভালোবাসা, আর বাবার স্বপ্ন।
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সোহানের খেলার ভিডিও শুধু সাধারণ মানুষকেই নয়, সাবেক জাতীয় ফুটবল অধিনায়ক আমিনুল হক ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও আকৃষ্ট করেছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তাঁরা সোহানের পড়াশোনা ও খেলার যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এই সহায়তা প্রশংসনীয়, তবে প্রশ্ন হলো—একজন শিশুর ভবিষ্যৎ কেন কেবল ব্যক্তিগত অনুদানের ওপর নির্ভর করবে?
বাংলাদেশে ফুটবলে যে প্রতিভার ঘাটতি নেই, সোহানের মতো উদাহরণই তার প্রমাণ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, প্রতিভা বিকাশের জন্য আমরা এখনো সুসংগঠিত জাতীয় পরিকল্পনা গড়ে তুলতে পারিনি। ছোট শহর বা গ্রামীণ অঞ্চলে প্রতিভা খুঁজে বের করা, প্রশিক্ষণ দেওয়া, পুষ্টি ও সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা—এসব কাজ সরকারি উদ্যোগেই হওয়া উচিত। কেবল শহরমুখী বা ক্লাবনির্ভর পদ্ধতিতে ফুটবলের ভিত্তি মজবুত হবে না।
আমাদের ইতিহাস বলে, সঠিক পরিচর্যা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বিশ্বমঞ্চে জায়গা করে নেওয়া অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু সেই পরিচর্যা যদি কেবল কিছু ‘সৌভাগ্যবান’ শিশুর জন্য সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে অসংখ্য সম্ভাবনাময় প্রতিভা হারিয়ে যাবে অচেনা অন্ধকারে।
সোহানের গল্প তাই শুধু একটি শিশুর ফুটবল স্বপ্ন নয়, বরং আমাদের ক্রীড়াকাঠামোর প্রতিচ্ছবি। আমরা কি প্রস্তুত সেই কাঠামো বদলে দিতে, যাতে প্রতিটি সোহান তার স্বপ্নপূরণের সুযোগ পায়? নাকি আমরা কেবল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েক দিন উচ্ছ্বাস দেখিয়ে আবার ভুলে যাব?
বাংলাদেশ যদি সত্যিই ফুটবলকে জাতীয় গর্বে পরিণত করতে চায়, তাহলে আজ থেকেই প্রতিভা শনাক্তকরণ ও বিকাশের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। প্রান্তিক এলাকার মাঠে দাঁড়িয়ে সোহানের মতো শিশুদের চোখে যে স্বপ্ন জ্বলছে, সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে পারে কেবল সমন্বিত জাতীয় উদ্যোগ।
সোহানের পায়ে বল এখনো ঘুরছে। হয়তো একদিন সেই বল ঘুরবে বিশ্বকাপের সবুজ মাঠে—যদি আমরা আজই তাকে ও তার মতো প্রত্যেক প্রতিভাকে সুযোগ করে দিতে পারি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
৭ ঘণ্টা আগেদেশে নারী জাগরণ অভূতপূর্ব। এটা বলে বোঝানোর দরকার পড়ে না। বীরকন্যা প্রীতিলতা, বেগম রোকেয়া থেকে জাহানারা ইমামে এর উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ শাসিত হয়েছে নারীর অধীনে। এরশাদের পতনের পর সরাসরি সামরিক শাসনের অবসান হলে খালেদা জিয়া দেশ শাসনে আসেন।
৭ ঘণ্টা আগেআকাশের দিকে তাকিয়ে কিছুদিন পরেই বৃষ্টিতে নাজেহাল হয়ে ওঠা মানুষদের এমনটাই মনে হবে। বাইরে হয়তো রোদ তখন তেমন কড়া নয়, আবার কড়াও হতে পারে, শেফালির শাখে বিহগ-বিহগী কে জানে কী গেয়ে যাবে!
৭ ঘণ্টা আগেআনু মুহাম্মদ বাংলাদেশের একজন অন্যতম গণবুদ্ধিজীবী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির অন্যতম সংগঠক, তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সাবেক সদস্যসচিব।
১ দিন আগে