Ajker Patrika

সেনাপ্রধানের বক্তব্য

সম্পাদকীয়
সেনাপ্রধানের বক্তব্য

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যে বক্তব্য দিয়েছেন গত মঙ্গলবার, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে। ২০০৯ সালে তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদর দপ্তর পিলখানায় সংঘটিত নির্মম হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে রাজধানীর রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া) ক্লাবের আয়োজনে সেনাপ্রধান যে কথাগুলো বলেছেন, সেগুলো নিয়ে ভাববার অবকাশ আছে।

সরল চোখে আমরা দেখতে পাব দেশের অবস্থা যে ভালো নেই, তার স্বীকৃতি আছে সেনাপ্রধানের বক্তব্যে। এবং এই অরাজক অবস্থার জন্য সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন মহলের মধ্যে ঐক্যহীনতার কথাই তিনি বলেছেন। এ থেকে আরও একটি কথা পরিষ্কার হয় যে অরাজকতার জন্য আওয়ামী লীগ কিংবা তার ‘দোসর’দের দায়ী করার যে প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে, সেটা তিনি খারিজ করে দিচ্ছেন। কারণ, বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় যে মব ভায়োলেন্স হচ্ছে কিংবা রাজনৈতিক দলাদলি, মারপিট হচ্ছে, তাতে পরিষ্কার হয় যে এটা গণ-অভ্যুত্থানের ফলে যাঁরা লাভবান হয়েছেন, তাঁদেরই কারও না কারও দ্বারা সংঘটিত হচ্ছে। রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি না হলে এই অরাজকতা থামানো যাবে না।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে এই অরাজকতা থেকে মুক্ত হওয়ার বিষয়ে তিনি সেনাবাহিনী, বিডিআর, পুলিশ এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কথা উচ্চারণ করে বলেছেন, এদের ঠিকভাবে কাজ করতে না দিলে সংকটে পড়বে দেশ। রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবজ্ঞা করে কিংবা তাদের হেনস্তা করে যখন মব ভায়োলেন্স প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, তখন সেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দোষারোপ করা হাস্যকর ব্যাপার। যার যে কাজ তাকে সে কাজ করতে না দিয়ে তার আদর্শের মেরুদণ্ড ভেঙে দিলে দেশে নৈরাজ্যই প্রতিষ্ঠিত হয়, সে কথা আশা করি যাঁরা গণ-অভ্যুত্থানের সাফল্য চান, তাঁরা বুঝবেন।

বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে স্পষ্ট করে সেনাপ্রধান কিছু কথা বলেছেন। স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা শাস্তি পেয়েছে। হত্যাকারীদের পক্ষে সাফাই গাওয়া ঠিক হবে না। তেমনি যদি সেনাবাহিনী বা রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, তবে তা তদন্তের পরই কেবল সিদ্ধান্তে আসতে হবে।

সেনাপ্রধান জানিয়েছেন দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে এলে সেনানিবাসে ফিরে যাওয়ার বাসনার কথা। তাহলে কি কেউ কেউ মনে করছিলেন যে সেনাবাহিনীর রাজনীতি নিয়ে অন্য কোনো পরিকল্পনা ছিল? কেন তিনি এই কথা বললেন?

যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর আস্থা রাখা যায় কি না কিংবা মব ভায়োলেন্সকে এই সরকার নির্মূল করতে পারবে কি না, সে প্রশ্ন থেকেই যায়। এই অবস্থায় সেনাপ্রধান যে কথাগুলো বলেছেন, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমান অবস্থার বিচারে তাঁর এই সতর্কবাণী সংশ্লিষ্টরা আমলে নেবে কি না, সেটাই ভেবে দেখবার বিষয়। কিন্তু ইনক্লুসিভ রাজনীতির নামে যেভাবে অরাজকতার সৃষ্টি হচ্ছে দেশে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত