Ajker Patrika

উন্নয়ন ও অনাচার বিপরীতমুখী

সম্পাদকীয়
উন্নয়ন ও অনাচার বিপরীতমুখী

নায়িকা পরীমণি ইস্যুতে তোলপাড় দেশ। সোশ্যাল মিডিয়া, মূলধারার গণমাধ্যম—সর্বত্র এখন এটি আলোচিত ঘটনা। নানাজন নানাভাবে এই ইস্যুতে কথা বলছেন। কে কী বলছেন, তা-ও এখন আর কারও অজানা নয়। কারও বক্তব্য পরীমণির রাতবিরাতে ক্লাবে যাওয়া উচিত-অনুচিত বিষয়ে। কেউ বলছেন, টাকাওয়ালাদের কাছে চলে গেছে সব ক্ষমতা, তাই পরীমণিসহ সাধারণ মানুষের সুবিচার পাওয়া এখন দুর্লভ বিষয় ইত্যাদি। পরীমণির বক্তব্য ও অভিযোগ যেমন ভাইরাল হয়েছে, তেমনি একের পর এক ঘটনাও ঘটছে। অভিযুক্ত নাসির ইউ মাহমুদের বাসায় পুলিশি অভিযান হয়েছে। মাদকদ্রব্যসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শুধু পরীমণি নন; সম্প্রতি মুনিয়া হত্যাকাণ্ডও আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, সমাজে কীভাবে নীতিবিরুদ্ধ ঘটনা ঘটছে এবং এসবের পৃষ্ঠপোষকতায় কোনো না কোনোভাবে প্রভাবশালীরা জড়িত। দেশের বস্তুগত উন্নয়ন যেভাবে হচ্ছে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন; সেভাবে মূল্যবোধ ও মানবিকতার উন্নয়ন হচ্ছে না। জাতিসত্তার মৌলিক গুণগত উন্নয়ন হচ্ছে না। চারপাশে ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, টানেল হচ্ছে। মহাকাশে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। পানির নিচে সাবমেরিন চলছে। পারমাণবিক বিদ্যুতের শক্তিধর দেশও হচ্ছি আমরা। লাখ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে এখন দেশে। অনেক উন্নয়ন দৃশ্যমান হচ্ছে। শুধু দেখা যাচ্ছে না নীতিনৈতিকতার উন্নয়ন। মানুষ হিসেবে, জাতি হিসেবে উঁচু মন ও মননশীলতার পরিচয় গড়ে উঠছে না।

মানুষের আয় বাড়ছে, জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ঢাকার রাস্তায় এখন পোরশে, অডি, রেঞ্জরোভার অহরহ দেখা যাচ্ছে। রাতের ঢাকায় কোটি টাকা খরচ হয় পার্টিতে। সবই হচ্ছে। শুধু মানুষের প্রতি মানুষের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, একে অপরের প্রতি সহনশীলতা, অসহায়ের প্রতি বিত্তবানের ভালোবাসা বা সহমর্মিতা তৈরি হচ্ছে না। বরং দিনে দিনে মানুষ হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয়ের জায়গাটি আরও হালকা হয়ে যাচ্ছে। পরীমণি ও মুনিয়ার দুটি ঘটনা প্রতীকী মাত্র। এ রকম অসংখ্য ঘটনা প্রতিদিন ঘটছে, আমরা তার সামান্যই হয়তো জানতে পারছি। কখনো নারীর প্রতি পুরুষের, কখনো পুরুষের প্রতি নারীর বৈষম্যমূলক আচরণ আমাদের মানহীন এগিয়ে চলার বার্তা দেয়।

আমরা মনে করি, সরকার, নাগরিক সর্বস্তরেই আরও বেশি সতর্ক ও সচেতন হওয়া দরকার। নিজেদের মূল্যবোধকে আরও বেশি অন্যায়-অবিচারের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলা উচিত। নীতিনৈতিকতাহীন সমাজের বলয় ভেঙে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও আইনের শাসন শক্ত হাতে প্রতিষ্ঠা করা উচিত। যারাই অর্থবিত্ত, পেশিশক্তি প্রয়োগ করে সমাজে অনাচার বিস্তারের চেষ্টা করবে, তাদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে। অন্যথায়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, একসময় মানহীন উন্নয়ন হিসেবে গণ্য হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লাহোরে পাল্টা আঘাত হেনে পাকিস্তানকে জবাব দিল ভারত

পাকিস্তানের চীনা জে-১০ দিয়ে ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংস, যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজরে এই টক্বর

একটি দলের ওপর ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব: মাহফুজ আলম

গতকাল রাতে ৪৮টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের

অহনার দাবি, নিজের দোষ ঢাকতে ডাবল টাইমিংয়ের কথা বলেছেন শামীম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত