সম্পাদকীয়
গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। আর আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন মূলত গ্যাসনির্ভর। গ্যাসও চাহিদার তুলনায় কম। তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বাড়ালে নগরজীবনে সাময়িক স্বস্তি মিললেও চরম সংকট তৈরি হয় শিল্প খাতে। রাজধানীতে লোডশেডিং কমাতে গিয়ে সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীর মতো শিল্পাঞ্চলগুলোতে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। উৎপাদন কমে গেছে অনেকখানিই, কোথাও কোথাও তিন ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। গার্মেন্টস, সিরামিক, রি-রোলিং, ইস্পাত ও টেক্সটাইল খাত এসবের প্রধান ভুক্তভোগী। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রপ্তানি, ঝুঁকিতে পড়ছে কর্মসংস্থান।
পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, দৈনিক গ্যাসের চাহিদা যেখানে ৩৮০ কোটি ঘনফুট, সরবরাহ হচ্ছে ২৭০ কোটি ঘনফুট। এর এক-তৃতীয়াংশের বেশি চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ খাতে। ফলে বাকি খাতে, বিশেষত শিল্পের জন্য বরাদ্দ থাকে অপ্রতুল। এমনকি আবাসিক গ্রাহক ও সিএনজি স্টেশনও এই সংকটে জর্জরিত।
আজকের পত্রিকায় ৩ মে ‘বিদ্যুতে গ্যাস দিলে শিল্পে টান’ শিরোনামে প্রকাশিত খবর থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাচ্ছে।
গ্যাসের চাপ না থাকায় বাসাবাড়িতে রান্নার চুলাও অনেক সময় জ্বলে না। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গ্যাস-সংকট নিরসনের দাবিতে ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা বিক্ষোভ করেছেন বলেও পত্রিকায় খবর ছাপা হয়েছে।
গ্যাস ঘাটতির পেছনে কেবল গ্রীষ্মকালীন বিদ্যুৎ চাহিদাই নয়, দায়ী দীর্ঘ মেয়াদে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানে অবহেলা, ভ্রান্ত নীতিনির্ধারণ ও বিদেশনির্ভরতায় গড়ে ওঠা এককেন্দ্রিক জ্বালানিকাঠামো। এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনে রাজনৈতিক স্বার্থে নেওয়া হয় বিশেষ আইনের সহায়তায় বিনা দরপত্রে সিদ্ধান্ত, অথচ যেগুলোর অধিকাংশই স্থায়ী সমাধান দিতে ব্যর্থ। গত সরকারের আমলে যেসব নতুন এলএনজি টার্মিনালের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা বর্তমান সরকার বাতিল করে দিয়েছে। কিন্তু বিকল্প কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় সংকট আরও গভীর হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এলএনজি আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ। তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন নিজস্ব গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ ও পরিকল্পিত উত্তোলন। অথচ বিবিয়ানা ও তিতাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ গ্যাসক্ষেত্রগুলোতেও উৎপাদন কমে আসছে, আর পেট্রোবাংলা ডিপ ড্রিলিং থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
এই বাস্তবতায় আমাদের প্রয়োজন একটি সুদূরপ্রসারী, স্বচ্ছ ও বাস্তবভিত্তিক জ্বালানি নীতি। গ্যাস সরবরাহে সাময়িক ভারসাম্য আনতে হবে এমনভাবে, যাতে বিদ্যুৎ ও শিল্প—দুই খাতেই সীমিত হলেও কার্যকর জোগান দেওয়া যায়।
কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এর সমাধান একটাই—দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি খাতে সমন্বিত বিনিয়োগ এবং জবাবদিহিমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন।
একটি দেশের শিল্প খাতের টিকে থাকা কেবল উৎপাদনের প্রশ্ন নয়, এটি রপ্তানি, কর্মসংস্থান এবং সামগ্রিক অর্থনীতির ভিত্তি। বিদ্যুৎ দিয়ে শহর আলোকিত করে যদি শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যায়, তবে সে আলোর নিচেই অন্ধকার অপেক্ষা করবে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিচক্ষণতা ও বাস্তবতা সামনে রেখে, যাতে কোনো একটি খাতকে বাঁচাতে গিয়ে পুরো অর্থনীতিকেই না ডুবিয়ে দেওয়া হয়। দেশে এখন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায়। ভালো কোনো পরিবর্তনের লক্ষণ কি এই সরকার দেখাতে পারছে?
গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। আর আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন মূলত গ্যাসনির্ভর। গ্যাসও চাহিদার তুলনায় কম। তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বাড়ালে নগরজীবনে সাময়িক স্বস্তি মিললেও চরম সংকট তৈরি হয় শিল্প খাতে। রাজধানীতে লোডশেডিং কমাতে গিয়ে সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীর মতো শিল্পাঞ্চলগুলোতে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। উৎপাদন কমে গেছে অনেকখানিই, কোথাও কোথাও তিন ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। গার্মেন্টস, সিরামিক, রি-রোলিং, ইস্পাত ও টেক্সটাইল খাত এসবের প্রধান ভুক্তভোগী। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রপ্তানি, ঝুঁকিতে পড়ছে কর্মসংস্থান।
পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, দৈনিক গ্যাসের চাহিদা যেখানে ৩৮০ কোটি ঘনফুট, সরবরাহ হচ্ছে ২৭০ কোটি ঘনফুট। এর এক-তৃতীয়াংশের বেশি চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ খাতে। ফলে বাকি খাতে, বিশেষত শিল্পের জন্য বরাদ্দ থাকে অপ্রতুল। এমনকি আবাসিক গ্রাহক ও সিএনজি স্টেশনও এই সংকটে জর্জরিত।
আজকের পত্রিকায় ৩ মে ‘বিদ্যুতে গ্যাস দিলে শিল্পে টান’ শিরোনামে প্রকাশিত খবর থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাচ্ছে।
গ্যাসের চাপ না থাকায় বাসাবাড়িতে রান্নার চুলাও অনেক সময় জ্বলে না। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গ্যাস-সংকট নিরসনের দাবিতে ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা বিক্ষোভ করেছেন বলেও পত্রিকায় খবর ছাপা হয়েছে।
গ্যাস ঘাটতির পেছনে কেবল গ্রীষ্মকালীন বিদ্যুৎ চাহিদাই নয়, দায়ী দীর্ঘ মেয়াদে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানে অবহেলা, ভ্রান্ত নীতিনির্ধারণ ও বিদেশনির্ভরতায় গড়ে ওঠা এককেন্দ্রিক জ্বালানিকাঠামো। এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনে রাজনৈতিক স্বার্থে নেওয়া হয় বিশেষ আইনের সহায়তায় বিনা দরপত্রে সিদ্ধান্ত, অথচ যেগুলোর অধিকাংশই স্থায়ী সমাধান দিতে ব্যর্থ। গত সরকারের আমলে যেসব নতুন এলএনজি টার্মিনালের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা বর্তমান সরকার বাতিল করে দিয়েছে। কিন্তু বিকল্প কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় সংকট আরও গভীর হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এলএনজি আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ। তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন নিজস্ব গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগ ও পরিকল্পিত উত্তোলন। অথচ বিবিয়ানা ও তিতাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ গ্যাসক্ষেত্রগুলোতেও উৎপাদন কমে আসছে, আর পেট্রোবাংলা ডিপ ড্রিলিং থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
এই বাস্তবতায় আমাদের প্রয়োজন একটি সুদূরপ্রসারী, স্বচ্ছ ও বাস্তবভিত্তিক জ্বালানি নীতি। গ্যাস সরবরাহে সাময়িক ভারসাম্য আনতে হবে এমনভাবে, যাতে বিদ্যুৎ ও শিল্প—দুই খাতেই সীমিত হলেও কার্যকর জোগান দেওয়া যায়।
কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এর সমাধান একটাই—দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনে রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি খাতে সমন্বিত বিনিয়োগ এবং জবাবদিহিমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন।
একটি দেশের শিল্প খাতের টিকে থাকা কেবল উৎপাদনের প্রশ্ন নয়, এটি রপ্তানি, কর্মসংস্থান এবং সামগ্রিক অর্থনীতির ভিত্তি। বিদ্যুৎ দিয়ে শহর আলোকিত করে যদি শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যায়, তবে সে আলোর নিচেই অন্ধকার অপেক্ষা করবে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিচক্ষণতা ও বাস্তবতা সামনে রেখে, যাতে কোনো একটি খাতকে বাঁচাতে গিয়ে পুরো অর্থনীতিকেই না ডুবিয়ে দেওয়া হয়। দেশে এখন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায়। ভালো কোনো পরিবর্তনের লক্ষণ কি এই সরকার দেখাতে পারছে?
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে লন্ডনে অনুষ্ঠিত সভা এখন অতীত বিষয়। ওই সভার পর দেশের রাজনীতিতে অনেক কিছুই সমন্বয় হয়ে গেছে এবং এখনো হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতি একটি দ্রুত অগ্রসরমাণ বিষয়। তার কয়েক দিনও এক জায়গায় অবস্থানের সুযোগ নেই।
১ দিন আগেসম্প্রতি বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়—শুধু গবেষণায় নয়, মানবিক দায়বদ্ধতায়ও। যুক্তরাষ্ট্রের একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নেমে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেখিয়ে দিয়েছে, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেবল জ্ঞানচর্চার স্থান নয়; বরং তা ন্যায়, স্বাধীনতা ও দায়িত্বশীল...
১ দিন আগেএই জীবনে মানুষ হয়ে জন্মানো আর মানুষ হয়ে ওঠা—এই দুইয়ের মাঝে যে সংযোগ, তাকে যদি ‘ম্যাজিক রিয়্যালিজম’ বলি? কথাটির সহজ কোনো মানে কি করা যায়? জীবনের শুরুতে কিংবা বেড়ে উঠতে উঠতে কতটুকুইবা বুঝতে পারা যায়? বোঝাটুকুর জন্যই যে মনের বৃদ্ধি দরকার!
১ দিন আগেআমাদের দেশে ক্রমান্বয়ে নদী হারিয়ে যাচ্ছে। নদী হলো পরিবেশ, কৃষি, মৎস্য সম্পদ আহরণ, যোগাযোগব্যবস্থা ও সেচের অন্যতম মাধ্যম। সমাজ-সভ্যতার ক্রমবিকাশে নদীর ভূমিকা অনেক। কিন্তু দিন দিন বিভিন্ন কারণে নদী দখল হয়ে যাচ্ছে। নদীতে বর্জ্য ফেলে যখন নদীকে দূষিত করা হয়, তখন বোঝা যায় আমরা জাতি হিসেবে কতটুকু...
১ দিন আগে