Ajker Patrika

উন্নয়নকাজে বিলম্ব না হোক

সম্পাদকীয়
উন্নয়নকাজে বিলম্ব না হোক

একটু বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য অতি পরিচিত। হর্তাকর্তারা আলাপ-আলোচনায় ব্যস্ত কীভাবে এই জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান করা যায়। খুব ভালো কথা। এর বাস্তবায়ন করতে পারে কথাটা ‘সেরা’ হতে পারে! আশা সে রকমই।

একটু দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাক সেসব এলাকার দিকে, যেখানে কোনো নালার ঢাকনা নেই, বিশেষ করে পুরান ঢাকার বেশ কিছু এলাকায় এই চিত্র সারা বছর একই থাকে।

এলাকাবাসী জানান, সিটি করপোরেশন থেকে নালার ময়লা পরিষ্কার করতে এলে এসব নালার ঢাকনা তুলে ফেলা হয়। পরবর্তী সময়ে সেই ঢাকনা বসানো হয় না। বারবার ঢাকনা ওঠানো-বসানো করতে হবে বলে তারা ঢাকনাই সরিয়ে ফেলেছে একবারে। এ রকম খোলা নালায় অসচেতন নাগরিকেরা ময়লা ফেলেন আরও বেশি। ময়লা আটকে এমনিতেই নালার পানি উপচে রাস্তায় জমে থাকে। পরিবেশ হয়ে থাকে অস্বাস্থ্যকর। বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। এসব সমস্যা দেখার কেউ না কেউ তো আছেন! সেই ‘কেউ’র সাহায্য আর নাগরিক সচেতনতাই কিন্তু পারে জলাবদ্ধতার সমস্যা নিরসন করতে।

এবার একটু নগর থেকে গ্রামে যাওয়া যাক। বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বিলপাড়া খাদুলি গ্রামের এক কিলোমিটার কাঁচা একটি রাস্তা। গ্রামের লোকজন চলাচল করে। ওই রাস্তা দিয়ে কৃষকেরা মাঠ থেকে বাড়িতে ফসল আনেন। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় রাস্তাটি চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদে দেনদরবার করেও ফল পাননি গ্রামবাসী। অবশেষে তাঁরা চাঁদা তুলে ও স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তাটি সংস্কার করেছেন।

রাস্তাটির দৈর্ঘ্য বিলপাড়া খাদুলি শাপা বালিকা বিদ্যালয় থেকে গোবিন্দপুর পর্যন্ত। খবরে জানা যায়, ৫০-৬০ জন রাস্তা সংস্কারের কাজ করছেন। কেউ সড়কের পাশের জমি থেকে মাটি কাটছেন। অনেকে সেই মাটি ঝুড়িতে ভরে রাস্তায় ফেলছেন। তাঁরা জানান, দীর্ঘদিন রাস্তাটিতে সরকারিভাবে কোনো সংস্কারকাজ করা হয়নি। বিভিন্ন স্থানে মাটি ধসে রাস্তা ভেঙে গেছে। অনেক স্থানে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টি হলে সেখানে পানি জমে। চলাচলে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার কৃষকেরা। তাঁরা মাঠের ফসল ওই রাস্তা দিয়ে ঘরে তুলতে পারছেন না। তাই নিজ উদ্যোগে রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন।

এলাকাবাসী জানান, জনপ্রতিনিধিসহ অনেকের কাছে রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানানো হলেও কেউ উদ্যোগ নেননি। তাই নিজেরাই উদ্যোগ নিয়েছেন। গ্রামের সবাই সাধ্যমতো চাঁদা দিয়েছেন। প্রায় ১৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই টাকা দিয়ে কাজ শুরু করা হচ্ছে। মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুনর রশিদ বলেন, সীমিত বরাদ্দ থাকায় এ রাস্তার সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। তবে সংস্কারের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ রকম পরিস্থিতি আসলে কাম্য নয়। দেশের উন্নয়ন খাতে জনগণ নিয়মিত কর দিচ্ছে যেখানে, সেখানে উন্নয়নকাজে বিলম্ব করা কিংবা কাজের জন্য যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ না পাওয়া কোনো সুখকর ব্যাপার নয়। ঠিক এখানেই কিন্তু সরকারকে জবাবদিহি করতে হয়। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত যেকোনো উন্নয়নকাজে বিলম্ব না করা, সেটা গ্রামে হোক কিংবা মফস্বলে কিংবা পাতাছেঁড়া বইয়ের রঙিন মলাটের মতো রাজধানীতে!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লাহোরে পাল্টা আঘাত হেনে পাকিস্তানকে জবাব দিল ভারত

পাকিস্তানের চীনা জে-১০ দিয়ে ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংস, যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজরে এই টক্বর

একটি দলের ওপর ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব: মাহফুজ আলম

গতকাল রাতে ৪৮টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের

অহনার দাবি, নিজের দোষ ঢাকতে ডাবল টাইমিংয়ের কথা বলেছেন শামীম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত