Ajker Patrika

উগ্রবাদের কোনো স্থান নেই

সম্পাদকীয়
উগ্রবাদের কোনো স্থান নেই

ধর্ম মানেই মানুষের কল্যাণ, তা যে ধর্মই হোক না কেন। প্রতিটি ধর্মই একটি সুন্দর, সৎ, শান্তিময় সমাজ ও রাষ্ট্রগঠনের কথা বলে। ইসলাম ধর্মও তাই। অন্য ধর্মের মতো ইসলাম ধর্মেও মানুষ, জীব ও প্রকৃতির মধ্যে সুন্দর ভারসাম্য বজায় রেখে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার কথা বলা হয়েছে। ধর্ম সেখানে কোনো বাধা হওয়ার উপায় নেই; বরং সহায়ক।

কিন্তু বিশ্বে আজ ধর্মের নামে চরম অধর্ম দেখা যাচ্ছে, কমবেশি প্রায় সব ধর্মে। দেশে দেশে ধর্মের দোহাই দিয়ে সংঘাত, সংঘর্ষ, রক্তপাত, মানুষ খুন। ধর্মের নামে অপপ্রচার, ভুল ব্যাখ্যার বিষাক্ত ছুরি আর বারুদ হাতে ছড়িয়ে পড়ছে বিপথগামী তরুণেরা। সব ধর্মেই এদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে দেখা যায়।

ইসলাম ধর্মেও জঙ্গিবাদ নামের উগ্রপন্থা সাম্প্রতিক বিশ্বকে অস্থির করে রেখেছে। বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বে তাদের উগ্রপন্থা মারাত্মক ধর্মীয় উন্মাদনা উসকে দিয়েছে। এর রেশ পড়েছে বাংলাদেশেও। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠলেও সরকার শক্ত হাতে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। হোলি আর্টিজান ট্র্যাজেডিসহ দেশব্যাপী তাদের নিষ্ঠুর বোমাবাজি, রক্তপাত শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশের মানুষের ঘুম হারাম করে দিয়েছিল।

সরকারের শক্ত অবস্থানের কারণে সে অবস্থা থেকে দেশকে অনেকটাই মুক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে মাঝে মাঝেই তাদের আবারও সংগঠিত হতে দেখা যায়। এ রকমই একটি খবর বেরিয়েছে যে, পরিবারের নিখোঁজ তরুণদের কেউ কেউ জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছে। ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এ রকম অন্তত ১০ জনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেছে। কয়েক মাস ধরে আড়াইহাজারের এ রকম আরও অন্তত ২৫-৩০ তরুণ নিখোঁজ রয়েছে। উদ্বেগের বিষয় হলো, এই কিশোর-তরুণেরা নব্য জেএমবির সদস্য হিসেবে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে।

আমরা মনে করি, আর কোনোভাবেই বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ বা যেকোনো ধরনের ধর্মীয় উগ্রবাদ বাড়তে দেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে সরকারের জিরো টলারেন্স মনোভাব ছিল, আশা করি সামনেও থাকবে। বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী হলেও তারা শান্তিপ্রিয় এবং ধর্মচর্চায় উদার। তারা একই সমাজের সব ধর্মের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে পারস্পরিক সৌহার্দ্য বজায় রেখে চলতে পছন্দ করে। একটি অসাম্প্রদায়িক, সুন্দর, কল্যাণকামী, উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বিশ্বে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে চায়। কিছু বিপথগামী গোষ্ঠী নিরপরাধ, অবুঝ, সহজ, সরল শিশু, কিশোর ও তরুণকে ধর্মের দোহাই দিয়ে বিপথে নিয়ে যেতে প্ররোচনা দেয়।

এ সংস্কৃতি পুরো নির্মূল করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি পরিবার থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে। পরিবারে নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পরিপালন 
তথা অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে হবে। গত এক যুগে বাংলাদেশ অগ্রগতি ও উন্নতিতে বিশ্বে যে সমীহ অর্জন করছে, তাকে 
অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। এ জন্য সামান্যতম ধর্মীয় উগ্রবাদ প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র–সবাই সম্মিলিতভাবে এদের রুখে দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাবুই পাখির কান্না কেউ শুনল না, কেটে ফেলা হলো তালগাছটি

অপারেশন সিঁদুরে নেতৃত্ব দেওয়া অফিসার হচ্ছেন ভারতের র-এর প্রধান

পিআর পদ্ধতিতে ভোটাররা জানবেন না কে তাঁর এমপি, এটি বাংলাদেশের জন্য অনুপযুক্ত: সালাহউদ্দিন

নীলফামারীতে 'আটক' কুমিল্লার দুই সাংবাদিক

ডেঙ্গুতে পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তার মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত