Ajker Patrika

মর্যাদা পাক মানুষ

সম্পাদকীয়
মর্যাদা পাক মানুষ

একটা ব্যাপার কি চোখে পড়ছে কারও, নারীরা কোনো কারণে আলোচনায় এলে সবাই মিলে সেই নারীর গুষ্টি উদ্ধার করে বড় আনন্দ পাই আমরা? বিশ্বাস না হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ রকম যেকোনো একটি ঘটনার দিকে দৃষ্টি দিন। মন্তব্যগুলো লক্ষ করুন। জবাব পেয়ে যাবেন।

একজন নারীর অসহায়ত্বকে কেন্দ্র করে যেভাবে তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া হয়, তাতেই বোঝা যায়, আমরা এক ভয়াবহ মানসিক বলয়ের মধ্যে আছি। মুখে বলি মধ্যযুগীয় বর্বরতার কথা অথচ একবিংশ শতাব্দীতে এসে সে বর্বরতা, অন্তত নারীর ক্ষেত্রে, একেবারেই কমেনি। বরং নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি, অন্তত আমাদের দেশে, এখনো পাল্টায়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কথা বলেছি একটু আগেই। সংক্ষেপে বললে, ফেসবুক এখন খুব জনপ্রিয়। এই মাধ্যমে একজনকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিতে যেমন দেরি করি না, তেমনি আরেকজন সম্পর্কে কুৎসা রটনা করতেও দ্বিধা করি না। এর কারণ, এই প্ল্যাটফর্মে যা খুশি তাই লিখে ফেলা যায়। এ কাজ করতে সাত-পাঁচ ভাবা লাগে না।

ওই লোকের মা হিঁদুর বেটি। দে গালি! অমুক মেয়ে তমুক ব্যবসায়ীর টাকা হাতাচ্ছে, খারাপ না হলে করে এসব? আর এই ‘ছেঁড়ি’ তো নায়িকা, মানে যা খুশি তা করা যাবে এর সঙ্গে! সব মাছ ‘গু’ খেলেও ঘাওরা মাছের মুখে লেগে থাকে বলেই তার দোষ। সবকিছু জেনে-বুঝেও আমরা সব ‘বেটি’-দের উদ্দেশে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করব। এটাই যেন হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের একটা বড় অংশের ‘নৈতিক’ এবং ‘সামাজিক’ দায়িত্ব।

একজন নির্যাতিত ব্যক্তির সুবিচার পাইয়ে দেওয়ার জন্য তাঁর পাশে দাঁড়ানোটাই যে ‘নৈতিক’ এবং ‘সামাজিক’ দায়িত্ব—এ কথা যেন আমরা ভুলতে বসেছি। যিনি সুবিচার চাইছেন, তিনি নারী কী পুরুষ, সেটা কখনোই মুখ্য ব্যাপার হতে পারে না। আমরা মানুষকে মানুষ ভাবতে ভুলে যাচ্ছি—এটাই এক ভয়াবহ সত্য হিসেবে ধরা দিচ্ছে প্রাত্যহিক জীবনাচরণে।

মুনিয়া বা পরীমণির গায়ে ‘খারাপ মেয়ে’ তকমা লাগানোর আগে তাদের সঙ্গে কী ঘটেছে বা ঘটতে যাচ্ছিল, তা ভেবে দেখা দরকার নয়? যে অভিযোগ উঠেছে, তার সুষ্ঠু তদন্তের আগেই তাদের পাড়ি দিতে হচ্ছে অগ্নিপথ। প্রচলিত আইনের সঠিক প্রয়োগ না হলে বলশালী ক্ষমতাধরেরা তাদের অন্যায় কাজ করে যেতেই থাকবে এবং সাধারণ মানুষ ক্রমেই বুঝতে পারবে, আইন এখন শুধু ক্ষমতার সঙ্গী—সত্যের সঙ্গী নয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লাহোরে পাল্টা আঘাত হেনে পাকিস্তানকে জবাব দিল ভারত

পাকিস্তানের চীনা জে-১০ দিয়ে ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংস, যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজরে এই টক্বর

একটি দলের ওপর ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব: মাহফুজ আলম

গতকাল রাতে ৪৮টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের

অহনার দাবি, নিজের দোষ ঢাকতে ডাবল টাইমিংয়ের কথা বলেছেন শামীম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত