Ajker Patrika

গরমে অস্বস্তি

সম্পাদকীয়
গরমে অস্বস্তি

প্রকৃতিতে চলছে মৃদু বা মাঝারি তাপপ্রবাহ, দিনমান কাটে ভ্যাপসা গরমে। জ্যৈষ্ঠ মাস শুরু হয়েছে গরম দিয়ে। ঈদের দিন হালকা বৃষ্টির আভাস দেওয়া হলেও বৃষ্টির দেখা মেলেনি। বৈশাখ মাসে কিছু বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি-ঝোড়ো হাওয়া কোনো কোনো অঞ্চলে বয়ে গেলেও সারা দেশে দাবদাহ কমাতে তা সহায়ক হয়নি।

গত কয়েক দিনে সকালের দিকে গরম কিছুটা কম অনুভূত হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে থাকে গরমের তীব্রতা। বিকেলে বা সন্ধ্যায় কোথাও কোথাও খানিকটা এলেবেলে বৃষ্টি হলেও অসহ্য গরমের যন্ত্রণা কমছে না। তীব্র গরমে কয়েক দিন ধরেই অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জনজীবন। বিশেষ করে ঢাকা শহর, যশোরসহ কিছু এলাকায় গরমের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। ঘরে থাকা দায় হয়ে উঠছে। উত্তরের কোনো কোনো জেলায় গরমের তীব্রতা কম।

আশানুরূপ বৃষ্টির দেখা না পাওয়াতেই এমনটা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদেরা। নির্মল প্রশান্তির কোনো বার্তাই দিতে পারেনি আবহাওয়া অধিদপ্তর। গরমকে সঙ্গী করেই অস্থির সময় পার করতে হবে আরও কয়েকটি দিন। ধারণা করা হয়েছিল, করোনাকালে শিল্পকারখানা থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রেই উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কার্বন নিঃসরণ কমে কিছুটা হলেও প্রকৃতিতে উষ্ণতা কমবে। কার্যত তা হয়নি, প্রকৃতিতে আগের মতোই ক্রমান্বয়ে উষ্ণতা বাড়ছে।

চলতি বছরের শুরু থেকেই বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে কম। এপ্রিলেও সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭৯ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত তথ্যে বিষয়টি উঠে এসেছে। বৃষ্টি কম হওয়ার কারণ হিসেবে সেখানে বলা হয়েছে, পশ্চিমা ও পুবালি লঘুচাপের প্রভাব কম থাকায় স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির আভাস থাকলেও তাপপ্রবাহ শিগগির কমছে না, বরং গরম ছড়াবে আরও অনেক এলাকায়।

মে মাসের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। দেশের পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র এবং সারা দেশে দুয়েকটি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ আরও বিস্তার লাভ করবে, তাপমাত্রা আরও বাড়বে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে, রাতের তাপমাত্রাও বাড়তে পারে সামান্য।

তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির নিচে থাকলে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং ৪০ ডিগ্রির ওপরে উঠলে সেটিকে প্রবল তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে এখন তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধির দিকে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাতাসে আর্দ্রতা, যা গরমের ভাবকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

চলতি সপ্তাহব্যাপী মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। মে মাসের শেষে দেশের উত্তর–মধ্যাঞ্চলে দু–তিন দিন বজ্রসহ বৃষ্টি ও কালবৈশাখী এবং অন্যত্র পাঁচ-সাত দিন শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী হতে পারে। সে সময় বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা। তখন শান্তির বরিষণে স্বস্তির দেখা মিললেও মিলতে পারে। তবে প্রকৃতি স্বাভাবিক আচরণ করছে না। প্রকৃতির প্রতি মানুষের আচরণের কারণেই তার এই বৈরিতা। মানুষ সদয় হলে প্রকৃতি নির্দয় হবে না হয়তো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুরোনো রাউটার ফেলে না দিয়ে যে কাজে ব্যবহার করতে পারেন

পাকিস্তানের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার সামনে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে ভারত: ব্রিটিশ বিশ্লেষক

প্রশাসনিক আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ ভুল, আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধ সঠিক: বিএনপি

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

প্রথম ভাষণে গাজা প্রসঙ্গে যা বললেন পোপ লিও চতুর্দশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত