Ajker Patrika

হানি ট্র্যাপ

সম্পাদকীয়
হানি ট্র্যাপ

মিরপুর, শেওড়াপাড়ায় হানি ট্র্যাপের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে একটি চক্র। প্রতারক চক্রের সাতজন ধরা পড়েছে ঠিকই, কিন্তু এ ধরনের প্রতারক চক্র যে গজিয়ে উঠছে, তার গোড়া কেটে দেওয়ার উপায় কী?

‘হানি ট্র্যাপ’ শব্দটি ইদানীং বেশ পরিচিত হয়ে উঠছে। এটি প্রতারণার একটি কৌশল। নারী বা পুরুষকে ব্যবহার করে প্রেম, রোমান্স বা যৌন সম্পর্কের প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলা হয়। এরপর ব্ল্যাকমেলের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়। সামাজিক সম্মানের ভয়ে অনেকেই এই চক্রকে টাকাপয়সা দিতে বাধ্য হন। মিরপুরে এই ঘটনা ঘটেছে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে। চক্রটি চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে ফাঁদ পাতত। চাকরিপ্রার্থীরা যখন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন, তখন তাঁদের মিরপুর, শেওড়াপাড়া বা অন্য এলাকাগুলোতে নির্দিষ্ট বাসায় ডেকে নেওয়া হতো। এরপরই হানি ট্র্যাপের মাধ্যমে নারীদের সঙ্গে তাঁদের ছবি তুলে, ভিডিও করে ব্ল্যাকমেল করা হতো। এ রকম প্রতারণার শিকার কয়েকজনের কথাও রয়েছে প্রতিবেদনে। সাক্ষাৎকারের নামে নির্দিষ্ট বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের মারধর এবং নারীদের সঙ্গে ছবি তুলতে বাধ্য করেই এই কাণ্ডগুলো ঘটানো হয়েছে।

হানি ট্র্যাপের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা আমাদের দেশে উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। এটি একটি ভয়ংকর সামাজিক ও আইনগত অপরাধ। সচেতনতা সৃষ্টি না হলে এই প্রবণতা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না।

বেকারত্বের হার বেশি বলে চটকদার বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে অনেকেই চাকরির জন্য আবেদন করেন। তাঁরা খেয়াল করে দেখেন না, যারা বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা ও রেজিস্ট্রেশন বৈধ কি না। চাকরির কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু তাদের কোনো অফিস নেই, অফিশিয়াল ই-মেইল নেই—এ রকম যদি হয়, তাহলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। এখানে কোনো ফাঁদ পাতা আছে কি না, তা বুঝতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেরও ভূমিকা রয়েছে। হানি ট্র্যাপ কী, কীভাবে কাজ করে, কীভাবে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব, সে ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা হলে অনেক চাকরিপ্রার্থীই সতর্ক হওয়ার সুযোগ পাবেন।

শুধু চাকরির প্রলোভন দেখিয়েই হানি ট্র্যাপ প্রতারণা চলে না। নানাভাবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে মানুষকে আকৃষ্ট করে এই প্রতারণা করা হয়। বন্ধুত্ব করে, দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করে শিকারকে প্রলুব্ধ করা হয়। ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব কখনো কখনো কতটা ভয়ানক হতে পারে, তা শিকারদের অনেকেই বুঝতে পারেন না। শিকারিরা তক্কে তক্কে থাকে। সুযোগ বুঝে প্রতারণা করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সতর্ক ব্যবহার হানি ট্র্যাপের হাত থেকে মুক্তি দিতে পারে। অচেনা চাকরির অফার যাচাই না করে যোগাযোগ না করা, সন্দেহ হলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে।

এ ধরনের মধু-চক্রের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা হলে অন্য অপরাধী চক্রগুলো তাদের অপকর্ম গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে। অন্তত তাদের তৎপরতা অনেকাংশে কমে যাবে। সে ব্যবস্থা করাই জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চোখের জলে বিদায় সাংবাদিক বিভুরঞ্জনকে

ডাকসু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হলে সব বলে দেব: উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান

বুড়িগঙ্গা থেকে তরুণ-তরুণীর হাত বাঁধা লাশ উদ্ধার

অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশকালে বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তাকে আটকের দাবি বিএসএফের

বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে বৈঠক করলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত