মাসুদ রানা
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ৮ এপ্রিল জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সভায় বলেছেন, ‘মানুষ এরই মধ্যে বুঝেছে প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে ক্ষমতার কোনো লোভ নেই। আমি যতটুকু বুঝতে পারি ড. ইউনূস ভোটটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দিয়ে চলে যেতে চান। কিন্তু কেউ কেউ দেখছি তাঁকে জোর করে পাঁচ বছর ক্ষমতায় রাখতে চান, কিন্তু কেন? তিনি ভালো কাজ করছেন, তাই যদি মনে করেন তাঁকে দেশের কল্যাণে রাখতে হবে, তাহলে বিকল্প কিছু চিন্তা করেন। কেন তাঁকে দিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করে বিতর্কিত করতে হবে?’
মান্না আরও বলেন, ‘ড. ইউনূস মনে হয় রাজনৈতিক দলগুলোকে এখন পর্যন্ত চারবার ডেকেছেন বিভিন্ন ইস্যুতে। কিন্তু তিনি একবারও রাজনীতি নিয়ে, সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক ডাকেননি। উনি ডেকেছেন ইস্যু নিয়ে। ঈদযাত্রা নিয়ে তিনি ম্যাজিক দেখিয়েছেন, এখন রাজনৈতিক বিতর্কে কী ম্যাজিক দেখাবেন?’
রাষ্ট্রীয় মূলনীতি প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমাদের ভিন্নমতকে ধারণ করতে হবে। ভিন্নমতকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। রাষ্ট্রীয় মূলনীতি নিয়ে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে আমি একমত নই। সংস্কার কমিশনের শতাধিক প্রস্তাবের সঙ্গেই নাগরিক ঐক্য একমত নয়।’
মান্না বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রের মূলনীতির মধ্যে সমাজতন্ত্র ছিল। এখনো অনেকেই আছেন সমাজতন্ত্র রাখার পক্ষে। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং আমার দলের পক্ষ থেকে মনে করি সমাজতন্ত্র এখন আমাদের লক্ষ্য নয়। রাশিয়া এবং পুরো পূর্ব ইউরোপে সমাজতন্ত্রের ধস নামার পরে সমাজতন্ত্র মূলনীতি হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
মাহমুদুর রহমান মান্নার এসব বক্তব্য খুব নতুন কিছু না হলেও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। নির্বাচন পিছিয়ে ড. ইউনূসকে ক্ষমতায় রাখার কলকাঠি যে নড়ছে, সেটা তিনি তুলে ধরেছেন।
ড. ইউনূসকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, তিনি দলনিরপেক্ষ, নির্মোহ এবং প্রশাসনিক দক্ষতায় ব্যতিক্রমী। রোজার ঈদকে ঘিরে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল থাকা এবং যান চলাচল সুষ্ঠু ও শৃঙ্খল থাকাকে ড. ইউনূসের ম্যাজিক সাফল্য হিসেবে সামনে এলেও রাজনীতির মরচে দূর করার ক্ষেত্রে দক্ষতার স্বাক্ষর দেখা যায়নি। অথচ এরই মধ্যে তাঁর চারপাশে এমন একটি পরিস্থিতি গড়ে উঠছে, যেখানে তাঁকে কেন্দ্র করে ক্ষমতার একটি দীর্ঘমেয়াদি কাঠামো প্রতিষ্ঠার প্রয়াস দেখা যাচ্ছে। মান্নার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে এই প্রবণতাই তাঁর প্রধান উদ্বেগের কারণ। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ড. ইউনূস যদি সত্যিই দ্রুত ভোট দিয়ে সরে যেতে চান, তাহলে তাঁকে ধরে রাখার প্রচেষ্টা তাঁকে বিতর্কিত করে তুলবে এবং এর ফলে গণতন্ত্রের যেটুকু বিশ্বাসযোগ্যতা অবশিষ্ট আছে, তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
মান্না তাঁর বক্তব্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছেন, তা হলো ড. ইউনূসের উদ্যোগে বিভিন্ন ইস্যুতে দলগুলোকে ডাকা হলেও, এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কার বা রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরির জন্য সরাসরি কোনো বৈঠক হয়নি। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, অন্তর্বর্তী সরকারের মনোযোগ এখনো প্রশাসনিক দক্ষতা প্রদর্শন এবং নাগরিক সেবা উন্নত করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, অথচ রাজনৈতিক সংকট ও আস্থাহীনতার এ সময়টায় একটি মৌলিক পরিবর্তনের রূপরেখা উপস্থাপন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা বেশি জরুরি।
রাষ্ট্রীয় মূলনীতি প্রসঙ্গে মান্নার মন্তব্য বাংলাদেশের আদর্শিক বিভাজন ও রাজনৈতিক চিন্তাধারার এক নতুন পাঠ তৈরি করে। একসময়ে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ঝান্ডাবাহী মান্নার যে আর সমাজতন্ত্রের প্রতি আস্থা নেই, এটা পরিষ্কার করেছেন। তিনি এটাও তুলে ধরেছেন যে তাঁর দল নাগরিক ঐক্য সংস্কার কমিশনের অধিকাংশ প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নয়। এই অবস্থান এটা মনে করিয়ে দেয় যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আদর্শগত সংলাপ, বিতর্ক এবং সমঝোতার যে আবশ্যিকতা, তা আজও পূর্ণতা পায়নি।
সার্বিকভাবে মান্নার বক্তব্য থেকে যে চিত্রটি উঠে আসে তা হলো, বাংলাদেশ আজ এক অন্তর্বর্তী ভারসাম্যে দাঁড়িয়ে আছে। যেখানে একদিকে রয়েছে ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা, অন্যদিকে রয়েছে গণতন্ত্রের সম্ভাব্য হুমকি, রাজনৈতিক বৈচিত্র্যের সংকুচিত হয়ে পড়া। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি মানুষের ইতিবাচক মনোভাব বা ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তাকে যদি ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তবে তা গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। মান্না মূলত এই সম্ভাব্য বিপদের পূর্বাভাসই দিয়েছেন, যা উপেক্ষা করা হলে ভবিষ্যতের রাজনীতি আরও সংকটজনক হয়ে উঠতে পারে।
মান্না বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ব্যতিক্রমী চরিত্র, যিনি মূলধারার দলীয় রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে একধরনের বিকল্প কণ্ঠ হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যুক্ত হন। কিন্তু আওয়ামী লীগের মূলধারায় দীর্ঘ সময় থাকার পরও তিনি ধীরে ধীরে সরে আসেন এবং নিজের রাজনৈতিক অবস্থান নতুনভাবে নির্মাণ করতে থাকেন।
মান্নার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি প্রথাগত রাজনৈতিক ভাষা ও কৌশল থেকে কিছুটা ভিন্ন। তাঁর বক্তব্যে প্রায়ই তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণ, সরল উচ্চারণ এবং স্পষ্ট মতপ্রকাশ দেখা যায়। তিনি দুর্নীতিবিরোধী, গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী এবং অনেক সময়ই মূল রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সীমাবদ্ধতা, ক্ষমতার লোভ কিংবা জনবিচ্ছিন্নতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
মান্নার রাজনীতির বড় দুর্বলতা হলো, তিনি রাজনীতিতে এক পরিচিত মুখ হয়ে উঠলেও তাঁর দলটির গণভিত্তি তেমন মজবুত করতে পারেননি। তবে রাজনৈতিক সংস্কার, মানবিক রাষ্ট্র, স্বচ্ছ শাসনব্যবস্থা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তিনি ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, নির্বাচনব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রের নৈতিকতা নিয়ে কথা বলে যাচ্ছেন। তিনি কখনো সরাসরি লড়াইয়ে নামেন না, কিন্তু তাঁর কণ্ঠে একধরনের ‘পলিটিক্যাল ওয়াচডগ’-এর ভূমিকা দেখা যায়, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে মূল্যবান। হয়তো তিনি প্রধান ধারার রাজনীতিতে ক্ষমতার কেন্দ্রে নেই, কিন্তু তাঁর বক্তব্য, সতর্কতা এবং স্পষ্টতা অনেক সময় মূলধারার রাজনীতির জন্য আয়নার কাজ করে। এ জন্যই তাঁর রাজনীতি মূল্যায়নের সময় এটিকে ভিন্ন পথের, কিন্তু ‘প্রয়োজনীয়’ বলেই বিবেচনা করা উচিত।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ৮ এপ্রিল জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সভায় বলেছেন, ‘মানুষ এরই মধ্যে বুঝেছে প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে ক্ষমতার কোনো লোভ নেই। আমি যতটুকু বুঝতে পারি ড. ইউনূস ভোটটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দিয়ে চলে যেতে চান। কিন্তু কেউ কেউ দেখছি তাঁকে জোর করে পাঁচ বছর ক্ষমতায় রাখতে চান, কিন্তু কেন? তিনি ভালো কাজ করছেন, তাই যদি মনে করেন তাঁকে দেশের কল্যাণে রাখতে হবে, তাহলে বিকল্প কিছু চিন্তা করেন। কেন তাঁকে দিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করে বিতর্কিত করতে হবে?’
মান্না আরও বলেন, ‘ড. ইউনূস মনে হয় রাজনৈতিক দলগুলোকে এখন পর্যন্ত চারবার ডেকেছেন বিভিন্ন ইস্যুতে। কিন্তু তিনি একবারও রাজনীতি নিয়ে, সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক ডাকেননি। উনি ডেকেছেন ইস্যু নিয়ে। ঈদযাত্রা নিয়ে তিনি ম্যাজিক দেখিয়েছেন, এখন রাজনৈতিক বিতর্কে কী ম্যাজিক দেখাবেন?’
রাষ্ট্রীয় মূলনীতি প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমাদের ভিন্নমতকে ধারণ করতে হবে। ভিন্নমতকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। রাষ্ট্রীয় মূলনীতি নিয়ে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে আমি একমত নই। সংস্কার কমিশনের শতাধিক প্রস্তাবের সঙ্গেই নাগরিক ঐক্য একমত নয়।’
মান্না বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রের মূলনীতির মধ্যে সমাজতন্ত্র ছিল। এখনো অনেকেই আছেন সমাজতন্ত্র রাখার পক্ষে। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং আমার দলের পক্ষ থেকে মনে করি সমাজতন্ত্র এখন আমাদের লক্ষ্য নয়। রাশিয়া এবং পুরো পূর্ব ইউরোপে সমাজতন্ত্রের ধস নামার পরে সমাজতন্ত্র মূলনীতি হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
মাহমুদুর রহমান মান্নার এসব বক্তব্য খুব নতুন কিছু না হলেও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। নির্বাচন পিছিয়ে ড. ইউনূসকে ক্ষমতায় রাখার কলকাঠি যে নড়ছে, সেটা তিনি তুলে ধরেছেন।
ড. ইউনূসকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, তিনি দলনিরপেক্ষ, নির্মোহ এবং প্রশাসনিক দক্ষতায় ব্যতিক্রমী। রোজার ঈদকে ঘিরে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল থাকা এবং যান চলাচল সুষ্ঠু ও শৃঙ্খল থাকাকে ড. ইউনূসের ম্যাজিক সাফল্য হিসেবে সামনে এলেও রাজনীতির মরচে দূর করার ক্ষেত্রে দক্ষতার স্বাক্ষর দেখা যায়নি। অথচ এরই মধ্যে তাঁর চারপাশে এমন একটি পরিস্থিতি গড়ে উঠছে, যেখানে তাঁকে কেন্দ্র করে ক্ষমতার একটি দীর্ঘমেয়াদি কাঠামো প্রতিষ্ঠার প্রয়াস দেখা যাচ্ছে। মান্নার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে এই প্রবণতাই তাঁর প্রধান উদ্বেগের কারণ। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ড. ইউনূস যদি সত্যিই দ্রুত ভোট দিয়ে সরে যেতে চান, তাহলে তাঁকে ধরে রাখার প্রচেষ্টা তাঁকে বিতর্কিত করে তুলবে এবং এর ফলে গণতন্ত্রের যেটুকু বিশ্বাসযোগ্যতা অবশিষ্ট আছে, তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
মান্না তাঁর বক্তব্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছেন, তা হলো ড. ইউনূসের উদ্যোগে বিভিন্ন ইস্যুতে দলগুলোকে ডাকা হলেও, এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কার বা রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরির জন্য সরাসরি কোনো বৈঠক হয়নি। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, অন্তর্বর্তী সরকারের মনোযোগ এখনো প্রশাসনিক দক্ষতা প্রদর্শন এবং নাগরিক সেবা উন্নত করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, অথচ রাজনৈতিক সংকট ও আস্থাহীনতার এ সময়টায় একটি মৌলিক পরিবর্তনের রূপরেখা উপস্থাপন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা বেশি জরুরি।
রাষ্ট্রীয় মূলনীতি প্রসঙ্গে মান্নার মন্তব্য বাংলাদেশের আদর্শিক বিভাজন ও রাজনৈতিক চিন্তাধারার এক নতুন পাঠ তৈরি করে। একসময়ে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ঝান্ডাবাহী মান্নার যে আর সমাজতন্ত্রের প্রতি আস্থা নেই, এটা পরিষ্কার করেছেন। তিনি এটাও তুলে ধরেছেন যে তাঁর দল নাগরিক ঐক্য সংস্কার কমিশনের অধিকাংশ প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নয়। এই অবস্থান এটা মনে করিয়ে দেয় যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আদর্শগত সংলাপ, বিতর্ক এবং সমঝোতার যে আবশ্যিকতা, তা আজও পূর্ণতা পায়নি।
সার্বিকভাবে মান্নার বক্তব্য থেকে যে চিত্রটি উঠে আসে তা হলো, বাংলাদেশ আজ এক অন্তর্বর্তী ভারসাম্যে দাঁড়িয়ে আছে। যেখানে একদিকে রয়েছে ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা, অন্যদিকে রয়েছে গণতন্ত্রের সম্ভাব্য হুমকি, রাজনৈতিক বৈচিত্র্যের সংকুচিত হয়ে পড়া। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি মানুষের ইতিবাচক মনোভাব বা ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তাকে যদি ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তবে তা গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। মান্না মূলত এই সম্ভাব্য বিপদের পূর্বাভাসই দিয়েছেন, যা উপেক্ষা করা হলে ভবিষ্যতের রাজনীতি আরও সংকটজনক হয়ে উঠতে পারে।
মান্না বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ব্যতিক্রমী চরিত্র, যিনি মূলধারার দলীয় রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে একধরনের বিকল্প কণ্ঠ হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যুক্ত হন। কিন্তু আওয়ামী লীগের মূলধারায় দীর্ঘ সময় থাকার পরও তিনি ধীরে ধীরে সরে আসেন এবং নিজের রাজনৈতিক অবস্থান নতুনভাবে নির্মাণ করতে থাকেন।
মান্নার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি প্রথাগত রাজনৈতিক ভাষা ও কৌশল থেকে কিছুটা ভিন্ন। তাঁর বক্তব্যে প্রায়ই তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণ, সরল উচ্চারণ এবং স্পষ্ট মতপ্রকাশ দেখা যায়। তিনি দুর্নীতিবিরোধী, গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী এবং অনেক সময়ই মূল রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সীমাবদ্ধতা, ক্ষমতার লোভ কিংবা জনবিচ্ছিন্নতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
মান্নার রাজনীতির বড় দুর্বলতা হলো, তিনি রাজনীতিতে এক পরিচিত মুখ হয়ে উঠলেও তাঁর দলটির গণভিত্তি তেমন মজবুত করতে পারেননি। তবে রাজনৈতিক সংস্কার, মানবিক রাষ্ট্র, স্বচ্ছ শাসনব্যবস্থা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তিনি ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, নির্বাচনব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রের নৈতিকতা নিয়ে কথা বলে যাচ্ছেন। তিনি কখনো সরাসরি লড়াইয়ে নামেন না, কিন্তু তাঁর কণ্ঠে একধরনের ‘পলিটিক্যাল ওয়াচডগ’-এর ভূমিকা দেখা যায়, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে মূল্যবান। হয়তো তিনি প্রধান ধারার রাজনীতিতে ক্ষমতার কেন্দ্রে নেই, কিন্তু তাঁর বক্তব্য, সতর্কতা এবং স্পষ্টতা অনেক সময় মূলধারার রাজনীতির জন্য আয়নার কাজ করে। এ জন্যই তাঁর রাজনীতি মূল্যায়নের সময় এটিকে ভিন্ন পথের, কিন্তু ‘প্রয়োজনীয়’ বলেই বিবেচনা করা উচিত।
নেদারল্যান্ডসের নাগরিক পিটার ভ্যান উইঙ্গারডেন ও মিনকে ভ্যান উইঙ্গারডেন। তাঁরা ২০১২ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে বিজনেস ট্রিপে গিয়েছিলেন। সেখানে হারিকেন স্যান্ডির মুখোমুখি হন। হারিকেন স্যান্ডি ম্যানহাটানকে প্লাবিত করে। সেখানকার বাসিন্দাদের বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়। ঝড়ের কারণে
১৮ ঘণ্টা আগেআমাদের পুঁজিতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্রে শ্রমিকশ্রেণির প্রকৃত স্বার্থরক্ষার উপায় নেই। যেহেতু বিদ্যমান ব্যবস্থাটি হচ্ছে শ্রম-শোষণের এবং শ্রমিক-নিগ্রহের উর্বর ক্ষেত্র। সে ক্ষেত্রে শ্রমিকশ্রেণির স্বার্থরক্ষা কিংবা সুরক্ষার উপায় নেই। শ্রমিকমাত্রই শ্রমবাজারে শ্রম বিনিয়োগ করবেন এবং বিনিময়ে পাবেন মজুরি।
১৮ ঘণ্টা আগেদিন দিন আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। মানসিক বিড়ম্বনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। ধারণাটা হয়তো এ রকম যে, মরতে যখন হবেই তখন আজই কী আর কালইবা কী! স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা যখন নেই, তখন অস্বাভাবিক মৃত্যু যেকোনো সময় হতেই পারে। তবে মৃত্যুর প্রস্তুতিটা সহজ নয়; বেশ কঠিন।
১৮ ঘণ্টা আগেসাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া ও ইছামতী নদী থেকে চিংড়ির পোনা সংগ্রহের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। নদী থেকে এভাবে পোনা মাছ ধরা নিষিদ্ধ। কিন্তু তাদের দৈনিক আয় সামান্য হলেও বিকল্প কর্মসংস্থানের অভাবে তারা এ কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। মৎস্য কর্মকর্তারা বিকল্প জীবিকার কথা বলে
১৮ ঘণ্টা আগে