Ajker Patrika

উপমহাদেশজুড়ে রাজনীতির খেলা

ইতিহাস বিকৃতি, ইতিহাসের রাজনৈতিকীকরণ, ইতিহাসকে নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী পুনর্লিখন, ইতিহাস থেকে কাউকে মুছে ফেলা কিংবা অপ্রাসঙ্গিকভাবে কাউকে সেখানে যুক্ত করার হীনচেষ্টা বাংলাদেশেও কম হয়নি এবং এখনো তা অব্যাহত আছে। ১৯৭০-এর দশক থেকে শুরু করে গত পাঁচ দশকে প্রায় সব শাসকের আমলেই এটি কমবেশি হয়েছে এবং কখনো কখনো তা এতটাই কদর্যভাবে হয়েছে যে, খোদ স্বাধীনতাবিরোধীরাও স্বাধীনতার ইতিহাস লিখতে চেয়েছেন।

আবু তাহের খান 
ভারতে অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইতে মোগল সম্রাট আকবরকে বর্বর এবং বাবরকে নির্মম বলা হয়েছে।
ভারতে অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইতে মোগল সম্রাট আকবরকে বর্বর এবং বাবরকে নির্মম বলা হয়েছে।

১৯৩৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের লাহোর অধিবেশনের আগপর্যন্ত ইংরেজবিরোধী আন্দোলনে কংগ্রেসের দাবি ছিল মূলত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে একটি ডোমিনিয়ন বা অঙ্গরাজ্য প্রতিষ্ঠা। অন্যদিকে এর তিন মাস পর ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনের পূর্ব পর্যন্ত তাদের অবস্থানও ছিল প্রায় একই রূপ। অর্থাৎ ১৯৩৯ বা ১৯৪০-এর আগপর্যন্ত ইংরেজবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী কংগ্রেস বা মুসলিম লীগ কেউই পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি তোলেনি, একধরনের স্বায়ত্তশাসন চেয়েছে মাত্র। অথচ এরও বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে আসছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু এবং এ নিয়ে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণে তাঁকে কংগ্রেস সভাপতির পদও ত্যাগ করতে হয় বা তিনি তা করতে বাধ্য হন।

ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতবর্ষের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি করেন প্রথম সুভাষ চন্দ্র বসু। কিন্তু তাঁকে ১৯৪৭-উত্তর গত ৭৮ বছরের ইতিহাসে উপমহাদেশের দেশগুলোর রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা কোনো শাসক আজ পর্যন্ত স্বাধীনতার অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে সে সম্মান বা স্বীকৃতিটুকু দেননি। কারণ, তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই ইতিহাসের তথ্যকে বিকৃত বা বিভাজিত করে নিজ নিজ দলের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের কাজে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। বিষয়টির অবতারণা করলাম অতিসম্প্রতি ভারতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোগল ইতিহাসের পাঠ পরিবর্তনসংক্রান্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। সেই ঔপনিবেশিক ইংরেজ আমল থেকে শুরু হয়ে স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রায় আট দশক ধরে ভারতীয় শিক্ষার্থীরা মোগল সম্রাটদের সম্পর্কে যে ইতিহাস পড়ে আসছিল, সেখানকার হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার হঠাৎ করেই এখন সে পাঠকে বদলে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বা ইতিমধ্যে তা অনেকখানি করেও ফেলেছে। ভারতের জাতীয় পাঠ্যক্রম প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান এনসিইআরটি-এর উদ্যোগে সম্প্রতি প্রকাশিত অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইয়ের সংশোধিত ভাষ্যে মোগল সম্রাট আকবরকে আখ্যায়িত করা হয়েছে বর্বর এবং বাবরকে নির্মম হিসেবে।

এতকাল ধরে ভারতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠ্যক্রমে মোগল ইতিহাসের যে তথ্য ও বিবরণ সন্নিবেশিত ছিল, সেটি ছিল বস্তুত এ বিষয়ে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের খ্যাতিমান ইতিহাসবিদের দেওয়া বর্ণনা ও তথ্যেরই অনুরূপ। এবং সেটি জওহরলাল নেহরু থেকে শুরু করে মনমোহন সিং পর্যন্ত পূর্ববর্তী সাত দশকের কোনো ক্ষমতাসীন সরকারই পরিবর্তনের প্রয়োজন বোধ করেনি, এমনকি এদের মধ্যে একাধিক ডানপন্থী সরকার ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার স্বীকৃত ইতিহাস গ্রন্থের ওই বর্ণনা ও তথ্য মানতে রাজি নয়। এমনকি তারা খোদ ভারতবর্ষের ইতিহাসও চায় না। ভারতকে ছাপিয়ে তারা চায় হিন্দুত্বের প্রাধান্যযুক্ত ইতিহাস। কারণ, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশ বা রাষ্ট্রের চেয়েও তাদের কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রাজনীতিতে ধর্মের কৌশলী ব্যবহারের সুযোগ। আশঙ্কা করা যায়, ভারতের রাষ্ট্রক্ষমতায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী সরকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ইতিহাস বিকৃতির এ ধারাও নিকট ভবিষ্যতের দিনগুলোতে অব্যাহত থাকবে।

ভারতের মতো এ ধরনের ইতিহাস বিকৃতির ঘটনা পাকিস্তান ও বাংলাদেশে আরও বহু আগে থেকেই শুরু হয়েছে। ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে গোড়া থেকেই অসীম সাহসিকতার সঙ্গে লড়ে যাওয়া এবং প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত উপমহাদেশের পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে থাকা সত্ত্বেও পাখতুন নেতা খান আবদুল গাফফার খানকে (‘সীমান্ত গান্ধী’ নামে সমধিক পরিচিত) পাকিস্তানি শাসকেরা কোনো অভিযোগ ছাড়াই ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত গৃহবন্দী করে রেখেছিলেন। নেপথ্যের কারণ একটাই—ইংরেজ শাসন অবসানের সময় তিনি উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশকে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতা প্রদানের দাবি তুলেছিলেন এবং সেই ‘অপরাধে’ ১৯৮৮ সালে মৃত্যুবরণ করার আগপর্যন্ত বেশির ভাগ সময় তাঁকে পাকিস্তানের কারাগারেই কাটাতে হয়েছিল। তাঁকে পাকিস্তানি শাসকেরা সে দেশের জনগণের কাছে অনেকটা ‘ভিলেন’ হিসেবে তুলে ধরার অপচেষ্টা চালান, যা সেখানে এখনো অব্যাহত আছে। পাকিস্তান ১৯৭১-এ জাতিসংঘে গিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অভিহিত করেছিল কতিপয় দুষ্কৃতকারীর বিচ্ছিন্ন হামলা হিসেবে। কিন্তু ইতিহাস কি তাই বলে?

ইতিহাস বিকৃতি, ইতিহাসের রাজনৈতিকীকরণ, ইতিহাসকে নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী পুনর্লিখন, ইতিহাস থেকে কাউকে মুছে ফেলা কিংবা অপ্রাসঙ্গিকভাবে কাউকে সেখানে যুক্ত করার হীনচেষ্টা বাংলাদেশেও কম হয়নি এবং এখনো তা অব্যাহত আছে। ১৯৭০-এর দশক থেকে শুরু করে গত পাঁচ দশকে প্রায় সব শাসকের আমলেই এটি কমবেশি হয়েছে এবং কখনো কখনো তা এতটাই কদর্যভাবে হয়েছে যে, খোদ স্বাধীনতাবিরোধীরাও স্বাধীনতার ইতিহাস লিখতে চেয়েছেন। তদুপরি ইতিহাসের প্রমাণক তথ্য ও নিদর্শন ধ্বংসের মাধ্যমে ইতিহাসকে অদৃশ্য করে ফেলার হীনচেষ্টাও চোখে পড়ার মতো। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এ ধরনের হীন অপচেষ্টার সঙ্গে ভারতের বর্তমান বিজেপি সরকারের ইতিহাস পুনর্লিখন চেষ্টার যথেষ্ট মিল রয়েছে। সম্রাট বাবরের আমলে উত্তর প্রদেশে অযোধ্যায় নির্মিত (নির্মাণকাল ১৫২৮-১৫২৯) বাবরি মসজিদকে বিজেপি সরকার ইতিমধ্যে আদালতের রায়ের কথা বলে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। উল্লেখ্য, আদালতের ওই রায়ের ভিত্তি হচ্ছে দেশটির প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের দেওয়া অতি ক্ষীণ ও দুর্বল মন্তব্য—বাবরি মসজিদের নিচে উত্তর ভারতের মন্দিরগুলোর সঙ্গে জড়িত স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের ধ্বংসাবশেষ থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া একটি নির্বাহী বিভাগের দেওয়া ‘ইঙ্গিতে’র ভিত্তিতে আদালতের রায় চূড়ান্তকরণের এরূপ নজির বোধ হয় কেবল ঔপনিবেশিক-উত্তর এ উপমহাদেশীয় দেশগুলোর আদালতেই সম্ভব।

সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য স্থানে বিভিন্ন ভবন ও স্থাপনার নাম থেকে যেভাবে সত্যেন্দ্রনাথ বসু, জগদীশচন্দ্র বসু ও কুদরাত-এ-খুদার মতো বাঙালির গর্বের বিজ্ঞানী এবং স্বাধীনতাসংগ্রামের সর্বজনস্বীকৃত নেতাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, সেটি স্পষ্টতই হীনতাপূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ইতিহাসকে বলি দেওয়ার শামিল। বস্তুত হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক এত বেশিবার রদবদল করা হয়েছে এবং সেখানে এমন সব অনাকাঙ্ক্ষিত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যে, সাধারণ নাগরিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তা শুধু ব্যাপক বিভ্রান্তিই সৃষ্টি করেনি, জনগণকে নিজ জাতিগোষ্ঠীর গৌরবময় ইতিহাসকে জানার ব্যাপারে ব্যাপকভাবে নিরাসক্তও করে তুলেছে। বিষয়টি একটি স্বাধীন জাতিগোষ্ঠীর জন্য অত্যন্ত অমর্যাদাকর ও অগৌরবের এবং নিকট ভবিষ্যতের জন্যও এটি হতাশাব্যঞ্জক।

সব মিলিয়ে ইতিহাসের বিকৃতি ও একে নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থে ব্যবহারের যে নতুন ধারার রাজনৈতিক খেলা উপমহাদেশজুড়ে শুরু হয়েছে, সেটি থামাতে না পারলে শিগগিরই এ দেশগুলোর রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজে মূল্যবোধজনিত এক বড় ধরনের অধঃপতন নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা অর্থনৈতিক বিপর্যয়েরও কারণ হতে পারে, বিশেষত বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলোতে। বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে বিদেশি উদ্যোক্তারা যে বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছে না, সেটি শুধু একটি স্থায়ী সরকার নেই বলেই নয়; বরং তা এ কারণেও যে, এ দেশে এখন উগ্র ডানপন্থা ও মৌলবাদের উত্থান ঘটছে, যারা দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাসকে রাতারাতি পাল্টে দিতে চায়। এমতাবস্থায় ইতিহাস ও রাজনীতির বিকৃতি ও সংকীর্ণ স্বার্থভিত্তিক ব্যবহার রোধ করতে হলে সর্বাগ্রে রাষ্ট্রের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণমুখী রাজনীতির পথ অনুসন্ধান করতে হবে। আর সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি হতে পারে দেশের শ্রমজীবী কৃষক ও শ্রমিকশ্রেণির জনগণ, যাদের মধ্যে ইতিহাস বিকৃতি সাধনের কোনো তাড়না বা আকাঙ্ক্ষা নেই।

কিন্তু দেশের শ্রমজীবী জনগণকে যারা ঐক্যবদ্ধ করতে পারত, প্রগতিশীল ধারার সেই রাজনৈতিক দলগুলো এখন অনেকটাই ক্ষয়িষ্ণু ও শক্তিহীন। ফলে এ কাজে নতুন প্রজন্মের শিক্ষিত তরুণেরাই আপাতত শেষ ভরসা। কিন্তু প্রচলিত ধারার রাষ্ট্র ও রাজনীতির প্রতি বিরক্ত, ক্ষুব্ধ ও বীতশ্রদ্ধ ও হতাশ হয়ে তারা যেভাবে দেশ ছাড়ছে, তাতে কি সেই ভরসা থাকছে? অন্যদিকে মাঠে বর্তমানে যে রাজনীতিকেরা আছেন, তাঁরাও যে সর্বক্ষণের স্বার্থচিন্তা, সুবিধাবাদিতা এবং উগ্র ও সর্বখেকো আচার-আচরণ বিসর্জন দিয়ে নিজেদের জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে সচেষ্ট হবেন, সে রকম লক্ষণ চোখে পড়ছে না। এমতাবস্থায়, বাংলাদেশের নিকট ভবিষ্যতের কল্পিত প্রতিচ্ছবি বস্তুতই ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। যে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪৩ শতাংশই তরুণ এবং যাদের প্রায় সবাই প্রচণ্ড পরিশ্রমী ও একটি বড় অংশ সৃজনশীল চিন্তাভাবনার অধিকারী, কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর অবিমৃষ্যকারিতায় সে দেশ সাময়িকভাবে সমস্যায় পড়লেও স্থবিরতা কাটিয়ে একসময় উঠে দাঁড়াবেই। আমরা তেমনি একটি বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষাতেই রইলাম, যেখানে ইতিহাসের বিকৃতি সাধনের পরিবর্তে রাষ্ট্র এর যথাযথ সংরক্ষণ করবে এবং এর ইতিবাচক অনুকরণীয় প্রভাব উপমহাদেশের অন্য দেশগুলোর রাষ্ট্রব্যবস্থার ওপরও পড়বে।

লেখক: সাবেক পরিচালক, বিসিক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ‘সন্ত্রাসী খেল’ ফাঁস করে দিলেন জঙ্গিগোষ্ঠী জইশের সদস্য

বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে আসিফ নজরুলের পুরোনো ফেসবুক পোস্ট নতুন করে ভাইরাল করলেন হাসনাত

বাংলাদেশসহ ৫ প্রতিবেশীকেই নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছে ভারত

‘সোহরাব-রুস্তম’ সিনেমায় ইলিয়াস কাঞ্চনের নায়িকার জীবনের করুণ অবসান!

৫ ইসলামি ব্যাংকে বসছে প্রশাসক, একীভূতকরণে লাগবে দুই বছর: বাংলাদেশ ব্যাংক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত