হারুনুর রশীদ, টাঙ্গাইল
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে একটি নিরীহ পোষা বিড়ালের ওপর নির্মম নির্যাতনের অমানবিক একটি ঘটনা। অভিযোগের সূত্রপাত ‘ক্যাট সোসাইটি অব বাংলাদেশ’ নামের একটি গ্রুপে, যেখানে ‘ইলমা ইলমা’ নামের এক তরুণী জানান, তাঁর পোষা পাঁচ মাস বয়সী সাদা মেয়েবিড়ালটিকে এক প্রতিবেশীর বাসায় রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। অভিযুক্ত পরিবারটির একজন সদস্য দেশের অন্যতম টেলিকম কোম্পানি গ্রামীণফোনে ডেপুটি ডিরেক্টর, অন্যজন ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যারিস্টোফার্মার কর্মকর্তা। এ ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষুব্ধ মানুষ ওই দম্পতির ছবি, পদবি ও প্রতিষ্ঠান দুটির নাম সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ঘটনাটি যতটা না একটি প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতার চিত্র, তার চেয়েও বড় হয়ে উঠেছে আমাদের সমাজে মানবিকতা, সহানুভূতি ও দায়িত্ববোধের অভাবের প্রতিফলন হিসেবে।
প্রশ্ন ওঠে—একটি নিরীহ প্রাণীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলার মানসিকতা কোথা থেকে আসে? কী ধরনের মূল্যবোধ থাকলে আর না থাকলে—একটি পরিবারে গৃহকর্মী এতটা নির্মম হতে পারে? একটি প্রাণী মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য কারও ঘরে ঢুকলে, তাতে এই রকম সহিংস প্রতিক্রিয়া দেখানো কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়। এখানে শারীরিক আঘাতের চেয়েও বড় হলো মানসিক নিষ্ঠুরতা—যেখানে একটি অসহায় প্রাণীর কষ্টের আর্তনাদ, রক্তপাত, কাঁপা শরীর—কিছুই যেন কাউকে বিচলিত করেনি।
আরেকটি বিষয় ভাবিয়ে তোলে, আমরা নিজের মতো গড়ে তুলি পরিবারের পরিবেশ, আমাদের আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ; সেগুলোই তো প্রভাব ফেলে আমাদের চারপাশে—শিশু, গৃহকর্মী, এমনকি প্রতিবেশীর ওপরও। গৃহকর্মীর হাতে রড থাকা আর তা দিয়ে প্রাণী মারার সাহস থাকা কি শুধু তার একার বিষয়, না তার আশপাশের মানুষদের ঔদাসীন্য ও অসচেতনতার ফল?
প্রতিষ্ঠান দুটি—গ্রামীণফোন ও অ্যারিস্টোফার্মা—এ ব্যাপারে বিবৃতি দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা না করে বরং স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, তারা কেবল লাভের প্রতিষ্ঠান নয়, বরং নৈতিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। কারণ, একজন কর্মীর আচরণ প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিকেও প্রভাবিত করে। কোনো কর্মী যদি এমন ঘৃণ্য ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন, তবে শুধু তদন্ত নয়, সমাজকে বার্তা দেওয়ার মতো শক্ত অবস্থান নেওয়া দরকার।
এ ঘটনা আমাদের বৃহত্তর সমাজের জন্যও একটি সতর্কসংকেত। প্রাণীর প্রতি আচরণ কেবল মানবিক দায় নয়, বরং এটি আমাদের সভ্যতার সূচক। যে সমাজে পশুর প্রতি সহানুভূতি থাকে না, সেখানে দুর্বল মানুষের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। শিশু, নারী, গৃহকর্মী বা প্রতিবেশীর প্রতি করণীয়—এসবও তো এই মানবিক চেতনারই অংশ।
আমরা যদি মানুষ হিসেবে দাবি করি, আমাদের বিবেক আছে—তাহলে আমাদের এই বিবেকের পরীক্ষা ঠিক এই জায়গাতেই। যে মানুষ আশপাশের মানুষদের সম্মান করতে শেখেনি, সহানুভূতিশীল নয়, সে কীভাবে একটি নিরীহ প্রাণীর প্রতি সহনশীল আচরণ করবে?
এই ঘটনায় যাঁরা প্রতিবাদ করেছেন, যাঁরা সোচ্চার হয়েছেন, তাঁরা কেবল একটি প্রাণীকে নয়, আমাদের সম্মিলিত মানবতাকেও বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। তবে এই প্রতিবাদ যেন ক্ষণস্থায়ী না হয়। প্রতিটি ঘটনায় আমাদের দাঁড়াতে হবে স্পষ্ট ও নির্ভীকভাবে।
প্রাণীপ্রেম শুধু ভালোবাসা নয়—এটি মানবতার অঙ্গ। যারা এই ভালোবাসা হারায়, তারা ধীরে ধীরে মানুষ থাকার ন্যূনতম যোগ্যতাও হারিয়ে ফেলে। আমাদের সমাজে এই বিপর্যয়ের প্রতিরোধে দরকার দায়িত্ববান প্রতিটি মানুষের ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয় মানবিক ভূমিকা।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে একটি নিরীহ পোষা বিড়ালের ওপর নির্মম নির্যাতনের অমানবিক একটি ঘটনা। অভিযোগের সূত্রপাত ‘ক্যাট সোসাইটি অব বাংলাদেশ’ নামের একটি গ্রুপে, যেখানে ‘ইলমা ইলমা’ নামের এক তরুণী জানান, তাঁর পোষা পাঁচ মাস বয়সী সাদা মেয়েবিড়ালটিকে এক প্রতিবেশীর বাসায় রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। অভিযুক্ত পরিবারটির একজন সদস্য দেশের অন্যতম টেলিকম কোম্পানি গ্রামীণফোনে ডেপুটি ডিরেক্টর, অন্যজন ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যারিস্টোফার্মার কর্মকর্তা। এ ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষুব্ধ মানুষ ওই দম্পতির ছবি, পদবি ও প্রতিষ্ঠান দুটির নাম সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ঘটনাটি যতটা না একটি প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতার চিত্র, তার চেয়েও বড় হয়ে উঠেছে আমাদের সমাজে মানবিকতা, সহানুভূতি ও দায়িত্ববোধের অভাবের প্রতিফলন হিসেবে।
প্রশ্ন ওঠে—একটি নিরীহ প্রাণীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলার মানসিকতা কোথা থেকে আসে? কী ধরনের মূল্যবোধ থাকলে আর না থাকলে—একটি পরিবারে গৃহকর্মী এতটা নির্মম হতে পারে? একটি প্রাণী মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য কারও ঘরে ঢুকলে, তাতে এই রকম সহিংস প্রতিক্রিয়া দেখানো কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়। এখানে শারীরিক আঘাতের চেয়েও বড় হলো মানসিক নিষ্ঠুরতা—যেখানে একটি অসহায় প্রাণীর কষ্টের আর্তনাদ, রক্তপাত, কাঁপা শরীর—কিছুই যেন কাউকে বিচলিত করেনি।
আরেকটি বিষয় ভাবিয়ে তোলে, আমরা নিজের মতো গড়ে তুলি পরিবারের পরিবেশ, আমাদের আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ; সেগুলোই তো প্রভাব ফেলে আমাদের চারপাশে—শিশু, গৃহকর্মী, এমনকি প্রতিবেশীর ওপরও। গৃহকর্মীর হাতে রড থাকা আর তা দিয়ে প্রাণী মারার সাহস থাকা কি শুধু তার একার বিষয়, না তার আশপাশের মানুষদের ঔদাসীন্য ও অসচেতনতার ফল?
প্রতিষ্ঠান দুটি—গ্রামীণফোন ও অ্যারিস্টোফার্মা—এ ব্যাপারে বিবৃতি দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা না করে বরং স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, তারা কেবল লাভের প্রতিষ্ঠান নয়, বরং নৈতিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। কারণ, একজন কর্মীর আচরণ প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিকেও প্রভাবিত করে। কোনো কর্মী যদি এমন ঘৃণ্য ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন, তবে শুধু তদন্ত নয়, সমাজকে বার্তা দেওয়ার মতো শক্ত অবস্থান নেওয়া দরকার।
এ ঘটনা আমাদের বৃহত্তর সমাজের জন্যও একটি সতর্কসংকেত। প্রাণীর প্রতি আচরণ কেবল মানবিক দায় নয়, বরং এটি আমাদের সভ্যতার সূচক। যে সমাজে পশুর প্রতি সহানুভূতি থাকে না, সেখানে দুর্বল মানুষের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। শিশু, নারী, গৃহকর্মী বা প্রতিবেশীর প্রতি করণীয়—এসবও তো এই মানবিক চেতনারই অংশ।
আমরা যদি মানুষ হিসেবে দাবি করি, আমাদের বিবেক আছে—তাহলে আমাদের এই বিবেকের পরীক্ষা ঠিক এই জায়গাতেই। যে মানুষ আশপাশের মানুষদের সম্মান করতে শেখেনি, সহানুভূতিশীল নয়, সে কীভাবে একটি নিরীহ প্রাণীর প্রতি সহনশীল আচরণ করবে?
এই ঘটনায় যাঁরা প্রতিবাদ করেছেন, যাঁরা সোচ্চার হয়েছেন, তাঁরা কেবল একটি প্রাণীকে নয়, আমাদের সম্মিলিত মানবতাকেও বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। তবে এই প্রতিবাদ যেন ক্ষণস্থায়ী না হয়। প্রতিটি ঘটনায় আমাদের দাঁড়াতে হবে স্পষ্ট ও নির্ভীকভাবে।
প্রাণীপ্রেম শুধু ভালোবাসা নয়—এটি মানবতার অঙ্গ। যারা এই ভালোবাসা হারায়, তারা ধীরে ধীরে মানুষ থাকার ন্যূনতম যোগ্যতাও হারিয়ে ফেলে। আমাদের সমাজে এই বিপর্যয়ের প্রতিরোধে দরকার দায়িত্ববান প্রতিটি মানুষের ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয় মানবিক ভূমিকা।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দল নিষিদ্ধ করার দাবি যেন এক পুনরাবৃত্ত ইতিহাস। যে দল ক্ষমতায় থাকে, তারা প্রায়ই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিষিদ্ধ করার পথ খোঁজে, আর একটি পক্ষ ‘ফাঁকা মাঠে গোল করার মওকা’ মিলবে ভেবে তাতে সমর্থন জোগায়—যেন নিষিদ্ধ করাই সংকট সমাধানের একমাত্র উপায়।
৮ ঘণ্টা আগেপারিপার্শ্বিক অবস্থা, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, লোকমুখের প্রচার ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা বিশ্লেষণ করলে এক বাক্যে উপনীত হওয়া যায় যে নির্বাচন আসন্ন। কিছুটা দ্বিমত ও সন্দেহ প্রকাশ করছেন কেউ কেউ। তবে নির্বাচন হলে কারা জনপ্রতিনিধি হবেন, তা নিয়ে কথা বলা দরকার।
৮ ঘণ্টা আগেআমাদের চিকিৎসাব্যবস্থায় বড় ক্ষত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি রোগ। দেশের প্রায় ৫৩ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন সদস্য কোনো না কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত। ‘পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার’ (পিপিআরসি)-এর সম্প্রতি এক গবেষণায় এ ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।
৮ ঘণ্টা আগেআগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যতই জোর দেওয়া হচ্ছে, চারপাশে ততই বইছে আশঙ্কার গুমোট হাওয়া। আশঙ্কা দানা বাঁধছে সরকারেরই কিছু কথায়। সরকারের পক্ষ থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে জোর দেওয়ার পাশাপাশি বলা হচ্ছে নির্বাচন ভন্ডুল করার ষড়যন্
১ দিন আগে