Ajker Patrika

অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ থাকে না

উপসম্পাদকীয়
অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ থাকে না

আপনি কোন রিসোর্টে কাকে নিয়ে যাবেন, কেন যাবেন তা একান্তই আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। আপনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন, কি করেননি, আপনার কতজন স্ত্রী বা বান্ধবী আছে, আপনার প্রথম স্ত্রী সেসব জানেন কি না বা প্রথম স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়েতে সম্মতি আছে কি নেই–সেসবও আপনাদের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বিষয়। আপনি সীমিত পরিসরে মিথ্যা বলবেন, নাকি বৃহৎ পরিসরে মিথ্যা বলবেন–সেসবও আপনাদের নিজস্ব বিষয়। এসব নিয়ে আমাদের আমজনতার কিছু বলার নেই।
কিন্তু আমরা বলব, খুব শক্ত করেই বলব। কারণ, আমাদের অনেক নিচে নামিয়েছেন আপনারা, একেবারে খাদের কিনারে।

ধর্মকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় সরলতাকে পুঁজি করে দেশকে, দেশের সংস্কৃতিকে, দেশের মানুষের মানসিকতাকে মধ্যযুগে নিয়ে গেছেন। ইতিহাস-ঐতিহ্য ধ্বংসের খেলায় মাতোয়ারা হয়েছেন। নারীদের তেঁতুলের সাথে তুলনা করে বানিয়েছেন পণ্য, নারী শিক্ষার তীব্র বিরোধিতা করেছেন। মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেরা যা ইচ্ছে তা-ই বলেছেন। দরিদ্রতার অজুহাতে মাদ্রাসা শিক্ষার নামে কোমলমতি শিশুদের মগজ ধোলাই করে তাদের দিয়ে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করেছেন।

হাজার বছরের বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনা ভূলুণ্ঠিত হয়ে গেছে আপনাদের মতো ধর্ম ব্যবসায়ীদের কারণে। স্বাধীনতার মূলমন্ত্র নস্যাৎ হয়ে গেছে আপনাদের শঠতার কাছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবর্তে মানুষে মানুষে আজ তীব্র বিদ্বেষপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে আপনাদের প্রতিহিংসার কারণে।
আপনারা ধার্মিক নন, বকধার্মিক, ধর্ম ব্যবসায়ী। দেশের মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছেন বছরের পর বছর। ওয়াজের নামে নোংরা ছিটিয়েছেন সর্বত্র। যখন-তখন নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতোয়া দিয়ে মানুষকে বশে রাখার ঘৃণ্যতম কৌশল বেছে নিয়েছেন, যেসব বয়ান করে সাধারণ মানুষের অর্থ লুটেছেন, সেসব নিজেরাই মানেন না। রিসোর্টে রিসোর্টে আনন্দ করেন।

দেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ না থাকায় আপনাদের মতো ধর্ম ব্যবসায়ীদের আজ রমরমা অবস্থা। রাজনৈতিক দলগুলোর দেউলিয়াত্বের কারণেই ধর্মজীবীরা সেই শূন্যস্থানে ঢুকে দেশের সর্বনাশ করে দিচ্ছে।

যে তথাকথিত আন্দোলনে ঠেলে দিয়ে এতজনের প্রাণ গেল, সেই নিহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলো শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই আন্দোলনের মূল নেতা অবকাশযাপনে যান বিলাসবহুল রিসোর্টে। ধিক, আপনাদের ধিক।

আপনাদের হুঙ্কারে অসংখ্য মানুষ মরেছে, নষ্ট হয়েছে মূল্যবান সম্পদ। ধ্বংস হয়েছে দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতি। ক্ষয়ে গেছে মানুষের স্বাভাবিক চিন্তা করার ক্ষমতা।

অতএব মাঠে-ময়দানে যতই গলাবাজি করেন না কেন, শাস্তি আপনাকে, আপনাদের পেতেই হবে। ধর্মের লেবাসে আপনার, আপনাদের মতো নৈতিকতাবিবর্জিত মানুষের মুখোশটা খুলেই গেল। কথায় আছে, ধর্মের ঢাক আপনি বাজে।

অন্ধ হলেও প্রলয় বন্ধ থাকে না। ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হতেই হবে অপধর্মজীবীদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিক্ষোভ থেকে সহিংসতায় উত্তাল ভাঙ্গা, মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা

দাওয়াত না দেওয়ায় মাদ্রাসার সব খাবার খেয়ে গেলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা

উত্তাল ভাঙ্গা: থানাসহ চারটি সরকারি দপ্তরে হামলা-ভাঙচুর, পুলিশসহ আহত অনেকে

সন্তানের গলা কেটে লাশ বাবার হাতে তুলে দিলেন মা

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫ দাবিতে জামায়াতের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত