হৃদয় পান্ডে
সংকট আমাদের জীবনের চিরচেনা এক সত্য। কখনো সেটা হয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কখনো অর্থনৈতিক মন্দা, আবার কখনো রাজনৈতিক অস্থিরতা। তবে যেকোনো সংকটের সময় পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয় মানুষ ও সমাজকে। আমরা কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাই, কীভাবে একে মোকাবিলা করি—সেটাই বলে দেয় আমরা কতটা মানবিক, কতটা সচেতন আর কতটা দায়িত্বশীল।
আজকে আমরা এমন এক সময় পার করছি, যেখানে একের পর এক সংকট আমাদের ঘিরে ধরেছে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি আছে জ্বালানিসংকটের কারণে কলকারখানা বন্ধের উপক্রম, চাকরির বাজার সংকুচিত। ফলে দেশের শিক্ষিত তরুণেরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না। অথচ এসব বাস্তব সমস্যার সমাধানে বর্তমান সরকারকে খুব একটা তৎপর দেখা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক নেতারা ব্যস্ত ক্ষমতার হিসাব-নিকাশে, একে অপরকে দোষারোপে আর সাধারণ মানুষ তখন দাঁড়িয়ে থাকে এক পাশে—নীরবে, আশাহতভাবে।
রাজনীতি যদি মানুষের জীবনের উন্নতির হাতিয়ার না হয়ে কেবলই ক্ষমতা অর্জনের প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়, তবে সেই রাজনীতি মানুষকে ছুঁতে পারে না। আমরা যদি সত্যি একটি সভ্য সমাজে বাস করতে চাই, তবে সেই সমাজে ভিন্নমত থাকবে, থাকবে গঠনমূলক সমালোচনার জায়গা, থাকবে মানুষের প্রশ্ন করার অধিকার।
দেশের রাজনীতি এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছে, জনগণ সেটাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না। ফলে জনগণ রাজনীতি নিয়ে ভয় ও আশঙ্কার মধ্যে বাস করছে। কারণ তাদের চোখে রাজনীতি মানে দুর্নীতি, সহিংসতা আর প্রতিহিংসা। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে আমরা আগামী প্রজন্মকে রাজনীতি নিয়ে কোনো শিক্ষা দিতে পারব কি? তারা বর্তমান রাজনীতি নিয়ে কিছু শেখার সুযোগ পাচ্ছে কি? তাহলে তারা কীভাবে একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে?
সংকটকালে আসল নেতৃত্বের প্রয়োজন হয়। নেতৃত্ব মানে শুধু নির্দেশ দেওয়া নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের কথা শোনা এবং বাস্তব সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হওয়া। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে এখন সেই মানবিক নেতৃত্বের বড় অভাব। তবু আশার কথা হলো, এ দেশের মানুষ কখনোই শুধু নীরব ভোক্তা হয়ে থাকতে চায় না। তারা প্রতিবাদ করে, দাবি তোলে, আন্দোলনে নামে। সাম্প্রতিক ’২৪-এর আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, পেশাজীবীদের ন্যায্য দাবি—সবই প্রমাণ করে মানুষ এখন নিজের অধিকারের বিষয়ে সচেতন। তারা আর চুপচাপ মেনে নেওয়ার জন্য তৈরি নয়।
আমরা যদি সংকটের রাজনীতিকে পেছনে ফেলে সামনে এগোতে চাই, তবে দরকার একটা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। এমন এক রাজনীতি, যেখানে সেবা থাকবে, দায়বদ্ধতা থাকবে, থাকবে দেশের প্রতি ভালোবাসা। আর এই পরিবর্তনের শুরু হতে পারে পরিবার থেকে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে, আমাদের দৈনন্দিন কথাবার্তা, লেখালেখি, চিন্তা থেকে। কারণ রাজনীতি কেবল সংসদ ভবনে হয় না—হয় আমাদের চারপাশে, আমাদের মননে।
সমাজ তখনই টিকে থাকে, যখন মানুষ তার চারপাশের দুঃখ দেখেও নিস্পৃহ থাকে না। যখন রাজনীতি হয়ে ওঠে মানুষের জন্য, তখনই সংকট মোকাবিলা সম্ভব। এখন সময় আমাদের একসঙ্গে ভাবার—কেবল নেতা নয়, সাধারণ মানুষ হিসেবেও আমরা কীভাবে এই সমাজকে মানবিক ও সহানুভূতিশীল করে তুলতে পারি।
শেষ কথাটা হলো, সংকট আসবেই, কিন্তু আমরা কীভাবে তার মুখোমুখি হই, তাতেই নির্ধারিত হয় আমাদের সমাজ কতটা পরিপক্ব।
হৃদয় পান্ডে, শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ
সংকট আমাদের জীবনের চিরচেনা এক সত্য। কখনো সেটা হয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কখনো অর্থনৈতিক মন্দা, আবার কখনো রাজনৈতিক অস্থিরতা। তবে যেকোনো সংকটের সময় পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয় মানুষ ও সমাজকে। আমরা কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাই, কীভাবে একে মোকাবিলা করি—সেটাই বলে দেয় আমরা কতটা মানবিক, কতটা সচেতন আর কতটা দায়িত্বশীল।
আজকে আমরা এমন এক সময় পার করছি, যেখানে একের পর এক সংকট আমাদের ঘিরে ধরেছে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি আছে জ্বালানিসংকটের কারণে কলকারখানা বন্ধের উপক্রম, চাকরির বাজার সংকুচিত। ফলে দেশের শিক্ষিত তরুণেরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না। অথচ এসব বাস্তব সমস্যার সমাধানে বর্তমান সরকারকে খুব একটা তৎপর দেখা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক নেতারা ব্যস্ত ক্ষমতার হিসাব-নিকাশে, একে অপরকে দোষারোপে আর সাধারণ মানুষ তখন দাঁড়িয়ে থাকে এক পাশে—নীরবে, আশাহতভাবে।
রাজনীতি যদি মানুষের জীবনের উন্নতির হাতিয়ার না হয়ে কেবলই ক্ষমতা অর্জনের প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়, তবে সেই রাজনীতি মানুষকে ছুঁতে পারে না। আমরা যদি সত্যি একটি সভ্য সমাজে বাস করতে চাই, তবে সেই সমাজে ভিন্নমত থাকবে, থাকবে গঠনমূলক সমালোচনার জায়গা, থাকবে মানুষের প্রশ্ন করার অধিকার।
দেশের রাজনীতি এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছে, জনগণ সেটাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না। ফলে জনগণ রাজনীতি নিয়ে ভয় ও আশঙ্কার মধ্যে বাস করছে। কারণ তাদের চোখে রাজনীতি মানে দুর্নীতি, সহিংসতা আর প্রতিহিংসা। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে আমরা আগামী প্রজন্মকে রাজনীতি নিয়ে কোনো শিক্ষা দিতে পারব কি? তারা বর্তমান রাজনীতি নিয়ে কিছু শেখার সুযোগ পাচ্ছে কি? তাহলে তারা কীভাবে একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে?
সংকটকালে আসল নেতৃত্বের প্রয়োজন হয়। নেতৃত্ব মানে শুধু নির্দেশ দেওয়া নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের কথা শোনা এবং বাস্তব সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হওয়া। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে এখন সেই মানবিক নেতৃত্বের বড় অভাব। তবু আশার কথা হলো, এ দেশের মানুষ কখনোই শুধু নীরব ভোক্তা হয়ে থাকতে চায় না। তারা প্রতিবাদ করে, দাবি তোলে, আন্দোলনে নামে। সাম্প্রতিক ’২৪-এর আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, পেশাজীবীদের ন্যায্য দাবি—সবই প্রমাণ করে মানুষ এখন নিজের অধিকারের বিষয়ে সচেতন। তারা আর চুপচাপ মেনে নেওয়ার জন্য তৈরি নয়।
আমরা যদি সংকটের রাজনীতিকে পেছনে ফেলে সামনে এগোতে চাই, তবে দরকার একটা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। এমন এক রাজনীতি, যেখানে সেবা থাকবে, দায়বদ্ধতা থাকবে, থাকবে দেশের প্রতি ভালোবাসা। আর এই পরিবর্তনের শুরু হতে পারে পরিবার থেকে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে, আমাদের দৈনন্দিন কথাবার্তা, লেখালেখি, চিন্তা থেকে। কারণ রাজনীতি কেবল সংসদ ভবনে হয় না—হয় আমাদের চারপাশে, আমাদের মননে।
সমাজ তখনই টিকে থাকে, যখন মানুষ তার চারপাশের দুঃখ দেখেও নিস্পৃহ থাকে না। যখন রাজনীতি হয়ে ওঠে মানুষের জন্য, তখনই সংকট মোকাবিলা সম্ভব। এখন সময় আমাদের একসঙ্গে ভাবার—কেবল নেতা নয়, সাধারণ মানুষ হিসেবেও আমরা কীভাবে এই সমাজকে মানবিক ও সহানুভূতিশীল করে তুলতে পারি।
শেষ কথাটা হলো, সংকট আসবেই, কিন্তু আমরা কীভাবে তার মুখোমুখি হই, তাতেই নির্ধারিত হয় আমাদের সমাজ কতটা পরিপক্ব।
হৃদয় পান্ডে, শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ
গত বছরের ৮ আগস্ট বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেছিল। তাদের শাসন আমলে একটি নতুন অর্থবছরেরও সূচনা হয়েছে। আজ বছর পেরিয়ে অনেকেই পেছন ফিরে তাকাচ্ছেন—অর্জন কতটুকু, ব্যর্থতা কোথায় এবং অন্তরায় কী কী? এমন একটি হিসাব-নিকাশ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রায় দিকনির্দেশনা দি
২০ ঘণ্টা আগেআমরা যেন এক কদম সামনে বাড়লে পিছিয়ে পড়ি আরও দশ কদম। তখন সেই এক কদম এগিয়ে যাওয়াকে বড্ড ম্লান মনে হয়। গত প্রায় এক দশক ধরেই ঢাকার বায়ু ও পরিবেশ দূষণের শিকার। এখনো আমরা শীর্ষ বা এর আশপাশে অবস্থান করছি। এত সংস্কার কমিটি হলো, শুনেছি পরিবেশ উন্নয়নের জন্যও নাকি কমিটি গঠিত হয়েছে। কাজের ক্ষেত্রে কোনোটিরই কি কো
২০ ঘণ্টা আগেবাসটা ধাক্কা দিয়েছে এক শিক্ষার্থীকে, শিক্ষার্থী করেছে তার প্রতিবাদ। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাসের চালক, চালকের সহকারী ও অন্য কর্মীরা শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়েছে বাসে। ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে পিটিয়েছে। বাসের যাত্রীরা প্রশ্ন করেছে, কিন্তু ‘চোর’কে পেটানো হচ্ছে বলা হলে তারা নির্বিকার বসে থেকেছে আসনে। চোর হলেও যে তাকে পু
২০ ঘণ্টা আগেযে রকম পরিস্থিতিতে দেশ চলছে, তাতে দেশের জনগণের স্বস্তিতে থাকার কোনো কারণ নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ৫ আগস্ট নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ায় সেই অস্বস্তি থেকে বের হয়ে আসার আপাতত একটা পথের দিশা পাওয়া গেল। জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা এই ভাষণ দেওয়ার আগে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে...
২ দিন আগে