আবদুল্লাহ আল মোহন
মীরা দেববর্মন ছিলেন বাংলা গানের এক অসামান্য গীতিকার, যিনি কৃতী স্বামী এবং সন্তানের নামের আড়ালে ছড়িয়ে গিয়ে জড়িয়ে আছেন আপন সৃষ্টির কারণেই। অনেকের হয়তো জানা নেই, আধুনিক বাংলা গানের কিংবদন্তি প্রয়াত শচীন দেববর্মনের স্ত্রী এবং উপমহাদেশের আরেক কিংবদন্তি সুরকার রাহুল দেববর্মনের মাতা মীরা দেববর্মন অসংখ্য জনপ্রিয় গানের একজন নিভৃতচারিণী গীতিকার। মীরা দেববর্মন রচিত, শচীন দেববর্মনের সুরে ও কণ্ঠে সুপরিচিত কয়েকটি গান হলো ‘বিরহ বড় ভালো লাগে’, ‘গানের কলি সুরের দুরিতে’, ‘ঘাটে লাগাইয়া ডিঙা’, ‘বর্ণে গন্ধে ছন্দে গীতিতে’, ‘কালসাপ দংশে আমায়’, ‘কে যাস রে ভাটি গাঙ বাইয়া’, ‘কী করি আমি কী করি’, ‘না আমারে শশী চেয় না’, ‘নিটোল পায়ে রিনিক ঝিনিক’, ‘শোন গো দখিন হাওয়া’, ‘তাকদুম তাকদুম বাজাই’ ইত্যাদি।
যিনি ছিলেন অবিভক্ত বাংলার পূর্ববঙ্গের ঢাকা জেলার এক অভিজাত পরিবারের কন্যা। মীরা দেববর্মন ১৯২৩ সালের মার্চ মাসে কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন জানা গেলেও সঠিক তারিখ উদ্ধার করা যায়নি।
একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় শচীন দেববর্মন আরব সাগরপারে থেকেও প্রতিনিয়ত খবর নিতেন, বাংলার দামাল ছেলেরা যুদ্ধে কতটা জয় হাসিল করতে পারল। ভালো খবরের জন্য উৎসুক হয়ে থাকতেন। তাঁর আত্মা তখন বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের সঙ্গে একাত্ম। শচীনকর্তার আবেগ ও আকুতি বুঝতে পেরেছিলেন মীরা। আর তাই ১৯৭১ সালে রেকর্ড করা হলো ‘তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল’।
১৯৩৭ সালে এলাহাবাদে অল ইন্ডিয়া মিউজিক কনফারেন্সে শচীন দেববর্মনের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ও প্রেম। ১৯৩৮ সালে তাঁরা বিবাহ করেন। মীরা দেববর্মন তাঁর স্বামী ও পুত্রের সংগীতজীবনে নিরন্তর অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। আর নিজেকে রেখেছেন অন্তরালে। তিনি সফল ছিলেন একাধারে গীতিকার, সংগীতশিল্পী ও নৃত্যশিল্পী হিসেবে। প্রতিভা নিয়ে জন্মেছিলেন যেমন, একই সঙ্গে যুগের তুলনায় সঠিকভাবে তালিমও পেয়েছিলেন। আর তাই সংগীতের সব ক্ষেত্রে সমান পারদর্শিতা ছিল তাঁর। নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন, সম্পূর্ণ ছিল সুরের জ্ঞান।
মীরা দেববর্মনের দাদু রায়বাহাদুর কমলনাথ দাশগুপ্ত ছিলেন ঢাকা হাইকোর্টের চিফ জাস্টিস। দাদু ও দিদিমার বাড়িতে জন্ম থেকে থাকতে হয় পারিবারিক কারণে। তারপর কলকাতার সাউথ এন্ডে বসবাস শুরু করেন তাঁদের সঙ্গে। সেখানে শুরু হয় পড়াশোনার সঙ্গে সংগীতের তালিম। বিদ্যালয়ে শিক্ষা ও সংগীত শিক্ষা সমানতালে চলে। ১৯৩৭ সাল থেকে শচীন দেববর্মনের কাছে গান শিখতে শুরু করেন। এ ছাড়া তিনি সংগীতগুরু ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নিয়েছেন। কীর্তন ও ঠুমরি শেখেন সংগীতাচার্য ধীরেন্দ্রনাথ দেবের কাছে। ১৯৩০ সালে আনাদি দস্তিদারের কাছে রবীন্দ্রসংগীতে শিক্ষালাভ করেন এবং শান্তিনিকেতনে অমিতা সেনের কাছে নৃত্যে তালিম নিয়েছিলেন।
মীরা দেববর্মনকে নিয়ে সংগীতবোদ্ধাদের অভিমত যথার্থই মনে হয়, ‘শাস্ত্রীয় সংগীতের তুখোড় জ্ঞানসম্পন্ন গায়িকা, নৃত্যশিল্পী, রবীন্দ্রসংগীতেও সমান দক্ষতা, গানের কথাকার হিসেবে আধুনিকমনস্কতা, শব্দের ব্যবহার, মাটির কাছাকাছি থাকার প্রবণতা—অবাক হতে হয়। শচীন দেববর্মনের যে গানগুলোর সুরের আবেশে মাতাল হই এবং নিয়ত গুনগুন করি, সেগুলোর অনেক সুরই মীরা দেববর্মনের সহায়তায় তৈরি হয়েছে।’
মীরা দেববর্মন বিয়ের বছরে অল ইন্ডিয়া রেডিও, কলকাতা থেকে অডিশন দিয়ে উত্তীর্ণ হন। সেই সঙ্গে শুরু করেন পড়াশোনাও। আইএ পরীক্ষায় বসলেন। কিন্তু সংগীতের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধায় পড়াশোনায় ইতি দিয়ে সংগীতের পথ ধরেই হাঁটলেন। স্বামীর সঙ্গে বোম্বে গেলেন, নতুন অধ্যায় শুরু হলো। বোম্বেতে গিয়ে ফৈয়াজ মহম্মদ খানের কাছে তালিম নিলেন। সংগীতের পিপাসা ছিল অসীম। নিজেকে সমৃদ্ধ করার প্রয়াস চলছিল নিরন্তর। ১৯৪৫ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিও, বোম্বে থেকে অডিশন পাস করে ঠুংরি ও গজল পরিবেশন করতেন। সেই সময় তিনি দুটি নাটক শান্তি ও নয়া প্রভাতের গানের কথা রচনা করেন। অনেক গানের রেকর্ডও করেন। আবার সহকারী সংগীত পরিচালক হিসেবেও তিনি ছিলেন একজন সফল মানুষ। নয়া জমানা, তেরে মেরে স্বপ্নে, শর্মিলী, অভিমান, বারুদ, প্রেমনগর—বিখ্যাত এই চলচ্চিত্রগুলোর সহযোগী সংগীত পরিচালক ছিলেন তিনি।
১৯৭৫ সালে স্বামী এবং ১৯৯৪ সালে পুত্রের মৃত্যুর পর তাঁর জীবন জটিল হয়ে পড়ে। এই মৃত্যুশোক তাঁকে অনেকটাই মানসিক ভারসাম্যহীন করে তোলে। জীবনের শেষ দিনগুলো বেদনার হয়ে উঠেছিল এই অসামান্য গীতিকার, সুরমালিকার। কথায় কথায় মালা গেঁথেছিলেন যিনি, বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাঁর কথা। কেবল শচীন দেববর্মনের গান শুনলে নড়েচড়ে উঠতেন। চেতনার জগৎ তাঁর কাছে মূল্য হারিয়েছিল। এমন অবস্থায় ত্রিপুরা সরকার সহযোগিতার হাত বাড়ালে তাঁকে মুম্বাইয়ে স্থানান্তর করা হয়। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁকে মুম্বাইয়ে রাহুল দেববর্মনের বাড়িতে নিয়ে রাখা হয়। ওই বছরের ১৫ অক্টোবর দীর্ঘদিন রোগভোগের পর তাঁর মৃত্যু হয়।
লেখক: আবদুল্লাহ আল মোহন
সহযোগী অধ্যাপক, ভাসানটেক সরকারি কলেজ
মীরা দেববর্মন ছিলেন বাংলা গানের এক অসামান্য গীতিকার, যিনি কৃতী স্বামী এবং সন্তানের নামের আড়ালে ছড়িয়ে গিয়ে জড়িয়ে আছেন আপন সৃষ্টির কারণেই। অনেকের হয়তো জানা নেই, আধুনিক বাংলা গানের কিংবদন্তি প্রয়াত শচীন দেববর্মনের স্ত্রী এবং উপমহাদেশের আরেক কিংবদন্তি সুরকার রাহুল দেববর্মনের মাতা মীরা দেববর্মন অসংখ্য জনপ্রিয় গানের একজন নিভৃতচারিণী গীতিকার। মীরা দেববর্মন রচিত, শচীন দেববর্মনের সুরে ও কণ্ঠে সুপরিচিত কয়েকটি গান হলো ‘বিরহ বড় ভালো লাগে’, ‘গানের কলি সুরের দুরিতে’, ‘ঘাটে লাগাইয়া ডিঙা’, ‘বর্ণে গন্ধে ছন্দে গীতিতে’, ‘কালসাপ দংশে আমায়’, ‘কে যাস রে ভাটি গাঙ বাইয়া’, ‘কী করি আমি কী করি’, ‘না আমারে শশী চেয় না’, ‘নিটোল পায়ে রিনিক ঝিনিক’, ‘শোন গো দখিন হাওয়া’, ‘তাকদুম তাকদুম বাজাই’ ইত্যাদি।
যিনি ছিলেন অবিভক্ত বাংলার পূর্ববঙ্গের ঢাকা জেলার এক অভিজাত পরিবারের কন্যা। মীরা দেববর্মন ১৯২৩ সালের মার্চ মাসে কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন জানা গেলেও সঠিক তারিখ উদ্ধার করা যায়নি।
একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় শচীন দেববর্মন আরব সাগরপারে থেকেও প্রতিনিয়ত খবর নিতেন, বাংলার দামাল ছেলেরা যুদ্ধে কতটা জয় হাসিল করতে পারল। ভালো খবরের জন্য উৎসুক হয়ে থাকতেন। তাঁর আত্মা তখন বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের সঙ্গে একাত্ম। শচীনকর্তার আবেগ ও আকুতি বুঝতে পেরেছিলেন মীরা। আর তাই ১৯৭১ সালে রেকর্ড করা হলো ‘তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল’।
১৯৩৭ সালে এলাহাবাদে অল ইন্ডিয়া মিউজিক কনফারেন্সে শচীন দেববর্মনের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ও প্রেম। ১৯৩৮ সালে তাঁরা বিবাহ করেন। মীরা দেববর্মন তাঁর স্বামী ও পুত্রের সংগীতজীবনে নিরন্তর অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। আর নিজেকে রেখেছেন অন্তরালে। তিনি সফল ছিলেন একাধারে গীতিকার, সংগীতশিল্পী ও নৃত্যশিল্পী হিসেবে। প্রতিভা নিয়ে জন্মেছিলেন যেমন, একই সঙ্গে যুগের তুলনায় সঠিকভাবে তালিমও পেয়েছিলেন। আর তাই সংগীতের সব ক্ষেত্রে সমান পারদর্শিতা ছিল তাঁর। নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন, সম্পূর্ণ ছিল সুরের জ্ঞান।
মীরা দেববর্মনের দাদু রায়বাহাদুর কমলনাথ দাশগুপ্ত ছিলেন ঢাকা হাইকোর্টের চিফ জাস্টিস। দাদু ও দিদিমার বাড়িতে জন্ম থেকে থাকতে হয় পারিবারিক কারণে। তারপর কলকাতার সাউথ এন্ডে বসবাস শুরু করেন তাঁদের সঙ্গে। সেখানে শুরু হয় পড়াশোনার সঙ্গে সংগীতের তালিম। বিদ্যালয়ে শিক্ষা ও সংগীত শিক্ষা সমানতালে চলে। ১৯৩৭ সাল থেকে শচীন দেববর্মনের কাছে গান শিখতে শুরু করেন। এ ছাড়া তিনি সংগীতগুরু ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নিয়েছেন। কীর্তন ও ঠুমরি শেখেন সংগীতাচার্য ধীরেন্দ্রনাথ দেবের কাছে। ১৯৩০ সালে আনাদি দস্তিদারের কাছে রবীন্দ্রসংগীতে শিক্ষালাভ করেন এবং শান্তিনিকেতনে অমিতা সেনের কাছে নৃত্যে তালিম নিয়েছিলেন।
মীরা দেববর্মনকে নিয়ে সংগীতবোদ্ধাদের অভিমত যথার্থই মনে হয়, ‘শাস্ত্রীয় সংগীতের তুখোড় জ্ঞানসম্পন্ন গায়িকা, নৃত্যশিল্পী, রবীন্দ্রসংগীতেও সমান দক্ষতা, গানের কথাকার হিসেবে আধুনিকমনস্কতা, শব্দের ব্যবহার, মাটির কাছাকাছি থাকার প্রবণতা—অবাক হতে হয়। শচীন দেববর্মনের যে গানগুলোর সুরের আবেশে মাতাল হই এবং নিয়ত গুনগুন করি, সেগুলোর অনেক সুরই মীরা দেববর্মনের সহায়তায় তৈরি হয়েছে।’
মীরা দেববর্মন বিয়ের বছরে অল ইন্ডিয়া রেডিও, কলকাতা থেকে অডিশন দিয়ে উত্তীর্ণ হন। সেই সঙ্গে শুরু করেন পড়াশোনাও। আইএ পরীক্ষায় বসলেন। কিন্তু সংগীতের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধায় পড়াশোনায় ইতি দিয়ে সংগীতের পথ ধরেই হাঁটলেন। স্বামীর সঙ্গে বোম্বে গেলেন, নতুন অধ্যায় শুরু হলো। বোম্বেতে গিয়ে ফৈয়াজ মহম্মদ খানের কাছে তালিম নিলেন। সংগীতের পিপাসা ছিল অসীম। নিজেকে সমৃদ্ধ করার প্রয়াস চলছিল নিরন্তর। ১৯৪৫ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিও, বোম্বে থেকে অডিশন পাস করে ঠুংরি ও গজল পরিবেশন করতেন। সেই সময় তিনি দুটি নাটক শান্তি ও নয়া প্রভাতের গানের কথা রচনা করেন। অনেক গানের রেকর্ডও করেন। আবার সহকারী সংগীত পরিচালক হিসেবেও তিনি ছিলেন একজন সফল মানুষ। নয়া জমানা, তেরে মেরে স্বপ্নে, শর্মিলী, অভিমান, বারুদ, প্রেমনগর—বিখ্যাত এই চলচ্চিত্রগুলোর সহযোগী সংগীত পরিচালক ছিলেন তিনি।
১৯৭৫ সালে স্বামী এবং ১৯৯৪ সালে পুত্রের মৃত্যুর পর তাঁর জীবন জটিল হয়ে পড়ে। এই মৃত্যুশোক তাঁকে অনেকটাই মানসিক ভারসাম্যহীন করে তোলে। জীবনের শেষ দিনগুলো বেদনার হয়ে উঠেছিল এই অসামান্য গীতিকার, সুরমালিকার। কথায় কথায় মালা গেঁথেছিলেন যিনি, বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাঁর কথা। কেবল শচীন দেববর্মনের গান শুনলে নড়েচড়ে উঠতেন। চেতনার জগৎ তাঁর কাছে মূল্য হারিয়েছিল। এমন অবস্থায় ত্রিপুরা সরকার সহযোগিতার হাত বাড়ালে তাঁকে মুম্বাইয়ে স্থানান্তর করা হয়। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁকে মুম্বাইয়ে রাহুল দেববর্মনের বাড়িতে নিয়ে রাখা হয়। ওই বছরের ১৫ অক্টোবর দীর্ঘদিন রোগভোগের পর তাঁর মৃত্যু হয়।
লেখক: আবদুল্লাহ আল মোহন
সহযোগী অধ্যাপক, ভাসানটেক সরকারি কলেজ
রাশিয়ার রাজধানীতে আফগানিস্তান-বিষয়ক ‘মস্কো ফরম্যাট সংলাপ’ হয়েছে মাত্র কদিন আগে, ৭ অক্টোবর। হাসিমুখে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দুই বিশেষ প্রতিনিধি। কথা বলেছেন অর্থনীতি, বাণিজ্য, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা নিয়ে।
১৬ ঘণ্টা আগেআজ থেকে প্রায় পাঁচ শ বছর আগের কথা। তুরস্ক থেকে টিউলিপ ফুল পৌঁছায় ইউরোপে। নেদারল্যান্ডস তখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি। মাথাপিছু আয়ে দেশটি সবার চেয়ে এগিয়ে। টিউলিপের রূপে দেশটির মানুষ হঠাৎ মজে উঠল। এর মধ্যে বিশেষ একধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত টিউলিপে সবার আগ্রহ বেড়ে যায়।
১৬ ঘণ্টা আগেআগুন লেগেছে। ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার মিরপুরের রূপনগরের এম এস আলম ট্রেডার্স নামের একটি রাসায়নিক গুদাম ও পাশের একটি পোশাক কারখানায়। খবরটি দুই দিনে পুরোনো হয়ে গেলেও আহাজারি কমেনি এই আগুনে দগ্ধ ব্যক্তিদের স্বজনদের।
১৭ ঘণ্টা আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নির্দেশনা ধরে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে। নানা অস্পষ্টতা থাকার পরও চুক্তি এখনো টিকে আছে। কিন্তু গত মঙ্গলবার হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ ফিরিয়ে দিতে দেরি করছে, এই অজুহাতে তেল আবিব গাজায় ত্রাণ প্রবেশের হার...
১ দিন আগেপাকিস্তান-আফগানিস্তান সংঘাত
সুমন কায়সার
রাশিয়ার রাজধানীতে আফগানিস্তান-বিষয়ক ‘মস্কো ফরম্যাট সংলাপ’ হয়েছে মাত্র কদিন আগে, ৭ অক্টোবর। হাসিমুখে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দুই বিশেষ প্রতিনিধি। কথা বলেছেন অর্থনীতি, বাণিজ্য, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা নিয়ে। তার ৪৮ ঘণ্টা না যেতেই এই দুই দেশের সেনারা সীমান্তে পরস্পরের ওপর হামলে পড়েছে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান একে অপরের সীমান্তচৌকি দখল ও ধ্বংস করার দাবি করেছে। বলা হচ্ছে, দুই পক্ষ মিলিয়ে আড়াই শ জনের মতো নিহত হয়েছে। ৯ অক্টোবর রাজধানী কাবুলসহ আফগানিস্তানের একাধিক লক্ষ্যে পাকিস্তানি বাহিনীর ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ হামলার খবরের প্রায় পরপরই ঘটে সীমান্তের এই বড় সংঘাত।
কয়েকটি সূত্রে বলা হয়েছে, আফগান মাটিতে পাকিস্তানের ৯ অক্টোবরের হামলায় নিহত হয়েছেন পাকিস্তানের নিষিদ্ধ কট্টরপন্থী সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি) প্রধান মুফতি নূর ওয়ালি মেহসুদ। ২০১৮ সাল থেকে দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন মেহসুদ। অবশ্য কোনো পক্ষই মেহসুদের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা বা পাকিস্তানের হামলার বিষয়ে বিশদ জানায়নি। পাকিস্তান শুধু বলেছে, আফগানিস্তানকে টিটিপির সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
আফগানিস্তানে টিটিপির নেতা ও কথিত ঘাঁটির ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর হামলার দুদিন পরই সাম্প্রতিক কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘাতে জড়িয়েছে দুই প্রতিবেশী। আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের বাহিনী প্রতিশোধ নিতে সীমান্তের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পাকিস্তানি সেনা অবস্থানে হামলা করে। আবার তার জবাব দিতে পাকিস্তানও আফগান অবস্থানে হামলা চালায়। পরমাণু শক্তিধর পাকিস্তান বলেছে, তারা যে শত্রুকে পাল্টা আঘাত হানার সক্ষমতা রাখে, তা দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আফগানপক্ষও জানিয়ে দিয়েছে, হামলা হলে তারা ছেড়ে কথা বলবে না। কাবুল সরকার শনিবারের সংঘাতের পর বলেছিল, ‘বন্ধু সৌদি আরব ও কাতারের পরামর্শে’ সংঘাতে বিরতি দিয়েছে তারা। জানা গেছে, এতে যুক্ত হয়েছিল ইরানও। কিন্তু সোমবারের ওই সমঝোতা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। গতকাল বুধবার পর্যন্ত একাধিকবার দ্বৈরথে জড়িয়েছে দুই পক্ষ।
কাবুল ও নয়াদিল্লির মধ্যে সাম্প্রতিক সম্পর্ক উন্নয়নের তৎপরতা দৃশ্যত পাকিস্তান-আফগানিস্তান সংঘাতে আরেকটি মাত্রা যুক্ত করেছে। আফগানিস্তানের সঙ্গে সমস্যা কয়েক বছর ধরেই চললেও পাকিস্তানের জন্য বাড়তি উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে তার চিরবৈরী প্রতিবেশী ভারতের দিক থেকে কাবুলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের আগ্রহ। ভারত এখনো আফগানিস্তানের কট্টর ইসলামপন্থী তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। সারা দুনিয়ায় একমাত্র পুতিনের রাশিয়াই তা করেছে। এ সপ্তাহেই আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে নয়াদিল্লি। কাবুলে পুরো মাত্রায় দূতাবাস খুলতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারত। কেউ কেউ মনে করছেন, ভারতে মুত্তাকিকে যেভাবে স্বাগত জানানো হয়েছে, তা-ও সম্ভবত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সীমান্তে সংঘাতের মাত্রা এরকম পর্যায়ে নিতে উৎসাহিত করেছে। কিন্তু খোদ পাকিস্তানি পর্যবেক্ষকেরাই বলেছেন, সার্বিক বিবেচনায় আফগানিস্তানের সঙ্গে খিটিমিটিকে আর বাড়তে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে চলতি সীমান্ত সংঘাতকে বিনা মেঘে বজ্রপাত গোছের কিছু বলা যাবে না। মাত্রাটাই যা চড়া। তা বাদ দিলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এবং বিক্ষিপ্ত পাল্টাপাল্টি হামলা কিছুদিন ধরেই চলছিল। মূল কারণ টিটিপির তৎপরতা নিয়ে বিরোধ। বছরখানেক আগে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরেও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় পাল্টাপাল্টি হামলা হয়েছিল। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পাকিস্তানের ভেতরে একাধিক স্থানে হামলার ঘোষণা দেয় ২৮ ডিসেম্বর। তারা দাবি করে, এটি ছিল পাকিস্তানের আগের বিমান হামলারই জবাব। পাকিস্তানের ভেতরে সম্প্রতি টিটিপির হামলার সংখ্যা ও মাত্রা বেড়ে চলছিল। উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছিল সেনা হতাহতের সংখ্যাও। এ রকম পরিস্থিতিতে পাকিস্তান বড় ‘কিছু একটা করার’ তাগিদ বোধ করছিল। গত শনিবারের বিস্ফোরণ এই পরিস্থিতিরই অনিবার্য ধারাবাহিকতা।
ইতিহাসের বিচিত্র খেলা হচ্ছে, এই আফগান তালেবানকেই মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইতে জোরদার সমর্থন দিয়েছিল পাকিস্তান। মনে করা হয়, পাকিস্তানের প্রভাবশালী সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-ই অর্থ, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে তালেবানকে গড়ে তুলেছে। তাদের লক্ষ্য ছিল আফগানিস্তানে পাকিস্তানের প্রভাব ধরে রাখা। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের প্রথম সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া সারা বিশ্বের তিনটি দেশের মধ্যে একটি ছিল পাকিস্তান। মার্কিন বাহিনীর আলোচিত বিদায়ের পর ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান আবার কাবুল দখল করলে পাকিস্তান উচ্ছ্বাস গোপন করেনি। কয়েক বছরের ব্যবধানে সেই তালেবানই তাদের জন্য বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তালেবান নতুন করে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পাকিস্তানের ভেতরে জঙ্গি হামলা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। সীমান্ত ও শরণার্থী নিয়ে বিরোধ অস্বস্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।
পাকিস্তানি তালেবান বা টিটিপি পাকিস্তানের বর্তমান গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সরকারব্যবস্থার বদলে প্রতিবেশী আফগানিস্তানের মতো ইসলামি শাসন চালু করতে চায়। আদর্শিক মিলসহ নানা কারণে টিটিপিকে দমনে আফগান সরকার তেমন উৎসাহ দেখায় না। পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, কাবুলের তালেবান সরকারের আশঙ্কা, টিটিপির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিলে তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিতে পারে।
২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার সীমান্ত নিয়ে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ আছে। সন্ত্রাস ও চোরাচালান ঠেকানোর লক্ষ্যে পাকিস্তান বছর কয়েক আগে এ সীমান্তে বেড়া তৈরির কাজ হাতে নেয়, যা এখনো শেষ হয়নি। আফগান সরকার এখনো ‘ডুরান্ড লাইন’ নামে পরিচিত এ সীমান্তকে স্বীকৃতি দেয়নি। তারা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের কিছু অংশকে নিজেদের ভূখণ্ড বলেও দাবি করে। ফলে এই বেড়া নির্মাণ নিয়ে আফগানিস্তানের আপত্তি আছে।
কিছুদিন আগে পাকিস্তান বেশ কয়েক লাখ আফগান শরণার্থীকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিলে দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা বেড়ে যায়। পাকিস্তান নিজের বেহাল অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে আর শরণার্থীর বোঝা টানতে রাজি নয়। মাতৃভূমির ঘরবাড়ি, সহায়সম্পদ হারানো আফগানরা হঠাৎ দেশে ফিরতে বাধ্য হওয়ার মুখোমুখি হয়ে বিচলিত। তালেবান কর্তৃপক্ষও বিষয়টি সহজভাবে নেয়নি।
তবে আপাতত পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্কে তিক্ততার কেন্দ্রে রয়েছে টিটিপির তৎপরতা। বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, আফগান সরকার তাদের ভূখণ্ডে টিটিপির অস্তিত্ব স্বীকার করে কিছু ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত এ দ্বন্দ্ব মিটবে না। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট, সামরিক সংঘাত এর কোনো সমাধান নয়। কূটনীতি তথা আলোচনাই হতে হবে মূল উপায়।
দুই সেনাবাহিনীর প্রথাগত যুদ্ধ এক, আর পর্বতসংকুল দুর্গম ভূখণ্ডে জঙ্গিগোষ্ঠীর গেরিলা কায়দার লড়াই সম্পূর্ণ আরেক বিষয়। এর মধ্যে তৃতীয় পক্ষের মদদ বা হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে করতে পারে আরও জটিল। কাহিল অর্থনীতি ও রাজনৈতিক কোন্দলে জেরবার পাকিস্তানের সামরিক-বেসামরিক কোনো পক্ষই আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীর সঙ্গেও দীর্ঘমেয়াদি লড়াইয়ের পক্ষে নয়। আবার বিশ্ব থেকে এখনো অনেকটাই বিচ্ছিন্ন, নানাবিধ অবরোধের চাপে ক্লিষ্ট তালেবানশাসিত আফগানিস্তানের জন্যও যুদ্ধ সর্বনাশ ডেকে আনবে।
দুই পক্ষের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ মুসলিম রাষ্ট্রগুলো উত্তেজনা হ্রাস ও বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে। আফগানিস্তানের ওপর ইদানীং চীনের প্রভাব যথেষ্ট, যারা কিনা আবার পাকিস্তানের পুরোনো, পরীক্ষিত মিত্র। আঞ্চলিক কৌশলগত স্বার্থ ও আগ্রহ থাকা ভারতও যে এ তালিকায় থাকবে, তা বলাই বাহুল্য।
রাশিয়ার রাজধানীতে আফগানিস্তান-বিষয়ক ‘মস্কো ফরম্যাট সংলাপ’ হয়েছে মাত্র কদিন আগে, ৭ অক্টোবর। হাসিমুখে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দুই বিশেষ প্রতিনিধি। কথা বলেছেন অর্থনীতি, বাণিজ্য, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা নিয়ে। তার ৪৮ ঘণ্টা না যেতেই এই দুই দেশের সেনারা সীমান্তে পরস্পরের ওপর হামলে পড়েছে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান একে অপরের সীমান্তচৌকি দখল ও ধ্বংস করার দাবি করেছে। বলা হচ্ছে, দুই পক্ষ মিলিয়ে আড়াই শ জনের মতো নিহত হয়েছে। ৯ অক্টোবর রাজধানী কাবুলসহ আফগানিস্তানের একাধিক লক্ষ্যে পাকিস্তানি বাহিনীর ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ হামলার খবরের প্রায় পরপরই ঘটে সীমান্তের এই বড় সংঘাত।
কয়েকটি সূত্রে বলা হয়েছে, আফগান মাটিতে পাকিস্তানের ৯ অক্টোবরের হামলায় নিহত হয়েছেন পাকিস্তানের নিষিদ্ধ কট্টরপন্থী সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি) প্রধান মুফতি নূর ওয়ালি মেহসুদ। ২০১৮ সাল থেকে দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন মেহসুদ। অবশ্য কোনো পক্ষই মেহসুদের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা বা পাকিস্তানের হামলার বিষয়ে বিশদ জানায়নি। পাকিস্তান শুধু বলেছে, আফগানিস্তানকে টিটিপির সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
আফগানিস্তানে টিটিপির নেতা ও কথিত ঘাঁটির ওপর পাকিস্তানি বাহিনীর হামলার দুদিন পরই সাম্প্রতিক কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘাতে জড়িয়েছে দুই প্রতিবেশী। আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের বাহিনী প্রতিশোধ নিতে সীমান্তের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পাকিস্তানি সেনা অবস্থানে হামলা করে। আবার তার জবাব দিতে পাকিস্তানও আফগান অবস্থানে হামলা চালায়। পরমাণু শক্তিধর পাকিস্তান বলেছে, তারা যে শত্রুকে পাল্টা আঘাত হানার সক্ষমতা রাখে, তা দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আফগানপক্ষও জানিয়ে দিয়েছে, হামলা হলে তারা ছেড়ে কথা বলবে না। কাবুল সরকার শনিবারের সংঘাতের পর বলেছিল, ‘বন্ধু সৌদি আরব ও কাতারের পরামর্শে’ সংঘাতে বিরতি দিয়েছে তারা। জানা গেছে, এতে যুক্ত হয়েছিল ইরানও। কিন্তু সোমবারের ওই সমঝোতা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। গতকাল বুধবার পর্যন্ত একাধিকবার দ্বৈরথে জড়িয়েছে দুই পক্ষ।
কাবুল ও নয়াদিল্লির মধ্যে সাম্প্রতিক সম্পর্ক উন্নয়নের তৎপরতা দৃশ্যত পাকিস্তান-আফগানিস্তান সংঘাতে আরেকটি মাত্রা যুক্ত করেছে। আফগানিস্তানের সঙ্গে সমস্যা কয়েক বছর ধরেই চললেও পাকিস্তানের জন্য বাড়তি উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে তার চিরবৈরী প্রতিবেশী ভারতের দিক থেকে কাবুলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের আগ্রহ। ভারত এখনো আফগানিস্তানের কট্টর ইসলামপন্থী তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। সারা দুনিয়ায় একমাত্র পুতিনের রাশিয়াই তা করেছে। এ সপ্তাহেই আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে নয়াদিল্লি। কাবুলে পুরো মাত্রায় দূতাবাস খুলতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারত। কেউ কেউ মনে করছেন, ভারতে মুত্তাকিকে যেভাবে স্বাগত জানানো হয়েছে, তা-ও সম্ভবত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সীমান্তে সংঘাতের মাত্রা এরকম পর্যায়ে নিতে উৎসাহিত করেছে। কিন্তু খোদ পাকিস্তানি পর্যবেক্ষকেরাই বলেছেন, সার্বিক বিবেচনায় আফগানিস্তানের সঙ্গে খিটিমিটিকে আর বাড়তে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে চলতি সীমান্ত সংঘাতকে বিনা মেঘে বজ্রপাত গোছের কিছু বলা যাবে না। মাত্রাটাই যা চড়া। তা বাদ দিলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এবং বিক্ষিপ্ত পাল্টাপাল্টি হামলা কিছুদিন ধরেই চলছিল। মূল কারণ টিটিপির তৎপরতা নিয়ে বিরোধ। বছরখানেক আগে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরেও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় পাল্টাপাল্টি হামলা হয়েছিল। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পাকিস্তানের ভেতরে একাধিক স্থানে হামলার ঘোষণা দেয় ২৮ ডিসেম্বর। তারা দাবি করে, এটি ছিল পাকিস্তানের আগের বিমান হামলারই জবাব। পাকিস্তানের ভেতরে সম্প্রতি টিটিপির হামলার সংখ্যা ও মাত্রা বেড়ে চলছিল। উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছিল সেনা হতাহতের সংখ্যাও। এ রকম পরিস্থিতিতে পাকিস্তান বড় ‘কিছু একটা করার’ তাগিদ বোধ করছিল। গত শনিবারের বিস্ফোরণ এই পরিস্থিতিরই অনিবার্য ধারাবাহিকতা।
ইতিহাসের বিচিত্র খেলা হচ্ছে, এই আফগান তালেবানকেই মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইতে জোরদার সমর্থন দিয়েছিল পাকিস্তান। মনে করা হয়, পাকিস্তানের প্রভাবশালী সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-ই অর্থ, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে তালেবানকে গড়ে তুলেছে। তাদের লক্ষ্য ছিল আফগানিস্তানে পাকিস্তানের প্রভাব ধরে রাখা। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের প্রথম সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া সারা বিশ্বের তিনটি দেশের মধ্যে একটি ছিল পাকিস্তান। মার্কিন বাহিনীর আলোচিত বিদায়ের পর ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান আবার কাবুল দখল করলে পাকিস্তান উচ্ছ্বাস গোপন করেনি। কয়েক বছরের ব্যবধানে সেই তালেবানই তাদের জন্য বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তালেবান নতুন করে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পাকিস্তানের ভেতরে জঙ্গি হামলা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। সীমান্ত ও শরণার্থী নিয়ে বিরোধ অস্বস্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।
পাকিস্তানি তালেবান বা টিটিপি পাকিস্তানের বর্তমান গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সরকারব্যবস্থার বদলে প্রতিবেশী আফগানিস্তানের মতো ইসলামি শাসন চালু করতে চায়। আদর্শিক মিলসহ নানা কারণে টিটিপিকে দমনে আফগান সরকার তেমন উৎসাহ দেখায় না। পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, কাবুলের তালেবান সরকারের আশঙ্কা, টিটিপির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিলে তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিতে পারে।
২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার সীমান্ত নিয়ে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধ আছে। সন্ত্রাস ও চোরাচালান ঠেকানোর লক্ষ্যে পাকিস্তান বছর কয়েক আগে এ সীমান্তে বেড়া তৈরির কাজ হাতে নেয়, যা এখনো শেষ হয়নি। আফগান সরকার এখনো ‘ডুরান্ড লাইন’ নামে পরিচিত এ সীমান্তকে স্বীকৃতি দেয়নি। তারা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের কিছু অংশকে নিজেদের ভূখণ্ড বলেও দাবি করে। ফলে এই বেড়া নির্মাণ নিয়ে আফগানিস্তানের আপত্তি আছে।
কিছুদিন আগে পাকিস্তান বেশ কয়েক লাখ আফগান শরণার্থীকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিলে দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা বেড়ে যায়। পাকিস্তান নিজের বেহাল অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে আর শরণার্থীর বোঝা টানতে রাজি নয়। মাতৃভূমির ঘরবাড়ি, সহায়সম্পদ হারানো আফগানরা হঠাৎ দেশে ফিরতে বাধ্য হওয়ার মুখোমুখি হয়ে বিচলিত। তালেবান কর্তৃপক্ষও বিষয়টি সহজভাবে নেয়নি।
তবে আপাতত পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্কে তিক্ততার কেন্দ্রে রয়েছে টিটিপির তৎপরতা। বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, আফগান সরকার তাদের ভূখণ্ডে টিটিপির অস্তিত্ব স্বীকার করে কিছু ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত এ দ্বন্দ্ব মিটবে না। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট, সামরিক সংঘাত এর কোনো সমাধান নয়। কূটনীতি তথা আলোচনাই হতে হবে মূল উপায়।
দুই সেনাবাহিনীর প্রথাগত যুদ্ধ এক, আর পর্বতসংকুল দুর্গম ভূখণ্ডে জঙ্গিগোষ্ঠীর গেরিলা কায়দার লড়াই সম্পূর্ণ আরেক বিষয়। এর মধ্যে তৃতীয় পক্ষের মদদ বা হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে করতে পারে আরও জটিল। কাহিল অর্থনীতি ও রাজনৈতিক কোন্দলে জেরবার পাকিস্তানের সামরিক-বেসামরিক কোনো পক্ষই আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীর সঙ্গেও দীর্ঘমেয়াদি লড়াইয়ের পক্ষে নয়। আবার বিশ্ব থেকে এখনো অনেকটাই বিচ্ছিন্ন, নানাবিধ অবরোধের চাপে ক্লিষ্ট তালেবানশাসিত আফগানিস্তানের জন্যও যুদ্ধ সর্বনাশ ডেকে আনবে।
দুই পক্ষের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ মুসলিম রাষ্ট্রগুলো উত্তেজনা হ্রাস ও বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে। আফগানিস্তানের ওপর ইদানীং চীনের প্রভাব যথেষ্ট, যারা কিনা আবার পাকিস্তানের পুরোনো, পরীক্ষিত মিত্র। আঞ্চলিক কৌশলগত স্বার্থ ও আগ্রহ থাকা ভারতও যে এ তালিকায় থাকবে, তা বলাই বাহুল্য।
মীরা দেববর্মন ছিলেন বাংলা গানের এক অসামান্য গীতিকার, যিনি কৃতী স্বামী এবং সন্তানের নামের আড়ালে ছড়িয়ে গিয়ে জড়িয়ে আছেন আপন সৃষ্টির কারণেই। অনেকের হয়তো জানা নেই, আধুনিক বাংলা গানের কিংবদন্তি প্রয়াত শচীন দেববর্মনের স্ত্রী এবং উপমহাদেশের আরেক কিংবদন্তি সুরকার রাহুল দেববর্মনের মাতা মীরা দেববর্মন অসংখ্য জন
২ দিন আগেআজ থেকে প্রায় পাঁচ শ বছর আগের কথা। তুরস্ক থেকে টিউলিপ ফুল পৌঁছায় ইউরোপে। নেদারল্যান্ডস তখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি। মাথাপিছু আয়ে দেশটি সবার চেয়ে এগিয়ে। টিউলিপের রূপে দেশটির মানুষ হঠাৎ মজে উঠল। এর মধ্যে বিশেষ একধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত টিউলিপে সবার আগ্রহ বেড়ে যায়।
১৬ ঘণ্টা আগেআগুন লেগেছে। ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার মিরপুরের রূপনগরের এম এস আলম ট্রেডার্স নামের একটি রাসায়নিক গুদাম ও পাশের একটি পোশাক কারখানায়। খবরটি দুই দিনে পুরোনো হয়ে গেলেও আহাজারি কমেনি এই আগুনে দগ্ধ ব্যক্তিদের স্বজনদের।
১৭ ঘণ্টা আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নির্দেশনা ধরে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে। নানা অস্পষ্টতা থাকার পরও চুক্তি এখনো টিকে আছে। কিন্তু গত মঙ্গলবার হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ ফিরিয়ে দিতে দেরি করছে, এই অজুহাতে তেল আবিব গাজায় ত্রাণ প্রবেশের হার...
১ দিন আগেরাজিউল হাসান
আজ থেকে প্রায় পাঁচ শ বছর আগের কথা। তুরস্ক থেকে টিউলিপ ফুল পৌঁছায় ইউরোপে। নেদারল্যান্ডস তখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি। মাথাপিছু আয়ে দেশটি সবার চেয়ে এগিয়ে। টিউলিপের রূপে দেশটির মানুষ হঠাৎ মজে উঠল। এর মধ্যে বিশেষ একধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত টিউলিপে সবার আগ্রহ বেড়ে যায়। এই ফুল যেন হয়ে ওঠে আভিজাত্যের প্রতীক। মানুষের হাতে তখন প্রচুর অলস অর্থ। ফলে তারা পাগলের মতো হুমড়ি খেয়ে পড়ে টিউলিপ ফুল কিনতে।
চাহিদা একটা পর্যায়ে এমন জায়গায় গিয়ে ঠেকে যে নেদারল্যান্ডসে রীতিমতো কাগজ-কলমে টিউলিপ বিক্রি শুরু হয়। অর্থাৎ পরের বছর যে ফুল ফুটবে, সেই ফুল কাগজে লিখিত আকারে আগের বছর কিংবা তারও আগে বিক্রি হতে শুরু করে। দিনে দিনে সেই কাগুজে টিউলিপের দাম বাড়ছিল। এভাবে চলতে চলতে ১৬৩৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি নেদারল্যান্ডসের হারলেম শহরের একটা ঘটনা সব ওলটপালট করে দেয়। সেদিন ব্যবসায়ীরা টিউলিপের একটি বড় নিলামে অংশ নেন ঠিকই, কিন্তু অদ্ভুত এক কারণে তাঁরা কেউই নির্ধারিত ফি দিয়ে টিউলিপ কেনেননি। এমনকি নিলামকারী দাম কমিয়েও ক্রেতা খুঁজে পাননি। এই খবর খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে। লোকসানের আশঙ্কায় মানুষ তখন নিজের সংগ্রহে থাকা কাগুজে টিউলিপ বিক্রি করতে পাগল হয়ে যায়। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অবস্থা এমন জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায় যে বিনা মূল্যেও কাউকে টিউলিপ গছানো যাচ্ছিল না। ধসে পড়ে টিউলিপের বাজার, ধসে পড়ে নেদারল্যান্ডসের অর্থনীতি। এই ঘটনা পরবর্তী সময়ে ‘টিউলিপ ম্যানিয়া’ নামে পরিচিতি পায়।
এই গল্প এখন কেন? কারণ, সোনার দরের ব্যাপক উত্থান। বিশ্বজুড়েই সোনার বাজারের অস্থিরতা চলছে এখন। এই অবস্থাকে এরই মধ্যে কেউ কেউ ‘টিউলিপ ম্যানিয়া’র সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ তো একে ‘গোল্ড ম্যানিয়া’ বলেও অভিহিত করছেন। কারণ, দুই বছর ধরে সোনার চাহিদা ও দাম লাগাতার বাড়লেও চলতি বছর তা যেন সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। এ বছর এরই মধ্যে সোনার দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ৫৬ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত সোমবার নাগাদ আউন্সপ্রতি সোনার দাম ৪ হাজার ১০০ ডলার ছাড়িয়েছে।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, হঠাৎ এভাবে সোনার চাহিদা বাড়ছে কেন? এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, যুক্তরাষ্ট্রে সুদহার হ্রাসের গুঞ্জন এবং বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর বিপুল পরিমাণে সোনা ক্রয়। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ‘শুল্কযুদ্ধ’ শুরু করেছেন, সেটি সোনার বাজারে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। যদিও তিনি গত আগস্টে নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে সোনার ওপর তিনি বাড়তি শুল্ক চাপাবেন না, তারপরও বিনিয়োগকারীরা নিশ্চিত হতে পারছেন না। ফলে সোনার সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে মার্কিন ডলার শক্তি হারাচ্ছে। ঐতিহাসিকভাবে সোনার দরের সঙ্গে মার্কিন ডলারের বিপরীতমুখী সম্পর্ক। একটির দর বাড়লে অপরটি দুর্বল হয়ে যায়। ফলে ১৯৭৯ সালের পর সোনার বাজারে উত্থানের হার এখন সর্বোচ্চ।
গোল্ডম্যান সাকসের মতো প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, আগামী বছরের শেষ নাগাদ সোনার এই মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম ৫ হাজার ডলারে গিয়ে ঠেকতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা। সোনাশিল্পের বৈশ্বিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের সাম্প্রতিক একটি জরিপের তথ্য বলছে, আগামী বছরও বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সোনার মজুত বাড়াবে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, অনিশ্চয়তার সময় মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা তখন নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গা খোঁজেন। ফলে সোনার মতো মূল্যবান ধাতবের বাজার চড়ে। এখন সেই প্রবণতাই দেখা যাচ্ছে। শুধু সোনাই নয়, রূপা ও কপারের দামও বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে সোনা দুইভাবে বিক্রি হয়। এর মধ্যে একটি হলো সোনার বার, স্বর্ণালংকার, কয়েনসহ প্রকৃত সোনা আকারে। অপরটি কাগুজে সোনা। এখন অবশ্য ডিজিটাল সোনা কেনাবেচাও বেশ বেড়েছে। তবে সেটাকেও আমরা কাগুজে সোনা হিসেবেই ধরে নিতে পারি। কাগুজে সোনা হলো সেই সোনা, যা আপনার হাতে থাকবে না। কোথাও জমা থাকবে। আপনি শুধু কাগজ-কলমে সেটা কিনবেন, সন্তোষজনক মূল্যবৃদ্ধির পর মুনাফা নিতে তা বিক্রি করে দেবেন।
কারও কারও আশঙ্কা, কাগুজে সোনায় ‘টিউলিপ ম্যানিয়া’র মতো ঘটনা ঘটে যেতে পারে। যদিও সোনার দাম পড়লেও কোনো দিনই টিউলিপের মতো শূন্যে নেমে আসবে না। তারপরও মূল্যবান এই ধাতবের দর চূড়ায় উঠে ২৫ শতাংশও যদি পড়ে যায়, তাহলেও ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে বিনিয়োগকারী ও সাধারণ ক্রেতাদের।
এদিকে মূল্যবৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব এরই মধ্যে বাজারে পড়তে শুরু করেছে। সাধারণ ক্রেতাদের অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। প্যান্ডোরা এবং সিগনেট-এর মতো বড় বড় স্বর্ণালংকার বিপণনকারীরা বলছেন, এভাবে ব্যাপক হারে মূল্যবৃদ্ধিতে তাঁরা চিন্তিত। কারণ, এতে চাহিদা কমে যেতে শুরু করেছে। তাঁরা মূল্যবৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজতে শুরু করেছেন। কানাডাভিত্তিক আন্তর্জাতিক অলংকার বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেজুরি বলেছে, মূল্যবৃদ্ধির এই প্রবণতা মোকাবিলায় তারা ১০ ক্যারেট সোনার মতো নতুন পণ্য আনার পরিকল্পনা করছে।
সোনার দর এভাবে কত দিন বাড়বে, তা নিয়েও পূর্বাভাস দিয়েছেন অর্থনীতিবিদেরা। তাঁরা বলছেন, ডলারের দরের সঙ্গে যেহেতু সোনার দরের বিপরীতমুখী সম্পর্ক, কাজেই আন্তর্জাতিক বাজারে যত দিন ডলার দুর্বল থাকবে, তত দিন সোনার দর চড়বে। ডলার চাঙা হতে শুরু করলেই সোনার দর পড়তে শুরু করবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড অবশ্য ডলারকে চাঙা করতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং তাঁর শুল্কযুদ্ধ তাঁর দেশেরই মুদ্রাকে আন্তর্জাতিক বাজারে দুর্বল করছে। এ ছাড়া মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতায় ট্রাম্পের বারবার আঘাতের চেষ্টা অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা আরও বাড়িয়েছে।
এই অবস্থায় যে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে, তা হয়তো সঠিক হতে পারে। অর্থাৎ ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। কিন্তু কিছুতেই টিউলিপ ম্যানিয়ার কথা ভুলে যাওয়া চলবে না। পাশাপাশি নজর রাখতে হবে ডলারের দরের দিকেও।
আজ থেকে প্রায় পাঁচ শ বছর আগের কথা। তুরস্ক থেকে টিউলিপ ফুল পৌঁছায় ইউরোপে। নেদারল্যান্ডস তখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি। মাথাপিছু আয়ে দেশটি সবার চেয়ে এগিয়ে। টিউলিপের রূপে দেশটির মানুষ হঠাৎ মজে উঠল। এর মধ্যে বিশেষ একধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত টিউলিপে সবার আগ্রহ বেড়ে যায়। এই ফুল যেন হয়ে ওঠে আভিজাত্যের প্রতীক। মানুষের হাতে তখন প্রচুর অলস অর্থ। ফলে তারা পাগলের মতো হুমড়ি খেয়ে পড়ে টিউলিপ ফুল কিনতে।
চাহিদা একটা পর্যায়ে এমন জায়গায় গিয়ে ঠেকে যে নেদারল্যান্ডসে রীতিমতো কাগজ-কলমে টিউলিপ বিক্রি শুরু হয়। অর্থাৎ পরের বছর যে ফুল ফুটবে, সেই ফুল কাগজে লিখিত আকারে আগের বছর কিংবা তারও আগে বিক্রি হতে শুরু করে। দিনে দিনে সেই কাগুজে টিউলিপের দাম বাড়ছিল। এভাবে চলতে চলতে ১৬৩৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি নেদারল্যান্ডসের হারলেম শহরের একটা ঘটনা সব ওলটপালট করে দেয়। সেদিন ব্যবসায়ীরা টিউলিপের একটি বড় নিলামে অংশ নেন ঠিকই, কিন্তু অদ্ভুত এক কারণে তাঁরা কেউই নির্ধারিত ফি দিয়ে টিউলিপ কেনেননি। এমনকি নিলামকারী দাম কমিয়েও ক্রেতা খুঁজে পাননি। এই খবর খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে। লোকসানের আশঙ্কায় মানুষ তখন নিজের সংগ্রহে থাকা কাগুজে টিউলিপ বিক্রি করতে পাগল হয়ে যায়। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অবস্থা এমন জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায় যে বিনা মূল্যেও কাউকে টিউলিপ গছানো যাচ্ছিল না। ধসে পড়ে টিউলিপের বাজার, ধসে পড়ে নেদারল্যান্ডসের অর্থনীতি। এই ঘটনা পরবর্তী সময়ে ‘টিউলিপ ম্যানিয়া’ নামে পরিচিতি পায়।
এই গল্প এখন কেন? কারণ, সোনার দরের ব্যাপক উত্থান। বিশ্বজুড়েই সোনার বাজারের অস্থিরতা চলছে এখন। এই অবস্থাকে এরই মধ্যে কেউ কেউ ‘টিউলিপ ম্যানিয়া’র সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ তো একে ‘গোল্ড ম্যানিয়া’ বলেও অভিহিত করছেন। কারণ, দুই বছর ধরে সোনার চাহিদা ও দাম লাগাতার বাড়লেও চলতি বছর তা যেন সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। এ বছর এরই মধ্যে সোনার দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ৫৬ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত সোমবার নাগাদ আউন্সপ্রতি সোনার দাম ৪ হাজার ১০০ ডলার ছাড়িয়েছে।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, হঠাৎ এভাবে সোনার চাহিদা বাড়ছে কেন? এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, যুক্তরাষ্ট্রে সুদহার হ্রাসের গুঞ্জন এবং বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর বিপুল পরিমাণে সোনা ক্রয়। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ‘শুল্কযুদ্ধ’ শুরু করেছেন, সেটি সোনার বাজারে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। যদিও তিনি গত আগস্টে নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে সোনার ওপর তিনি বাড়তি শুল্ক চাপাবেন না, তারপরও বিনিয়োগকারীরা নিশ্চিত হতে পারছেন না। ফলে সোনার সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে মার্কিন ডলার শক্তি হারাচ্ছে। ঐতিহাসিকভাবে সোনার দরের সঙ্গে মার্কিন ডলারের বিপরীতমুখী সম্পর্ক। একটির দর বাড়লে অপরটি দুর্বল হয়ে যায়। ফলে ১৯৭৯ সালের পর সোনার বাজারে উত্থানের হার এখন সর্বোচ্চ।
গোল্ডম্যান সাকসের মতো প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, আগামী বছরের শেষ নাগাদ সোনার এই মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম ৫ হাজার ডলারে গিয়ে ঠেকতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা। সোনাশিল্পের বৈশ্বিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের সাম্প্রতিক একটি জরিপের তথ্য বলছে, আগামী বছরও বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সোনার মজুত বাড়াবে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, অনিশ্চয়তার সময় মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা তখন নিরাপদ বিনিয়োগের জায়গা খোঁজেন। ফলে সোনার মতো মূল্যবান ধাতবের বাজার চড়ে। এখন সেই প্রবণতাই দেখা যাচ্ছে। শুধু সোনাই নয়, রূপা ও কপারের দামও বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে সোনা দুইভাবে বিক্রি হয়। এর মধ্যে একটি হলো সোনার বার, স্বর্ণালংকার, কয়েনসহ প্রকৃত সোনা আকারে। অপরটি কাগুজে সোনা। এখন অবশ্য ডিজিটাল সোনা কেনাবেচাও বেশ বেড়েছে। তবে সেটাকেও আমরা কাগুজে সোনা হিসেবেই ধরে নিতে পারি। কাগুজে সোনা হলো সেই সোনা, যা আপনার হাতে থাকবে না। কোথাও জমা থাকবে। আপনি শুধু কাগজ-কলমে সেটা কিনবেন, সন্তোষজনক মূল্যবৃদ্ধির পর মুনাফা নিতে তা বিক্রি করে দেবেন।
কারও কারও আশঙ্কা, কাগুজে সোনায় ‘টিউলিপ ম্যানিয়া’র মতো ঘটনা ঘটে যেতে পারে। যদিও সোনার দাম পড়লেও কোনো দিনই টিউলিপের মতো শূন্যে নেমে আসবে না। তারপরও মূল্যবান এই ধাতবের দর চূড়ায় উঠে ২৫ শতাংশও যদি পড়ে যায়, তাহলেও ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে বিনিয়োগকারী ও সাধারণ ক্রেতাদের।
এদিকে মূল্যবৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব এরই মধ্যে বাজারে পড়তে শুরু করেছে। সাধারণ ক্রেতাদের অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। প্যান্ডোরা এবং সিগনেট-এর মতো বড় বড় স্বর্ণালংকার বিপণনকারীরা বলছেন, এভাবে ব্যাপক হারে মূল্যবৃদ্ধিতে তাঁরা চিন্তিত। কারণ, এতে চাহিদা কমে যেতে শুরু করেছে। তাঁরা মূল্যবৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজতে শুরু করেছেন। কানাডাভিত্তিক আন্তর্জাতিক অলংকার বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেজুরি বলেছে, মূল্যবৃদ্ধির এই প্রবণতা মোকাবিলায় তারা ১০ ক্যারেট সোনার মতো নতুন পণ্য আনার পরিকল্পনা করছে।
সোনার দর এভাবে কত দিন বাড়বে, তা নিয়েও পূর্বাভাস দিয়েছেন অর্থনীতিবিদেরা। তাঁরা বলছেন, ডলারের দরের সঙ্গে যেহেতু সোনার দরের বিপরীতমুখী সম্পর্ক, কাজেই আন্তর্জাতিক বাজারে যত দিন ডলার দুর্বল থাকবে, তত দিন সোনার দর চড়বে। ডলার চাঙা হতে শুরু করলেই সোনার দর পড়তে শুরু করবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড অবশ্য ডলারকে চাঙা করতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং তাঁর শুল্কযুদ্ধ তাঁর দেশেরই মুদ্রাকে আন্তর্জাতিক বাজারে দুর্বল করছে। এ ছাড়া মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতায় ট্রাম্পের বারবার আঘাতের চেষ্টা অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা আরও বাড়িয়েছে।
এই অবস্থায় যে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে, তা হয়তো সঠিক হতে পারে। অর্থাৎ ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। কিন্তু কিছুতেই টিউলিপ ম্যানিয়ার কথা ভুলে যাওয়া চলবে না। পাশাপাশি নজর রাখতে হবে ডলারের দরের দিকেও।
মীরা দেববর্মন ছিলেন বাংলা গানের এক অসামান্য গীতিকার, যিনি কৃতী স্বামী এবং সন্তানের নামের আড়ালে ছড়িয়ে গিয়ে জড়িয়ে আছেন আপন সৃষ্টির কারণেই। অনেকের হয়তো জানা নেই, আধুনিক বাংলা গানের কিংবদন্তি প্রয়াত শচীন দেববর্মনের স্ত্রী এবং উপমহাদেশের আরেক কিংবদন্তি সুরকার রাহুল দেববর্মনের মাতা মীরা দেববর্মন অসংখ্য জন
২ দিন আগেরাশিয়ার রাজধানীতে আফগানিস্তান-বিষয়ক ‘মস্কো ফরম্যাট সংলাপ’ হয়েছে মাত্র কদিন আগে, ৭ অক্টোবর। হাসিমুখে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দুই বিশেষ প্রতিনিধি। কথা বলেছেন অর্থনীতি, বাণিজ্য, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা নিয়ে।
১৬ ঘণ্টা আগেআগুন লেগেছে। ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার মিরপুরের রূপনগরের এম এস আলম ট্রেডার্স নামের একটি রাসায়নিক গুদাম ও পাশের একটি পোশাক কারখানায়। খবরটি দুই দিনে পুরোনো হয়ে গেলেও আহাজারি কমেনি এই আগুনে দগ্ধ ব্যক্তিদের স্বজনদের।
১৭ ঘণ্টা আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নির্দেশনা ধরে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে। নানা অস্পষ্টতা থাকার পরও চুক্তি এখনো টিকে আছে। কিন্তু গত মঙ্গলবার হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ ফিরিয়ে দিতে দেরি করছে, এই অজুহাতে তেল আবিব গাজায় ত্রাণ প্রবেশের হার...
১ দিন আগেসম্পাদকীয়
আগুন লেগেছে। ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার মিরপুরের রূপনগরের এম এস আলম ট্রেডার্স নামের একটি রাসায়নিক গুদাম ও পাশের একটি পোশাক কারখানায়।
খবরটি দুই দিনে পুরোনো হয়ে গেলেও আহাজারি কমেনি এই আগুনে দগ্ধ ব্যক্তিদের স্বজনদের। ঠিক কোথায় আর কীভাবে এই আগুনের সূত্রপাত, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যেমনটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি কতজন প্রাণ দিয়েছেন এই অগ্নিকাণ্ডে।
রূপনগরের শিয়ালবাড়ীর ৩ নম্বর রোডে এখনো হয়তো কেউ দাঁড়িয়ে আছেন স্বজনের ছবি হাতে। সেই ছবি দেখে লাশ চেনার কোনো উপায় থাকবে বলে মনে হয় না। নারগিস আক্তারের মরদেহটি যেমন তাঁর বাবা শনাক্ত করেছেন পায়ের নূপুর দেখে। ফল বিক্রেতা বাবাকে একটু সাহায্যই তো করতে চেয়েছিলেন এইচএসসি পাস করা নারগিস। মরে গিয়ে হয়তো পরিবারের একজন সদস্যের ভার কমিয়ে দিলেন। তাতে কি তাঁর বাবার খুব সাহায্য হলো? বরং বাবার বুকটা ভারী হয়ে গেল আজীবনের জন্য।
এই সম্পাদকীয়টি লেখা পর্যন্ত একে একে যে ১৬টি লাশ উদ্ধার করা হলো, তাদের প্রত্যেকের এ রকম ভিন্ন ভিন্ন গল্প রয়েছে। তাঁদের জীবনপ্রদীপ নিভেছে, আগুনও নিভেছে, কিন্তু সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত রাসায়নিক গুদাম থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। গুদামে থাকা দাহ্য পদার্থ পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় না হওয়া পর্যন্ত ধোঁয়া উঠবে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস। রাসায়নিক গুদামে তাই উদ্ধারকাজ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বিশেষ পোশাক পরে প্রস্তুতি নিয়েছে এখানে প্রবেশের।
রূপনগরের এই ঘটনার সঙ্গে অনেকে হয়তো অনেক অগ্নিকাণ্ডের মিল পাবেন। আগুন লাগার এসব দৃশ্য আমাদের দেশে সাধারণ চিত্রে পরিণত হয়েছে। খানিকটা অতীতের দিকে তাকালে মনে পড়ে শুধু ঢাকা শহরেই ঘটে যাওয়া তাজরীন ফ্যাশনস অগ্নিকাণ্ড, নিমতলী ট্র্যাজেডি, চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডি কিংবা বঙ্গবাজার, বনানীর এফ আর টাওয়ার ও বেইলি রোড ট্র্যাজেডির কথা। এসব অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে। তবু আমাদের সতর্ক হতে যেন বয়েই গেছে!
আলম ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে এটি অনুমোদনহীন। পোশাক কারখানার মালিকের কোনো হদিস নেই। আপাতত সেদিকটা না ঘেঁটে নজর দিতে হয় আগুনের ওপর। একটা ভবনে আগুন কেন লাগে, কীভাবে লাগে আর লেগে গেলে করণীয় কী কিংবা অগ্নিকাণ্ড এড়াতে ভবনের নকশা কেমন হওয়া উচিত—এসব ব্যাপারে কোনো ভবনের মালিক ও ওই ভবন ব্যবহারকারীরা কস্মিনকালেও ভেবেছে কি না, এ নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়। এখন তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে জিজ্ঞেস করলেও সে বলে দিতে পারে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।
গ্যাস ও বিদ্যুতের সঠিক ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ, দাহ্য পদার্থের সঠিক সংরক্ষণ, আগুন নিয়ন্ত্রণে ভবনের সঠিক নকশা, ফায়ার অ্যালার্ম ও ফায়ার এক্সিটের ব্যবহারের পাশাপাশি অগ্নি সুরক্ষা প্রশিক্ষণ সম্পর্কে দেশের প্রতিটি নাগরিকের ধারণা থাকা উচিত। জনসচেতনতা তৈরি ও বাড়াতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরকেই কাজ করতে হবে জোরেশোরে।
আগুন লেগেছে। ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার মিরপুরের রূপনগরের এম এস আলম ট্রেডার্স নামের একটি রাসায়নিক গুদাম ও পাশের একটি পোশাক কারখানায়।
খবরটি দুই দিনে পুরোনো হয়ে গেলেও আহাজারি কমেনি এই আগুনে দগ্ধ ব্যক্তিদের স্বজনদের। ঠিক কোথায় আর কীভাবে এই আগুনের সূত্রপাত, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যেমনটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি কতজন প্রাণ দিয়েছেন এই অগ্নিকাণ্ডে।
রূপনগরের শিয়ালবাড়ীর ৩ নম্বর রোডে এখনো হয়তো কেউ দাঁড়িয়ে আছেন স্বজনের ছবি হাতে। সেই ছবি দেখে লাশ চেনার কোনো উপায় থাকবে বলে মনে হয় না। নারগিস আক্তারের মরদেহটি যেমন তাঁর বাবা শনাক্ত করেছেন পায়ের নূপুর দেখে। ফল বিক্রেতা বাবাকে একটু সাহায্যই তো করতে চেয়েছিলেন এইচএসসি পাস করা নারগিস। মরে গিয়ে হয়তো পরিবারের একজন সদস্যের ভার কমিয়ে দিলেন। তাতে কি তাঁর বাবার খুব সাহায্য হলো? বরং বাবার বুকটা ভারী হয়ে গেল আজীবনের জন্য।
এই সম্পাদকীয়টি লেখা পর্যন্ত একে একে যে ১৬টি লাশ উদ্ধার করা হলো, তাদের প্রত্যেকের এ রকম ভিন্ন ভিন্ন গল্প রয়েছে। তাঁদের জীবনপ্রদীপ নিভেছে, আগুনও নিভেছে, কিন্তু সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত রাসায়নিক গুদাম থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। গুদামে থাকা দাহ্য পদার্থ পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় না হওয়া পর্যন্ত ধোঁয়া উঠবে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস। রাসায়নিক গুদামে তাই উদ্ধারকাজ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বিশেষ পোশাক পরে প্রস্তুতি নিয়েছে এখানে প্রবেশের।
রূপনগরের এই ঘটনার সঙ্গে অনেকে হয়তো অনেক অগ্নিকাণ্ডের মিল পাবেন। আগুন লাগার এসব দৃশ্য আমাদের দেশে সাধারণ চিত্রে পরিণত হয়েছে। খানিকটা অতীতের দিকে তাকালে মনে পড়ে শুধু ঢাকা শহরেই ঘটে যাওয়া তাজরীন ফ্যাশনস অগ্নিকাণ্ড, নিমতলী ট্র্যাজেডি, চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডি কিংবা বঙ্গবাজার, বনানীর এফ আর টাওয়ার ও বেইলি রোড ট্র্যাজেডির কথা। এসব অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে। তবু আমাদের সতর্ক হতে যেন বয়েই গেছে!
আলম ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে এটি অনুমোদনহীন। পোশাক কারখানার মালিকের কোনো হদিস নেই। আপাতত সেদিকটা না ঘেঁটে নজর দিতে হয় আগুনের ওপর। একটা ভবনে আগুন কেন লাগে, কীভাবে লাগে আর লেগে গেলে করণীয় কী কিংবা অগ্নিকাণ্ড এড়াতে ভবনের নকশা কেমন হওয়া উচিত—এসব ব্যাপারে কোনো ভবনের মালিক ও ওই ভবন ব্যবহারকারীরা কস্মিনকালেও ভেবেছে কি না, এ নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়। এখন তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে জিজ্ঞেস করলেও সে বলে দিতে পারে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।
গ্যাস ও বিদ্যুতের সঠিক ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ, দাহ্য পদার্থের সঠিক সংরক্ষণ, আগুন নিয়ন্ত্রণে ভবনের সঠিক নকশা, ফায়ার অ্যালার্ম ও ফায়ার এক্সিটের ব্যবহারের পাশাপাশি অগ্নি সুরক্ষা প্রশিক্ষণ সম্পর্কে দেশের প্রতিটি নাগরিকের ধারণা থাকা উচিত। জনসচেতনতা তৈরি ও বাড়াতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরকেই কাজ করতে হবে জোরেশোরে।
মীরা দেববর্মন ছিলেন বাংলা গানের এক অসামান্য গীতিকার, যিনি কৃতী স্বামী এবং সন্তানের নামের আড়ালে ছড়িয়ে গিয়ে জড়িয়ে আছেন আপন সৃষ্টির কারণেই। অনেকের হয়তো জানা নেই, আধুনিক বাংলা গানের কিংবদন্তি প্রয়াত শচীন দেববর্মনের স্ত্রী এবং উপমহাদেশের আরেক কিংবদন্তি সুরকার রাহুল দেববর্মনের মাতা মীরা দেববর্মন অসংখ্য জন
২ দিন আগেরাশিয়ার রাজধানীতে আফগানিস্তান-বিষয়ক ‘মস্কো ফরম্যাট সংলাপ’ হয়েছে মাত্র কদিন আগে, ৭ অক্টোবর। হাসিমুখে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দুই বিশেষ প্রতিনিধি। কথা বলেছেন অর্থনীতি, বাণিজ্য, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা নিয়ে।
১৬ ঘণ্টা আগেআজ থেকে প্রায় পাঁচ শ বছর আগের কথা। তুরস্ক থেকে টিউলিপ ফুল পৌঁছায় ইউরোপে। নেদারল্যান্ডস তখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি। মাথাপিছু আয়ে দেশটি সবার চেয়ে এগিয়ে। টিউলিপের রূপে দেশটির মানুষ হঠাৎ মজে উঠল। এর মধ্যে বিশেষ একধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত টিউলিপে সবার আগ্রহ বেড়ে যায়।
১৬ ঘণ্টা আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নির্দেশনা ধরে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে। নানা অস্পষ্টতা থাকার পরও চুক্তি এখনো টিকে আছে। কিন্তু গত মঙ্গলবার হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ ফিরিয়ে দিতে দেরি করছে, এই অজুহাতে তেল আবিব গাজায় ত্রাণ প্রবেশের হার...
১ দিন আগেগাজা যুদ্ধবিরতি
আব্দুর রহমান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নির্দেশনা ধরে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে। নানা অস্পষ্টতা থাকার পরও চুক্তি এখনো টিকে আছে। কিন্তু গত মঙ্গলবার হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ ফিরিয়ে দিতে দেরি করছে, এই অজুহাতে তেল আবিব গাজায় ত্রাণ প্রবেশের হার অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে। আর এখানেই মূলত পরীক্ষার মুখে পড়ে গেছে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভবিষ্যৎ।
পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অবস্থান এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের ফিলিস্তিনিদের বসতি উচ্ছেদ ও ভাঙচুরের গতি আরও বেড়ে যাওয়ায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে গাজা এবং পশ্চিম তীরে ট্রাম্প-সমর্থিত এই চুক্তি শান্তি ফেরাতে পারবে, নাকি আবারও ফিলিস্তিনিরা এক অন্তত নাকবা তথা মহাবিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে? কারণ, ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলিদের চালানো গণ-উচ্ছেদ ও জাতিগত নিধনের করুণ ইতিহাসকে বলা হয় নাকবা তথা মহাবিপর্যয়। একই সঙ্গে এই প্রশ্নও উঠেছে যে ট্রাম্প-সমর্থিত এই চুক্তি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আসলে কতটুকু সহায়ক হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত চুক্তিতে অনেকগুলো অস্পষ্ট বিষয় রয়েছে। বিশেষ করে ইসরায়েলের মূল চাওয়া অনুসারে—হামাসকে কীভাবে নিরস্ত্রীকৃত করা হবে? আদৌ হামাস এই অবস্থান মানবে কি না? যদিও দলটির শীর্ষ নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁরা ‘আক্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় ভারী অস্ত্র’ পরিত্যাগে প্রস্তুত এবং কেবল নিজেদের ‘আত্মরক্ষা’র জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র রেখে দেবেন। তবে এটি ইসরায়েল মানবে কি না, তা নিয়ে এখনো সন্দেহ রয়ে গেছে।
এ ছাড়া গত মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ প্রবেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। দেশটি বলেছে, গাজায় প্রবেশের অনুমতি পাওয়া ত্রাণবাহী ট্রাকের সংখ্যা দিনে ৬০০ থেকে কমিয়ে ৩০০ করা হবে। পাশাপাশি মিসর সীমান্তের রাফাহ ক্রসিংও অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে, যা ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন। এই অবস্থায় যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ গুরুতর ঝুঁকির মুখে।
মূলত চুক্তিতে অনেক কিছু অস্পষ্ট থাকার কারণেই এমনটা ঘটার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বিশ্লেষক ও কূটনীতিকদের মতে, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার শক্তিটাই আবার তার দুর্বলতা। এই চুক্তির মূল দলিলটিতে অনেক বিষয়ই অস্পষ্ট রাখা হয়েছে। উভয় পক্ষই বিস্তারিত শর্তে একমত হয়নি। এই অস্পষ্টতাই হয়তো দুই পক্ষকে সই করাতে সাহায্য করেছে, কিন্তু এর অর্থ হলো—সবচেয়ে কঠিন কূটনৈতিক কাজ এখনো বাকি।
এই সাফল্য টেকসই শান্তির পথে কত দূর এগোবে, তা নির্ভর করবে ট্রাম্প কতটা চাপ বজায় রাখতে পারবেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর।
ইসরায়েল ও হামাস এখনো ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা পরিকল্পনার অনেক বিষয়ে একমত হতে পারেনি। আগামী বছর ইসরায়েলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই নেতানিয়াহু তাঁর ডানপন্থী জোট টিকিয়ে রাখতে গেলে নীতি বদলাতেও পারেন। নেতানিয়াহুর জোটের প্রভাবশালী দুই সহযোগী—ইতামার বেন-গভির ও বেজালেল স্মতরিচ—হামাসের সঙ্গে করা যুদ্ধবিরতি চুক্তির সমালোচনা করেছেন। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী বেন-গভির তো সরকার ছাড়ার হুমকিও দিয়েছেন।
ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক ও সাবেক কূটনীতিক জন অলটারম্যান বলেন, ‘এটা এমন এক চুক্তি, যেটি সহজেই ভেস্তে যেতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমন অস্পষ্ট চুক্তি বিরল—যেখানে এত কিছু পরবর্তী সময়ে ঠিক করতে হবে।’
ইসরায়েলি পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক থিংক ট্যাংক ‘মিতভিম’-এর প্রেসিডেন্ট নিমরোদ গোরেন বলেন, ‘আমরা এখন এমন এক রাজনৈতিক বছরে ঢুকছি, যেখানে সবকিছুই নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে সম্পর্কিত। নেতানিয়াহুর হিসাব এখন পাল্টে যেতে পারে—চাপের কাছে নতি স্বীকার করার বদলে তিনি হয়তো রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকার চেষ্টা করবেন।’
এরই মধ্যে ইসরায়েলের ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী ‘রিলিজিয়াস জায়োনিজম’ পার্টির এমপি সিমচা রথম্যান হুমকি দিয়েছেন, ‘আমরা উদ্বিগ্ন যে হামাস এখনো প্রকাশ্যে বলছে, তারা গাজার ক্ষমতায় থাকবে। আমরা এমন কোনো চুক্তি মেনে নেব না, যা হামাসের পূর্ণ আত্মসমর্পণ নয়। আংশিক বিজয় আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’ আর এমনটা ঘটলে নেতানিয়াহু অতীতের মতো আবারও তাঁর জোটসঙ্গী কট্টর ইহুদি জাতীয়তাবাদী নেতাদের কথা শুনে গাজায় পুনরায় যুদ্ধ শুরুর পথে হাঁটতে পারেন।
তবে নেতানিয়াহুকে বাগে রাখার মতো অস্ত্র ট্রাম্পের হাতে আছে। বিভিন্ন জরিপ বলছে, ইসরায়েলে ট্রাম্প নেতানিয়াহুর চেয়েও অনেক বেশি জনপ্রিয়। মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক জন অলটারম্যান বলেন, এখন ট্রাম্পের হাতে বড় সুবিধা রয়েছে—কারণ ইসরায়েলে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা নেতানিয়াহুর চেয়েও বেশি।
তিনি বলেন, ট্রাম্প চাইলে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে সমর্থনও দিতে পারেন, আবার চাইলে ধ্বংসও করতে পারেন। ফলে ট্রাম্প নিজে যদি আগ্রহী হন তাহলে হয়তো চুক্তি টিকে যেতে পারে।
তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় যে প্রশ্নটি ঊহ্য থেকে যায়, তা হলো—ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি। ট্রাম্প প্রস্তাবিত চুক্তিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা আছে। কিন্তু সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট রূপরেখা নেই। ফলে হামাস যদি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো রূপরেখা না পেয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠে এবং অস্ত্র হাতে তুলে নেয়, তাহলে হয়তো এখন যেসব আরব দেশ হামাসকে অস্ত্র ছাড়ার বিষয়ে চাপ দিচ্ছে, তারা সেটি প্রত্যাহার করে নিতে পারে। কারণ, সৌদি আরবসহ অধিকাংশ দেশই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে। এমনকি ইউরোপীয় দেশগুলোও সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। এ কারণে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া কেবলই পরিস্থিতি জটিল করবে।
এদিকে সবাই যখন গাজা শান্তিচুক্তি নিয়ে ব্যস্ত, তখন ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী কিছুদিন আগে পশ্চিম তীরের মাসাফের ইয়াত্তার ছোট্ট একটি এলাকাকে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। এটি চলতি বছর ইসরায়েলি বাহিনীর পরিচালিত চারটি বৃহৎ ধ্বংস অভিযানের একটি। স্থানীয়দের কাছে এই ধ্বংসযজ্ঞ কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। তাদের চোখে এ এক ‘নতুন নাকবা।’
ইয়াত্তার পাশের গ্রামের প্রধান মোহাম্মদ রাবিয়া বলেন, ইসরায়েলিরা যখন কোনো গ্রামে অভিযান চালায় তখন তারা পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা, পানির লাইন, যোগাযোগব্যবস্থাসহ সব ধ্বংস করে দেয়। এই প্রক্রিয়া যুগের পর যুগ ধরে চলছে। ফিলিস্তিনিরা বারবার তাদের বিধ্বস্ত বাড়িঘর ঠিক করে আর ইসরায়েলিরা এসে তা ভেঙে দিয়ে যায়। রাবিয়া আরও বলেন, এ যেন এক ‘অনন্ত নাকবা’।
যখন ইসরায়েলি আগ্রাসন গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে, পশ্চিম তীরে অনন্তকাল ধরে দখলদারত্ব চালাচ্ছে, তখন এই প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক যে—আদৌ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হবে, নাকি আবার অন্যান্য শান্তিচুক্তির মতো এটাও ভেস্তে যাবে? আর ভেস্তে গেলে সেটা যে ফিলিস্তিনে চলা ‘অনন্ত নাকবা’কেই দীর্ঘায়িত করবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নির্দেশনা ধরে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে। নানা অস্পষ্টতা থাকার পরও চুক্তি এখনো টিকে আছে। কিন্তু গত মঙ্গলবার হামাস ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ ফিরিয়ে দিতে দেরি করছে, এই অজুহাতে তেল আবিব গাজায় ত্রাণ প্রবেশের হার অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে। আর এখানেই মূলত পরীক্ষার মুখে পড়ে গেছে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভবিষ্যৎ।
পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অবস্থান এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের ফিলিস্তিনিদের বসতি উচ্ছেদ ও ভাঙচুরের গতি আরও বেড়ে যাওয়ায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে গাজা এবং পশ্চিম তীরে ট্রাম্প-সমর্থিত এই চুক্তি শান্তি ফেরাতে পারবে, নাকি আবারও ফিলিস্তিনিরা এক অন্তত নাকবা তথা মহাবিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে? কারণ, ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলিদের চালানো গণ-উচ্ছেদ ও জাতিগত নিধনের করুণ ইতিহাসকে বলা হয় নাকবা তথা মহাবিপর্যয়। একই সঙ্গে এই প্রশ্নও উঠেছে যে ট্রাম্প-সমর্থিত এই চুক্তি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আসলে কতটুকু সহায়ক হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত চুক্তিতে অনেকগুলো অস্পষ্ট বিষয় রয়েছে। বিশেষ করে ইসরায়েলের মূল চাওয়া অনুসারে—হামাসকে কীভাবে নিরস্ত্রীকৃত করা হবে? আদৌ হামাস এই অবস্থান মানবে কি না? যদিও দলটির শীর্ষ নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁরা ‘আক্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় ভারী অস্ত্র’ পরিত্যাগে প্রস্তুত এবং কেবল নিজেদের ‘আত্মরক্ষা’র জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র রেখে দেবেন। তবে এটি ইসরায়েল মানবে কি না, তা নিয়ে এখনো সন্দেহ রয়ে গেছে।
এ ছাড়া গত মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ প্রবেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। দেশটি বলেছে, গাজায় প্রবেশের অনুমতি পাওয়া ত্রাণবাহী ট্রাকের সংখ্যা দিনে ৬০০ থেকে কমিয়ে ৩০০ করা হবে। পাশাপাশি মিসর সীমান্তের রাফাহ ক্রসিংও অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে, যা ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন। এই অবস্থায় যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ গুরুতর ঝুঁকির মুখে।
মূলত চুক্তিতে অনেক কিছু অস্পষ্ট থাকার কারণেই এমনটা ঘটার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বিশ্লেষক ও কূটনীতিকদের মতে, ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার শক্তিটাই আবার তার দুর্বলতা। এই চুক্তির মূল দলিলটিতে অনেক বিষয়ই অস্পষ্ট রাখা হয়েছে। উভয় পক্ষই বিস্তারিত শর্তে একমত হয়নি। এই অস্পষ্টতাই হয়তো দুই পক্ষকে সই করাতে সাহায্য করেছে, কিন্তু এর অর্থ হলো—সবচেয়ে কঠিন কূটনৈতিক কাজ এখনো বাকি।
এই সাফল্য টেকসই শান্তির পথে কত দূর এগোবে, তা নির্ভর করবে ট্রাম্প কতটা চাপ বজায় রাখতে পারবেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর।
ইসরায়েল ও হামাস এখনো ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা পরিকল্পনার অনেক বিষয়ে একমত হতে পারেনি। আগামী বছর ইসরায়েলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই নেতানিয়াহু তাঁর ডানপন্থী জোট টিকিয়ে রাখতে গেলে নীতি বদলাতেও পারেন। নেতানিয়াহুর জোটের প্রভাবশালী দুই সহযোগী—ইতামার বেন-গভির ও বেজালেল স্মতরিচ—হামাসের সঙ্গে করা যুদ্ধবিরতি চুক্তির সমালোচনা করেছেন। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী বেন-গভির তো সরকার ছাড়ার হুমকিও দিয়েছেন।
ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক ও সাবেক কূটনীতিক জন অলটারম্যান বলেন, ‘এটা এমন এক চুক্তি, যেটি সহজেই ভেস্তে যেতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এমন অস্পষ্ট চুক্তি বিরল—যেখানে এত কিছু পরবর্তী সময়ে ঠিক করতে হবে।’
ইসরায়েলি পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক থিংক ট্যাংক ‘মিতভিম’-এর প্রেসিডেন্ট নিমরোদ গোরেন বলেন, ‘আমরা এখন এমন এক রাজনৈতিক বছরে ঢুকছি, যেখানে সবকিছুই নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে সম্পর্কিত। নেতানিয়াহুর হিসাব এখন পাল্টে যেতে পারে—চাপের কাছে নতি স্বীকার করার বদলে তিনি হয়তো রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকার চেষ্টা করবেন।’
এরই মধ্যে ইসরায়েলের ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী ‘রিলিজিয়াস জায়োনিজম’ পার্টির এমপি সিমচা রথম্যান হুমকি দিয়েছেন, ‘আমরা উদ্বিগ্ন যে হামাস এখনো প্রকাশ্যে বলছে, তারা গাজার ক্ষমতায় থাকবে। আমরা এমন কোনো চুক্তি মেনে নেব না, যা হামাসের পূর্ণ আত্মসমর্পণ নয়। আংশিক বিজয় আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’ আর এমনটা ঘটলে নেতানিয়াহু অতীতের মতো আবারও তাঁর জোটসঙ্গী কট্টর ইহুদি জাতীয়তাবাদী নেতাদের কথা শুনে গাজায় পুনরায় যুদ্ধ শুরুর পথে হাঁটতে পারেন।
তবে নেতানিয়াহুকে বাগে রাখার মতো অস্ত্র ট্রাম্পের হাতে আছে। বিভিন্ন জরিপ বলছে, ইসরায়েলে ট্রাম্প নেতানিয়াহুর চেয়েও অনেক বেশি জনপ্রিয়। মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক জন অলটারম্যান বলেন, এখন ট্রাম্পের হাতে বড় সুবিধা রয়েছে—কারণ ইসরায়েলে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা নেতানিয়াহুর চেয়েও বেশি।
তিনি বলেন, ট্রাম্প চাইলে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে সমর্থনও দিতে পারেন, আবার চাইলে ধ্বংসও করতে পারেন। ফলে ট্রাম্প নিজে যদি আগ্রহী হন তাহলে হয়তো চুক্তি টিকে যেতে পারে।
তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় যে প্রশ্নটি ঊহ্য থেকে যায়, তা হলো—ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টি। ট্রাম্প প্রস্তাবিত চুক্তিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা আছে। কিন্তু সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট রূপরেখা নেই। ফলে হামাস যদি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো রূপরেখা না পেয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠে এবং অস্ত্র হাতে তুলে নেয়, তাহলে হয়তো এখন যেসব আরব দেশ হামাসকে অস্ত্র ছাড়ার বিষয়ে চাপ দিচ্ছে, তারা সেটি প্রত্যাহার করে নিতে পারে। কারণ, সৌদি আরবসহ অধিকাংশ দেশই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে। এমনকি ইউরোপীয় দেশগুলোও সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। এ কারণে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া কেবলই পরিস্থিতি জটিল করবে।
এদিকে সবাই যখন গাজা শান্তিচুক্তি নিয়ে ব্যস্ত, তখন ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী কিছুদিন আগে পশ্চিম তীরের মাসাফের ইয়াত্তার ছোট্ট একটি এলাকাকে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। এটি চলতি বছর ইসরায়েলি বাহিনীর পরিচালিত চারটি বৃহৎ ধ্বংস অভিযানের একটি। স্থানীয়দের কাছে এই ধ্বংসযজ্ঞ কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। তাদের চোখে এ এক ‘নতুন নাকবা।’
ইয়াত্তার পাশের গ্রামের প্রধান মোহাম্মদ রাবিয়া বলেন, ইসরায়েলিরা যখন কোনো গ্রামে অভিযান চালায় তখন তারা পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা, পানির লাইন, যোগাযোগব্যবস্থাসহ সব ধ্বংস করে দেয়। এই প্রক্রিয়া যুগের পর যুগ ধরে চলছে। ফিলিস্তিনিরা বারবার তাদের বিধ্বস্ত বাড়িঘর ঠিক করে আর ইসরায়েলিরা এসে তা ভেঙে দিয়ে যায়। রাবিয়া আরও বলেন, এ যেন এক ‘অনন্ত নাকবা’।
যখন ইসরায়েলি আগ্রাসন গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে, পশ্চিম তীরে অনন্তকাল ধরে দখলদারত্ব চালাচ্ছে, তখন এই প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক যে—আদৌ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হবে, নাকি আবার অন্যান্য শান্তিচুক্তির মতো এটাও ভেস্তে যাবে? আর ভেস্তে গেলে সেটা যে ফিলিস্তিনে চলা ‘অনন্ত নাকবা’কেই দীর্ঘায়িত করবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
মীরা দেববর্মন ছিলেন বাংলা গানের এক অসামান্য গীতিকার, যিনি কৃতী স্বামী এবং সন্তানের নামের আড়ালে ছড়িয়ে গিয়ে জড়িয়ে আছেন আপন সৃষ্টির কারণেই। অনেকের হয়তো জানা নেই, আধুনিক বাংলা গানের কিংবদন্তি প্রয়াত শচীন দেববর্মনের স্ত্রী এবং উপমহাদেশের আরেক কিংবদন্তি সুরকার রাহুল দেববর্মনের মাতা মীরা দেববর্মন অসংখ্য জন
২ দিন আগেরাশিয়ার রাজধানীতে আফগানিস্তান-বিষয়ক ‘মস্কো ফরম্যাট সংলাপ’ হয়েছে মাত্র কদিন আগে, ৭ অক্টোবর। হাসিমুখে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দুই বিশেষ প্রতিনিধি। কথা বলেছেন অর্থনীতি, বাণিজ্য, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা নিয়ে।
১৬ ঘণ্টা আগেআজ থেকে প্রায় পাঁচ শ বছর আগের কথা। তুরস্ক থেকে টিউলিপ ফুল পৌঁছায় ইউরোপে। নেদারল্যান্ডস তখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি। মাথাপিছু আয়ে দেশটি সবার চেয়ে এগিয়ে। টিউলিপের রূপে দেশটির মানুষ হঠাৎ মজে উঠল। এর মধ্যে বিশেষ একধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত টিউলিপে সবার আগ্রহ বেড়ে যায়।
১৬ ঘণ্টা আগেআগুন লেগেছে। ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার মিরপুরের রূপনগরের এম এস আলম ট্রেডার্স নামের একটি রাসায়নিক গুদাম ও পাশের একটি পোশাক কারখানায়। খবরটি দুই দিনে পুরোনো হয়ে গেলেও আহাজারি কমেনি এই আগুনে দগ্ধ ব্যক্তিদের স্বজনদের।
১৭ ঘণ্টা আগে