আবু জাফর রাজু
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য আব্দুল জব্বার ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁকে বঙ্গবন্ধু স্নেহ করতেন এবং ভালোবাসতেন। তিনি নিজেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। প্রচণ্ড ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, সাহসী, তেজদীপ্ত একজন মানুষ ছিলেন আব্দুল জব্বার। ’৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-র ৬ দফা, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে অনন্য ভূমিকা রেখেছিলেন।
’৭৫-পরবর্তী দুঃসময়েও তিনি সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করেছিলেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর আওয়ামী লীগ নানা টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে গেছে। দলের ভাঙাগড়া, ষড়যন্ত্র দেখা গেছে। আব্দুল জব্বার সেই ভাঙাগড়া দলকে সুসংগঠিত করেছেন; কখনো আওয়ামী লীগ ছেড়ে যাননি; নেতৃত্বের প্রতি, দলের সঙ্গে বেইমানি, মুনাফেকি করেননি। তিনি জিয়ার শাসনামলে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, কিন্তু দমে যাননি।
আব্দুল জব্বার একাধারে যেমন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সংগঠক ছিলেন, তেমনি মাত্র ১৯ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালে কুলাউড়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি বৃহত্তর সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য ও সহসভাপতি এবং মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সিনিয়র সহসভাপতি, পরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন। তিনি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন।
আব্দুল জব্বার তাঁর সংগ্রামী জীবনে সততা, মেধা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও বাগ্মিতার ফলে সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে জনকল্যাণমূলক রাজনীতির অভীষ্ট লক্ষ্যে জাতির পিতার দেখানো পথ অনুসরণ করে এগিয়ে গেছেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ওয়্যারলেসে পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আব্দুল জব্বার সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেন। ৬ মে পাকিস্তানি বাহিনী কুলাউড়া আক্রমণ করলে তাঁর দুই সহযোদ্ধা সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁর অন্য সহযোদ্ধাদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ধর্মনগরে চলে যান। ধর্মনগর মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও শরণার্থী ব্যবস্থাপনার জন্য গঠিত জোনাল প্রশাসনিক কাউন্সিলের সদস্য এবং রিক্রুট ক্যাম্পের কো-চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের অবিশ্বাস্য দুঃসংবাদ শুনে আব্দুল জব্বারের নেতৃত্বে ১৭ আগস্ট কুলাউড়া শহরে প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তিনি কারারুদ্ধ হন।
বঙ্গবন্ধুর অন্যতম খুনি মেজর নূর সিলেট কারাগারের অভ্যন্তরে আব্দুল জব্বারকে রাতভর অমানুষিক নির্যাতন করে এবং ভোরের দিকে ব্রাশফায়ার করার জন্য উদ্যত হন। ঠিক সেই মুহূর্তে ফেরেশতার মতো তৎকালীন সেনা অফিসার প্রয়াত আমিন আহমদ চৌধুরী তাঁকে উদ্ধার করে কুমিল্লা জেলে পাঠান।
মহান মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার আব্বাকে ২০২০ সালে একুশে পদকে ভূষিত করেছে।
লেখক: মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ ও মরহুম আব্দুল জব্বারের পুত্র
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য আব্দুল জব্বার ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁকে বঙ্গবন্ধু স্নেহ করতেন এবং ভালোবাসতেন। তিনি নিজেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। প্রচণ্ড ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, সাহসী, তেজদীপ্ত একজন মানুষ ছিলেন আব্দুল জব্বার। ’৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-র ৬ দফা, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে অনন্য ভূমিকা রেখেছিলেন।
’৭৫-পরবর্তী দুঃসময়েও তিনি সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করেছিলেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর আওয়ামী লীগ নানা টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে গেছে। দলের ভাঙাগড়া, ষড়যন্ত্র দেখা গেছে। আব্দুল জব্বার সেই ভাঙাগড়া দলকে সুসংগঠিত করেছেন; কখনো আওয়ামী লীগ ছেড়ে যাননি; নেতৃত্বের প্রতি, দলের সঙ্গে বেইমানি, মুনাফেকি করেননি। তিনি জিয়ার শাসনামলে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, কিন্তু দমে যাননি।
আব্দুল জব্বার একাধারে যেমন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সংগঠক ছিলেন, তেমনি মাত্র ১৯ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালে কুলাউড়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি বৃহত্তর সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য ও সহসভাপতি এবং মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সিনিয়র সহসভাপতি, পরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন। তিনি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন।
আব্দুল জব্বার তাঁর সংগ্রামী জীবনে সততা, মেধা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও বাগ্মিতার ফলে সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে জনকল্যাণমূলক রাজনীতির অভীষ্ট লক্ষ্যে জাতির পিতার দেখানো পথ অনুসরণ করে এগিয়ে গেছেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ওয়্যারলেসে পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আব্দুল জব্বার সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেন। ৬ মে পাকিস্তানি বাহিনী কুলাউড়া আক্রমণ করলে তাঁর দুই সহযোদ্ধা সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁর অন্য সহযোদ্ধাদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ধর্মনগরে চলে যান। ধর্মনগর মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও শরণার্থী ব্যবস্থাপনার জন্য গঠিত জোনাল প্রশাসনিক কাউন্সিলের সদস্য এবং রিক্রুট ক্যাম্পের কো-চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের অবিশ্বাস্য দুঃসংবাদ শুনে আব্দুল জব্বারের নেতৃত্বে ১৭ আগস্ট কুলাউড়া শহরে প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তিনি কারারুদ্ধ হন।
বঙ্গবন্ধুর অন্যতম খুনি মেজর নূর সিলেট কারাগারের অভ্যন্তরে আব্দুল জব্বারকে রাতভর অমানুষিক নির্যাতন করে এবং ভোরের দিকে ব্রাশফায়ার করার জন্য উদ্যত হন। ঠিক সেই মুহূর্তে ফেরেশতার মতো তৎকালীন সেনা অফিসার প্রয়াত আমিন আহমদ চৌধুরী তাঁকে উদ্ধার করে কুমিল্লা জেলে পাঠান।
মহান মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার আব্বাকে ২০২০ সালে একুশে পদকে ভূষিত করেছে।
লেখক: মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ ও মরহুম আব্দুল জব্বারের পুত্র
কাশ্মীরের বুক চিরে বয়ে চলেছে ঝিলাম নদী। কাশ্মীর উপত্যকা হলো ঝিলামের উত্তর ভাগের অংশ। উপত্যকাটি ১৩৭ কিলোমিটার লম্বা এবং ৩০ থেকে ৪০ কিমি চওড়া। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের কারণে কাশ্মীরকে বলা হয় ভূস্বর্গ। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর্ষণে সেখানে অনেকে বেড়াতে যান। ১৯৪৭ সালের আগে কেউ ভাবতে পারেননি যে কাশ্মীর হয়ে
৮ ঘণ্টা আগেসমাজের ধনী গরিব বৈষম্যের দূরত্বটাকে কমিয়ে, সম্পদের অধিকতর সুষম বণ্টন নিশ্চিত করে, একটি সুখী বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে মানুষের মৌলিক চাহিদা সম্পন্ন পণ্যের মূল্য নির্ধারণে একটি নতুন প্রস্তাবনা পেশ করছি। প্রথমেই বলে রাখি, এই উদ্যোগটি হবে সীমিত আকারের এবং এর সাফল্যের ভিত্তিতে এটি সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে
৯ ঘণ্টা আগেরাখাইনে মানবিক করিডরের প্রস্তাব বাংলাদেশের জন্য একদিকে মানবিক দায়িত্ব পালনের সুযোগ, অন্যদিকে চরম ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি। মিয়ানমারের জান্তা, বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও ভারত-চীনের প্রতিক্রিয়া না বুঝে করিডর চালু করলে তা ‘প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদে’ পরিণত হতে পারে। ভারতের কালাদান প্রকল্প ও চীনের ২১ বিলিয়ন ডলারের
১১ ঘণ্টা আগেসহজ কথা বলা যেমন সহজ নয়, তেমনি সহজ নয় আমাদের দেশে রাজনৈতিক বিষয়ে একমত হওয়া। আমাদের দেশে যত মাথা, তত মত—যে যার মতে অটল, নিজের বক্তব্যে অনড়। ফলে এখানে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানোই যেন যুদ্ধ জয়ের সমান। রাজনীতি তো আর গণিতের সূত্র নয়, যেখানে সবাই একই জবাব মেনে নেবে; এখানে আবেগ, স্বার্থ, বিশ্বাস আর...
২০ ঘণ্টা আগে