মামুনুর রশীদ
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঈদ এসেছিল। সেই ঈদের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে একটা বিশেষ নাটক লিখেছিলাম। যুদ্ধরত শিল্পীদের অভিনয়ে সমৃদ্ধ হয়ে নাটকটি প্রচারিত হয়েছিল ঈদের আগের দিন। নাটকটির নাম ছিল ‘চান্দের তলোয়ার’। ঈদের চাঁদ সাধারণত আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। খুশির এই ঈদের বড় প্রতীক হলো চাঁদ। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিটি পরিবার হয়ে দাঁড়িয়েছিল এক একটি বেদনার প্রতীক। যাঁরা দেশে অবস্থান করছিলেন, তাঁরা ছিলেন এক মহা আতঙ্কের মধ্যে। আর যেসব পরিবারের সন্তানেরা যুদ্ধে গিয়েছিলেন তাদের তো আশঙ্কার শেষ নেই। অনেকের সঙ্গে পরিবারের কোনো যোগাযোগই ছিল না। অথচ যুদ্ধরত দুটি সম্প্রদায়ই একই ধর্মের। ইসলামের নামে এই যুদ্ধ। আর সে যুদ্ধে আক্রমণকারী বাহিনীর জন্য হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন সবই বৈধ। তাই আনন্দ, সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব, উৎসবের প্রতীক না হয়ে চাঁদ দাঁড়াল তলোয়ার হয়ে। যে তলোয়ার নৃশংসতার এবং বিশেষ করে নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার প্রতীক হয়ে গেল।
নাটকের সূচনা দৃশ্যটা ছিল এ রকম—সীমান্তের কোনো এক বাংকারে বসে আছেন মুক্তিযোদ্ধারা। এর মধ্যে আছেন বিভিন্ন বয়সের যোদ্ধা। একজন আছে, একেবারে কিশোর। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে আকাশের চাঁদটার দিকে। অন্যরা মনোযোগী প্রতিপক্ষের দিকে। মাঝে মাঝে হালকা কামানের আওয়াজে মাটি কেঁপে উঠছে। কিশোর ছেলেটির মনে পড়ছে মা-বাবা, ভাইবোনের কথা। গুলি চালাতে চালাতে সবার স্মৃতিতে ভেসে আসছে বিগত ঈদগুলোর মুহূর্ত। এমনি করে বাংকারের ভেতরের আবহ যখন ভারী হয়ে ওঠে, তখন বয়স্ক একজন যোদ্ধা তাঁর মুখস্থ করা বিষাদসিন্ধু থেকে পাঠ শুরু করেন। পাকিস্তানি সেনাদের তখন সীমার-এজিদ মনে করতে থাকেন সবাই। আর তীব্র আক্রমণে পাকিস্তানি সেনাদের বাংলায় বিধ্বস্ত করে দেন তাঁরা।
আজকে অর্ধশতাব্দী পর মনে পড়ল সেই নাটকটির কথা, সঙ্গে সঙ্গে সেই সময়টার কথাও। তবে সেই সময়টার অবসানও হয়েছিল। চান্দের তলোয়ার সমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মুক্তির আস্বাদ গ্রহণ করেছিলাম। বিজাতীয় পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাজিত হয়ে দেশ ত্যাগ করেছিল। কিন্তু দেশটায় যুদ্ধ শেষে শান্তি এল না। একাত্তরের সেই পাকিস্তানি সহযোগীরা মাটি কামড়ে ঘাপটি মেরে পড়ে থাকল। আর মুক্তিযুদ্ধের শক্তিও কিছু মৌলিক প্রশ্নে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারল না। স্বপক্ষের আর বিপক্ষের শক্তিতে বিভাজিত হয়ে দীর্ঘ সময় চলতেই থাকল। তাই মাঝে মাঝেই চাঁদটাকে তলোয়ারই মনে হয়।
আমাদের দুর্ভাগ্য, আমাদের যে শাসকগোষ্ঠীটা গড়ে উঠেছে তাদের রাষ্ট্র পরিচালনায় মনোযোগ নেই। মনোযোগ অন্যত্র—ক্ষমতাকে ব্যবহার করে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলায়। তাই ক্ষমতায় থাকার সময় দেশের অসংখ্য সমস্যার সমাধান না করে আমলাদের সঙ্গে নিয়ে কী করে স্বল্প সময়ে কোটিপতি হওয়া যায়, সেই ধান্দা করায় ব্যস্ত তারা। টাকা না হলেও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজের ছেলেমেয়েদের প্রতিষ্ঠিত করা চাই। রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটা দেশে ক্ষমতার পরিবর্তন করার পরও তরুণ ছাত্ররা ক্ষমতার অংশীদার হয়েছে, যা পৃথিবীতে বিরল। শুধু তা-ই নয়, তারা আবার দুর্নীতিতেও জড়িয়ে পড়ছে। আর বিশৃঙ্খল দেশটাকে আরও ভীতিকর করার জন্য বহাল আছে মবতন্ত্র। একটি জনপ্রিয় টিভি ধারাবাহিকে আমার সংলাপ ছিল, ‘দেশটা কি মগের মুল্লুক হয়ে গেল নাকি? ইংরেজের শাসনে কোনো বিচার-আচার নাই?’
এখনো মাঝে মাঝে মনে হয় মগের মুল্লুক হয়ে মবের মুল্লুক ফিরে আসছে। সম্প্রতি সেনাবাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, এই মবতন্ত্র চলতে দেওয়া যাবে না। বেশ দেরি হয়ে গেল না? ৯ মাস হয়ে গেল, এর মধ্যে অনেক অনাচার হয়ে গেছে। মানুষের শান্তি নষ্ট হয়েছে। সুদূর ফরাসি দেশ থেকে এক দুর্বৃত্তের নির্দেশে দেশে অনেক অশান্তি ঘটেছে। শান্তিতে নোবেল পাওয়া আমাদের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় সেসবের দিকে একবারও তাকাননি। বিচার বিভাগ যখন খুশি যাকে জেল থেকে ছেড়ে দিচ্ছে। আবার হাজার হাজার মামলায় বিচারালয় ভরে যাচ্ছে। যুক্তিহীন, প্রমাণহীন এই মামলার জট বাকি ১০০ বছরেও ছুটবে কি না কে জানে!
আইন উপদেষ্টা মহোদয়ের জানা উচিত, যত মামলা ততই টাকার ছড়াছড়ি, ততই দুর্নীতি। আর তাতে ফুলেফেঁপে ওঠে বিচার বিভাগ, আইনজীবী, পুলিশ আর মামলার দালালেরা। গত ৯ মাসে যে পরিমাণ দুর্নীতিগ্রস্ত হলো সবকিছু, তা এত অল্প সময়ে আগে কখনো হয়নি। সমগ্র জাতি এত অনিশ্চয়তায় কখনো পড়েনি। তাহলে পূর্ব গগনের অশ্বারোহীরা সংস্কারের নামে যে কালক্ষেপণ করলেন, তার বিপুল ক্ষতিপূরণ কে দেবে? এইটুকু সাধারণ জ্ঞান এই অশ্বারোহীদের নেই যে ঐকমত্য সভা করে ঠিক করতে পারে না। এটি মানবজাতি তার টনক না নড়ালে করবে না। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে কতগুলো টাই-স্যুট পরা বাংলাভাষী বিদেশি নাগরিকদের চাকরি পাওয়ার মধ্য দিয়ে যে এসব হবে না, তা এই ডক্টরেটরা বোঝেন না। হায়রে দুর্ভাগা দেশ! কী অপচয়!
গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে কোনো পদক্ষেপই এই অশ্বারোহীরা নেবেন না। নির্বাচনের দাবি প্রথম থেকেই। কার প্রয়োজনে নির্বাচন বিলম্বিত হচ্ছে? বিদেশি নাগরিকেরা তাঁদের ভাষায় কেন বোঝান না যে মেটিকুলাস পার্টিকে ক্ষমতায় আনার দায়িত্ব তাদের না। আর সে দায়িত্ব পালনে ভয়াবহ ভরাডুবি প্রায় সুনিশ্চিত। কারণ, ইতিমধ্যেই তারা সে পথ সুগম করেছে। যে ফেসবুককে অবলম্বন করে তারা ক্ষমতায় এসেছে, সেই ফেসবুকই এসব ব্যাপারে ভীষণ সক্রিয়। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রস্তাবে একটা কঠোর বিষয় আসা উচিত ছিল, তা হলো, দেশ পরিচালিত হবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারাই। এর অন্যথা হবে না কোনোভাবেই। পূর্ব দিগন্ত থেকে অশ্বারোহীদের হঠাৎ ক্ষমতায় আরোহণ চিরদিনের জন্য বন্ধ করাও জরুরি। এত দিন বিচারপতিদের ক্ষমতায় আনার জন্য একটা ব্যবস্থা ছিল, এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে, তা-ও বিদেশি প্রভুদের চাপে।
যাই হোক, শামসুর রাহমানের কবিতার কথা সত্যি হয়ে দাঁড়াচ্ছে প্রতিদিন—এক উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ। আমি আজ থেকে অর্ধশতাব্দী আগে ‘চান্দের তলোয়ার’ লিখেছিলাম, আজকে হঠাৎ কেন সে কথা মনে পড়ল? হয়তো পরিস্থিতির তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। একটা স্বাধীন দেশে যুদ্ধাবস্থা চলছে। এই পরিস্থিতির অবসান চেয়েছি অনেকবার। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আর কত এই অনন্তকালের অনিশ্চয়তা চলবে?
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঈদ এসেছিল। সেই ঈদের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে একটা বিশেষ নাটক লিখেছিলাম। যুদ্ধরত শিল্পীদের অভিনয়ে সমৃদ্ধ হয়ে নাটকটি প্রচারিত হয়েছিল ঈদের আগের দিন। নাটকটির নাম ছিল ‘চান্দের তলোয়ার’। ঈদের চাঁদ সাধারণত আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। খুশির এই ঈদের বড় প্রতীক হলো চাঁদ। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিটি পরিবার হয়ে দাঁড়িয়েছিল এক একটি বেদনার প্রতীক। যাঁরা দেশে অবস্থান করছিলেন, তাঁরা ছিলেন এক মহা আতঙ্কের মধ্যে। আর যেসব পরিবারের সন্তানেরা যুদ্ধে গিয়েছিলেন তাদের তো আশঙ্কার শেষ নেই। অনেকের সঙ্গে পরিবারের কোনো যোগাযোগই ছিল না। অথচ যুদ্ধরত দুটি সম্প্রদায়ই একই ধর্মের। ইসলামের নামে এই যুদ্ধ। আর সে যুদ্ধে আক্রমণকারী বাহিনীর জন্য হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন সবই বৈধ। তাই আনন্দ, সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব, উৎসবের প্রতীক না হয়ে চাঁদ দাঁড়াল তলোয়ার হয়ে। যে তলোয়ার নৃশংসতার এবং বিশেষ করে নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার প্রতীক হয়ে গেল।
নাটকের সূচনা দৃশ্যটা ছিল এ রকম—সীমান্তের কোনো এক বাংকারে বসে আছেন মুক্তিযোদ্ধারা। এর মধ্যে আছেন বিভিন্ন বয়সের যোদ্ধা। একজন আছে, একেবারে কিশোর। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে আকাশের চাঁদটার দিকে। অন্যরা মনোযোগী প্রতিপক্ষের দিকে। মাঝে মাঝে হালকা কামানের আওয়াজে মাটি কেঁপে উঠছে। কিশোর ছেলেটির মনে পড়ছে মা-বাবা, ভাইবোনের কথা। গুলি চালাতে চালাতে সবার স্মৃতিতে ভেসে আসছে বিগত ঈদগুলোর মুহূর্ত। এমনি করে বাংকারের ভেতরের আবহ যখন ভারী হয়ে ওঠে, তখন বয়স্ক একজন যোদ্ধা তাঁর মুখস্থ করা বিষাদসিন্ধু থেকে পাঠ শুরু করেন। পাকিস্তানি সেনাদের তখন সীমার-এজিদ মনে করতে থাকেন সবাই। আর তীব্র আক্রমণে পাকিস্তানি সেনাদের বাংলায় বিধ্বস্ত করে দেন তাঁরা।
আজকে অর্ধশতাব্দী পর মনে পড়ল সেই নাটকটির কথা, সঙ্গে সঙ্গে সেই সময়টার কথাও। তবে সেই সময়টার অবসানও হয়েছিল। চান্দের তলোয়ার সমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মুক্তির আস্বাদ গ্রহণ করেছিলাম। বিজাতীয় পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাজিত হয়ে দেশ ত্যাগ করেছিল। কিন্তু দেশটায় যুদ্ধ শেষে শান্তি এল না। একাত্তরের সেই পাকিস্তানি সহযোগীরা মাটি কামড়ে ঘাপটি মেরে পড়ে থাকল। আর মুক্তিযুদ্ধের শক্তিও কিছু মৌলিক প্রশ্নে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারল না। স্বপক্ষের আর বিপক্ষের শক্তিতে বিভাজিত হয়ে দীর্ঘ সময় চলতেই থাকল। তাই মাঝে মাঝেই চাঁদটাকে তলোয়ারই মনে হয়।
আমাদের দুর্ভাগ্য, আমাদের যে শাসকগোষ্ঠীটা গড়ে উঠেছে তাদের রাষ্ট্র পরিচালনায় মনোযোগ নেই। মনোযোগ অন্যত্র—ক্ষমতাকে ব্যবহার করে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলায়। তাই ক্ষমতায় থাকার সময় দেশের অসংখ্য সমস্যার সমাধান না করে আমলাদের সঙ্গে নিয়ে কী করে স্বল্প সময়ে কোটিপতি হওয়া যায়, সেই ধান্দা করায় ব্যস্ত তারা। টাকা না হলেও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজের ছেলেমেয়েদের প্রতিষ্ঠিত করা চাই। রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটা দেশে ক্ষমতার পরিবর্তন করার পরও তরুণ ছাত্ররা ক্ষমতার অংশীদার হয়েছে, যা পৃথিবীতে বিরল। শুধু তা-ই নয়, তারা আবার দুর্নীতিতেও জড়িয়ে পড়ছে। আর বিশৃঙ্খল দেশটাকে আরও ভীতিকর করার জন্য বহাল আছে মবতন্ত্র। একটি জনপ্রিয় টিভি ধারাবাহিকে আমার সংলাপ ছিল, ‘দেশটা কি মগের মুল্লুক হয়ে গেল নাকি? ইংরেজের শাসনে কোনো বিচার-আচার নাই?’
এখনো মাঝে মাঝে মনে হয় মগের মুল্লুক হয়ে মবের মুল্লুক ফিরে আসছে। সম্প্রতি সেনাবাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, এই মবতন্ত্র চলতে দেওয়া যাবে না। বেশ দেরি হয়ে গেল না? ৯ মাস হয়ে গেল, এর মধ্যে অনেক অনাচার হয়ে গেছে। মানুষের শান্তি নষ্ট হয়েছে। সুদূর ফরাসি দেশ থেকে এক দুর্বৃত্তের নির্দেশে দেশে অনেক অশান্তি ঘটেছে। শান্তিতে নোবেল পাওয়া আমাদের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় সেসবের দিকে একবারও তাকাননি। বিচার বিভাগ যখন খুশি যাকে জেল থেকে ছেড়ে দিচ্ছে। আবার হাজার হাজার মামলায় বিচারালয় ভরে যাচ্ছে। যুক্তিহীন, প্রমাণহীন এই মামলার জট বাকি ১০০ বছরেও ছুটবে কি না কে জানে!
আইন উপদেষ্টা মহোদয়ের জানা উচিত, যত মামলা ততই টাকার ছড়াছড়ি, ততই দুর্নীতি। আর তাতে ফুলেফেঁপে ওঠে বিচার বিভাগ, আইনজীবী, পুলিশ আর মামলার দালালেরা। গত ৯ মাসে যে পরিমাণ দুর্নীতিগ্রস্ত হলো সবকিছু, তা এত অল্প সময়ে আগে কখনো হয়নি। সমগ্র জাতি এত অনিশ্চয়তায় কখনো পড়েনি। তাহলে পূর্ব গগনের অশ্বারোহীরা সংস্কারের নামে যে কালক্ষেপণ করলেন, তার বিপুল ক্ষতিপূরণ কে দেবে? এইটুকু সাধারণ জ্ঞান এই অশ্বারোহীদের নেই যে ঐকমত্য সভা করে ঠিক করতে পারে না। এটি মানবজাতি তার টনক না নড়ালে করবে না। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে কতগুলো টাই-স্যুট পরা বাংলাভাষী বিদেশি নাগরিকদের চাকরি পাওয়ার মধ্য দিয়ে যে এসব হবে না, তা এই ডক্টরেটরা বোঝেন না। হায়রে দুর্ভাগা দেশ! কী অপচয়!
গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে কোনো পদক্ষেপই এই অশ্বারোহীরা নেবেন না। নির্বাচনের দাবি প্রথম থেকেই। কার প্রয়োজনে নির্বাচন বিলম্বিত হচ্ছে? বিদেশি নাগরিকেরা তাঁদের ভাষায় কেন বোঝান না যে মেটিকুলাস পার্টিকে ক্ষমতায় আনার দায়িত্ব তাদের না। আর সে দায়িত্ব পালনে ভয়াবহ ভরাডুবি প্রায় সুনিশ্চিত। কারণ, ইতিমধ্যেই তারা সে পথ সুগম করেছে। যে ফেসবুককে অবলম্বন করে তারা ক্ষমতায় এসেছে, সেই ফেসবুকই এসব ব্যাপারে ভীষণ সক্রিয়। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রস্তাবে একটা কঠোর বিষয় আসা উচিত ছিল, তা হলো, দেশ পরিচালিত হবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারাই। এর অন্যথা হবে না কোনোভাবেই। পূর্ব দিগন্ত থেকে অশ্বারোহীদের হঠাৎ ক্ষমতায় আরোহণ চিরদিনের জন্য বন্ধ করাও জরুরি। এত দিন বিচারপতিদের ক্ষমতায় আনার জন্য একটা ব্যবস্থা ছিল, এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে, তা-ও বিদেশি প্রভুদের চাপে।
যাই হোক, শামসুর রাহমানের কবিতার কথা সত্যি হয়ে দাঁড়াচ্ছে প্রতিদিন—এক উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ। আমি আজ থেকে অর্ধশতাব্দী আগে ‘চান্দের তলোয়ার’ লিখেছিলাম, আজকে হঠাৎ কেন সে কথা মনে পড়ল? হয়তো পরিস্থিতির তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। একটা স্বাধীন দেশে যুদ্ধাবস্থা চলছে। এই পরিস্থিতির অবসান চেয়েছি অনেকবার। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আর কত এই অনন্তকালের অনিশ্চয়তা চলবে?
আজকের পত্রিকায় ১৩ আগস্ট একটি সংবাদ পড়ে এবং এ বিষয়ে টিভি চ্যানেলের সংবাদ দেখে মর্মাহত হয়েছিলাম। এভাবে কেউ কোনো দেশের একটি প্রাকৃতিক সম্পদের বিনাশ ঘটাতে পারে? আজকের পত্রিকায় ‘সাদাপাথরের সৌন্দর্য হারানোর কান্না’ শিরোনামের সে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই শুরু হয় পাথর
৯ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা এখন শতাধিক। প্রতিবছর এখানে হাজারো গবেষণা হয়, যার বড় অংশের উদ্দেশ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশ। নিঃসন্দেহে বৈজ্ঞানিক প্রকাশনা একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষকের মর্যাদা এবং বৈশ্বিক পরিচিতি বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম।
৯ ঘণ্টা আগেখবরটি খুবই লজ্জার। বাংলাদেশ বিমানের একজন কেবিন ক্রু সোনা পাচারের দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ৪ আগস্ট বিকেলে সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে বিজি-৩৪০ ফ্লাইটে ঢাকায় অবতরণ করার পর গ্রিন চ্যানেল অতিক্রমের সময় এই কেবিন ক্রুর গতিবিধিতে সন্দেহ জাগে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। স্ক্যানিং মেশিনের নিচে তিনি পা দিয়ে কিছু লুকানোর
৯ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি ঢাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সম্মেলনে জাপানি বিনিয়োগ পরামর্শক তাকাও হিরোসে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত দিয়েছেন। তাঁর স্পষ্ট ভাষ্য, তাঁরা দ্রুত মুনাফার খোঁজে থাকা আগ্রাসী বিনিয়োগকারী, খামখেয়ালিও।
২০ ঘণ্টা আগে