Ajker Patrika

ইউক্রেন ইস্যুতে অবস্থান নিতে পশ্চিমা চাপে বাংলাদেশ

তাসনিম মহসিন, ঢাকা
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৭: ৫৫
ইউক্রেন ইস্যুতে অবস্থান নিতে পশ্চিমা চাপে বাংলাদেশ

ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে রাশিয়া। এ নিয়ে রুশ-মার্কিন দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। মিত্র দেশগুলোকে পক্ষে টানতে মিত্রদের নানাভাবে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের ওপরও এ নিয়ে চাপ বাড়ছে। এ ইস্যুতে অবস্থান পরিষ্কার করতে বলছে পশ্চিমারা। তবে বাংলাদেশ ‘বন্ধুদের’ মধ্য থেকে কোনো পক্ষ বেছে নিতে চায় না। 

আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর (ইইউ) রাষ্ট্রদূত এবং যুক্তরাষ্ট্রের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ইউক্রেন ইস্যুতে পশ্চিমা উদ্বেগ ও বাংলাদেশের অবস্থান জানতে এসেছিলেন। দেড় ঘণ্টার বেশি সময় বৈঠক করে ইউক্রেন ইস্যুতে উদ্বেগের বিষয়টি পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের কাছে জানান তাঁরা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন ইস্যুর শান্তিপূর্ণ ও টেকসই সমাধান চায় ঢাকা। 

ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার অবস্থানের বিষয়ে ঢাকার কাছে উদ্বেগ জানিয়েছেন ঢাকার ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি। বৈঠক শেষে তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, ইইউসহ অন্য মিত্ররা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি। ইউক্রেনের সার্বভৌম ও অখণ্ডতায় আঘাত এলে তার পরিণাম কী হবে বৈঠকে তা জানিয়েছি। কারণ ইউক্রেন ইউরোপের প্রতিবেশী দেশ, এ কারণে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের অবস্থান জানাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসেছিলাম।’ 

বাংলাদেশ কী উত্তর দিয়েছে জানতে চাইলে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পররাষ্ট্রসচিব আমাদের কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন। ইউক্রেন দখল হলে তা ইউরোপের নিরাপত্তা, শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর আঘাত আসবে। আর তা শুধু ইউরোপের নয়, পুরো বিশ্বের ওপরই আঘাত।’ 

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘ইউক্রেনের যে সমস্যাটি, সেখানে সীমান্ত এলাকাতে রাশিয়া যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করছে, এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন পশ্চিমারা। পশ্চিমারা চান পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে। এ বিষয়ে শুধু বাংলাদেশ নয়, সব দেশের কাছেই যৌথভাবে যাচ্ছেন তাঁরা। যুক্তরাষ্ট্রের সদ্যবিদায়ী রাষ্ট্রদূত (রবার্ট মিলার) ঢাকা ছাড়ার আগে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে কথা বলে গেছেন। আজকে দূতরা জানিয়েছেন, বিষয়টি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ। পরিস্থিতি যাতে এর থেকে আর খারাপ না হয়, সে বিষয়গুলো বাংলাদেশকে জানিয়েছেন।’ 

বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘এখানে জড়িত সবগুলো দেশই বাংলাদেশের বন্ধু। বাংলাদেশ চায় না যে, বাংলাদেশকে এমন কোনো অবস্থানে ফেলে দেওয়া হোক, যেখানে বন্ধুদের মধ্যে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাংলাদেশ চায়, সব পক্ষ যাতে সর্বোচ্চ সংযম দেখায় এবং এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাতে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।’ 

ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। এ নিয়ে পশ্চিমাদের উদ্বেগ বাড়ছে। ছবি: রয়টার্সএ অবস্থান নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘বর্তমানে কোনো সংঘাতই কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে থাকে না। এর বৈশ্বিক একটি চাপ সৃষ্টি হয়। ইউক্রেনকে ঘিরে কোনো ধরনের অঘটন শুরু হয়ে গেলে এর প্রভাব পুরো বিশ্বে পড়বে। যেমন, এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। রাশিয়ার দ্বিতীয় গ্যাস পাইপলাইন বন্ধ করার জন্য বলা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে গ্যাস সরবরাহের জন্য ইউরোপের বিকল্প ব্যবস্থার প্রয়োজন পড়বে। সেটি যদি মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের যে ক্রেতারা রয়েছে—বাংলাদেশসহ দেশগুলো চাপে পড়বে। সুতরাং বাংলাদেশ চায় যে ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে, কূটনীতি ও শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হোক। বাংলাদেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। এ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগ রয়েছে।’ 

নাম না প্রকাশ করার শর্তে ঢাকার রাশিয়া দূতাবাসের এক কূটনীতিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুরো পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে পশ্চিমাদের উসকানির কারণে। পরিস্থিতি ঘোলাটে করার কোনো পরিকল্পনা রাশিয়ার নেই। তবে ইউক্রেনে পশ্চিমারা তাদের আধিপত্য হারিয়েছে।’ 

ইউক্রেন সংকট উত্তাপ ছড়িয়েছে জাতিসংঘেও। গতকাল সোমবার নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কূটনীতিকদের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। যে যার অবস্থান দৃঢ় করতে এবং বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে পক্ষে ভেড়াতে কাজ করছে মস্কো, ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলস।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজনৈতিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শক্ত ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে হবে: শফিকুল আলম

বাসস, ঢাকা  
‘রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিফলিত করতে পারে’ শীর্ষক সংলাপে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: বাসস
‘রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিফলিত করতে পারে’ শীর্ষক সংলাপে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: বাসস

রাজনৈতিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শক্ত ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। দলটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে জাতির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য ‘অস্তিত্বের হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।

আজ শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ট্রেস কনসাল্টিং আয়োজিত ‘রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিফলিত করতে পারে’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, “শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে এখন সবার একটি স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া জরুরি। তিনি এখনো জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রেস সচিব বলেন, “তিনি বাংলাদেশের জনগণকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আমি মনে করি, এই বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য অস্তিত্বের হুমকি। একজন মানুষকে যখন ‘সন্ত্রাসী’ বলা হয়, তখন আসলে তাঁকে হত্যাযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তিনি কি ১৮ কোটি মানুষকে শত্রু ঘোষণা করে আবার ক্ষমতায় ফেরার চেষ্টা করছেন?”

সাংবাদিক এনায়েতুল্লাহ খানের বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘এনায়েতুল্লাহ খান একসময় লিখেছিলেন— ১৯৭৪ সালে শেখ মুজিব ৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষকে কোলাবরেটরস বা রাজাকার বানিয়েছিলেন, আর এখন তাঁর মেয়ে ১৮ কোটি মানুষকে সন্ত্রাসী বলছেন! এটা কল্পনাতীত।’

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, ‘সরকার ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ নিয়ে কোনো দ্বিধা-সংকোচ থাকা উচিত নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘শাসন ব্যবস্থা ও জুলাই সনদ নিয়ে বিতর্ক সুস্থ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। সারা বিশ্বে সংবিধান সংক্রান্ত বিতর্কে সময় লাগে, কখনো তা দশক ধরেও চলে। রাতারাতি কোনো সমাধান চাপিয়ে দেওয়া যায় না।’

শফিকুল আলম বলেন, ‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত না নিতে পারে, তাহলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনিশ্চয়তা দূর করতে ম্যান্ডেট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।’

প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা এখন একটি ফ্র্যাকচারড পলিটিক্যাল সিচুয়েশন দেখছি। এখন ডান, বাম ও মধ্যপন্থী সব পক্ষের অংশগ্রহণে গণতান্ত্রিক সমাধান প্রয়োজন।’

অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ট্রেস-এর সিইও ফুয়াদ এম খালিদ হোসেন, বাংলাদেশ কটন ও কনফেকশনরি এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)-এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম।

প্যানেল আলোচনায় সঞ্চালনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাব এনাম খান। এতে কূটনীতিক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শুভেচ্ছা সফরে চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছালে কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলের পক্ষ থেকে চিফ স্টাফ অফিসার জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের স্বাগত জানান। ছবি: আইএসপিআর
জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছালে কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলের পক্ষ থেকে চিফ স্টাফ অফিসার জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের স্বাগত জানান। ছবি: আইএসপিআর

চার দিনের শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ পিএনএস সাইফ (PNS SAIF)। আজ শনিবার জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছালে কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলের পক্ষ থেকে চিফ স্টাফ অফিসার জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর সুসজ্জিত বাদকদল ঐতিহ্যবাহী রীতি অনুযায়ী ব্যান্ড পরিবেশন করে।

জাহাজটিকে স্বাগত জানাতে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রতিনিধিসহ নৌবাহিনীর স্থানীয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বানৌজা স্বাধীনতা তাদের অভ্যর্থনা জানায়। বিকেলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অবস্থানকালে জাহাজটির অধিনায়ক ও অন্যান্য কর্মকর্তাসহ একটি প্রতিনিধিদল কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চল, কমান্ডার বিএন ফ্লিট, এরিয়া সুপারিনটেনডেন্ট ডকইয়ার্ডের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলে অবস্থানকালে জাহাজের অফিসার, নাবিক ও প্রশিক্ষণার্থীগণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান, নৌবাহিনী জাহাজ ও ঘাঁটি পরিদর্শন করবেন।

এ ছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকেরা পাকিস্তানের জাহাজটি পরিদর্শন করবেন।

পাকিস্তান নৌবাহিনী জাহাজের এই বাংলাদেশ সফরের ফলে দুই দেশের মধ্যকার সৌহার্দ্যপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। শুভেচ্ছা সফর শেষে জাহাজটি ১২ নভেম্বর বাংলাদেশ ত্যাগ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রাথমিকে সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের প্রতিবাদে উদীচীর কর্মসূচি ঘোষণা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ মিলনায়তনে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ মিলনায়তনে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিলের প্রতিবাদে দেশজুড়ে দুই সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ মিলনায়তনে আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করা সুদূরপ্রসারী চক্রান্তমূলক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অংশ। পাঠ্যক্রম থেকে চারুকলা, সংগীত, নৃত্যকলা, নাট্যকলাও বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। উদীচী মনে করে, এসব সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী, সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সংকীর্ণতাপ্রসূত।

সংবাদ সম্মেলনে অমিত রঞ্জন দে বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি ও জাতীয় শিক্ষাক্রমে শিশুর মানসিক ও মানবিক বিকাশে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীত শিক্ষা অপরিহার্য বলা হয়েছে। বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য টোল চতুষ্পাঠের গুরুকেন্দ্রিক শিক্ষা থেকে অদ্যাবধি প্রচলিত পাশ্চাত্য শিক্ষাধারা পর্যন্ত সব কালে এবং সরকারের সময় শারীরিক শিক্ষা পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত ছিল। জাতীয় শিক্ষানীতি সংগীত শিক্ষাকে শিক্ষার অপরিহার্য অনুষঙ্গ বিবেচনা করেছে। তাই এই দুই বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাহুল্য হতে পারে না।

তিনি বলেন, উদীচী বিশ্বাস করে, আর্থসামাজিক প্রেক্ষিত বাংলাদেশের প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হতাশা ও নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এখান থেকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষার উপায় সৃজনশীলতা, শারীরিক সক্ষমতা ও মানবিক হিসেবে গড়ে তোলা। এই মানবিক কাজটি করতে পারেন শারীরিক শিক্ষার শিক্ষকসহ শিল্পকলার শিক্ষকেরা। তাই তাঁরা প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় অপরিহার্য। উদীচী সরকারের অনধিকারচর্চাপ্রবণ এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জোর দাবি জানাচ্ছে। একই সঙ্গে অপরাপর সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিল্পীদের নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।

কর্মসূচি সম্পর্কে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক বলেন, আগামী দুই সপ্তাহ অপরাপর সমমনা প্রগতিশীল সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে নিয়ে উদীচীর সব জেলা ও শাখা সংসদের উদ্যোগে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ, মানববন্ধন, গানের মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান, গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন, বিশিষ্টজনদের বিবৃতি প্রদান ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উদীচীর নেতারা ছাড়াও সমমনা প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আরও ১৬টি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইসির

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আরও ১৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নতুন ঘোষণার ফলে মোট নিবন্ধিত দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার সংখ্যা ৮২-তে পৌঁছানোর পথে।

আজ শনিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।

গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে এই ১৬টি সংস্থাকে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনযোগ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

এই ১৬টি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কারও কোনো দাবি, আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে তা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ (পনেরো) কার্যদিবসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিতভাবে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

যে ১৬টি বেসরকারি সংস্থাকে প্রাথমিকভাবে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, সেগুলো হলো:

  • এসো জাতি গড়ি (এজাগ)
  • নেত্রকোনা সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এনএসডিও)
  • ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দি রুরাল পুওর-ডরপ
  • হেল্প সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন
  • কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি
  • দীপ্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থা (ডিএমইউএস)
  • রুরাল ইকোনমিক সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (রেসডো)
  • রাসটিক
  • বাঁচতে শেখা
  • পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর সোস্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (পাশা)
  • ইন্টারন্যাশনাল আসফ লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশন
  • মানব উন্নয়ন কেন্দ্র (মউক)
  • বাংলাদেশ সোসাইটি ফর দ্যা চেঞ্জ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি নেক্সাস (বি-স্ক্যান)
  • যুব একাডেমী
  • এসডিএস (শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি)
  • উইমেন এন্টারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ

এর আগে, গত ৬ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন প্রথম দফায় ৬৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। নতুন ১৬টি সংস্থাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হলে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মোট ৮২টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা কাজ করার সুযোগ পাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত