Ajker Patrika

রেলের লক্ষ্যমাত্রা টানা ছয় অর্থবছর অধরা

তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
আপডেট : ২৩ মে ২০২৫, ১৩: ৫০
আজকের পত্রিকা গ্রাফিক্স
আজকের পত্রিকা গ্রাফিক্স

বাংলাদেশ রেলওয়ে টানা ছয় অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আয় করেছে। প্রতিবছর লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হলেও এই ছয় অর্থবছরের মধ্যে প্রথম তিন অর্থবছরে আয় কম হয়েছে। তবে পরের তিন অর্থবছরে আয় পর্যায়ক্রমে বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি।

রেলওয়ের আয়ের এই চিত্র ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, আয় কম হওয়ার কারণ বিভিন্ন প্রকল্প ও নানা ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক ব্যয়। অন্তর্বর্তী সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রেলওয়ের লোকসান কমিয়ে আয় বাড়ানোর পথ বের করতে বিভিন্ন সময় নির্দেশনা দিয়েছেন।

জানতে চাইলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিগত সময়গুলোতে ব্যয় ছিল বেশি, নানা কারণে আয় ছিল কম। বিভিন্ন প্রকল্প থেকে শুরু করে নানা জায়গায় অস্বাভাবিক ব্যয় ছিল। তবে আমরা আয় বাড়ানোর জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছি। কাজও হচ্ছে। আশা করছি, বছর শেষে ভালো কিছুই হবে।’

রেলওয়ের সূত্র বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রেলের আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা, অর্জন হয়েছে ১ হাজার ৫৯০ কোটি ১ লাখ টাকা। পরের অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ১২ কোটি ৩ লাখ টাকা ধরা হলেও আয় হয়েছে ২ হাজার ১৯৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ২৫৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জন হয়েছে ১ হাজার ১৬৬ কোটি ৭ লাখ টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৫২৩ কোটি ৩৮ লাখ, অর্জন হয়েছে ১ হাজার ৪৬৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ হাজার ৩৬৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও অর্জন হয় ১ হাজার ৭৮৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৪৭০ কোটি ২ লাখ, অর্জন হয়েছে ১ হাজার ৯২৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

আয় বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রেলওয়ে মূলত আটটি খাত থেকে আয় করে। সবচেয়ে বেশি আয় করে যাত্রী পরিবহনে, এরপর পণ্য পরিবহনে। অন্য খাতগুলো হলো পার্সেল পরিবহন, বাণিজ্যিক, ভূ-সম্পত্তি, স্ক্র্যাপ, বিদ্যুৎ ও টেলিকম। যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে বিগত চার অর্থবছরেই আয় পর্যায়ক্রমে বাড়লেও তা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম। পার্সেল ও ভূ-সম্পত্তি থেকেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় অনেক কম হয়েছে। তবে টেলিকম খাত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আয় করেছে।

এ বিষয়ে রেলওয়ের অপারেশন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন কিছু ট্রেন যুক্ত হওয়ায় যাত্রী পরিবহনে আয় বেড়েছে। লোকোমোটিভের অভাবে অনেক লোকাল কমিউটার ট্রেন বন্ধ রয়েছে। ফলে সেই জায়গায় আয় কম হচ্ছে। সব ট্রেন পুরোপুরি চালু থাকলে এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব। লক্ষ্যমাত্রা সব সময় পূরণ করা যায় না। তবে লক্ষ্যমাত্রা ধরেই তাঁদের এগোতে হবে।

সূত্র জানায়, আয় বাড়াতে রেলওয়ে সম্প্রতি তিন মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে।

আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা জানতে চাইলে রেলসচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, যাত্রী ও মালপত্র পরিবহন থেকে হুট করে আয় বাড়বে না। ভূ-সম্পত্তি, স্ক্র্যাপ, অপটিক্যাল ফাইবার—এগুলোতে আয় বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে ব্যয় কমানোর চেষ্টা চলছে। এতে রেলের অপারেটিং খরচের হার কমে আসবে।

আয় বাড়ানোর তিন মেয়াদি পরিকল্পনার মধ্যে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনায় রয়েছে, যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে ভাড়া পুনর্নির্ধারণ, আপাতত ২৬টি ইঞ্জিন ও ক্রু সরবরাহ, আন্তনগর কোটা সমন্বয়, নতুন ট্রেন ও কোচ সংযোজন, অপটিক্যাল ফাইবার ও লাগেজ ভ্যান বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার, টিকিট চেকিং জোরদার এবং অবৈধ জমি উদ্ধার করে ইজারা দেওয়া।

মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনায় রয়েছে, সরকারি পণ্য পরিবহন, লাগেজ ভ্যান ব্যবহারে নীতিমালা অনুসরণ, স্টেশন ও ট্রেনে বিজ্ঞাপন প্রচার, ট্রাফিক কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা ফেরত এবং টঙ্গী-তেজগাঁওয়ে আনলোডিং সুবিধাসম্পন্ন ইয়ার্ড নির্মাণ।

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় রয়েছে অব্যবহৃত রেলভূমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করে মার্কেট, হোটেল, অফিস ইত্যাদি ভাড়া দিয়ে আয় বাড়ানো, এজন্য ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা সংশোধন প্রয়োজন।

এ ছাড়া ৫০টি মিটারগেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) সংগ্রহ এবং মেরামত শপগুলোর যন্ত্রপাতি ও লজিস্টিক সাপোর্ট বাড়িয়ে কর্মদক্ষতা উন্নয়ন করতে চায় রেলওয়ে। ধীরাশ্রম আইসিডির নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করা এবং মোংলা-পদ্মা সেতু রুটে নিমতলীতে নতুন আইসিডি নির্মাণ। স্টেশনগুলোর সিএসএল ৭৫০ মিটারে উন্নীত করা এবং ইয়ার্ড লাইন সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

যমুনা রেলসেতু চালুর ফলে নতুন কোচ, ওয়াগন সংগ্রহ করে যাত্রী ও মালগাড়ি পরিচালনা বাড়ানো এবং মির্জাপুর, নিমতলী, টঙ্গী, তেজগাঁওয়ে আধুনিক গুডস ইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

রেল সূত্র বলছে, এগুলোর পাশাপাশি জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডাবল লাইন, টঙ্গী-আখাউড়া, লাকসাম-চট্টগ্রাম ডুয়েলগেজ, বগুড়া-জামতৈল নতুন লাইন, জয়দেবপুর-জামালপুর ডুয়েলগেজ, আখাউড়া-সিলেট ডুয়েলগেজ, ঢাকা-লাকসাম কর্ড লাইন, ফৌজদারহাট-লাকসাম ফ্রেইট করিডর নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে রেলওয়ের অপারেশনাল দক্ষতা ও রাজস্ব আয় উভয়ই উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালনার দক্ষতার অভাব। দীর্ঘদিন রেলে বড় বড় বিনিয়োগ হচ্ছে; কিন্তু আয় বাড়েনি। ফলে বেসরকারিভাবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অপারেটর দিয়ে পরিচালনা করলে রেল লাভে ফিরবে। এতে যাত্রীসেবা বাড়বে; বাড়তি ব্যয়, অনিয়ম, চুরি, দুর্নীতি দূর হবে। তখন রেলওয়ের পরিচালন নিয়ে মাথাব্যথা থাকবে না। তারা অবকাঠামোর উন্নয়নে কাজ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রাক-প্রস্তুতি সভার নির্দেশ ‎ইসির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রাক-প্রস্তুতি সভা আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ ‎সোমবার ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের সই করা এ-সংক্রান্ত চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ইসির সব আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের এর মধ্যে এ নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, ইসি সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে গত ১৬ অক্টোবর মাসিক সমন্বয় সভায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারের ৩১টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে প্রাক-প্রস্তুতি সভা করেছে ইসি।

এর ধারাবাহিকতায় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভোটের করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা জানাতে তাঁদের সঙ্গেও নির্বাচনী প্রস্তুতিমূলক সভায় বসবে ইসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ২৩
ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে তিন বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

এ-সংক্রান্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব।

আব্দুল ওয়াহাব বলেন, রিটের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

গত ১৪ আগস্ট ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে তিন বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। পরে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন লিয়াকত আলী নামের এক ব্যক্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো কিছু যাচাই না করে শেয়ার করবেন না: সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। ফাইল ছবি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। ফাইল ছবি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু দেখলেই তা বিশ্বাস করবেন না, শেয়ার করবেন না। আগে সেই তথ্যের সঠিকতা যাচাই করবেন। তথ্য সঠিক হলে তারপর তা শেয়ার করবেন।’

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারার আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) জাতীয় নির্বাচনে আনসার-ভিডিপির ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা মহড়া ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সিইসি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ বর্তমানে এক ‘সংকটময় অবস্থায়’ দাঁড়িয়ে আছে এবং আগামী সংসদ নির্বাচন দেশের ভবিষ্যৎ গতিপথ ও গণতন্ত্রের পথচলা নির্ধারণ করবে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, তিনি তাঁর দায়িত্বকে গতানুগতিক ‘রুটিন কাজ’ বা ‘চাকরি’ হিসেবে না দেখে এটিকে ‘মিশন’ এবং ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নিয়ে কাজ করছেন।

সিইসি বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য কী বাংলাদেশ রেখে যাব, কোন ধরনের বাংলাদেশ রেখে যাব, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রেখে যাব কি না, কীভাবে রেখে যাব—সেই চিন্তা আমাকে সারাক্ষণ ভাবায়।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে গতানুগতিক ধারায় কাজ করলে চলবে না, বরং ‘দায়িত্বসীমার বাইরে গিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’

সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করে সিইসি বলেন, ‘ভোটার, রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সবাই মিলে আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেব।’

সিইসি জানান, এবারের নির্বাচনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে প্রায় ১০ লাখ লোক যুক্ত থাকবে। তাঁদের সুবিধার্থে নির্বাচন কমিশন এবার একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। সাধারণত যারা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকেন, তারা নিজেরা ভোট দিতে পারেন না। কিন্তু এবার সেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যেন সবাই ভোট দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ‘আইনি হেফাজতে যাঁরা কারাগারে রয়েছেন, তাঁরা এ দেশের নাগরিক। তাঁরাও যাতে ভোট দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এ ছাড়া প্রবাসীরা এবার ভোট দিতে পারবেন।’

ভোটকেন্দ্রের শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে আনসার সদস্যদের ভূমিকার প্রশংসা করে সিইসি তাঁদের ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মূল শক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের ওপর আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব এসে পড়েছে।’

আনসার প্লাটুন সদস্যদের প্রশিক্ষণকে ‘স্বস্তির’ উল্লেখ করে সিইসি দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশাল নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে এআইসহ যেকোনো অপপ্রচার রোধে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব জানান, নির্বাচনে প্রায় পাঁচ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে। সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের প্রস্তুতি হিসেবে গত এক বছরে বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে ১ লাখ ৪৫ হাজার নতুন সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আগামী নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে দেশ কোন দিকে যাবে: সিইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩৭
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ‘সংকটময় অবস্থায়’ দাঁড়িয়ে আছে উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, দেশ কোন দিকে যাবে, গণতন্ত্রের পথে কীভাবে হাঁটবে, সেটা নির্ভর করছে আগামী সংসদ নির্বাচনের ওপর। নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গতিপথ নির্ধারণ হবে।

আজ সোমবার জাতীয় নির্বাচনে আনসার-ভিডিপির ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা মহড়া ও ২০২৫-২৬ সালের চতুর্থ ধাপের আনসার প্লাটুন সদস্যদের মৌলিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ভাটারার আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।

সিইসি বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য কী বাংলাদেশ রেখে যাব, কোন ধরনের বাংলাদেশ রেখে যাব, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রেখে যাব কি না, কীভাবে রেখে যাব—সেই চিন্তা আমাকে সারাক্ষণ ভাবায়। এটাকে (সিইসির পদ) আমি ব্যক্তিগতভাবে রুটিন দায়িত্ব হিসেবে নিইনি, চাকরি হিসেবে নিইনি। এটাকে আমি মিশন হিসেবে নিয়েছি, চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আমি গতানুগতিক ধারার কাজে বিশ্বাসী নই। বিশেষ করে, এ ধরনের সংকটময় মুহূর্তে দেশ যখন রয়েছে—এখানে গতানুগতিক ধারায় কাজ করলে হবে না। দায়িত্বসীমার বাইরে গিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ভোটার, রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সবাই মিলে আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেব, যাতে দেশ এগিয়ে যায়, গণতন্ত্র এগিয়ে যায়।’

নির্বাচনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে প্রায় ১০ লাখ লোক যুক্ত থাকবে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘যাঁরা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকেন, তাঁরা নিজেরাই ভোট দিতে পারেন না। আমরা এবার উদ্যোগ নিয়েছি, যাঁরা ভোটের দায়িত্বে থাকবেন, তাঁরা যেন সবাই ভোট দিতে পারেন। আইনি হেফাজতে যাঁরা কারাগারে রয়েছেন, তাঁরা এ দেশের নাগরিক। তাঁরাও যাতে ভোট দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এ ছাড়া প্রবাসীরা এবার ভোট দিতে পারবেন।’

তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মূল শক্তি আনসার বাহিনীর সদস্যরা। তাঁরাই অধিকসংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। আগামী নির্বাচনে যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের ওপর আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব এসে পড়েছে। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের যে গতিপথ নির্ধারণ হবে, সেখানে আনসার বাহিনীর বিশাল একটি ভূমিকা থাকবে।

এ সময় ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় আনসার প্লাটুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ ‘স্বস্তির’ উল্লেখ করে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশাল নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে এআইসহ যেকোনো অপপ্রচার রোধে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান সিইসি।

এ ছাড়া নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা সব বাহিনীর সদস্যদের নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশিক্ষণ দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

আনসার সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু দেখলেই তা বিশ্বাস করবেন না, শেয়ার করবেন না। আগে সেই তথ্যের সঠিকতা যাচাই করবেন। তথ্য সঠিক হলে তারপর তা শেয়ার করবেন।’

এ সময় ইসির ম্যান্ডেট অনুযায়ী আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী কাজ করবে বলে জানান বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব।

তিনি জানান, নির্বাচনে প্রায় পাঁচ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে। বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো ও সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে গত এক বছরে ১ লাখ ৪৫ হাজার নতুন সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত