Ajker Patrika

যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদেও আসছে পদোন্নতি

উবায়দুল্লাহ বাদল, ঢাকা
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৪, ২০: ৪২
যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদেও আসছে পদোন্নতি

রাজনৈতিক কারণে প্রশাসনের বঞ্চিত কর্মকর্তাদের আরও দুই স্তরের পদোন্নতি আসছে। বিসিএস বিভিন্ন ব্যাচের উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদের কর্মকর্তাদের যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। এরকম ১৫০ উপসচিব ও ১০০ যুগ্ম সচিবের পদোন্নতির বিষয়ে আজ বুধবার রাতেই ও কাল বৃহস্পতিবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস মিলেছে। 

ইতিমধ্যে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বঞ্চিত ১১৭ জন সিনিয়র সহকারী সচিবকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এসব পদোন্নতির মাধ্যমে হাসিনা সরকারের আমলে বঞ্চিত বিএনপি-জামায়াত ঘরানার কর্মকর্তাদের ক্ষোভ-অসন্তোষ কমানোর চেষ্ঠা করছে সরকার।

বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে বিসিএস একাদশ ব্যাচ থেকে ২৯তম ব্যাচ রয়েছে। ইতিমধ্যে উপসচিব পদে পদোন্নতি হয়েছে। আজকালের মধ্যে যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদেও পদোন্নতি হবে। এর মধ্যে গত রাতে যাঁরা উপসচিব হয়েছেন তাঁরা এবং আগের যাঁরা বঞ্চিত উপসচিব আছেন তাঁরা যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি পাবেন। একইভাবে অতিরিক্তি সচিব পদেও পদোন্নতি হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পদোন্নতিবঞ্চিত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের সভাপতি বিসিএস ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের গত ১৬ বছরে বঞ্চনা দূর করতে হবে। যাঁরা যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতিযোগ্য, তাঁদের দ্রুত পদোন্নতি দিতে হবে। আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর বঞ্চনার শিকার। সুতরাং আমাদের আর ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেওয়া ঠিক হবে না।’ 

শুধু রাজনৈতিক কারণে আওয়ামী শাসনামলের গত ১৬ বছরে প্রশাসনে পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন কয়েক শ কর্মকর্তা। গোয়েন্দা তদন্ত প্রতিবেদনে তাঁদের নামের সঙ্গে ‘নেগেটিভ’ উল্লেখ থাকায় বঞ্চিত করা হয়। অনেককে বছরের পর বছর ওএসডি থাকতে হয়েছে অথবা গুরুত্বহীন পদে ফেলে রাখা হয়েছে। অনেককে বাধ্যতামূলক অবসরেও পাঠানো হয়েছে।

গত ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সামনে আসেন প্রশাসনে বিএনপি-জামায়াত ঘরানার বঞ্চিত কর্মকর্তারা। পরদিন ৬ আগস্ট সচিবালয়ে বৈঠক করেন পদোন্নতিবঞ্চিত অন্তত ২০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী। সভায় জ্যেষ্ঠতাসহ ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির দাবি জানান তাঁরা। এরপর তাঁরা প্রশাসনে কর্মরত বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ব্যাচভিত্তিক তালিকা তৈরি করে পদোন্নতির জন্য সচিবের দপ্তরে জমা দেওয়া হয়। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, ওই তালিকায় অন্তত ২৪৪ জনের নাম ছিল। এর মধ্যে বিসিএস ১১তম ব্যাচের ৪ জন, ১৩তম ব্যাচের ৮ জন, ১৫তম ব্যাচের ২১ জন, ১৭তম ব্যাচের ৮ জন, ১৮তম ব্যাচের ২২ জন, ২০তম ব্যাচের ২১ জন, ২১তম ব্যাচের ১০ জন, ২২তম ব্যাচের ৮১ জন, ২৪তম ব্যাচের ১২ জন, ২৫তম ব্যাচের ১২ জন, ২৭তম ব্যাচের ১৩ জন, ২৮তম ব্যাচের ১০ জন ও ২৯তম ব্যাচের ২২ জন রয়েছেন। এই তালিকায় থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে যাঁরা সিনিয়র সহকারী সচিব এবং যাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও দুদকের মামলা নেই, মঙ্গলবার রাতে প্রথম দফায় তাঁদের ১১৭ জনকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে ২৫ ক্যাডারের বঞ্চিত উপসচিবদের স্মারকলিপি 
এদিকে মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন প্রশাসন ছাড়া অন্য ২৫ ক্যাডারের বঞ্চিত উপসচিবরা। স্মারকলিপিতে বলা হয়, সচিবালয়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী কার্য সম্পাদনের জন্য উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সিনিয়র সার্ভিস পুল গঠন করা হয়। ‘সরকারের উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা ২০০২’ অনুযায়ী প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৭৫ শতাংশ এবং অন্য ২৫টি ক্যাডার হতে ২৫ শতাংশ উপসচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে এ পুল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়, যদিও প্রশাসন ক্যাডারের সদস্য সংখ্যা ৪ হাজার ৮৯৯ জন (৯ দশমিক ৬২ শতাংশ) এবং অন্যান্য ২৫টি ক্যাডারের সদস্য সংখ্যা ৪৬ হাজার ২৩ জন (৯০ দশমিক ৩৮ শতাংশ)। 

এতে আরও বলা হয়, পরবর্তী পদোন্নতি, অর্থাৎ যুগ্ম সচিব ও এর ওপরের পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে পিএসসির সুপারিশ পাওয়া নিজ নিজ ব্যাচের সম্মিলিত মেধাতালিকা, সরকারি চাকরি আইন, পদোন্নতি বিধিমালা, সুপ্রিম কোর্টের রায় কোনো কিছুই মানা হয় না। এক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের সব কর্মকর্তার নিয়মিত ব্যাচের সঙ্গে পদোন্নতি নিশ্চিত থাকলেও অন্য ২৫টি ক্যাডারের ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক কোটা আরোপ করে প্রশাসন ক্যাডারের অনেক জুনিয়র ব্যাচের সঙ্গে স্বেচ্ছামূলক নামমাত্র ১০ থেকে ১২ শতাংশ পদোন্নতি দেওয়া হয়। এ কারণে ২৫ ক্যাডারের ১৩ থেকে ২২ ব্যাচের অত্যন্ত মেধাবী, দক্ষ ও যোগ্য দুই শতাধিক কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠতা হারিয়ে পদোন্নতিবঞ্চিত হয়ে তাঁদের অনেক জুনিয়র কর্মকর্তার অধীনে কাজ করতে হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন গোটা জনপ্রশাসন মেধাহীন ও দক্ষ জনবলশূন্য হয়ে পড়েছে, অপরদিকে জনপ্রশাসনে চেইন অব কমান্ডও পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। 

এমতাবস্থায় অতি দ্রুত ক্যাডার নির্বিশেষে বৈষম্যহীন মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়তে প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া ২৫ ক্যাডারের বে-আইনিভাবে পদোন্নতিবঞ্চিত ১৩ থেকে ২২তম ব্যাচের উপসচিবদের পিএসসির মেধাতালিকা অনুযায়ী স্ব-স্ব ব্যাচের সঙ্গে জ্যেষ্ঠতা নিশ্চিত করে যুগ্মসচিব পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়ার জোর দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই জাতীয় সনদ: আদেশ জারি হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে

তানিম আহমেদ, ঢাকা 
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ২৭
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।

সংসদ কার্যকর না থাকায় অধ্যাদেশ জারির ক্ষমতা এখন রাষ্ট্রপতির হাতে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অধ্যাদেশ চায় না। কাজেই প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে আদেশ জারির পথেই সরকার এগোচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

তবে বিএনপি আবার আদেশ জারির বিরোধিতা করছে। জুলাই সনদ নিয়ে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করলে তার ওপর গণভোট হতে পারে বলে মত দিয়েছে দলটি।

সূত্র জানায়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ কীভাবে জারি করা হবে, আইনি কাঠামোর মধ্য থেকে সে পথ বের করার উপায় খুঁজছে সরকার। এক্ষেত্রে গণ-অভ্যুত্থানের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে জনগণের অভিপ্রায়কে প্রাধান্য দেওয়ার চিন্তা চলছে।

জুলাই সনদের খসড়ায় সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদবলে আপিল বিভাগের মতামতের আলোকে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলা ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত জুলাই সনদে এই অংশটুকু বাদ দিয়ে বলা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এর মধ্য দিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে জনগণের অভিপ্রায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

ঐকমত্য কমিশন তাদের সুপারিশে বলেছে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন করতে একটি আনুষ্ঠানিক আদেশ জারি করা একান্ত প্রয়োজন। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে সরকারকে এই আদেশ জারির সুপারিশ করেছে কমিশন।

সরকারের কয়েকটি সূত্র বলছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে কীভাবে এই আদেশ জারি করা যায়, তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আইনি জটিলতা না থাকলে প্রধান উপদেষ্টা এই আদেশ জারি করবেন। তবে আদেশটি রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জারি করা যায় কি না, এখনো সে বিষয়টি ভাবনার মধ্যে রয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যাতে নতুন কোনো বিভেদ সৃষ্টি না হয়, তা মাথায় রাখছে সরকার।

গত ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ নামে আদেশ জারির সুপারিশ করে কমিশন। সেখানে আদেশে থাকা সংবিধান-সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে গণভোট এবং আগামী সংসদের দ্বৈত ভূমিকা পালনের মাধ্যমে সংবিধান-সম্পর্কিত সুপারিশগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের ৮৪টি সুপারিশের মধ্যে ৪৭টি সংবিধান-সম্পর্কিত।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির পাশাপাশি বাস্তবায়নের দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গণভোটে বিষয়টি পাস হলে সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকে ২৭০ দিনের মধ্যে এসব সংস্কার শেষ করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে শেষ না করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে সংবিধান সংস্কার পরিষদকে গাঠনিক ক্ষমতা দেওয়া হলেও প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কার শেষ করতে হবে।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ কীভাবে জারি করা যাবে, তা সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এই কোনো অধ্যাদেশ নয়, আবার সংসদ দ্বারা তৈরি কোনো আইনও নয়।

জানতে চাইলে ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির আইনগত কিছু নেই। যেহেতু বর্তমান সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, সেই অনুযায়ী আদেশ জারির বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা। সরকার যেভাবে চায়, সেভাবে জারি করতে পারে। সরকার যদি মনে করে প্রধান উপদেষ্টা এটি জারি করবেন, সেটা পারবেন। আবার সরকার যদি মনে করে রাষ্ট্রপতি এটা জারি করবেন, সেটাও হতে পারে। এ ক্ষমতাটা সরকারের।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য এই আদেশ জারি করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের প্রতীক হিসেবে প্রধান উপদেষ্টাকে বেশি ধারক বলা যায়, তাই তিনি এই আদেশ জারি করতে পারেন। এক্ষেত্রে আইনি কোনো ঝামেলা নেই, কারণ এটি অধ্যাদেশ নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়: ইচ্ছেমতো ফি চলবে না

  • বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সংশোধনীর খসড়া তৈরি
  • খসড়াটি চূড়ান্ত করার পর পাঠানো হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে
  • উপাচার্যসহ তিন পদে নিয়োগে সার্চ কমিটি করার প্রস্তাব
  • ট্রাস্টি বোর্ডে একই পরিবারের পাঁচজনের বেশি সদস্য নয়
রাহুল শর্মা, ঢাকা 
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৪৯
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়: ইচ্ছেমতো ফি চলবে না

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২৫ (সংশোধিত)-এর খসড়ায় এসব প্রস্তাব করা হয়েছে। খসড়ায় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি করার বিধান রাখা হয়েছে।

বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরাই বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করে কেবল ইউজিসিকে জানায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০-এ ফি নির্ধারণে ইউজিসির অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, ভর্তি হওয়ার পর হঠাৎ করে টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়িয়ে দেওয়া হয়। অনেক সময় লিখিত নোটিশও দেয় না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ইউজিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সংশোধিত নতুন আইন কার্যকর হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি নির্ধারণ ও আদায় করতে পারবে না। এতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। ভোগান্তিরও অবসান হবে।

জানতে চাইলে গত বুধবার ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংশোধিত আইনের খসড়াটি শিগগির চূড়ান্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রণালয় তা কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

ইউজিসির সূত্র বলছে, গত ২৩ অক্টোবর ইউজিসির ৫৭তম মাসিক সভায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২৫-এর সংশোধনীর খসড়া নিয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা হয়। ওই সভায় আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে একটি কমিটি করার এবং অংশীজনদের নিয়ে কর্মশালা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।

সংশোধিত আইনের খসড়ায় আইন লঙ্ঘনে শাস্তি বাড়ানো, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রির বিষয়ে ইউজিসির নীতিমালা অনুসরণ, একাডেমিক প্রোগ্রাম অনুমোদনে বাধ্যবাধকতা, ট্রাস্টি বোর্ডে পরিবর্তন, যৌন হয়রানি নিরোধ ও সাইবার নিরাপত্তা কমিটি করাসহ বেশ কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

ইউজিসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১১৬টি। এগুলোর মধ্যে ১০৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে। ৪টির কার্যক্রম নানা কারণে বন্ধ রয়েছে। আর বাকি ৫টির একাডেমিক কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪১৪ জন।

সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি মো. সবুর খান বলেন, ইউজিসি এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য ডাকলে তাঁরা মতামত দেবেন।

সংশোধিত আইনের খসড়ায় টিউশন ফির বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফি কাঠামো তৈরি করে কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন নেবে এবং সরকারকে জানাবে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এই ফির হার ৫০ শতাংশ বেশি হবে। একজন শিক্ষার্থী যে ফি কাঠামোয় ভর্তি হবেন, প্রোগ্রাম শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনোক্রমেই তা বাড়ানো যাবে না। অন্য কোনো নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো ধরনের ফি আদায় করা যাবে না।

খসড়ায় আইন লঙ্ঘনে শাস্তি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিধান লঙ্ঘনে অনূর্ধ্ব ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। এর আগে ছিল ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। সার্টিফিকেট (সনদ) জালিয়াতির শাস্তি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম ন্যূনতম দুই বছর বন্ধের বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

খসড়ায় তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তির ওপর জোর দিয়ে বলা হয়েছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ৬০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দাখিল করতে হবে, এই সময়সীমা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদনক্রমে আরও ৩০ দিন বাড়ানো যেতে পারে। এ ছাড়া কমিশনের তদন্ত, তল্লাশি ও গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত ক্ষমতাও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাল সনদ তৈরি বা অননুমোদিত ক্যাম্পাস পরিচালনার ক্ষেত্রে কমিশনের টিমকে তাৎক্ষণিক তল্লাশি, সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র, দলিল ও দ্রব্যাদি জব্দ এবং অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করা হবে।

খসড়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য ইউজিসির সদস্যের (চেয়ারম্যান) নেতৃত্বে সাত সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই কমিটি উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করে চ্যান্সেলরের কাছে প্রতিটি পদের বিপরীতে তিনজন প্রার্থীর নাম সুপারিশ করবে।

সংশোধিত আইনের খসড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের নিজস্ব বা ভাড়া বাড়ির কথা বলা হয়েছে। ২০১০ সালের আইনে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভবনের প্রয়োজনীয় আয়তন ছিল ২৫ হাজার বর্গফুট। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ১ একর জমি থাকার বাধ্যবাধকতার স্থলে ৫ একর জমি থাকার বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪ সালের আগে অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে জমির পরিমাণের এই বাধ্যবাধকতা শিথিল থাকবে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালাতে সরকার থেকে সনদ নিতে হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে সাময়িক সনদ দেওয়া হয়। বর্তমান আইনে সাত বছরের মধ্যে বেসরকারি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী সনদ না নিলে কার্যক্রম বন্ধ রাখার বিধান রয়েছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় এতে পরিবর্তন এনে সাত বছরের মধ্যে স্থায়ী সনদের জন্য আবেদন এবং ১২ বছরের মধ্যে সনদ না পেলে ভর্তিসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, মহাসড়ক ও বাইপাসের কাছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া বার্ষিক বাজেটের ন্যূনতম ২ শতাংশ অর্থ গবেষণা খাতে বরাদ্দ করে কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী খরচ করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে শহর, জেলা, বিভাগ, দেশের নাম, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শব্দ ব্যবহার না করা, অভিন্ন গ্রেডিং সিস্টেম অনুসরণ ও ক্রেডিট ট্রান্সফার উন্মুক্ত রাখা, প্রোগ্রামের আসনসংখ্যা ইউজিসির অনুমোদনে নির্ধারণ, ন্যূনতম ৯ শতাংশ আসনে মেধাবী অথচ দরিদ্র/প্রত্যন্ত অঞ্চলের/ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইত্যাদি এমন শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড গঠনে কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে সংশোধিত আইনের খসড়ায়। এতে বলা হয়েছে, অনধিক ১৫ সদস্য কিন্তু অন্যূন ৯ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করতে হবে। তবে একই পরিবার থেকে পাঁচজনের বেশি বোর্ড সদস্য হতে পারবেন না। খসড়ায় জমি বা ভবন সম্প্রসারণে বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ভূমি বা ভবন না পাওয়া গেলে কমিশনের সুপারিশ ও সরকারের অনুমোদন নিয়ে এক বর্গকিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ভূমি বা ভবন কেনা যেতে পারে। তবে এক বা একাধিক পূর্ণাঙ্গ ফ্যাকাল্টি ভিন্ন স্থানে পরিচালনা করা যাবে না।

সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে অভিমত জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান আইনটি যুগোপযোগী করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের যে অভিযোগ ছিল, এ আইন কার্যকরের ফলে তা লাঘব হবে বলে আশা করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১৫ জেলায় নতুন ডিসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ১২
১৫ জেলায় নতুন ডিসি

১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

বদলি করা জেলা প্রশাসকদের মধ্যে বাগেরহাটের ডিসি আহমেদ কামরুল হাসানকে নোয়াখালীতে, কুষ্টিয়ার ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনকে হবিগঞ্জে, ভোলার ডিসি মো. আজাদ জাহানকে গাজীপুরে, বরগুনার ডিসি মোহাম্মদ শফিউল আলমকে ঢাকায়, সিরাজগঞ্জের ডিসি মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে গাইবান্ধায় এবং খুলনার ডিসি মো. তৌফিকুর রহমানকে বগুড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহকে বরগুনায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সচিব (উপসচিব) মো. আমিনুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জে, বাণিজ্য উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে মাগুরায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু সাঈদকে পিরোজপুরে, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর পাবনার জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা মিজ আফরোজা আখতারকে সাতক্ষীরায়, স্থানীয় সরকার ফেনীর উপপরিচালক (উপসচিব) গোলাম মো. বাতেনকে বাগেরহাটে, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) একান্ত সচিব স. ম. জামশেদ খোন্দকারকে খুলনায়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেনকে কুষ্টিয়ায় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব ডা. শামীম রহমানকে ভোলার ডিসি পদে পদায়ন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফেসবুকে ‘টিএমডি’ বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি ঐক্য পরিষদের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফেসবুকে ‘টিএমডি’ বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি ঐক্য পরিষদের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।

বিবৃতিতে জানানো হয়, আমরা লক্ষ করছি যে ‘#TMD’ অর্থাৎ ‘Total Maloun Death’ নামীয় হিন্দুবিদ্বেষী হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িক উসকানি প্রচার করছে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। এতে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভীতি সঞ্চারিত হচ্ছে, যা মানবিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। এ ট্যাগকে ব্যবহার করে অসংখ্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ, অশ্লীল ও সহিংসতাপ্রবণ পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ছে। যার ফলে দেশের ছাত্র ও যুব সমাজের মধ্যে বিকৃত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ দ্রুত ছড়ানোর কারণে এক সম্প্রদায়ের প্রতি অন্য সম্প্রদায়ের বিদ্বেষ ক্রমবর্ধমান।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক প্রচারণার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে এবং সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থানের একটি স্বাধীন দেশে এ ধরনের ধর্মবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার কখনো কাম্য হতে পারে না।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী এবং ধর্মীয় উসকানিদাতাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করাসহ এমন প্রচার বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত