Ajker Patrika

দেশের পর্যটনে গভীর ক্ষত

সাইফুল মাসুম, ঢাকা
দেশের পর্যটনে গভীর ক্ষত

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পর গতকাল বুধবার থেকে অফিস-আদালত, গণপরিবহন, শপিং মলসহ অনেক কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো বন্ধ পর্যটন শিল্প। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন পর্যটন খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁদের দাবি, এই খাতের সঙ্গে দেশের প্রায় ৪৫ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় আর্থিক অনটনে আছেন তাঁরা।

২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সব বিনোদন ও পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ক্ষতির মুখে পড়ে হোটেল, মোটেল, রিসোর্টসহ এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষ। সংক্রমণ কমলে গত বছরের ২২ আগস্ট থেকে আবার সব পর্যটনকেন্দ্র খুলতে শুরু করে। করোনা সংক্রমণ কম থাকায় সে সময় প্রাণ ফিরে পায় পর্যটন শিল্প। তখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ২০২১ সালে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে এপ্রিল থেকে দেশে দফায় দফায় বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। এতে আবার বন্ধ হয়ে যায় এই শিল্প। গতকাল থেকে বিধিনিষেধ শিথিল করা হলেও পর্যটন খাত খুলে দেওয়া হয়নি।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, ‘সরকার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। আমরা মন্ত্রণালয়, ট্যুরিজম বোর্ডকে চিঠি দিয়েছি। সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া উচিত। নইলে রাজপথে নানান কর্মসূচি দিতে আমরা বাধ্য হব।’

টোয়াবের দাবি, করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের মার্চের শেষ দিক থেকে প্রায় পাঁচ মাস পর্যটন শিল্প বন্ধ ছিল। এতে টোয়াব সদস্যদের ক্ষতি হয়েছিল ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের এপ্রিল থেকে চার মাসের বেশি সময় ধরে স্থবির এই শিল্প। এবারও গত বছরের কাছাকাছি পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তাঁরা। এভাবে চলতে থাকলে এই শিল্পে তাঁদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিইএ) চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাগর বলেন, ‘দেশের সবকিছু খুলে দিয়ে পর্যটন খাত বন্ধ রাখা অমানবিক। এই খাতের ৪৫ লাখ মানুষকে অবহেলা করা হচ্ছে। আমাদের দাবি, অবিলম্বে সব পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হোক।’

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (বিক্রয় উন্নয়ন ও জনসংযোগ) মো. জিয়াউল হক হাওলাদার বলেন, ‘পর্যটন শিল্পের সঙ্গে অনেক মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। তা ছাড়া মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ভ্রমণ জরুরি। যারা ডাবল ডোজ টিকা দিয়েছে, তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। সীমিত পরিসরে পর্যটন করপোরেশনের অধীনে পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া যেতে পারে।’

তবে সরকার ভেবেচিন্তে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জাবেদ আহমেদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের দেশে পর্যটনকেন্দ্রে অতিরিক্ত ভিড় হয়। মানুষ কিছুই মানতে চায় না। আজ পর্যটনকেন্দ্র খুলে দিলে কাল দেখা যাবে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে চার লাখ পর্যটকের ভিড়। সরকার এটি বিবেচনায় নিয়েছে। সবকিছু খুলে দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, ধীরে ধীরে পর্যটনকেন্দ্রও খুলে দেওয়া হবে।’

জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের তথ্যমতে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সে বছর দেশের মোট জিডিপির ২ দশমিক ৭ ভাগ পর্যটন খাত থেকে এসেছিল। এই খাত থেকে দেশের অর্থনীতিতে যোগ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

আইপিএলে চাহালের রেকর্ড হ্যাটট্রিকের রাতে রহস্যময় পোস্ট এই নারীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত