Ajker Patrika

শেখ হাসিনাকে ‘নো রিলিজ, নো ট্রিটমেন্ট’ বলতে শুনেছেন সাক্ষী ইমরান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ০৫
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে শেখ হাসিনা ‘নো রিলিজ, নো ট্রিটমেন্ট’ নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর পর থেকে আর চিকিৎসা হয়নি। তাঁকে অন্য হাসপাতালেও নিতে দেওয়া হয়নি। তারা চেয়েছিল, পা কেটে কারাগারে নিয়ে যেতে।

আজ সোমবার (৪ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ছাত্র আবদুল্লাহ আল ইমরান। ওই সময় তিনি সম্মান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। আন্দোলনে আহত হয়ে হাসপাতালে থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। বর্তমানে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই জবানবন্দি নেওয়া হয়। এটি শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দ্বিতীয় সাক্ষ্য।

জবানবন্দিতে শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান জানান, আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তাঁর বাম হাঁটুর নিচে গুলি লাগে। পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের ২৬ অথবা ২৭ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে পরিদর্শনে যান। শেখ হাসিনা তাঁর কাছে গেলে তিনি ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন করেন। ওই সময় শেখ হাসিনা তাঁকে ‘আপা’ বলে ডাকতে বলেন।

ইমরান আরও জানান, তিনি কোথায় পড়াশোনা করেন, হলে থাকেন কি না, কেন থাকেন না, সে সম্পর্কে শেখ হাসিনা এসব বিষয়ে জানতে চান। একপর্যায়ে শেখ হাসিনা বুঝতে পারেন, তিনি আন্দোলনকারী। এরপর আরও চার-পাঁচজনের সঙ্গে কথা বলে সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় হেল্পডেস্কের কাছে গিয়ে শেখ হাসিনাকে ‘নো রিলিজ, নো ট্রিটমেন্ট’ বলতে শুনেছেন তিনি।

তিনি জানান, ‘নো রিলিজ, নো ট্রিটমেন্ট’ মানে কী, তখন বুঝতে না পারলেও পরে দেখেন, তাঁর যথাসময়ে অস্ত্রোপচার হচ্ছে না। হাসপাতালের দেওয়া ওষুধে কাজ হচ্ছে না। পায়ে পচন ধরছে। বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে চাইলেও পারছেন না। তাঁর বাবা অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলেও নিতে পারছিলেন না। তখন তিনি বুঝতে পারেন, তাঁর পা কেটে তাঁকে কারাগারে নিতে চেয়েছিল তারা।

তাঁর এই পরিস্থিতির জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দায়ী করেন। জবানবন্দি শেষে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী তাঁকে জেরা করেন। এ সময় সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল-মামুন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ১০ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। গতকাল রোববার থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। এই মামলায় সাবেক আইজিপি এরই মধ্যে রাজসাক্ষী হয়েছেন।

গত ১ জুন তাঁদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। ওই দিন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানি জারি করা হয়। তবে তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় ১৬ জুন। বিজ্ঞপ্তি জারির পরও হাজির না হলে ২৪ জুন দুজনের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর সাবেক বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আমির হোসেনকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

মেয়াদোত্তীর্ণ ঠিকাদারের নিয়ন্ত্রণে সার্ভার, ঝুলে আছে ৭ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত