Ajker Patrika

তিন দফা দাবিতে শহীদ মিনারে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের মহাসমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২৫, ১৩: ৪৪
শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

১১তম গ্রেডে বেতন, প্রধান শিক্ষকের শতভাগ পদে পদোন্নতি ও উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা নিরসনের দাবিতে মহাসমাবেশে জড়ো হয়েছেন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকেরা। আজ শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। সহকারী শিক্ষকদের ছয়টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে। এই সমাবেশে সারাদেশ থেকে আসা বিপুল সংখ্যক প্রাথমিক শিক্ষক যোগ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি শামসুদ্দীন মাসুদ বলেন, আমাদের সহকারী শিক্ষকদের ইতিহাস খুব পুরনো না হলেও একেবারে কম নয়। ২০১৩ সাল থেকে এটা শুরু হয়। আমাদের অর্জন নেহায়েত কম নয়। তবে বেতন বৈষম্য আজও দূর হয়নি। আমাদের মূল দাবি না মানলে এই শহীদ মিনার থেকে আরও কঠোর কর্মসূচি আসবে।

এই শিক্ষক নেতা আরও বলেন, ‘বিগত সরকারের সময়ে রাতের অন্ধকারে আমাকে জঙ্গি তকমা দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বর্তমানেও আমাদের রাজনৈতিক ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে। আমরা কোনো দলের নই। আমরা শুধু আমাদের দাবি আদায়ে এখানে এসেছি। দাবি মেনে নিলে এই মঞ্চ থেকে সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমরা চলে যাব।’

জাতীয় প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ফাউন্ডেশনের সভাপতি শাহিনুর আক্তার বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষকেরা শুধু শ্রেনিকক্ষে পাঠদানই করেন না। বরং তারা আরও অনেক কাজ করে থাকেন। কিন্তু তাঁরা অবহেলিত। সারা বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশে শিক্ষকদের বেতন অত্যন্ত কম। আমরা এই বৈষম্যের অবসান চাই। আমাদের দাবি না মানলে কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি আসবে।

মহাসমাবেশে শিক্ষক নেতারা জানান, তিন দফা দাবিতে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকেরা গত মে মাসের শেষ দিকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেন। সে সময় শিক্ষক নেতাদের ডেকে বৈঠক করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। বৈঠকে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস পেয়ে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। কিন্তু গত কয়েক মাসেও দাবি-দাওয়া পূরণের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

শিক্ষকেরা বলেন, প্রাথমিকের একজন সহকারী শিক্ষক তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারীর সমমানের বেতন পান। তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের কাছ থেকে প্রথম শ্রেনীর নাগরিক আশা করা যায় না। তাই উন্নত জাতি গড়তে হলে এই শিক্ষকদের সম্মান দিতে হবে। তাদের প্রতি হয়ে আসা সকল বৈষম্য দূর করতে হবে।

শিক্ষকদের এ মহাসমাবেশে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

সমাবেশ মঞ্চ থেকে জানানো হয়, দুপুর ২টায় শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে যাবেন। সেখান থেকে ফিরে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌনে ৪ লাখেরও বেশি শিক্ষক কর্মরত। তাঁদের মধ্যে সর্বশেষ প্রধান শিক্ষকদের বেতন বাড়িয়ে দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। এ ছাড়া সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৩তম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত