Ajker Patrika

প্রধান বিচারপতির আমন্ত্রণে সুপ্রিম কোর্টে ৩০ ‘স্বপ্নসারথি’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সুপ্রিম কোর্টে আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে ৩০ কিশোরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
সুপ্রিম কোর্টে আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে ৩০ কিশোরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছে ৩০ জন কিশোরী। ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনগত সুরক্ষা কর্মসূচির (সেলপ) উদ্যোগ ‘স্বপ্নসারথি’-এর এ কিশোরীরা আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন।

প্রতিকূল বাস্তবতার মধ্যেও এ কিশোরীদের স্বপ্ন—ভবিষ্যতে আইন পেশায় যুক্ত হওয়া। প্রধান বিচারপতির এই আমন্ত্রণ তাদের জন্য দেশের বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষভাবে জানার ‘অনন্য সুযোগ’ করে দিয়েছে বলে মনে করছে তারা।

প্রধান বিচারপতি কিশোরীদের উদ্দেশে বলেন, ‘মেয়েরা এখন ছেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লেখাপড়া করছে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চাকরিতে ঢুকছে। চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে মেয়েদের জন্য ১০ ভাগ কোটা সংরক্ষিত আছে। তবে আমি যখন সাত বছর জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে কাজ করেছি, সেখানে কখনোই মেয়েদের এই ১০ ভাগ কোটা ব্যবহার করতে হয়নি। নিজেদের যোগ্যতাতেই তারা এটি অর্জন করেছে। অনেক সময় তারা ছেলেদেরও ছাড়িয়ে যাচ্ছে।’

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, বাল্যবিবাহের অবসান ঘটাতে হবে। এটি খুবই দুঃখজনক, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আইন ও নানা রকম মনিটরিং থাকা সত্ত্বেও সমাজব্যবস্থা আইনের সঙ্গে গতি রেখে চলতে পারছে না। এটি প্রতিরোধে নারী-পুরুষ সবার সচেতনতার পাশাপাশি নারীদের শিক্ষা ও ক্ষমতায়নের প্রয়োজন।

আইনের কিছু মূল বিষয় ও সংবিধানের মৌলিক অধিকারের বিষয়গুলো স্কুলপর্যায়ে পাঠ্যক্রমে যুক্ত করার প্রস্তাব রেখে সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘বর্ণ, ধর্ম, ভাষা কোনো ক্ষেত্রেই মানুষে মানুষে বৈষম্য থাকা উচিত নয়। মানুষে মানুষে কোনো বৈষম্য থাকবে না—আমাদের সংবিধান সেটাই শেখায়।’

আপিল বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব বলেন, ভবিষ্যতে আইন পেশায় যুক্ত হওয়ার বিষয়ে এ কিশোরীরা যে দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে, তা দারুণ আশাব্যঞ্জক।

ভবিষ্যতে বিচার বিভাগে নারীদের অংশগ্রহণ ৫০ শতাংশ বা তারচেয়ে বেশি হওয়ার স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে ফারাহ মাহবুব বলেন, আগামী প্রজন্ম এ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেবে।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, এ কিশোরীদের ‘স্বপ্নসারথি’ বলার কারণ হচ্ছে, এই উদ্যোগের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য—সারা দেশে কিশোরীদের সংগঠিত করে তাদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা, যেন তারা নিজেদের স্বপ্নগুলো বাস্তবে রূপ দিতে পারে।

আসিফ সালেহ্ আরও বলেন, সারা দেশে ৬০ হাজার স্বপ্নসারথি সদস্যের মধ্যে প্রায় এক হাজার কিশোরীর স্বপ্ন ভবিষ্যতে আইনজীবী বা বিচারক হওয়া। তাদের মধ্য থেকে ৩০ জন আজকে এখানে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে, যা তাদের জীবনের এক অনন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে।

সুপ্রিম কোর্ট পরিদর্শন ও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাতের এ সুযোগ তাদের ভবিষ্যতে আইন পেশায় যুক্ত হওয়ার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আসিফ সালেহ্।

কিশোরীদের দক্ষতা বাড়াতে ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে ‘স্বপ্নসারথি’। ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির (সেলপ) এই উদ্যোগের আওতায় বর্তমানে দেশের ৩১ জেলার ২ হাজার ৪০০ গ্রামে ১৩–১৭ বছর বয়সী প্রায় ৬০ হাজার কিশোরী কাজ করছে।

এই উদ্যোগ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কিশোরীদের সচেতন করার পাশাপাশি শিক্ষা, দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়িয়ে তাদের স্বপ্নপূরণে সহায়তা করছে এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

২০২৬ সালের পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নামের আগে গণহত্যাকারী, ফেসবুকে আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত