Ajker Patrika

টেকসই ভবিষ্যৎ নিয়ে যৌথ দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্মত ঢাকা-নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী

বাসস
আপডেট : ২২ জুন ২০২৪, ১৭: ২২
টেকসই ভবিষ্যৎ নিয়ে যৌথ দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্মত ঢাকা-নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, নিরাপত্তা, বাণিজ্যসহ দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের সব বিষয় নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচনায় হয়েছে। উভয় দেশের স্বার্থে টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে যৌথ দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্মত হয়েছেন তাঁরা। 

তিনি বলেন, ‘উভয় দেশই একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে আমাদের পথ দেখানোর জন্য রূপকল্প ঘোষণা অনুমোদন করেছে। আমরা টেকসই ভবিষ্যতের জন্য ডিজিটাল অংশীদারিত্ব এবং সবুজ অংশীদারিত্ব বিষয়ক দুটি সমন্বিত রূপকল্পকে সামনে রেখে কাজ করতে দুপক্ষই সম্মত হয়েছি।’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত এবং দ্বিপক্ষীয় বৈঠকসহ বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরের পর গণমাধ্যমের সামনে এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।

ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং আঞ্চলিক অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে সৃষ্ট সম্পর্ককে বাংলাদেশ সব সময়ই বিশেষ গুরুত্ব দেয়।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ক্রমাগত বিকশিত এবং দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের দুই পক্ষের মধ্যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে আমরা অন্যান্য পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ের মধ্যে রাজনীতি ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও সংযোগ, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, জ্বালানি ও শক্তি এবং আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছি।’ 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের দুদেশের এবং জনগণের কল্যাণের জন্য আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি।’ 

যেহেতু নতুন সরকার গঠনের মাধ্যমে ঢাকা ও দিল্লি নতুনভাবে পথ চলা শুরু করেছে, সে প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘সেই ধারাবাহিকতায় আমরা “রূপকল্প-২০৪১”–এর মাধ্যমে “স্মার্ট বাংলাদেশ” প্রতিষ্ঠা এবং “বিকশিত ভারত ২০৪৭” অনুসরণ নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁরা এই দিন নতুন কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই প্রত্যক্ষ করেছেন। কিছু নবায়ন করেছেন এবং ভবিষ্যৎ কাজের ক্ষেত্র হিসেবে কিছু যৌথ কার্যক্রমের ঘোষণা দিয়েছেন। 

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, দুই দেশই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়সহ উচ্চপর্যায়ের মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠান আমাদের স্বাধীনতার এবং দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে তাঁর শেষ দ্বিপক্ষীয় সফর করেছিলেন এবং পরবর্তীকালে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র আমন্ত্রিত ‘অতিথি দেশ’ বাংলাদেশের নেতা হিসেবে নয়াদিল্লিতে ভারতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন। 

তিনি বলেন, ‘এখন আমি এই একই “জুন” মাসে অভূতপূর্ব দ্বিতীয়বারের মতো নয়াদিল্লি সফর করছি।’

এর আগে শেখ হাসিনা ৯ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং নবগঠিত মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আরও কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে নয়াদিল্লি সফর করেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসবই আমাদের এই দুদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে একে অপরের সঙ্গে কাজ করার প্রমাণ বহন করে।’ 

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে তাঁরা দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততার পথ এবং কার্যপন্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন। 

তিনি বলেন, আজ বিকেলে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এই আলোচনাসমূহ আমাদের একে অপরকে সহযোগিতার উন্নততর পথ নিরূপণে গুরুতপূর্ণ দিক-নির্দেশনা দেবে।’

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠনের পর এটিই কোনো দেশে তাঁর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমাকে এবং আমার প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ আতিথেয়তা প্রদান করার জন্যে আমি ভারত সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’ 

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারত সরকার ও জনগণের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের সেইসব বীরদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, যাঁরা ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান এবং মোদিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এবার ‘পাকিস্তানপন্থার’ বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ মাহমুদ

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

বাহাত্তরের সংবিধান, জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা নিয়ে আইন উপদেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

চাকরিতে কোটা: সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আসছে সমান সুযোগ

পাকিস্তানের ভয়ে যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রকাশ করতে চায় না ভারত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত