Ajker Patrika

চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত: বিশেষ মর্যাদা ও আইনি ভিত্তি পাবে জুলাই সনদ

  • দু-এক দিনের মধ্যে সনদের চূড়ান্ত খসড়া দলগুলোর কাছে পাঠাবে ঐকমত্য কমিশন।
  • যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে, তাও উল্লেখ থাকছে সনদে।
  • আগামী সপ্তাহে দলগুলোর সঙ্গে ফের বৈঠকের আশা, দলগুলো একমত হলে নেওয়া হবে স্বাক্ষর।
তানিম আহমেদ, ঢাকা 
আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২৫, ০৯: ১৬
চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত: বিশেষ মর্যাদা ও আইনি ভিত্তি পাবে জুলাই সনদ

রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে জাতীয় সনদকে বিশেষ মর্যাদা ও আইনি ভিত্তি দেওয়ার কথা আছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতামত গ্রহণ এবং কিছু শব্দ ও ভাষাগত সংযোজন-বিয়োজন শেষে দু-এক দিনের মধ্যে সনদের চূড়ান্ত খসড়াটি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠাবে কমিশন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যুমনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কমিশনের কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরেছেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও উপস্থিত ছিলেন।

জানতে চাইলে আলী রীয়াজ বলেন, কমিশনের কাজের অগ্রগতি বিশেষত দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদের সমন্বিত খসড়া ও সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়েছে। কবে নাগাদ দলগুলোর কাছে এটি পাঠানো যাবে, দলগুলোর সঙ্গে আবার কবে বসা সম্ভব হবে—এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে।

শিগগিরই দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠাবে কমিশন। ঐকমত্য কমিশন সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে আগামী সপ্তাহে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জুলাই সনদের সমন্বিত চূড়ান্ত খসড়াকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যার মধ্যে প্রথম ভাগে জুলাই সনদের পটভূমি, সংস্কার কমিশন গঠন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন এবং কমিশনের কার্যক্রমের বিষয়ে বর্ণনা করা আছে। দ্বিতীয় ভাগে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো এবং সর্বশেষ ভাগে রয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা, যেখানে ৯টি ধারায় অঙ্গীকারগুলো উল্লেখ আছে।

জুলাই সনদের খসড়ার নমুনা সংলাপে অংশগ্রহণকারী ৩০টি দল ও জোটকে গত ২৮ জুলাই দিয়েছিল কমিশন, যার সর্বশেষ ভাগে সাত দফার অঙ্গীকারনামা ছিল। এই অঙ্গীকারনামার চতুর্থ দফায় ছিল—যেসব সংস্কারে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো আগামী সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে। বিএনপি, এলডিপি, লেবার পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট ও এনডিএম এতে রাজি ছিল। তবে সেদিনই বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানায় জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ বেশির ভাগ দল। দলগুলো জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির পাশাপাশি ওই সনদের অধীনেই নির্বাচনের দাবি করে। ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ২৮টি দল খসড়া সনদের বিষয়ে তখন মতামত জানায়। ১৮টি দল নির্বাচনের আগে সংস্কার এবং সনদের আইনি ভিত্তি চেয়েছে। জামায়াত এ দাবিতে ইতিমধ্যে রাজপথে নেমেছে।

কমিশনসংশ্লিষ্ট একজন বলেন, ‘ওই খসড়া ছিল একটি নমুনা মাত্র। এটি দিয়ে বাস্তবায়নের বিষয়ে দলগুলোর মনোভাব বুঝতে চেয়েছি আমরা। অধিকাংশ দলই সনদের আইনি ভিত্তির কথা বলেছিল। তাই সবার মতের প্রতি সম্মান জানিয়ে চূড়ান্ত খসড়ায় সনদের আইনি ভিত্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেসব ধারায় দলগুলো “নোট অব ডিসেন্ট” দিয়েছে, তাও উল্লেখ আছে সনদের খসড়ায়। দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে সনদ তৈরি করে দলগুলোর স্বাক্ষর নেওয়া হবে।’

যেসব বিষয়ে ঐকমত্য ও আপত্তি আছে

জুলাই সনদের দ্বিতীয় ভাগে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো উল্লেখ করা আছে, যেগুলো আবার কয়েকটি ভাগে ভাগ করা আছে। প্রথম ৬টি ধারায় রাষ্ট্রভাষা, নাগরিকত্ব ও সংবিধান প্রশ্নে ঐকমত্যে উপনীত হওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ আছে। ৭ ও ৮ ধারায় রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এবং ৯ নম্বর ধারায় মৌলিক অধিকার নিয়ে ঐকমত্যে আসা বিষয়গুলোর কথা বলা আছে। এ ছাড়া ১০-১৩ ধারায় রাষ্ট্রপতি, ১৪-১৬ ধারায় প্রধানমন্ত্রী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার কথা বলা আছে। ১৭-২০ ধারায় স্থানীয় সরকারব্যবস্থার বিষয়ে বর্ণনা করা আছে। ২১-২৯ ধারায় আইনসভার বিষয়ে ঐকমত্য হওয়ার বিষয়গুলো আছে। ৩০-৫০ পর্যন্ত বিচার বিভাগ, ৫১-৫৩ পর্যন্ত নির্বাচন ব্যবস্থা, ৫৪-৫৭ ধারায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, ৫৮-৬৪ ধারায় জনপ্রশাসন, ৬৫ ধারায় স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়টি উল্লেখ আছে। ৬৪-৮৪ ধারায় দুর্নীতি দমন কমিশনের বিষয়ে ঐকমত্য হওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ আছে।

ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরি করা জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়ায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার পাশাপাশি নাগরিকদের মাতৃভাষা হিসেবে ব্যবহৃত অন্যান্য ভাষাকে দেশের প্রচলিত ভাষা হিসেবে সংবিধানে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলা আছে।

চূড়ান্ত খসড়া সনদে বলা আছে, বাংলাদেশের নাগরিকদের পরিচয় হবে ‘বাংলাদেশি’।

সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনের পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাসহ কিছু বিষয়ে সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে জুলাই সনদে। তবে সংখ্যানুপাতিকে দ্বিকক্ষের বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট আছে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের।

সংবিধানের মূলনীতির অংশে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার, গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতির কথা উল্লেখ আছে, যাতে আপত্তি আছে সিপিবি, বাসদ, জেএসডি, বাংলাদেশ জাসদ, বাসদ-মার্কসবাদী, গণফোরামসহ কয়েকটি দলের।

প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান হতে পারবেন না বলে সনদে বলা আছে। এতে নোট অব ডিসেন্ট আছে বিএনপিসহ তার সমমনাদের।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা হলে উচ্চকক্ষের ১০০ সদস্য সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তি নির্বাচনের কথা উল্লেখ থাকবে জুলাই সনদে। দলগুলোকে নিম্নকক্ষের নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী প্রকাশের সঙ্গে উচ্চকক্ষের প্রার্থিতার পাশাপাশি ১০ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের বাধ্যবাধকতার কথা বলা আছে এতে। বিএনপিসহ সমমনারা পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের বিরোধী। সিপিবি, বাসদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও আমজনতার দল বাংলাদেশের বাস্তবতায় উচ্চকক্ষ চায় না।

ঐকমত্য কমিশন সরাসরি আসনে জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০তে উন্নীত করার প্রস্তাব করেছিল। এতে আপত্তি আছে এনসিপি, সিপিবি, বাসদ, বাংলাদেশ জাসদ, জেএসডি, গণফোরাম, বাসদ-মার্কসবাদী, আমজনতার দলের। অন্যদিকে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ ইসলামপন্থী দলগুলো পিআরে নারীদের জন্য ১০০ আসনের দাবি করে।

৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থবিল ও আস্থাভোট ছাড়া সব বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোটের সুযোগের কথা আছে। তবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো দুটোর সঙ্গে সংবিধান সংশোধন ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যোগ করার পক্ষে।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে সাবেক বিচারপতিদের জন্য পালনীয় আচরণবিধি প্রণয়ন ও প্রকাশ এবং শৃঙ্খলাব্যবস্থা হিসেবে সতর্ক করার পাশাপাশি ‘বিচারপতি’ পদবি ব্যবহার না করার বিষয়টিও থাকছে জুলাই সনদে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রাথমিকে সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের যে ব্যাখ্যা দিল সরকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।

আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটি জানানো হয়েছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।

সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সচিব কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।

সচিব কমিটি মনে করে, প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল। এত অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না এবং এতে বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশেই প্রস্তাবিত নিয়োগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলে একই শিক্ষককে ২০টির বেশি বিদ্যালয়ে যুগপৎভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর ফলে তাঁর পক্ষে কর্মঘণ্টা ম্যানেজ করা সম্ভব হবে না বলে সচিব কমিটি মনে করে।

পরে অর্থের সংস্থান সাপেক্ষে সব স্কুলে এ রকম নতুন বিষয়ের শিক্ষকের পদ সৃজন ও সেসব পদে নিয়োগদানের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে কমিটি অভিমত ব্যক্ত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে ফুল কোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় তাঁদের পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদোন্নতির জন্য প্যানেলে ছিলেন– অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদের জন্য ৩৪৫ জন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ এবং সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন। সব মিলিয়ে পদোন্নতির প্যানেলে ১ হাজার ১০৩ জন বিচারিক কর্মকর্তার নাম থাকলেও নানা কারণে বেশ কয়েকজনের নাম অনুমোদন হয়নি।

২০২৬ সালের সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডারও ফুল কোর্ট সভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তবে সরকারি ক্যালেন্ডার এখনো প্রকাশিত না হওয়ায় তা অনুমোদিত হয়নি।

সম্প্রতি ১ হাজার ১০৩ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পদোন্নতির প্যানেলে ছিল কয়েকজন বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নাম, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান।

বিচারকদের পদোন্নতি যেভাবে হয়

সব মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির জন্য ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) থাকে। ওই কমিটি পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এক দিনেই প্যানেলের সবার পদোন্নতির জিও জারি করা হয়।

তবে বিচারকদের ক্ষেত্রে প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। বাছাই কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় ওঠে। সভায় অনুমোদন পাওয়ার পর তা আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে ওই প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকে এবং পদ খালি হওয়ার পর সময়ে সময়ে জিও জারি করা হয়।

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী জজদের এই পদে চার বছর দায়িত্ব পালনের শর্ত পূরণ করতে হয়। সিনিয়র সহকারী জজদের যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর এবং অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছরের শর্ত পূরণ করতে হয়। তবে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয় না। অনেকেই বছরের পর বছর প্যানেলভুক্ত হয়ে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৪৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ: নিজাম হাজারীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ০২
ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারী এবং তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বেগম। ছবি: সংগৃহীত
ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারী এবং তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বেগম। ছবি: সংগৃহীত

ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারীর স্ত্রী নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে ৪৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও ৪৩ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ মঙ্গলবার দুদকের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

দুদক মহাপরিচালক বলেন, অভিযুক্ত নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সন্দেহজনক লেনদেনের পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।

এ ছাড়া ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত নুরজাহান বেগমের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি হিসাবে ৪৩ কোটি ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৮০৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করেছে দুদক।

এ তথ্য আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যাচাই করা হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে এর আগেও অবৈধ সম্পদ অর্জন, ফেনী ও ঢাকায় নামে-বেনামে জমি ও ভবন ক্রয় এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে একাধিক তদন্ত চলছে।

সূত্রটি আরও জানায়, দুদকে পাঠানো সম্পদ বিবরণীতে ঘোষিত তথ্য ও বাস্তব সম্পদের মধ্যে বিশাল অমিল পাওয়া যায়। এর ধারাবাহিকতায় নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফেনী-২ আসন থেকে টানা তিনবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নিজাম উদ্দিন হাজারী। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দখলদারত্বের অভিযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১০১ জন। সব মিলিয়ে এ বছর ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৯২৩ জনে। তাদের মধ্যে ২৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে মশাবাহিত এ রোগে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ করা তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, সর্বশেষ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে তিনজন।

এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় একজন মারা গেছে। নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে সর্বোচ্চ ২৪১ জন ভর্তি হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৭৫ জন, রাজধানীর বাইরে ঢাকা বিভাগে ২০৮, বরিশালে ১৫১, খুলনায় ৫৯, চট্টগ্রামে ১২৫, রাজশাহীতে ৪৫, ময়মনসিংহে ৭৫, রংপুরে ১৯ ও সিলেটে তিনজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

গত অক্টোবর মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২২ হাজার ৫২০ জন, যা এই বছরের এক মাসে সর্বোচ্চ। একই সময়ে ৮০ জন মারা গেছে, যা এ বছরে একক মাসের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে ১৫ হাজার ৮৬৬ জন ভর্তি হয়েছিল এবং ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এ ছাড়া জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিন, এপ্রিলে সাত, মে মাসে তিন, জুনে ১৯, জুলাইয়ে ৪১ ও আগস্টে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মার্চ মাসে কোনো মৃত্যু হয়নি।

চলতি মাসের চার দিনে ৪ হাজার ৬১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে আর মারা গেছে ১৪ জন চিকিৎসাধীন রোগী।

দেশে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। আর মারা গেছে ১ হাজার ৭০৫ জন।

২০২৪ সালে ১ লাখ ১ হাজার ২১১ জন, ২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২, ২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯, ২০২০ সালে ১ হাজার ৪০৫ এবং ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত