Ajker Patrika

আধুনিক ও প্রযুক্তি জ্ঞানভিত্তিক জাতি গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

বাসস, ঢাকা
আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৩৩
আধুনিক ও প্রযুক্তি জ্ঞানভিত্তিক জাতি গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আধুনিক ও প্রযুক্তি জ্ঞানভিত্তিক জাতি হিসেবে দেশকে গড়ে তোলাই তাঁর সরকারের লক্ষ্য। তিনি বলেন, ‘একটি আধুনিক ও প্রযুক্তি জ্ঞানভিত্তিক জাতি হিসেবে দেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী দেশে রূপান্তর করাই আমাদের লক্ষ্য।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রোববার সকালে রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তর কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রংপুর বিভাগীয় কমপ্লেক্স মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। 

প্রধানমন্ত্রী ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের দেওয়া নির্বাচনী ইশতেহারের উল্লেখ করে বলেন, তাঁর সরকার নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী সব উন্নয়ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ এবং আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে।  এই লক্ষ্যে আমরা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা আমরা বাস্তবায়ন শুরু করেছি। ২০১০ থেকে ২০২০ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি অর্জন করেছি। আজকে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। সে জন্য ২০২১ থেকে ২০৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি, সেটাও বাস্তবায়িত হবে ইনশাআল্লাহ এবং বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা আর কেউ ভবিষ্যতে থামাতে পারবে না।’

সরকার স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছে এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাকে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জাতি গঠন করে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করতে চাই, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে।  মানুষ অনেক সচ্ছল হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে। জাতির পিতা এই দেশকে নিয়ে, এ দেশের মানুষকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন—ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়বেন—আমাদের লক্ষ্য, আমরা সেটাই গড়তে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে আসার উদ্যোগ সরকার নিয়েছে। সেখান থেকে ৩০ পদের ওষুধ বিনা মূল্যে প্রদান করা হচ্ছে । পাশাপাশি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনা মূল্যে বই দেওয়া হচ্ছে।

সরকার রংপুর ও আশপাশের জেলার সঙ্গে সড়ক ও রেলযোগাযোগ উন্নত করছে এবং যমুনার ওপর পৃথক রেলসেতু নির্মাণ করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দ্রুত রেলের ব্যবস্থা করছি। চার লেনের ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক ছয় লেনের করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগীয় সড়ককে আমরা চার লেনের করে দিচ্ছি। আর হাইওয়ে ছয় লেনের করে দিচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই রংপুরবাসী এই সুবিধাগুলো পেয়েছেন, সেটা ভুললে চলবে না।

এবার শীত একটু বেশি পড়েছে এবং তাঁর সরকারের পাশাপাশি বিত্তশালীরাও যেন শীতবস্ত্র বিতরণ করে দরিদ্র মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে, সেই আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, রংপুরে গত ১৩ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, এর আগে কখনো হয়নি। কেননা, সব উন্নয়ন নির্ভর করে সরকারের চিন্তার ওপর। অথচ দীর্ঘ সময় রংপুরের লোকই ক্ষমতায় থাকলেও রংপুরের মানুষের ভাগ্যের তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। তারা নিজেদের ভাগ্য গড়েছে, সাধারণ মানুষের ভাগ্য গড়েনি। তাঁর সরকার ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কর্মসূচি এই রংপুর বিভাগ দিয়েই শুরু করেছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

দেশের সব গৃহহীনকে ঘর করে দেওয়ার মাধ্যমে ঠিকানা করে দেওয়ার তাঁর সরকারের বাস্তবায়নাধীন কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, ‘রংপুরে ভূমিহীন বেশি ছিল। আমরা তাদের জমিসহ ঘর দিয়েছি। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, সারা দেশের কোথাও যেন ভূমিহীন না থাকে। প্রয়োজনে আমরা জমি কিনে ঘর করে দেব। এতে আমাদের দারিদ্র্য বিমোচন হবে।’

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম ও রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. আব্দুল ওয়াহাব ভূঞা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। নবনির্মিত রংপুর বিভাগীয় কমপ্লেক্সের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত