Ajker Patrika

নিবন্ধনের পরও টিকা পেতে দীর্ঘ অপেক্ষা

আজাদুল আদনান, ঢাকা
নিবন্ধনের পরও টিকা  পেতে দীর্ঘ অপেক্ষা

নিবন্ধনের টিকা পেতেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে টিকা গ্রহীতাদের। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনে মডার্না এবং জেলা পর্যায়ে সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে। নিবন্ধনের তুলনায় প্রতিদিন খুব কমসংখ্যক মানুষই টিকা নিতে পারছেন। তারপরও টিকা পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। লাইনে দাঁড়ানো অর্ধেকই প্রথম ডোজ নেওয়ার দুই মাস পর দ্বিতীয় ডোজ পাচ্ছেন। আবার অনেকে প্রথম ডোজ পেতে নিবন্ধন করলেও আড়াই থেকে তিন মাসেও এসএমএস পাননি।

গত ২৯ এপ্রিল টিকা পেতে নিবন্ধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন। সাড়ে তিন মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো এসএমএস পাননি তিনি। আবার নিবন্ধনের তিন মাস পর এসএমএস পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিএসএমএমইউ কেন্দ্রে টিকা নিয়েছেন বেসরকারি চাকরিজীবী রুবেল মিয়া (৩৪)। তিনি বলেন, ‘গত ২ মে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছি। এত দিন অপেক্ষায় ছিলাম। ১৬ আগস্ট মেসেজ পাওয়ায় দ্রুত টিকা নিয়েছি।’

এদিকে গতকাল রাজধানীর প্রায় সব টিকাদানকেন্দ্রে ছিল আগের দিনের মতোই উপচে পড়া ভিড়। এমনকি যেসব হাসপাতালে টিকা দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোতেও প্রায় একই অবস্থা। ভোর থেকে অনেকে টিকাকেন্দ্রে চলে আসছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছেন। তবে আগের তুলনায় টিকা দেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে।

রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গতকাল ভোর থেকে টিকা গ্রহীতাদের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভিড় আরও বাড়তে থাকে। টিকা নিতে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকে এসএমএস না পেলেও টিকা নিতে এসেছেন। আবার অনেকে টিকা না পেলেও খোঁজখবর নিচ্ছেন কবে পেতে পারেন।

কেন্দ্রগুলোতে মডার্না, সিনোফার্ম ও ফাইজারের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে। ১২ আগস্ট থেকে মডার্নার প্রথম ডোজ দেওয়া স্থগিত করা হয়। তবে সিনোফার্মের প্রথম ডোজও দেওয়া হচ্ছে। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে শরীয়তপুর থেকে প্রথম ডোজের টিকা নিতে এসেছেন সৌদিপ্রবাসী মোবারক হোসেন। দ্বিতীয় দফা নিবন্ধন শুরু হওয়ামাত্র ৮ জুলাই নিবন্ধন করেন তিনি। কিন্তু দেড় মাসের কাছাকাছি গিয়ে এসএমএস পাওয়ায় আগের দিন রাতেই রওনা দিয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, দেশে সংক্রমণ পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী হলেও টিকা গ্রহণে মানুষের আগ্রহ ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী জোগান না থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ইকবাল আর্সলান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ব্যবস্থাপনায় ঘাটতিটা নতুন কিছু নয়। টিকার প্রতি জনসাধারণের আগ্রহ বেড়েছে এটি যেমন ভালো খবর, তেমনি টিকাদানে মানুষের ভোগান্তি যাতে না বাড়ে, সেটিও দেখতে হবে।’

এদিকে টিকার অভাব দূর করতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে ওষুধ প্রস্তুতকারী একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগসের মাধ্যমে টিকা উৎপাদন করার জোর সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। গতকাল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রে দুই দেশের সরকারের মধ্যে জিটুজি চুক্তি করতেও বলা হয় বলে জানান কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম।

চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের টিকা দেশে এনে বোতলজাতকরণ ও সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেডের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে সই করার এক দিন পরেই সংসদীয় কমিটির এই সুপারিশ এল।  

গত সোমবার পর্যন্ত টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৩ কোটি ২৬ লাখ ৬২ হাজার ৫০১ জন। এদের মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১ কোটি ৫৬ লাখ ৩৬ হাজার ৪৬৩ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৫৬ লাখ ৯৪ হাজার ২৮০ জন। মজুত আছে ৮০ লাখ ১৩ হাজার ১৭৭ ডোজ টিকা। এখনো কোনো টিকা পাননি এমন নিবন্ধিত ব্যক্তির সংখ্যা ১ কোটি ১৩ লাখ ৩১ হাজারের বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া বিলাসবহুল বিমান না নেওয়াটা বোকামি: ট্রাম্প

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

পুলিশ হত্যাকারী ফোর্স হতে পারে না: আইজিপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত