Ajker Patrika

বার্জ মাউন্টেড দুর্নীতি মামলা কী, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলাটি চলেনি কেন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৮ মে ২০২৫, ২৩: ৪১
১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান (বার্জ মাউন্টেড) বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত
১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান (বার্জ মাউন্টেড) বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের দুর্নীতির ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত নাম ‘বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎকেন্দ্র দুর্নীতি মামলা’। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্র (barge-mounted power plant) স্থাপনকে কেন্দ্র করে মামলাটির সূত্রপাত হয়। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার পর মামলাটি বাতিল হয়ে যায়। আজ রোববার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলাটি আবার চালুর উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণার পর বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে।

মামলার পটভূমি

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশজুড়ে বিদ্যুৎ-সংকট নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে কিছু বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে খুলনায় বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফিনল্যান্ডভিত্তিক বার্টসিলা পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট (Wärtsilä Power Development) প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায়।

২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুর্নীতি দমন ব্যুরো শেখ হাসিনাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে এই প্রকল্পে দুর্নীতির মামলা দায়ের করে। অভিযোগে বলা হয়, প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ না করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বার্টসিলাকে কাজটি দেওয়া হয়, যার ফলে রাষ্ট্রের প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এর জন্য ঘুষ লেনদেনের ঘটনাও ঘটে।

মামলার অগ্রগতি ও বাতিল

২০০৮ সালের মে মাসে এই মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ দেয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। তবে একই বছরের জুলাইয়ে হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম দুই মাসের জন্য স্থগিত করে এবং পরে তা চূড়ান্তভাবে বাতিল করে দেয়।

১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান (বার্জ মাউন্টেড) বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত
১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান (বার্জ মাউন্টেড) বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত

২০১০ সালের ১৩ এপ্রিল হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা দায়ের ও তদন্তে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি। মামলার অনুমোদন, তদন্ত পদ্ধতি এবং সাক্ষ্যপ্রমাণের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলে আদালত। ফলস্বরূপ, মামলাটি বাতিল ঘোষণা করা হয়। শেখ হাসিনা তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ২০০৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী সরকার গঠন করেছিল।

১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান (বার্জ মাউন্টেড) বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: ফোল্ডারে সংগৃহীত
১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ভাসমান (বার্জ মাউন্টেড) বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: ফোল্ডারে সংগৃহীত

হাইকোর্ট মামলা বাতিল করলেন কেন

বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎকেন্দ্র দুর্নীতি মামলাটি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ছিল বলে দাবি করেছিল আওয়ামী লীগ। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে নির্বাচন ও রাজনীতি থেকে দূরে রাখাই ছিল এর উদ্দেশ্য। তবে মামলার বাতিলের রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছিল— ১. দুদক যে আইনি কাঠামোর অধীনে কাজ করে, সেই অনুযায়ী মামলাটি দায়েরের পূর্বে প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও বিধি অনুসরণ করা হয়নি। ২. আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, মামলার অভিযোগ ও সাক্ষ্য পরস্পরকে যথেষ্টভাবে সমর্থন করে না।

তবে দুর্নীতি দমন কমিশন বার্জ মাউন্টেড দুর্নীতি মামলা আবার পুনরায় চালুর আইনি সম্ভাবনা পর্যালোচনা করছে। দুদকের বক্তব্য অনুযায়ী, মামলার প্রাথমিক তদন্তে যে ধরনের তথ্য ও দলিল ছিল, সেগুলো নতুনভাবে বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। তারা আদালতের পর্যবেক্ষণ বিবেচনা করে মামলাটিকে পোক্ত করার কথা ভাবছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সারজিসের পোস্টে কমেন্ট করে বরখাস্ত মৎস্য মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী

‘৩ শর্তে’ সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুতদের বিক্ষোভ স্থগিত

আলটিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই আসতে পারে অন্তর্বর্তী প্রশাসনের ঘোষণা

ভারতের সঙ্গে টক্কর দিলে বাঁচতে পারবে না বাংলাদেশ: বিজেপি নেতা

চিরকুটে শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত