Ajker Patrika

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন

জোরেশোরে প্রস্তুতি সারছে ইসি

মো. হুমায়ূন কবীর, ঢাকা 
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জোরেশোরে প্রস্তুতি সেরে রাখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে চলতি সপ্তাহেই সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করা হতে পারে। নিজেদের প্রস্তুতি সেরে রাখার পাশাপাশি আইন-বিধিতে কোনো পরিবর্তন করতে হবে কি না, সে জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছে ইসি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন গত ২৬ জুন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক স্থায়ী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। একান্ত বৈঠক হওয়ায় এর বিষয়বস্তু নিয়ে সব মহলে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছিল। গত মঙ্গলবার সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের সঙ্গে তাঁর আসন্ন সংসদ নির্বাচনের তারিখ নিয়ে কোনো কথা হয়নি। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন। জবাবে তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনের প্রস্তুতি ফুল গিয়ারে (পুরোদমে) নিচ্ছি।’

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি এবং এপ্রিল এই দুটি মাসকে সামনে নিয়ে আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। যখনই সরকার নির্বাচন করতে চায় আমরা যাতে করতে পারি।... নির্বাচনের তারিখ ও শিডিউল আপনারা যথাসময়ে পাবেন।’

জাতীয় নির্বাচনেই মনোযোগ

কোন কোন দলের পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিইসি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে তো কিছু বলছেন না। তিনি জাতীয় নির্বাচনের কথাই বলে যাচ্ছেন। আমাদের মূল ফোকাস (মনোযোগ) জাতীয় নির্বাচনে।’

নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ বলেন, ‘নির্বাচনী প্রস্তুতির কাজ জোরেশোরে চলছে। আমাদের সব প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন করে রাখা হচ্ছে।’

নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটার বিষয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, তাঁরা সেপ্টেম্বরের মধ্যে কেনাকাটা সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন।

আসন সীমানার খসড়া শিগগিরই জাতীয় সংসদে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের খসড়া প্রকাশের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই এ খসড়া প্রকাশ হতে পারে। খসড়া প্রকাশ করে কমিশন দাবি-আপত্তির আবেদন চাইবে। আবেদনকারীদের শুনানি সম্পন্ন করে পুনর্নির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

সীমানা পুনর্নির্ধারণ-সংক্রান্ত কার্যক্রম নিয়ে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে ৭৬টি সংসদীয় আসন থেকে প্রায় সাড়ে ৬ শ আবেদন ইসিতে জমা পড়েছে। জনসংখ্যা, প্রশাসনিক অখণ্ডতা, ভৌগোলিক অবস্থান ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে যেটা যৌক্তিক মনে হবে, আমরা সেটিই করব। এগুলো খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে। কারণ, যত দেরি হবে তত আমাদেরই কাজ বাড়বে।’

ভোটার হওয়ার অপেক্ষায় ৬২ লাখ

জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদে বাদ পড়া ও ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারিতে যোগ্য হবেন, এমন নতুন ভোটার মিলিয়ে প্রায় ৬২ লাখের মতো নাগরিক ভোটার তালিকায় যুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। আর বিদ্যমান তালিকা থেকে বাদ যাবে পৌনে ২২ লাখের মতো মৃত ভোটারের নাম। আইন অনুযায়ী, ইসি সাধারণত ২ জানুয়ারি খসড়া প্রকাশ করে ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে। এ সময়ের বাইরে এসব নাগরিককে ভোটার তালিকায় যুক্ত করতে ভোটার নিবন্ধন আইন সংশোধনের প্রয়োজন হবে। জ্যেষ্ঠ সচিব আরও বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ে বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এটি সংশোধন হলে কমিশন যে সময়টাকে যৌক্তিক মনে করবে, তখনই ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে পারবে।

প্রবাসী ভোটের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়নি

ইসি প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য তিনটি পদ্ধতি (প্রক্সি, পোস্টাল ব্যালট ও অনলাইন ভোটিং) নিয়ে কাজ শুরু করে। এ পদ্ধতিগুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে বৈঠকও করেছে ইসি। বৈঠকে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞরা কোনো একক পদ্ধতির ওপর ভরসা রাখতে পারেননি। ইসি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করে মতামতও চেয়েছে। ইতিমধ্যে ২৪টি দল তাদের মতামত দিয়েছে। বেশির ভাগ দল পোস্টাল ব্যালটের পক্ষে মত দিয়েছে। এখন দলগুলোর মতামত পর্যালোচনা করছে ইসি।

পর্যবেক্ষক নীতিমালা অনুমোদন

ইসি সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে পর্যবেক্ষক নীতিমালার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যেকোনো সময় পর্যবেক্ষক হিসেবে নিবন্ধন করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের কাছে আবেদন চাওয়া হতে পারে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্র নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। কোনো ভোটকেন্দ্র মেরামত করার প্রয়োজন হলে, তা ঠিক করার জন্য ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের দুই দফা চিঠি দিয়েছে কমিশন। ব্যালট পেপার ও অন্যান্য ছাপার কাজের জন্য রাষ্ট্রীয় ছাপাখানা বিজি প্রেস প্রস্তুত রয়েছে। রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিষয়ক বিধিমালার নীতিগত অনুমোদন দিয়ে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এটির ওপর ১০ জুলাই পর্যন্ত মতামত দেওয়া যাবে। ওয়েবসাইটে পাওয়া মতামত ও ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ পেলে এটি চূড়ান্ত করবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সালিস না মেনে মামলা, ক্ষিপ্ত মেম্বার-চেয়ারম্যানরা হত্যা করেন মা ও ছেলে-মেয়েকে: র‍্যাব

‘ভিজিএফ কার্ড চাওয়ায়’ নারীনেত্রীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেন বিএনপি নেতা

নিউইয়র্কে মামদানির জয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে মোদি সমর্থকেরা

‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট’ মালয়েশিয়াফেরত ৩ জন, মামলার প্রস্তুতি

বিশেষ বিমানে ২৫০ জনকে সীমান্তে এনেছে ভারত, শিগগিরই ‘পুশইন’

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত