তানিম আহমেদ, ঢাকা
দেশের সড়ক ও মহাসড়কে দুর্ঘটনায় হতাহতের পরিসংখ্যান সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। প্রতি মাসের হিসাব নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়; কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার কারণে একাধিক হিসাব থেকে নিশ্চিতভাবে নিখুঁত তথ্য বের করা যাচ্ছে না। এর ফলে সড়ক দুর্ঘটনার শতভাগ সঠিক তথ্য অন্ধকারে থাকছে। প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে এটিকে অন্যতম সমস্যা হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার তথ্য বিভিন্ন রকম। তাদের মধ্যে তথ্যের ব্যবধান রয়েছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) জুলাই মাসের প্রতিবেদনে ৪২৭টি দুর্ঘটনায় ৩৮০ নিহত এবং ৫৪২ জন আহত হওয়ার সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে যাত্রী কল্যাণ সমিতির একই মাসের প্রতিবেদনে ৫০৬টি দুর্ঘটনায় ৫২০ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩৫৬ জন আহত বলা হয়েছে। জুন মাসে বিআরটিএর হিসাবে ৫৫৭ দুর্ঘটনায় ৫৬৬ জন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে ৬৭১ দুর্ঘটনায় ৭১১ জন এবং রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের হিসাবে ৬৮৯ দুর্ঘটনায় ৬৯৬ জন নিহত হয়েছে। এপ্রিল ও মে মাসেও সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনের হিসাবে লক্ষণীয় পার্থক্য দেখা গেছে।
২০২৪ সালের হিসাবে তিন উৎসের তথ্যে পার্থক্য দেখা যায়। বিআরটিএর ওয়েবসাইটে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় ২০২৪ সালে সারা দেশে প্রাণহানি হয়েছে ৫ হাজার ৩৮০ জনের।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে সংখ্যাটি ৭ হাজার ২৯৪ এবং যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে ৮ হাজার ৫৪৩।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদনগুলো তৈরি হয় দ্বিতীয় স্তরের (সেকেন্ডারি সোর্স) তথা গণমাধ্যম কিংবা পুলিশের তথ্য নিয়ে। এসব প্রতিবেদনে শুধু ঘটনা ঘটার দিনের তথ্য থাকে; হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর উল্লেখ থাকে না। এ কারণে দুর্ঘটনার বিষয়ে সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না।
দেশে কয়েক বছর ধরে সরকারের বিআরটিএ, বেসরকারি সংগঠন যাত্রী কল্যাণ সমিতি ও রোড সেফটি ফাউন্ডেশন মাস শেষে সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। সরকারি সংস্থাটি পুলিশের তথ্য নিয়ে এবং বেসরকারি সংগঠনগুলো গণমাধ্যমের তথ্য ঘেঁটে প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে। এই তিন সূত্রের দেওয়া গত চার মাসের সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের তথ্যের তুলনা করলে ‘তথ্য-বিভ্রাট’ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এর কারণ হিসেবে তথ্য প্রাপ্তির নানা সীমাবদ্ধতার কথা বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁদের কথায়, গণমাধ্যমগুলোয় মূলত বড় ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের খবর আসে। ছোটখাটো দুর্ঘটনা কিংবা কম হতাহতের খবর অনেক সময় প্রচারমাধ্যমে আসে না।
বিআরটিএ পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে। যাত্রী কল্যাণ সমিতি দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করে। আর রোড সেফটি ফাউন্ডেশন প্রতিবেদন তৈরি করে ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনের তথ্যে গরমিলের কারণে কয়েক বছর আগে থেকে সরকারের সমালোচনা হচ্ছে। এর জেরে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে মাসিক প্রতিবেদন দেওয়া শুরু করে বিআরটিএ। তাদের হিসাবে দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা কম দেখানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘দ্বিতীয় স্তরের তথ্য ব্যবহার করে প্রতিবেদন তৈরি করায় আমাদের তথ্যে গরমিল দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে আমরা যে পদ্ধতি ব্যবহার করছি, সেটা সঠিক নয়। দ্বিতীয় স্তরের তথ্য ব্যবহার না করে মূল সোর্সের মাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরি করতে পারলে গরমিল হবে না।’
সড়ক দুর্ঘটনার হিসাবে গরমিলের জন্য ‘অবহেলা’ ও ‘চালাকি’ দায়ী বলে মনে করেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এখানে সরকারি সংস্থাগুলোর অবহেলা এবং অন্য সংগঠনগুলোর চালাকি আছে। অনেকে তথ্য ঘষামাজা করেন। সরকারি সংস্থাগুলো আন্তরিক হলে প্রতিবেদনে গরমিল হবে না। আমরা দ্বিতীয় স্তরের তথ্য দিয়ে গ্রহণযোগ্য প্রতিবেদন তৈরির চেষ্টা করি। গরমিল দূর করতে হলে সরকারকে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।’
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের নির্ভরযোগ্য সংখ্যা না পাওয়ায় বেসরকারি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে গণমাধ্যমের খবরের ওপর নির্ভর করতে হয়। সব ঘটনার খবর পূর্ণাঙ্গভাবে সব প্রচারমাধ্যমে আসে না; বিশেষ করে হতাহতের সংখ্যা কম হলে বা মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলে। কিছুটা এ কারণেও একেক সংগঠনের দেওয়া তথ্য একেক রকম হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমস্যার সমাধানে সরকারিভাবে কেন্দ্রীয় একটি ডেটাবেস বা তথ্যভান্ডার তৈরি করা অপরিহার্য।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, দুর্ঘটনার প্রতিকারের জন্য এর কারণ জানতে হবে। এ জন্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা দরকার। মূলত পুলিশের তা করার সুযোগ ও সামর্থ্য রয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান, কারণ ও প্রতিকার নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে ১৯৯৮ সালে জাতীয় সংসদে আলোচনার মাধ্যমে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তখন বলা হয়, পুলিশ দুই পাতার একটি ফরমে দুর্ঘটনা-সংক্রান্ত ৬৭টি বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করবে। কিন্তু বর্তমানে সেটি তেমনভাবে অনুসরণ করা হয় না।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) পরিচালক ড. এম শামসুল হক বলেন, পুলিশের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তৈরি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। দুর্ঘটনার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রতিবেদন তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। বিআরটিএর কোনো এখতিয়ার নেই এ নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করার। কারণ, তারা নিজের কাজ ঠিকমতো করতে পারে না। বিআরটিএ স্বপ্রণোদিত হয়ে কাজটি নিয়েছিল ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী সরকারকে খুশি করার জন্য। তারা সরকারকে কম তথ্য-উপাত্ত দেখিয়ে বাইরের যারা এ নিয়ে কাজ করে, তাদের হেয় করেছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে বছর শেষে কিংবা প্রতি তিন মাস অন্তর দুর্ঘটনার তুলনামূলক চিত্রের প্রতিবেদন তৈরি করা হয় বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশপ্রধান (অতিরিক্ত আইজি) মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা। তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। আমাদের সেই উইং থাকলেও তা ততটা কার্যকর নয়। আমি চেষ্টা করছি।’
দুর্ঘটনার সঠিক পরিসংখ্যান না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাইওয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, হাইওয়ে ও জেলা পুলিশ আলাদা প্রতিবেদন তৈরি করে। সবগুলো মিলিয়ে নিলে সঠিক সংখ্যা পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, বিআরটিএ নিজস্ব সোর্স ছাড়া প্রতিবেদন তৈরি করায় পরিসংখ্যানে গরমিল হয়।
দেশের সড়ক ও মহাসড়কে দুর্ঘটনায় হতাহতের পরিসংখ্যান সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। প্রতি মাসের হিসাব নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়; কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার কারণে একাধিক হিসাব থেকে নিশ্চিতভাবে নিখুঁত তথ্য বের করা যাচ্ছে না। এর ফলে সড়ক দুর্ঘটনার শতভাগ সঠিক তথ্য অন্ধকারে থাকছে। প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে এটিকে অন্যতম সমস্যা হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার তথ্য বিভিন্ন রকম। তাদের মধ্যে তথ্যের ব্যবধান রয়েছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) জুলাই মাসের প্রতিবেদনে ৪২৭টি দুর্ঘটনায় ৩৮০ নিহত এবং ৫৪২ জন আহত হওয়ার সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে যাত্রী কল্যাণ সমিতির একই মাসের প্রতিবেদনে ৫০৬টি দুর্ঘটনায় ৫২০ জন নিহত এবং ১ হাজার ৩৫৬ জন আহত বলা হয়েছে। জুন মাসে বিআরটিএর হিসাবে ৫৫৭ দুর্ঘটনায় ৫৬৬ জন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে ৬৭১ দুর্ঘটনায় ৭১১ জন এবং রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের হিসাবে ৬৮৯ দুর্ঘটনায় ৬৯৬ জন নিহত হয়েছে। এপ্রিল ও মে মাসেও সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনের হিসাবে লক্ষণীয় পার্থক্য দেখা গেছে।
২০২৪ সালের হিসাবে তিন উৎসের তথ্যে পার্থক্য দেখা যায়। বিআরটিএর ওয়েবসাইটে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় ২০২৪ সালে সারা দেশে প্রাণহানি হয়েছে ৫ হাজার ৩৮০ জনের।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে সংখ্যাটি ৭ হাজার ২৯৪ এবং যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে ৮ হাজার ৫৪৩।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদনগুলো তৈরি হয় দ্বিতীয় স্তরের (সেকেন্ডারি সোর্স) তথা গণমাধ্যম কিংবা পুলিশের তথ্য নিয়ে। এসব প্রতিবেদনে শুধু ঘটনা ঘটার দিনের তথ্য থাকে; হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর উল্লেখ থাকে না। এ কারণে দুর্ঘটনার বিষয়ে সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না।
দেশে কয়েক বছর ধরে সরকারের বিআরটিএ, বেসরকারি সংগঠন যাত্রী কল্যাণ সমিতি ও রোড সেফটি ফাউন্ডেশন মাস শেষে সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। সরকারি সংস্থাটি পুলিশের তথ্য নিয়ে এবং বেসরকারি সংগঠনগুলো গণমাধ্যমের তথ্য ঘেঁটে প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে। এই তিন সূত্রের দেওয়া গত চার মাসের সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের তথ্যের তুলনা করলে ‘তথ্য-বিভ্রাট’ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এর কারণ হিসেবে তথ্য প্রাপ্তির নানা সীমাবদ্ধতার কথা বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁদের কথায়, গণমাধ্যমগুলোয় মূলত বড় ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের খবর আসে। ছোটখাটো দুর্ঘটনা কিংবা কম হতাহতের খবর অনেক সময় প্রচারমাধ্যমে আসে না।
বিআরটিএ পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে। যাত্রী কল্যাণ সমিতি দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করে। আর রোড সেফটি ফাউন্ডেশন প্রতিবেদন তৈরি করে ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনের তথ্যে গরমিলের কারণে কয়েক বছর আগে থেকে সরকারের সমালোচনা হচ্ছে। এর জেরে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে মাসিক প্রতিবেদন দেওয়া শুরু করে বিআরটিএ। তাদের হিসাবে দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা কম দেখানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘দ্বিতীয় স্তরের তথ্য ব্যবহার করে প্রতিবেদন তৈরি করায় আমাদের তথ্যে গরমিল দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে আমরা যে পদ্ধতি ব্যবহার করছি, সেটা সঠিক নয়। দ্বিতীয় স্তরের তথ্য ব্যবহার না করে মূল সোর্সের মাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরি করতে পারলে গরমিল হবে না।’
সড়ক দুর্ঘটনার হিসাবে গরমিলের জন্য ‘অবহেলা’ ও ‘চালাকি’ দায়ী বলে মনে করেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এখানে সরকারি সংস্থাগুলোর অবহেলা এবং অন্য সংগঠনগুলোর চালাকি আছে। অনেকে তথ্য ঘষামাজা করেন। সরকারি সংস্থাগুলো আন্তরিক হলে প্রতিবেদনে গরমিল হবে না। আমরা দ্বিতীয় স্তরের তথ্য দিয়ে গ্রহণযোগ্য প্রতিবেদন তৈরির চেষ্টা করি। গরমিল দূর করতে হলে সরকারকে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।’
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের নির্ভরযোগ্য সংখ্যা না পাওয়ায় বেসরকারি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে গণমাধ্যমের খবরের ওপর নির্ভর করতে হয়। সব ঘটনার খবর পূর্ণাঙ্গভাবে সব প্রচারমাধ্যমে আসে না; বিশেষ করে হতাহতের সংখ্যা কম হলে বা মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলে। কিছুটা এ কারণেও একেক সংগঠনের দেওয়া তথ্য একেক রকম হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমস্যার সমাধানে সরকারিভাবে কেন্দ্রীয় একটি ডেটাবেস বা তথ্যভান্ডার তৈরি করা অপরিহার্য।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, দুর্ঘটনার প্রতিকারের জন্য এর কারণ জানতে হবে। এ জন্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা দরকার। মূলত পুলিশের তা করার সুযোগ ও সামর্থ্য রয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান, কারণ ও প্রতিকার নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে ১৯৯৮ সালে জাতীয় সংসদে আলোচনার মাধ্যমে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তখন বলা হয়, পুলিশ দুই পাতার একটি ফরমে দুর্ঘটনা-সংক্রান্ত ৬৭টি বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করবে। কিন্তু বর্তমানে সেটি তেমনভাবে অনুসরণ করা হয় না।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) পরিচালক ড. এম শামসুল হক বলেন, পুলিশের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তৈরি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। দুর্ঘটনার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রতিবেদন তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। বিআরটিএর কোনো এখতিয়ার নেই এ নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করার। কারণ, তারা নিজের কাজ ঠিকমতো করতে পারে না। বিআরটিএ স্বপ্রণোদিত হয়ে কাজটি নিয়েছিল ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী সরকারকে খুশি করার জন্য। তারা সরকারকে কম তথ্য-উপাত্ত দেখিয়ে বাইরের যারা এ নিয়ে কাজ করে, তাদের হেয় করেছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে বছর শেষে কিংবা প্রতি তিন মাস অন্তর দুর্ঘটনার তুলনামূলক চিত্রের প্রতিবেদন তৈরি করা হয় বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশপ্রধান (অতিরিক্ত আইজি) মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা। তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। আমাদের সেই উইং থাকলেও তা ততটা কার্যকর নয়। আমি চেষ্টা করছি।’
দুর্ঘটনার সঠিক পরিসংখ্যান না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাইওয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, হাইওয়ে ও জেলা পুলিশ আলাদা প্রতিবেদন তৈরি করে। সবগুলো মিলিয়ে নিলে সঠিক সংখ্যা পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, বিআরটিএ নিজস্ব সোর্স ছাড়া প্রতিবেদন তৈরি করায় পরিসংখ্যানে গরমিল হয়।
রাজধানীতে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। ডিটিসিএর অভিযোগ, আইন অনুযায়ী ডিটিসিএর অধীন কোম্পানি হয়েও ডিএমটিসিএল সরাসরি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এতে প্রকল্প...
৪ ঘণ্টা আগেএক বছরের ব্যবধানে আবারও পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ পরিবর্তন আসবে আগামী বছরের মাধ্যমিক, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের বেশ কিছু বিষয়ে। কী কী পরিবর্তন আনা হবে, তা চূড়ান্ত করার জন্য এর মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে এসব...
৪ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের সাংবাদিকতা অঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র বিভুরঞ্জন সরকার আর নেই। নিখোঁজ হওয়ার এক দিন পর তাঁর মরদেহ মুন্সিগঞ্জের মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে মুন্সিগঞ্জের বলাকির চর এলাকায় নদীতে লাশটি ভাসতে দেখা যায়।
৮ ঘণ্টা আগেএতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে আগামীকাল সকালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন ইসহাক দার। এরপর তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। বৈঠকগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সম্পূর্ণ পরিসর এবং বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলো
৯ ঘণ্টা আগে