Ajker Patrika

অবৈধ আবাসন প্রকল্প বন্ধ হচ্ছে

  • ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ।
  • শতাধিক আবাসন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান
  • সাইনবোর্ডসর্বস্ব প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
  • সব প্রকল্পের জন্য পৃথক অনুমোদন নিতেই হবে।
তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা 
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২: ১১
অবৈধ আবাসন প্রকল্প বন্ধ হচ্ছে

বেশির ভাগ বেসরকারি আবাসন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চুক্তি অনুযায়ী কাজ না করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অনিয়ম ঠেকাতে সরকার একাধিক আইন করলেও তা প্রতিষ্ঠানগুলো খুব একটা আমলে নেয় না। এবার আবাসন খাতে প্রতারণাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ঠেকাতে আইন প্রয়োগে শক্ত হচ্ছে সরকার। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (জাগৃক) ইতিমধ্যে তালিকা করে শতাধিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। সংস্থাটির সঙ্গে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও (রাজউক) অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রেখেছে।

গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব মো. হামিদুর রহমান খান আজকের পত্রিকার প্রশ্নের জবাবে বলেন, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যারা জাগৃক ও রাজউক থেকে প্রকল্প অনুমোদন করেনি, তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আইন অনুযায়ী তাদের (আবাসন প্রতিষ্ঠান) অবশ্যই পৃথক প্রকল্পের জন্য অনুমোদন নিতে হবে।

জাগৃক সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ ডিসেম্বর জাগৃকের নির্বাহী প্রকৌশলী (মিরপুর গৃহসংস্থান বিভাগ-২) কাওসার মোর্শেদ পূর্ত মন্ত্রণালয়ে দেওয়া চিঠিতে আইন মেনে ব্যবসা না করার জন্য ১১টি আবাসন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো নাভানা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড, পুষ্পধারা প্রোপার্টিজ লিমিটেড, আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ, স্বপ্নধরা অ্যাসেটস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, প্রিয়প্রাঙ্গণ, ঠিকানা প্রোপার্টিজ অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেড, জন্মভূমি সিটি, প্রিমিয়াম হাউজিং এস্টেট লিমিটেড, ধরিত্রী প্রোপার্টিজ লিমিটেড, মডার্ন এশিয়া প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট (প্রাইভেট) লিমিটেড এবং নিমতলা হাউজিং লিমিটেড। একই সংস্থার নির্বাহী প্রকৌশলী (ঢাকা ডিভিশন-১) মো. কায়সার ইবনে সাঈখ একই দিনে মন্ত্রণালয়ে পৃথক আরেকটি চিঠি দেন। সেখানে তিনি রূপগঞ্জ এলাকার ভাইয়া হাউজিং লিমিটেড, প্রাইম অ্যাসেট লিমিটেড, সাভারের সুগন্ধা প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট লি., চলন্তিকা হাউজিং, স্বপ্নভূমি আবাসন এবং মেগা বিল্ডার্সের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাগৃকের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ আবদুল্লাহ নূর বলেন, ‘আবাসন ব্যবসা করতে হলে সংশ্লিষ্ট আইনে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হলেও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান তা মানছে না। তাই বাধ্য হয়ে এখন আইনি ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। গত দুই দিনে আমরা বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নোটিশ দেওয়াসহ নানা ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি।’

গত দুই দিনে এ প্রকৌশলীর কাজের আওতাভুক্ত এলাকায় যেসব আবাসিক প্লট, ফ্ল্যাট ও ভূমি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, সেগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়েছে। এর মধ্যে আইন পল্লী, পূর্বাচল প্রাইম সিটি, সুবর্ণ ভূমি হাউজিং লিমিটেডকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রকৌশলী জানান, এসব রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান জাগৃক থেকে কোনো প্রকল্প অনুমোদন করেনি। এগুলোর মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠানকে জাগৃক থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে, তাদের নিবন্ধন বাতিলের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ইতিমধ্যেই সুপারিশ করা হয়েছে। নিবন্ধিত ও নিবন্ধনহীন উভয় ধরনের কোম্পানির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের কাজ প্রক্রিয়াধীন। সে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে প্রতিষ্ঠানগুলোর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।

জাগৃকের কর্মকর্তারা বলেন, সরকার এখন বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা, ২০০৪ (সংশোধিত ২০১২ ও ২০১৫), রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ বাস্তবায়নে জোর দিচ্ছে। এ আইন অনুযায়ী, কোনো ডেভেলপার যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কোনো রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করলে কিংবা অননুমোদিত রিয়েল এস্টেট প্রকল্পের বিজ্ঞাপন প্রচার বা বিক্রয় করলে অনূর্ধ্ব দুই বছর কারাদণ্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এ ছাড়া পরিবেশ রক্ষায় প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ লঙ্ঘনকারী কার্যক্রম বন্ধ করতেও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো একযোগে কাজ শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে শতাধিক বেসরকারি আবাসন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে নানা ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।

রাজউক সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন ধরে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। কোথাও রাজউক সরাসরি নিজে, আবার কোথাও সরকারি অন্য সংস্থার সহযোগিতায় ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে। এর মধ্যে ওয়েস্টার্ন সিটি, ঢাকা মডার্ন সিটি লিমিটেড, সাফা মাওয়া গ্রুপ, সবুজছায়া গ্রুপ, অ্যাপোলো হাউজিং লিমিটেড, সাউথ টাউন, বিডিসি লিমিটেড, আটি মডেল টাউন, জেনোভ্যালী মডেল টাউন প্রাইভেট লি., মধু সিটি, আরশিনগর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, নতুনধারা হাউজিং কোম্পানি লিমিটেড, আইকাব হাউজিং কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড, হীরাঝিল প্রোপার্টি ডেভেলপমেন্ট (প্রাইভেট) কোম্পানি লিমিটেড, সবুজছায়া আবাসন প্রজেক্ট লিমিটেড, গ্লোরিয়াস ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লি:, গ্রিন সিটি লিমিটেডকে নোটিশ দেওয়া হলেও বেশির ভাগই তা আমলে নেয়নি। যারা এখনো নিয়ম মেনে ব্যবসা চালাচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে আরও শক্ত পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে রাজউক ও জাগৃক।

রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সিদ্দিকুর রহমান সরকার এ বিষয়ে বলেন, ‘বুধবার (গতকাল) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজউক তুরাগ নদের পশ্চিম পাশে উত্তর কাউন্দিয়া ও বেড়িবাঁধের রাস্তায় অবৈধ আবাসন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। অনেকেই চিহ্নিত জলাশয় ও কৃষিজমি ভরাট করে আবাসন ব্যবসা করে যাচ্ছে। সেগুলো আর আমরা করতে দেব না। এ ছাড়া অনুমোদনহীন সব আবাসন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

  • যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা
  • বিপিসির নথি বলছে, আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি আছে
 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।

বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।

বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।

নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।

তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত