Ajker Patrika

বৈশ্বিক সংকট কাটাতে জিসিআরজি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ৪ প্রস্তাব 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বৈশ্বিক সংকট কাটাতে জিসিআরজি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ৪ প্রস্তাব 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী সংহতি জোরদার করার এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে খাদ্য, বিদ্যুৎ ও আর্থিক সংকট মোকাবিলায় সু-সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বৈশ্বিক সংকট কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে চারটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন, যার জন্য দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে আজ অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ (জিসিআরজি)’ এর প্রথম উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেনের যুদ্ধ এমন এক সময়ে এসেছে যখন বিশ্ব কোভিড-১৯ মহামারি থেকে উদ্ধার পেতে লড়াই করে চলেছে। এ যুদ্ধ ইতিমধ্যে নাজুক বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুতর চাপ যুক্ত করেছে।’ 

শেখ হাসিনা কার্যকরভাবে সংকট মোকাবিলায় উন্নত অর্থনীতি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকর ভূমিকা কামনা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বর্তমান পরিস্থিতিকে অত্যন্ত অস্থিতিশীল করে তুলেছে, যেখানে খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্যের স্বল্প সরবরাহ এবং অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষের জীবনে মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ এবং এসআইডিগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য তাদের অবিলম্বে এবং লক্ষ্যমাত্রা ভিত্তিক সহায়তা ব্যবস্থার প্রয়োজন।’

এ বিষয়ে তিনি উন্নত দেশসমূহ ও বহু পাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুল্কমুক্ত-কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার এবং আরও সহজলভ্য অর্থায়নের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। 

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সৃষ্ট চলমান বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলার লক্ষ্যে এই গ্রুপটি গঠন করেছেন।

বৈশ্বিক সংকটের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য চারটি প্রস্তাব রেখেছেন। প্রথম প্রস্তাবে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, আমাদের অবশ্যই বিশ্বব্যাপী সংহতি জোরদার করতে হবে এবং একটি সু-সমন্বিত প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে। জি-৭, জি-২০, ওইসিডি, এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’ 

দ্বিতীয়ত, ‘অবিলম্বে বিশ্বব্যাপী লজিস্টিক এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধাগুলো মোকাবিলা করা প্রয়োজন।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ প্রয়াস পণ্যের ক্রমবর্ধমান মূল্য নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। বিশেষ করে স্বল্পোন্নত দেশ ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলির বৈশ্বিক বাণিজ্য ও রপ্তানি আয় পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সমর্থনও থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘উন্নত অর্থনীতি এবং বহু পাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে এবং শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার এবং আরও সহজলভ্য অর্থায়ন প্রদান করতে হবে।’

তৃতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কার্যকর খাদ্য সঞ্চয় ও বিতরণ ব্যবস্থার জন্য কৃষি খাতের জন্য প্রযুক্তি সহায়তা এবং বিনিয়োগের ওপর আরও বেশি গুরুত্ব প্রদান করা অপরিহার্য।’

চতুর্থ প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি ক্ষেত্রে বিশেষ করে এলডিসিতে অনেক সম্ভাব্য ব্যবসার সুযোগ রয়েছে।’

তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন, ‘এই এজেন্ডাকে এগিয়ে নিতে আমরা বিদ্যমান উত্তর-দক্ষিণ, দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ট্রায়াঙ্গুলার সহযোগিতার সুবিধা নিতে পারি। এই বিষয়ে বেসরকারি খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ততাও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হবে।’

বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ বহুপাক্ষিকতায় দৃঢ় বিশ্বাসী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিচারকাজ শেষ হবে জানুয়ারিতে: প্রসিকিউটর

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিচারকাজ জানুয়ারির মধ্যে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।

আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আবু সাইদ হত্যা মামলার ১২ তম সাক্ষীর জবানবন্দি শেষে তিনি এ কথা বলেন।

আজ প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকিব রেজা খানের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রামপুরায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় আজ দুজন সাক্ষী দিয়েছেন। এরা হলেন—পুলিশের এএসআই কামরুল হাসান ও কনস্টেবল আব্দুর রহমান।

এ মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পাঁচজন আসামি। তবে গ্রেপ্তার আছেন কেবল একজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২০২৬ সালের সরকারি ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি

২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। গতকাল রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। নতুন বছরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব মিলিয়ে মোট ২৮ দিন ছুটি ভোগ করার সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে নয় দিন সাপ্তাহিক ছুটির (শুক্র ও শনিবার) সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর, ২০২৫) আগামী বছরের সরকারি ছুটির তালিকার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার পর এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২০২৬ সালে সাধারণ ছুটি থাকছে মোট ১৪ দিন। এ ছাড়া নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি থাকছে আরও ১৪ দিন। এই ২৮ দিনের মধ্যে ৯ দিন সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে মিশে যাওয়ায়, কর্মজীবীরা বাস্তবে মোট ১৯ দিনের কর্মদিবস ছুটি পাবেন, যা সাপ্তাহিক ছুটির সাথে যুক্ত হয়ে দীর্ঘ অবসর যাপনের সুযোগ এনে দেবে।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে, বাংলাদেশের সব সরকারি ও আধা–সরকারি অফিস এবং সংবিধিবদ্ধ, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা–স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় এই ছুটি পালন করা হবে।

সাধারণ ও নির্বাহী আদেশের ছুটি ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী কর্মীদের জন্য ঐচ্ছিক ছুটির বিধান রাখা হয়েছে। নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব পালনের জন্য একজন কর্মচারী বছরে অনধিক মোট ৩ (তিন) দিনের ঐচ্ছিক ছুটি ভোগ করতে পারবেন। এর জন্য বছরের শুরুতে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে। এই ঐচ্ছিক ছুটি সাধারণ ছুটি, নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে যুক্ত করে নেওয়া যাবে।

govt-leave

বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর জন্য ঐচ্ছিক ছুটির তালিকা নিম্নরূপ:

প্রজ্ঞাপনে আরও জানানো হয়েছে, যেসব অফিসের সময়সূচি ও ছুটি নিজস্ব আইন-কানুন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, অথবা যেসব অফিস, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের চাকরি সরকার কর্তৃক অত্যাবশ্যক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনস্বার্থ বিবেচনা করে নিজস্ব আইন-কানুন অনুযায়ী ছুটির ব্যবস্থা করবে।

সরকারি ছুটির প্রজ্ঞাপন ও ছুটির তালিকা দেখুন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনটিএমসির নতুন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ওসমান সরোয়ার

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
এনটিএমসির নতুন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ওসমান সরোয়ার

মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান সরোয়ারকে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

গতকাল রোববার ওসমান সরোয়ারকে এনটিএমসির মহাপরিচালক নিয়োগ দিয়ে তাঁর চাকরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এর আগে মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা এই পদে ছিলেন।

প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওসমান সরোয়ার মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।

আরেকটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লাকে সেনাবাহিনীতে ফিরিয়ে নিতে তাঁর চাকরি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে ন্যস্ত করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল ও সমর্থকেরা বিক্ষোভ করলে কঠোর ব্যবস্থা: প্রেস সচিব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ বা তাদের সহযোগী সমর্থকেরা যদি কোনো ধরনের বিক্ষোভের চেষ্টা করে, তাহলে আইন তার সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

আজ সোমবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা লেখেন।

স্ট্যাটাসে শফিকুল আলম লেখেন, ‘বিএএল (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) ও তাদের সহযোগী সমর্থকেরা এবং গণহত্যাকারী নেত্রী মনে করছেন—এটি আবারও ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের মতো সময়। তারা মনে করছেন দিনের বেলা এক ডজন মানুষকে হত্যা করার পর রাস্তা দখল করার জন্য হাজার হাজার দুর্বৃত্তকে ঢাকার কেন্দ্রস্থলে পাঠাবেন।’

তিনি আরও লেখেন, ‘দুঃখিত—এটি এখন নতুন একটি বাংলাদেশ। জুলাই বিপ্লবীদের ধৈর্য পরীক্ষা করবেন না এবং মনে রাখবেন—এটি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নয়। এটি জুলাই, চিরদিনের জুলাই।’

প্রেস-সচিব

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত