Ajker Patrika

টাইফয়েড টিকা দিতে দেড় মাসে প্রায় ৯০ লাখ শিশুর নিবন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আগামী ১২ অক্টোবর থেকে দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি। ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের এ টিকা দেওয়া হবে। এরই মধ্যে সরকারি ওয়েব পোর্টালে নিবন্ধন করেছে ৮৯ লাখ ২৭ হাজার শিশু।

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর।

তিনি বলেন, ‘এই প্রথম সরকারিভাবে শিশুদের বিনা মূল্যে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে। নিবন্ধনের জন্য (https://vaxepi. gov. bd/registration/tcv) ভিজিট করতে হবে এবং ১৭ সংখ্যার জন্মনিবন্ধন নম্বর দিতে হবে। জন্মনিবন্ধনবিহীন শিশুরা নির্ধারিত টিকা কেন্দ্রে নিবন্ধন করতে পারবে। নিবন্ধনের পর প্রাপ্ত ডিজিটাল টিকা কার্ড নিয়ে নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিতে হবে। যেসব শিশুর বয়স ৯ মাস পূর্ণ হয়েছে কিন্তু ১৫ বছর পূর্ণ হয়নি; শুধু তারাই এই টিকার জন্য উপযুক্ত।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ১ আগস্ট থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেড় মাসে ৮৯ লাখের বেশি শিশু নিবন্ধন করেছে। এই টিকা সাধারণ টাইফয়েড প্রতিরোধের পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী টাইফয়েডের বিস্তার রোধেও কার্যকর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুমোদিত এ টিকা নিরাপদ ও কার্যকর।

ডব্লিউএইচওর ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৯০ লাখ মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং মারা যায় ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ। আক্রান্তদের বড় অংশই দক্ষিণ এশিয়া ও সাব-সাহারান আফ্রিকায়।

দ্য গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজের তথ্যমতে, ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং মারা যায় প্রায় ৮ হাজার মানুষ। মৃতদের ৬৮ শতাংশই শিশু।

বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, টাইফয়েড জীবাণু দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে ছড়ায়। ঝুঁকি বেশি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং যেখানে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের অভাব রয়েছে। আক্রান্ত হলে চিকিৎসা খরচ, কর্মক্ষমতা হারানোসহ নানা জটিলতা তৈরি হয়। এ ছাড়া জীবাণু অনেক অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। এই অবস্থায় টিকাই সবচেয়ে নিরাপদ সমাধান।

সরকার আশা করছে, টিকাদান কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে টাইফয়েডজনিত মৃত্যু উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে এবং শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বড় অগ্রগতি হবে।

সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) সূত্রে জানা যায়, ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনের প্রথম ১০ দিন দেশের স্কুল ও মাদ্রাসাগুলোতে ক্যাম্প করে এবং পরবর্তী ৮ দিন ইপিআই সেন্টারে এই টিকা দেওয়া হবে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী এমন শিশুর সংখ্যা দেশে ৫ কোটি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. রেজওয়ানুর রহমান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ডা. শেখ ছাইদুল হক, পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ, পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত