Ajker Patrika

সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল: যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন

আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ৩৮
মঙ্গলবার মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। ছবি: স্ক্রিনশট
মঙ্গলবার মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। ছবি: স্ক্রিনশট

গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে। তবে কিছু বিষয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে। দেশের ২০২৪ সালের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার–বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, ছাত্র আন্দোলন এবং ব্যাপক সহিংসতায় শত শত মানুষের মৃত্যুর পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যান। এরপর ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকার দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি সাবেক সরকারের আমলে ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তদন্তে কাজ শুরু করেছে।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড

সাবেক সরকারের অধীনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং বেআইনিভাবে মানুষ হত্যার অসংখ্য অভিযোগ ছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)-এর অক্টোবর মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৬ জুলাই থেকে ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ছাত্র, শিশু, রাজনৈতিক কর্মী, শ্রমিক ও পুলিশসহ অন্তত ৯৮৬ জন নিহত হয়েছেন।

ছাত্রদের সমন্বয়কারী সংগঠন ‘স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট ডিসক্রিমিনেশন’-এর তথ্যমতে, এই সময়ে ১ হাজার ৪২৩ জন নিহত এবং ২২ হাজার জন আহত হয়েছেন। নিহতদের ৭৭ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে গুলিবিদ্ধ হয়ে এবং ৭০ শতাংশের বয়স ছিল ৩০ বছরের নিচে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২৪ সেপ্টেম্বর একটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করে, যেখানে ৭০৮ জনের মৃত্যুর তথ্য দেওয়া হয় এবং জনসাধারণের কাছে আরও সঠিক তথ্য সংগ্রহের জন্য আহ্বান জানানো হয়।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের অধিকার

সাবেক সরকারের অধীনে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ ছিল। সাংবাদিক ও ব্লগাররা হয়রানি ও মামলার ভয়ে স্ব-আরোপিত সেন্সরশিপে ভুগছিলেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) ব্যবহার করে সরকারের সমালোচনাকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা করা হয়েছিল।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেপ্টেম্বরে ডিএসএ, সিএসএ এবং আইসিটি আইনের অধীনে দায়ের করা ১ হাজারের বেশি ‘বাক-স্বাধীনতা সম্পর্কিত’ মামলা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব মামলায় আটক ব্যক্তিদের পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়া হবে।

তবে, সরকার পরিবর্তনের পর সাবেক সরকারের সমর্থক হিসেবে বিবেচিত ১৬৭ জন সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে তারা সরকারি অনুষ্ঠানে প্রবেশাধিকার হারিয়েছেন। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ফারজানা রূপা, শাকিল আহমেদ, মোজাম্মেল বাবু এবং শ্যামল দত্তসহ বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

শ্রমিক অধিকার এবং কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ

সাবেক সরকারের অধীনে শ্রমিকদের ইউনিয়ন গঠনের অধিকার এবং যৌথ দর-কষাকষির স্বাধীনতা সীমিত ছিল। আইনগতভাবে ইউনিয়ন গঠনের অনুমতি থাকলেও, বাস্তবে নানা ধরনের বাধা দেওয়া হতো। বিশেষ করে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড)-এর শ্রমিকদের জন্য ইউনিয়ন গঠনের অনুমতি ছিল না।

২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় ৪৭৫ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। পোশাক ও বস্ত্র শিল্প, নির্মাণ, জাহাজ ভাঙা এবং অনানুষ্ঠানিক খাতগুলোতে পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য (ওএসএইচ) লঙ্ঘনের ঘটনা ছিল ব্যাপক। সেপ্টেম্বরে একটি জাহাজ ভাঙা কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে সাতজন শ্রমিক নিহত হন। এর প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট চালু করেছে।

গুম এবং দীর্ঘস্থায়ী আটক

সাবেক সরকারের আমলে গুমের অসংখ্য অভিযোগ ছিল, যার বেশির ভাগ শিকার ছিলেন বিরোধী দলের নেতা, কর্মী ও ভিন্নমতাবলম্বীরা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই গুমের ঘটনাগুলো তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠন করেছে। কমিশনটি ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা এবং এর আশপাশে আটটি গোপন বন্দিশালা খুঁজে পেয়েছে এবং গুমের ১ হাজার ৬০০ টিরও বেশি অভিযোগ পেয়েছে।

সরকার পরিবর্তনের পরপরই, কিছু গোপন বন্দিশালা থেকে কিছু গুমের শিকার ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চাকমা সম্প্রদায়ের অধিকারকর্মী মাইকেল চাকমাও ছিলেন, যিনি পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে গোপন আটক কেন্দ্রে ছিলেন। তবে এখনো প্রায় ১০০ জন গুমের শিকার ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে।

সংবিধানে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারকের সামনে হাজির করার বিধান থাকলেও, সাবেক সরকারের অধীনে এই নিয়ম প্রায়শই লঙ্ঘিত হতো। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই নিয়ম মেনে চলতে শুরু করেছে।

শরণার্থীদের সুরক্ষা

বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে। যদিও বাংলাদেশ ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী নয়, তবুও সরকার ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। ২০২৪ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা বৃদ্ধির পর ৬৪ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব নতুন আসা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। ভাসান চরে বর্তমানে ৩৬ হাজার ৫৯৩ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে এবং সরকার ও ইউএনএইচসিআর-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী তাদের সুরক্ষা ও সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

ট্রান্সন্যাশনাল দমন-পীড়ন

সাবেক সরকারের আমলে বিদেশে অবস্থানরত ভিন্নমতাবলম্বী, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের জন্য ট্রান্সন্যাশনাল দমন-পীড়নের অভিযোগ ছিল। তবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই ধরনের কোনো ঘটনা রিপোর্ট করা হয়নি। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫৪ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে প্রতিবাদ করার কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আলোচনার পর আমিরাতের প্রেসিডেন্ট তাঁদের ক্ষমা করে দেন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই সনদে সমঝোতা: হেলদোল নেই দলগুলোর

  • সমঝোতার জন্য সরকারের আহ্বানে সাড়া দিতে চাইছে না বিএনপি।
  • জামায়াত আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু উদ্যোগ নেয়নি।
  • বল ঠেলে না দিয়ে সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে বলে মনে করে এনসিপি।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ১৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।

দলগুলোর পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সরকারের অনুরোধের এক দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অন্য দলগুলোর প্রতি আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল মুখে মুখে। কিন্তু এ আহ্বান বাস্তবায়নে গতকাল পর্যন্ত কার্যত কোনো উদ্যোগ নেয়নি দলটি।

জামায়াত তবু আহ্বান জানিয়েছে। বিএনপি নিজের দিক থেকে কোনো কথা বলেনি, উদ্যোগও নেয়নি। বরং সরকারের আহ্বানে দলটি সাড়া দিতে চাইছে না বলে দলটির সূত্র জানিয়েছে। আর সংকট সমাধানে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণতন্ত্র মঞ্চ।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সংকট কাটাতে গত সোমবার জরুরি বৈঠকে বসে উপদেষ্টা পরিষদ। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, এ নিয়ে সরকারের দিক থেকে আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে না। এখন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সমঝোতায় আসুক। এ জন্য দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। এর মধ্যে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে সরকার নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত দেবে।

জুলাই সনদ ইস্যুতে গত মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আলোচনা করছে। সেখানে অনেক ইস্যুতে একমত হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে বিএনপিসহ বেশ কিছু দলের আপত্তি ছিল। ৩১ আগস্ট শেষ হওয়া দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, নির্বাচনে বিজয়ী হলে আপত্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে দলগুলো। তবে সে সময় গণভোট নিয়ে আলোচনা হয়নি। বাস্তবায়ন প্রশ্নে তৃতীয় ধাপে পাঁচ দিন সংলাপ করে দলগুলো। সেখানে গণভোটের বিষয়ে একমত হয় তারা। তবে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলো সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।

গত ৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সংলাপে জানানো হয়, দলগুলোর মত ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের কাছে কমিশন বাস্তবায়নের উপায় জমা দেবে; যেখানে বিশেষজ্ঞরা গণভোটে আপত্তি না রাখার বিষয়ে মত দেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, জনগণ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, সেখানে আপত্তির বিধান রাখা যুক্তিযুক্ত না। ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিশন। এরপর শুরু হয় নতুন বিতর্ক। ছয় মাসে যেখানে দলগুলো একমত হতে পারেনি, সেখানে এক সপ্তাহে দলগুলো আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ হবে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

আলোচনার উদ্যোগ নেবে না বিএনপি

আলোচনা করে সমঝোতায় আসতে সরকারের অনুরোধে বিএনপি কোনো উদ্যোগ নেবে না বলে দলটির একাধিক সূত্র গতকাল জানিয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলছেন, বাস্তবায়ন আদেশে তাদের ওপর অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এখন আলোচনার নামে দায়ভার চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

সরকারের এমন অনুরোধে তাদের দল সাড়া দেবে না। এ জন্য আলোচনায় বসার জন্য কোনো দলকে ডাকবে না বিএনপি। কেউ আলোচনার জন্য দাওয়াত দিলে বিবেচনা করা হবে কি না, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে বসার বিষয়ে যে অনুরোধ করেছে, এ ব্যাপারে আমরা কোনো আলোচনা করতে পারিনি। সোমবার দলের প্রার্থী মনোনয়ন এবং প্রেস ব্রিফিং নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আলোচনার সুযোগ হয়নি। আলোচনা করে তারপর জানানো হবে।’

আহ্বান জানিয়েছে জামায়াত

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত জামায়াতে ইসলামী। যদিও সরকারের আহ্বানের আগেই আলোচনার জন্য অন্য দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। তবে দলটির অনুরোধে গতকাল পর্যন্ত কোনো দল সাড়া দেয়নি বলে জানা গেছে।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ গতকাল বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছে একসঙ্গে বসার। সরকারের আগেই আমরা আহ্বান করেছি। এখনো কারও সাড়া পাইনি আমরা, হয়তো সামনে পাব।’

এর আগে গত রোববার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে কোনো ঝগড়ায় লিপ্ত হতে চায় না। যা-ই করছেন, এবার বন্ধ করুন। আসুন, আমরা একসঙ্গে বসি। দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি।’

আর গতকাল মঙ্গলবার বিদেশ সফর শেষে ঢাকায় ফিরে বিমানবন্দরে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘সরকার অনুরোধ করেছে, এক সপ্তাহ সময়ের ভেতরে রাজনৈতিক দলগুলো বসে যদি একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে, সরকারের জন্য এটা ভালো। আমরাই সবার আগে আমাদের নায়েবে আমিরের মাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছি যে আসুন, আমরা খোলামেলা আলোচনা করে একটা সমাধানে পৌঁছাই দেশ ও জাতির স্বার্থে। আমরা আশা করি, অন্যরা আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দেবেন।’

সরকারের কোর্টে বল ঠেলছে এনসিপি

রাজনৈতিক দলগুলোর কোর্টে বল ঠেলে না দিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারির উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে এনসিপি। তবে প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনায় যেতে তাঁরা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। যদিও এখন পর্যন্ত এনসিপি কোনো রাজনৈতিক দলকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয়নি বলে জানা গেছে। আবার এনসিপিকেও কেউ প্রস্তাব দেয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপ চলছে। বাস্তবায়ন আদেশ জারির জন্য সরকারের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপ প্রয়োগ করছে এনসিপি।

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকার বা ঐকমত্য কমিশনকে রেফারি করেছে অনেকে। কিন্তু আমরা দেখি, সরকার ও ঐকমত্য কমিশন সংস্কার বাস্তবায়নের ব্যাপারে রেফারি না। তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে সংস্কারের পক্ষে। যদি তারা সংস্কারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা তাদের ম্যান্ডেট থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে। সরকারের এখন দায়িত্ব হলো ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেই প্রস্তাবে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা।’

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘জুলাই সনদের বিষয়ে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তবে প্রয়োজনে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত আছি।’

গণতন্ত্র মঞ্চের ভাবনা

জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্য ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারই দায়ী বলে জানিয়েছে ৬টি রাজনৈতিক দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। মঞ্চের নেতারা বলেছেন, এই সংকট সমাধানের দায়িত্বও সরকারকেই নিতে হবে। একই সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চ দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টায় ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘এই সংকট সমাধানের জন্য সরকারের যে উদ্যোগ নেওয়া দরকার ছিল, তা না নিয়ে সরকার অনেকটা মান-অভিমানের মতো অবস্থান নিয়েছে। সরকারের এমন মনোভাব মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সংস্কার কি হবে না? সংস্কার না হলে নির্বাচন কি হবে? যাদের আমরা পরাজিত করেছি, তারা আবার ফিরে আসবে?’

আর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমদুর রহমান মান্না এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারে না। সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারকে রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করে সমাধানের পথ তৈরি করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রাথমিকে সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের যে ব্যাখ্যা দিল সরকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।

আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটি জানানো হয়েছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।

সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সচিব কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।

সচিব কমিটি মনে করে, প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল। এত অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না এবং এতে বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশেই প্রস্তাবিত নিয়োগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলে একই শিক্ষককে ২০টির বেশি বিদ্যালয়ে যুগপৎভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর ফলে তাঁর পক্ষে কর্মঘণ্টা ম্যানেজ করা সম্ভব হবে না বলে সচিব কমিটি মনে করে।

পরে অর্থের সংস্থান সাপেক্ষে সব স্কুলে এ রকম নতুন বিষয়ের শিক্ষকের পদ সৃজন ও সেসব পদে নিয়োগদানের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে কমিটি অভিমত ব্যক্ত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে ফুল কোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় তাঁদের পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদোন্নতির জন্য প্যানেলে ছিলেন– অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদের জন্য ৩৪৫ জন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ এবং সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন। সব মিলিয়ে পদোন্নতির প্যানেলে ১ হাজার ১০৩ জন বিচারিক কর্মকর্তার নাম থাকলেও নানা কারণে বেশ কয়েকজনের নাম অনুমোদন হয়নি।

২০২৬ সালের সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডারও ফুল কোর্ট সভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তবে সরকারি ক্যালেন্ডার এখনো প্রকাশিত না হওয়ায় তা অনুমোদিত হয়নি।

সম্প্রতি ১ হাজার ১০৩ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পদোন্নতির প্যানেলে ছিল কয়েকজন বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নাম, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান।

বিচারকদের পদোন্নতি যেভাবে হয়

সব মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির জন্য ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) থাকে। ওই কমিটি পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এক দিনেই প্যানেলের সবার পদোন্নতির জিও জারি করা হয়।

তবে বিচারকদের ক্ষেত্রে প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। বাছাই কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় ওঠে। সভায় অনুমোদন পাওয়ার পর তা আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে ওই প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকে এবং পদ খালি হওয়ার পর সময়ে সময়ে জিও জারি করা হয়।

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী জজদের এই পদে চার বছর দায়িত্ব পালনের শর্ত পূরণ করতে হয়। সিনিয়র সহকারী জজদের যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর এবং অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছরের শর্ত পূরণ করতে হয়। তবে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয় না। অনেকেই বছরের পর বছর প্যানেলভুক্ত হয়ে থাকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৪৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ: নিজাম হাজারীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ০২
ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারী এবং তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বেগম। ছবি: সংগৃহীত
ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারী এবং তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বেগম। ছবি: সংগৃহীত

ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারীর স্ত্রী নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে ৪৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও ৪৩ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ মঙ্গলবার দুদকের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

দুদক মহাপরিচালক বলেন, অভিযুক্ত নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সন্দেহজনক লেনদেনের পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।

এ ছাড়া ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত নুরজাহান বেগমের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি হিসাবে ৪৩ কোটি ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৮০৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করেছে দুদক।

এ তথ্য আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যাচাই করা হয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে এর আগেও অবৈধ সম্পদ অর্জন, ফেনী ও ঢাকায় নামে-বেনামে জমি ও ভবন ক্রয় এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে একাধিক তদন্ত চলছে।

সূত্রটি আরও জানায়, দুদকে পাঠানো সম্পদ বিবরণীতে ঘোষিত তথ্য ও বাস্তব সম্পদের মধ্যে বিশাল অমিল পাওয়া যায়। এর ধারাবাহিকতায় নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ফেনী-২ আসন থেকে টানা তিনবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নিজাম উদ্দিন হাজারী। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দখলদারত্বের অভিযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত