Ajker Patrika

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ রয়েছে ইইউর: রাষ্ট্রদূত

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ৩৬
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ রয়েছে ইইউর: রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আগ্রহ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির ঢাকার রাষ্ট্রদূত চার্লস ওয়াটলি। সেই সঙ্গে আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণেও ইইউ আগ্রহী বলে জানিয়েছেন তিনি। 

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) মিট দ্য প্রেসের আয়োজন করে ডিআরইউ। এতে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ঢাকার ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস ওয়াটলি। এ সময় ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব উপস্থিত ছিলেন। 
 
নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করলে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পরিষ্কারভাবেই বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ইইউর আগ্রহ রয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বিস্তৃত। এর মধ্যে সুশাসনও পড়ে। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যে আইন করা হচ্ছে এবং এর জন্য যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে তা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের দেশগুলোর নির্বাচনকেও আমরা অনুসরণ করে থাকি। প্রতিবছর নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠানোর জন্য আমরা ৩০টি দেশকে বাছাই করি। আর ২০২৩-এর জন্য এখনো সেই তালিকা প্রস্তুত করা হয়নি। আর যেহেতু বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানিয়েছেন, ফলে আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহী।’ 
 
ইইউর এক সংসদ সদস্যের চিঠি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক সংসদ সদস্য চিঠি লিখতে পারেন। তবে এ নিয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। যেহেতু সংসদ সদস্য চিঠি দিয়েছেন, এখানে ইইউর নিয়ম হচ্ছে সেই চিঠির উত্তর দেওয়া। এ ক্ষেত্রেও হয়তো তাই হবে।’ 
 
যুক্তরাষ্ট্রের র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত। তবে ইইউ এসব বিষয় পর্যবেক্ষণ করছে। আর ইইউ তার নিজস্ব নীতি ও মানবাধিকারের ওপর নির্ভর করে পরিচালিত হয়। 
 
মানবাধিকার নিয়ে চার্লস ওয়াটলি বলেন, ‘আমাদের সব অংশীদারের সঙ্গে মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা হয়। আর বৈঠকে দুই পক্ষই এ নিয়ে কথা বলে। আমরা কখনো বলছি না যে আমরা মানবাধিকার ইস্যুতে সঠিক কাজ করছি। আমাদেরও মানবাধিকার বিষয়ে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে ইইউতে যেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হোক না, কেন তা ইইউর আদালতের মাধ্যমে বিচার হয়ে থাকে।’ 
 
র‍্যাবের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেশ কিছু মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে ইইউর উদ্বেগ রয়েছে, যা আমাদের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনেও তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৮ সালে ইইউ সংসদ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে একটি রেজল্যুশন নিয়েছে। 
 
চার্লস ওয়াটলি বলেন, উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন খাতে সম্পর্ক বাড়িয়েছে ইইউ। তবে সম্পর্ক শুধু উন্নয়নের দিকে আটকে নেই, সম্পর্ক আরও বেড়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ অংশীদার হিসেবে সামনের দিনগুলোতে সামাজিক উন্নয়ন, সবুজ প্রযুক্তি, দারিদ্র্যবিমোচন, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং সুশাসন খাতে কাজ করবে ইইউ। আগামী দিনগুলোতে এগুলো ইইউর অগ্রাধিকার বিষয় থাকবে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে। সেই সঙ্গে কানেকটিভিটিতে বিশেষ করে মানুষে মানুষে যোগাযোগে গুরুত্ব দিচ্ছে ইইউ। 
 
ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, চলতি বছরের মাঝামাঝি ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক সংলাপ হওয়ার কথা রয়েছে, যাতে ইইউর উপমহাসচিব পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে ঢাকায় আসবেন। এটি একটি বার্তা যে আমাদের রাজনৈতিক সম্পর্ক বাড়ছে। 
 
নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ইইউর আগ্রহ রয়েছে জানিয়ে চার্লস ওয়াটলি বলেন, ‘এটি সামনের দিনগুলোতে একটি বড় বিষয় আমাদের জন্য। কারণ এখন আমরা যা করছি তা শুধু ছোট আকারে উন্নয়ন নয়, ইউরোপিয়ান ব্যাংক এআইবি ঋণও সরবরাহ করছি। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৫০ কোটি ইউরো ডলার দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।’ 

জিএসপি প্লাস পেতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, অগ্রগতি ইইউ পর্যবেক্ষণ করছে। এখানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো নেওয়া হলে ইইউর বাজারে বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে। পদক্ষেপগুলো সঠিকভাবে নেওয়া নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাব। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার না থাকলেও সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ছে, তা বাংলাদেশের শিল্প খাতের সহনশীলতার প্রমাণ দেয়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের কোন শিল্প খাতে সহযোগিতা করলে ইইউ শিল্প খাত লাভবান হবে তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান এই রাষ্ট্রদূত। 

রোহিঙ্গা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে ইইউর সম্পর্ক পর্যালোচনা করা হচ্ছে। মিয়ানমারের ওপর আমরা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি। সেখানে আমরা মানবিক সহায়তা বাদে আমাদের সব সহযোগিতা প্রত্যাহার করেছি। অস্ত্র ও নজরদারি যন্ত্রপাতি বিক্রির নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মিয়ানমারে গণহত্যা রোহিঙ্গাদের ওপর যারা পরিচালনা করেছে, তাদের জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসার জন্য ইইউ কাজ করছে। আমরা রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় সম্মানের সঙ্গে প্রত্যাবাসন দেখতে চাই।’    

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত