Ajker Patrika

মালয়েশিয়ায় জঙ্গিবাদের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩৬ জন দুস্থদের সহায়তা করতে গিয়েছিলেন: এটিইউ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার ৩৬ জনকে দেশে এনে আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তাঁরা মূলত শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। সরাসরি জঙ্গিবাদে জড়িত ছিলেন না, বরং দুস্থ ও অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে তাঁরা সেখানে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। তবে এর পেছনে কারা জড়িত থাকতে পারে, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোনে এটিইউর সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান ইউনিটটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. রেজাউল করিম।

এটিইউর প্রধান বলেন, একটি মাত্র সন্ত্রাসী ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই এই বিশেষায়িত ইউনিটের অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করা জরুরি। বিশেষ করে, ট্রান্সন্যাশনাল অপরাধ, সাইবার ক্রাইম ও হ্যাকিংয়ের মতো নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদিচ্ছা ও প্রস্তুতির বিকল্প নেই। দেশের মাটি ও মানুষ সবার, তাই ঐক্যবদ্ধ হয়েই এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

অতিরিক্ত আইজিপি রেজাউল করিম বলেন, দেশে বর্তমানে জঙ্গিবাদ নেই বললেই যে ভবিষ্যতে কেউ জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়াবে না—এ নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। তাই সতর্ক থাকা এবং ইউনিটকে আরও কার্যকরভাবে শক্তিশালী করাই এখন মূল কাজ।

রেজাউল করিম আরও বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় ও সহনশীল দেশ। এখানে উগ্রবাদ বা সন্ত্রাসের কোনো জায়গা নেই। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার, বিভ্রান্তিকর ব্যক্তির প্রভাব কিংবা দেশি-বিদেশি চক্রান্তের কারণে কাউকে ভুল পথে ঠেলে দেওয়া হতে পারে। এ কারণে ভবিষ্যতে যেকোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধে নজরদারি ও প্রস্তুতি অব্যাহত থাকবে।

এটিইউর প্রধান জানান, বিশেষায়িত ইউনিটগুলোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সহযোগিতা ও গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য ‘ইনফোমেট’ নামে একটি অ্যাপ এবং একটি যোগাযোগ নম্বর চালু করা হয়েছে, যেখানে তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রাখা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে রেজাউল করিম ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, স্বল্পশিক্ষিত ও বিভ্রান্ত মানুষ কীভাবে ভ্রান্ত আদর্শে প্রলুব্ধ হয়, তা বোঝা জরুরি। সব ধর্মই শান্তির শিক্ষা দেয়, কোনো ধর্মই সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। এ বিষয়ে সঠিক বার্তা প্রচার ও ধর্ম অপব্যবহারকারী গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করতে সংবাদমাধ্যমকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত জুলাইয়ে কুয়ালালামপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৩৬ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করার কথা জানান মালয়েশিয়ার পুলিশপ্রধান খালিদ ইসমাইল। তিনি দাবি করেন, গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি শ্রমিকেরা সিরিয়া ও বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর কাছে অর্থ পাঠাতেন। গত এপ্রিল থেকে পরিচালিত একাধিক অভিযানে ৩৬ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ।

সে সময় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল গণমাধ্যমকে জানান, দেশে ফেরত আসা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং অন্য যাঁরা ফিরবেন, তাঁদেরও একইভাবে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হবে। তাঁরা জঙ্গিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে। কেউ জড়িত থাকলে, দেশের নিজস্ব তদন্ত বা মালয়েশিয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের হাতে ইসরায়েলের ‘কয়েক লাখ পৃষ্ঠার’ গোপন নথি, পারমাণবিক স্থাপনার ছবি প্রকাশ

আ.লীগের অপরাধীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত

ভারত–চীন সীমান্তের শীতল লাদাখ জেন–জি আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ কেন

ভারতের কাছে হারের পর বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন রুবেল

চীনা নেতৃত্বাধীন বৃহত্তম বাণিজ্য জোট আরসিইপিতে যোগ দিতে চায় বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত