Ajker Patrika

অবৈধ অভিবাসী বিষয়ে কঠোর মালয়েশিয়া, ফেরত পাঠাচ্ছে বিমানবন্দর থেকেই

  • কুয়ালালামপুর থেকে ফেরত ১৩১ জনের ৯৬ জনই বাংলাদেশি।
  • বিমানবন্দরে কাগজপত্র যাচাই, সন্দেহ হলেই দেশে ফেরত।
  • বিমানবন্দরের পাশাপাশি দেশজুড়ে অভিযান।
মনজুরুল ইসলাম ঢাকা
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৪: ৪২
কুয়ালালামপুরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া। ছবি: সংগৃহীত
কুয়ালালামপুরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া। ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়া সরকার অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে আরও কঠোর হয়েছে। ভিজিট ভিসায় যাওয়া সন্দেহভাজনদের কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (কেএলআইএ) থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। গত সোমবার ওই বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো বিভিন্ন দেশের ১৩১ ব্যক্তির ৯৬ জনই বাংলাদেশি।

মালয়েশিয়ার বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সি (বিসিপিএ) বলেছে, সঙ্গে পর্যাপ্ত অর্থ না আনা, নির্ভরযোগ্য আবাসনের প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হওয়া এবং ইমিগ্রেশন চেকপয়েন্টে সঠিকভাবে রিপোর্ট না করার কারণে ওই ১৩১ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁদের কেউ কেউ এক মাস থাকার কথা জানালেও সঙ্গে ছিল মাত্র ৫০০ রিঙ্গিত।

জানা গেছে, ১১ জুলাই বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরের টার্মিনাল-১-এর গেট সি-১ থেকে সি-৩৭ পর্যন্ত বিসিপিএর নেতৃত্বে স্ক্রিনিং অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানে ৩০০ জনের বেশি যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও কাগজপত্র যাচাই করা হয়। যাচাই শেষে ৯৬ বাংলাদেশি, ৩০ পাকিস্তানি ও ৫ ইন্দোনেশীয় নাগরিককে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে, ভুয়া নথি, অস্পষ্ট আর্থিক সক্ষমতা বা সন্দেহজনক উদ্দেশ্যে কেউ মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে চাইলে, তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়ার বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রটেকশন এজেন্সি মোট ২ হাজার ৬৫৪ বিদেশি যাত্রীর কাগজপত্র যাচাই করে। তাঁদের ৯০০ জনের প্রবেশ বাতিল করা হয়, যাঁদের বড় অংশ ছিলেন বাংলাদেশি নাগরিক। তাঁরা ভিজিট ভিসায় এলেও প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল কাজ করা।

বিভিন্ন সময় ভুয়া আমন্ত্রণপত্র দেখিয়েও মালয়েশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করা হয়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি ‘মালয়েশিয়ান ফিশারিজ অ্যাকাডেমি’-এর ভুয়া আমন্ত্রণপত্র দেখিয়ে প্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েন ১২ বাংলাদেশি। প্রতিষ্ঠানটি পরে নিশ্চিত করেছে, তারা কাউকে আমন্ত্রণ জানায়নি। ১৯ ফেব্রুয়ারি ৪৫ বাংলাদেশিকে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়। তাঁরা ইমিগ্রেশন কাউন্টারে না গিয়ে বিমানবন্দরের বিভিন্ন স্থানে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। পরে তাঁদের ‘নোটিশ টু লিভ’ (এনটিএল) দিয়ে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

সূত্র বলেছে, বিমানবন্দরে সন্দেহভাজন যাত্রীদের নির্দিষ্ট কাউন্টারে নিয়ে দেশটিতে প্রবেশে সহায়তা করা ‘কাউন্টার সেটিং’ চক্রে জড়িত ৫০ ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা ও চক্রের ১০ সদস্যকে ১৮ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়।

শুধু কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরেই নয়, মালয়েশিয়াজুড়ে চলছে অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযান। সম্প্রতি পাহাং রাজ্যে অভিযানে ৪৮ বাংলাদেশিসহ ১৩১ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়। এঁদের বিরুদ্ধে বৈধ পাস না থাকা, অতিরিক্ত সময় অবস্থানের অভিযোগ আনা হয়। গত ৩ জুন পেনাং রাজ্যের বায়ান লেপাস শিল্প এলাকায় নির্মাণাধীন একটি গাড়ি পার্কিং স্থানে অভিযানে ২৯৭ বাংলাদেশি শ্রমিককে আটক করা হয়। সেদিন মোট ৫২০ জনের কাগজপত্র যাচাই করে ৩১৪ জনকে আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে আরও ছিলেন পাকিস্তানের ১৩, মিয়ানমারের দুই, ভারতের এক এবং ইন্দোনেশিয়ার এক নাগরিক।

মালয়েশিয়ায় নির্মাণ, কৃষি ও পরিষেবা খাতে অনেক অভিবাসী শ্রমিক কাজ করেন। বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক বৈধ ভিসা পেলেও নামসর্বস্ব কোম্পানির কারণে কাজ পান না এবং বাধ্য হয়ে অবৈধভাবে অন্যত্র কাজ নেন। ফলে তাঁরা আইনি সুরক্ষা, চিকিৎসা ও বিমার সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হন।

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান আজকের পত্রিকা'কে বলেন, তথাকথিত ফ্রি ভিসার নামে যাঁদের পাঠানো হচ্ছে, তাঁরা মূলত বৈধ কাগজ নিয়েও অবৈধ পরিস্থিতিতে পড়ছেন। বিএমইটির ছাড়পত্র নেওয়ার পর দেখা যায়, যে কোম্পানিতে পাঠানো হয়েছে সেখানে কোনো কাজ নেই। ৫-৬ লাখ টাকা খরচ করে যাওয়া শ্রমিক বাধ্য হন অন্যত্র কাজ নিতে, যা পুরোপুরি অবৈধ।

বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, সৌদি আরবের পর মালয়েশিয়া বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার। কয়েক বছর পর ২০২২ সালে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুললে ওই বছর ৫০ হাজার ৯০ জন সেখানে যান। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জনে। ২০২৪ সালে ৯৩ হাজার ৬৩২ জন এবং ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত গেছেন মাত্র ৩ হাজার ৪৮৬ জন।

কর্মী পাঠানো নিয়ে নানা অনিয়মের কারণে এই শ্রমবাজার বারবার বন্ধ হয়েছে। এই অনিয়মের সঙ্গে চক্র জড়িত। জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) কয়েক সদস্য বলেন, সরকার নির্ধারিত ৮০ হাজার টাকার স্থলে কর্মীপ্রতি ৫-৬ লাখ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ৫০ জনের জায়গায় ৫০০ জন পাঠানো হচ্ছে। এতে একদিকে শ্রমিকেরা বিদেশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন, অন্যদিকে শ্রমবাজার নষ্ট হচ্ছে।

গত বছর প্রকাশিত সিপিডির ‘একটি উন্নয়ন বয়ানের ব্যবচ্ছেদ’ শ্বেতপত্র অনুযায়ী, মাত্র দেড় বছরে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠিয়ে ১০০টি রিক্রুটিং এজেন্সির চক্র প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত কর্মী পাঠানোর অভিযোগও রয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত হিসেবে চার সাবেক সংসদ সদস্যের নাম এসেছে। তাঁরা হলেন আ হ ম মুস্তফা কামাল, নিজাম উদ্দিন হাজারী, বেনজীর আহমেদ ও লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পদায়নের জন্য রাজনৈতিক পদলেহন করবেন না—বিদায়ী ভাষণে বিচারকদের প্রধান বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩১
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ফাইল ছবি
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ফাইল ছবি

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, পছন্দসই পদায়নের জন্য রাজনৈতিক পদলেহন পরিহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আইন বৃহত্তর রাজনীতির একটা অঙ্গ হলেও বিচারকদের রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠার প্রয়াস রপ্ত করতে হয়। কেবল ক্ষমতাবান শাসকশ্রেণির পক্ষে প্রয়োজনীয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব নিলে বিচার বিভাগের আলাদা কোনো অস্তিত্বেরই প্রয়োজন নেই। সে কাজের জন্য নির্বাহী বিভাগ ও পুলিশই যথেষ্ট। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ভিত্তি যে আদর্শকেই ধারণ করে গড়ে ওঠুক না কেন, বিচারকদের সুনীতি ও সুবিবেচনা বজায় রেখে কাজ করতে হবে।

সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আজ রোববার জেলা ও মহানগর দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গত বছরের ১১ আগস্ট ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন রেফাত আহমেদ। অবসর নেওয়ার আগে আজ বিদায়ী ভাষণ দেন তিনি। ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন রেফাত আহমেদ।

প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে। শুনানিকালে কোনো বিশেষ পদবিধারী ব্যক্তি বা ক্ষমতাবান পক্ষকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া বিচারকের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত নয়।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘এই পৃথক সচিবালয় (সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়) প্রতিষ্ঠার কোনো স্বার্থকতা নেই, যদি না আমরা ব্যক্তিগত অসততার ব্যাপারে সতর্ক থাকি। একটি স্বাধীন সচিবালয় কেবল শুরু, সর্বশেষ উদ্দেশ্য নয়। আপনাদের উচিত, সততা আর যোগ্যতার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হওয়া। অনুপার্জিত অর্থের বাসনা, অন্যায্য বিলাসী জীবন এবং অসংগত ক্ষমতার প্রতিপত্তি যদি আমাদের মনকে কলুষিত করে রাখে, তাহলে পৃথিবীর কোনো আইনি বিধানই আমাদের সামষ্টিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারবে না।’

বিচারকদের উদ্দেশে রেফাত আহমেদ আরও বলেন, ‘উন্নত জীবনমান ও কর্মপরিবেশের প্রতি প্রত্যাশা কখনোই ব্যক্তিগত ভোগ, আত্মতুষ্টি কিংবা সামাজিক মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্য হতে পারে না। এর অন্তরে থাকতে হবে বিচারিক সক্ষমতার উন্নয়ন, জ্ঞানচর্চার সম্প্রসারণ এবং উচ্চমানের কর্মদক্ষতা অর্জনের সৎ প্রেরণা। এটি অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ সংস্কৃতি এখনো কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আমরা এখনো একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারিনি। তবে বিদ্যমান সুযোগের ন্যূনতম সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিচারকদের বড় অংশের অনীহা ও কার্পণ্য পরিলক্ষিত হয়। তাই আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ—জ্ঞান অর্জন ও পাঠাভ্যাসকে আপনারা জীবনের পরম দায় হিসেবে নেবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা থাকলেও ভোট নিয়ে শঙ্কা দেখছে না ইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ। ছবি: বাসস
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ। ছবি: বাসস

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

সানাউল্লাহ বলেন, ‘আজকে একটা বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূলত আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের ডেকেছিলাম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এতে তফসিল ঘোষণার পর থেকে এই পর্যন্ত উদ্ভূত বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। সামনের আমাদের কার্যক্রম এবং কৌশল কী হওয়া উচিত—সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং তাঁদের বিভিন্ন মত শুনেছি।’

সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময় একটা ঘটনা, যেটা আমাদের সবার সবাইকে উদ্বিগ্ন করেছে। শরিফ ওসমান হাদির ওপরে চোরাগোপ্তা হামলা। সেটা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলছি না। সেখানকার আরও কিছু বিষয় সম্বন্ধে আমরা অবহিত হয়েছে। যেগুলোর সাথে নির্বাচন এবং নির্বাচন কমিশনের স্বার্থ জড়িত।’

সানাউল্লাহ বলেন, ‘এখানে কয়েকটা বিষয় উঠে এসেছে যে ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হচ্ছে সন্দেহভাজন হিসেবে। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই একটা সখ্যতা গড়ে তুলে অত্যন্ত কাছে গিয়েছে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে যে তার একটা অতীত আছে, পেছনে তার একটা রাজনৈতিক ইন্টারেসিডেন্স (মধ্যস্থতা বা হস্তক্ষেপ) আছে এবং তার একটা ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে। সেটা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে আমরা জানতে পারলাম যে রেবেল হান্ট বিশেষ করে—এক শুরু হওয়ার পর থেকে যেসব সন্ত্রাসীদের অ্যারেস্ট করা হয়েছিল, তাদের একটা বড় সংখ্যা ইতিমধ্যে জামিন পেয়ে গেছে এবং তারা সমাজে বিরাজ করছে। এটা নিয়ে আমাদের কী করণীয়—সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’

দেশে চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সামনেও যে এটা সম্ভাবনা নাই, তা-ও বলছি না। আজকের মূল উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে এই ধরনের হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে বা এগুলো যাতে কঠোর হস্তে দমন করা হয় ... নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মেসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার। নির্বাচন নিয়ে কোনো আশঙ্কা নাই।’

প্রার্থীদের বৈধ অস্ত্র ও লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য নজরে আনলে এই নির্বাচন কমিশনার বলে, ‘আমার সাথে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কমিশনের সাথে কোনো আলোচনা হয়েছে বলে আমার জানা নাই। উনি কী মন্তব্য করেছেন, কোন প্রেক্ষাপটে করেছেন, আমি যদি জানি পরে আমি আলোকপাত করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে স্কাই ডাইভিং করবেন আশিক চৌধুরী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি আঁকা হেলমেট হাতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি আঁকা হেলমেট হাতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ

মহান বিজয় দিবসের ৫৪তম বর্ষপূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে ৫৪টি জাতীয় পতাকা উড়িয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ৫৪ জন প্যারাট্রুপার। এই দলে থাকবেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে স্কাই ডাইভিং করবেন তিনি।

আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই তথ্য জানানো হয়।

পোস্টে বলা হয়, ‘১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে প্যারাট্রুপিং করে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। এই ৫৪ জনের একজন আশিক চৌধুরী জাম্প করবেন ওসমান হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে। বিজয়ের দিনে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় সকলকে দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানাই।’

এদিন একই পেজে দেওয়া আরেক পোস্টে বলা হয়, ‘এই বিজয় দিবসে চলে আসুন দলে দলে, এক অবিস্মরণীয় এয়ার শো দেখতে। বিজয়ের ৫৪তম বছরে, ৫৪ জন প্যারাট্রুপার, ৫৪টি জাতীয় পতাকা হাতে বিমান থেকে অবতরণ করবেন, গড়বেন বিশ্ব রেকর্ড। এয়ার শো উপভোগ করতে ব্যবহার করবেন আইডিবির উল্টো পাশের তালতলা গেট। গেট খোলা হবে ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৮টায়। ১০টার মধ্যেই সবাইকে নির্ধারিত স্থানে সমবেত হওয়ার অনুরোধ করা যাচ্ছে।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং গত সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদ্‌যাপনে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার পতাকা হাতে স্কাই ডাইভিং করবেন। এটি হবে বিশ্বের বুকে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং, যা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে পুলিশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে পুলিশ

আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল সরবরাহ করবে পুলিশ।

আজ রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

এতে বলা হয়, এই প্রটোকলে রাজনৈতিক নেতা ও আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাঁদের বাসস্থান, কার্যালয়, চলাচল, জনসভা ও সাইবার স্পেসে কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন—সে বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে।

এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারির নেতৃত্ব ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত