
ক্ষমতার ধারাবাহিকতা বজায় থাকল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বিএনপিসহ সমমনা বিরোধীদের ভোট বর্জন আর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চোখরাঙানির মধ্যেও ভোট করে বিজয় ছিনিয়ে নিল দলটি। ফলে টানা চতুর্থ জয়ে আবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে গতকাল রোববার দিনভর ভোট গ্রহণ করা হয়। বিকেল থেকে শুরু হয় গণনা। রাতে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন ২২৩টিতে। তাঁদের পরে সবচেয়ে বেশি আসনে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাঁদের দখলে গেছে ৬২টি আসন। আর লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা জিতেছেন ১১টি আসনে। আওয়ামী লীগের শরিক জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টি ১টি করে আসন জিতেছে।
এই নির্বাচনে ভোট পড়ার হার তুলনামূলক কম। রাজধানীতে ভোটারের সারি সেভাবে চোখে পড়েনি। সেই তুলনায় ঢাকার বাইরে গ্রামাঞ্চলে মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে আগ্রহ ছিল। দিন শেষে নির্বাচন কমিশন বলেছে, সারা দেশে ভোট পড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।
ভোটে আগ্রহের মতো এবার নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতাও অন্যবারের তুলনায় কম। যদিও ভোট চলাকালে কয়েকটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষসহ কিছু ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ভোলার লালমোহনে শনিবার দিবাগত রাতে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের সময় স্ট্রোকে মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রাম-১০ আসনে নৌকা ও ফুলকপি প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভোটকেন্দ্র এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। অনেক আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া অন্য প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টের দেখা মেলেনি। কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরে খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নিজেই বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
বেশ কিছু জায়গায় জাল ভোট, ব্যালটে সিল মারাসহ বিভিন্ন অভিযোগও উঠেছে। এর মধ্যে জোর করে ব্যালটে সিল মারার অভিযোগে নরসিংদী-৪ আসনের একটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। কুমিল্লা-৪ আসনের একটি কেন্দ্রেও একই ঘটনা ঘটায় সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অব্যাহতি এবং সিল মারা ব্যালট পেপারগুলো বাতিল করা হয়েছে।
ভোট গ্রহণ চলাকালে এজেন্টদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করা, ব্যালটে সিল মারাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ২৩ আসনে ৩০ জন প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন কয়েকজন।
এড়ানো যায়নি সহিংসতা
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকেই বলে আসছেন, নির্বাচনে কোনো ধরনের সহিংসতা চান না তিনি। তারপরও সহিংসতা ঠেকানো যায়নি। তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের আগপর্যন্ত সহিংসতায় নিহত হন ৮ জন। আর ভোটের দিনে সহিংসতায় ঝরেছে দুজনের প্রাণ। তাঁদের একজন মুন্সিগঞ্জে নিহত হয়েছেন, অপরজন কুমিল্লায়। এ ছাড়া দেশজুড়ে গুলি ও সহিংসতায় আহত হয়েছেন প্রায় দেড় শ জন। ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলে কুমিল্লায় মহাসড়ক অবরোধ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। অনেক ভোটকেন্দ্র ও আশপাশের এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।
অনিয়মের যত অভিযোগ
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে ভোটকেন্দ্র ছিল ৮২ হাজার ২৪টি। এগুলোর মধ্যে ১৪০টি কেন্দ্রে অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪২ জনকে। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টার সময়।
জোর করে ব্যালট পেপার ছিনতাই, হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনের দুটি কেন্দ্র দুলালপুর ফাজিল মাদ্রাসা ও ভিটি চিনাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। বেলা আড়াইটার দিকে কেন্দ্র দুটি বাতিল ঘোষণা করা হয়।
এদিকে নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাব) আসনে বেলাব উপজেলার সল্লাবাদ ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার কারণে ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. বদিউল আলম নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় সূত্র বলেছে, নৌকার প্রার্থীর পক্ষে জোর করে কেন্দ্রে ঢুকে ১২টি বইয়ে নৌকার সিল মারেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের ছেলে মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদী।
এ ছাড়া ব্যালটে সিল মারা, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নানা ঘটনাও ঘটেছে। চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে ৫০টি কেন্দ্র থেকে প্রায় ৩০০ এজেন্টকে মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘পটিয়া আসনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। এ ধরনের নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চাননি, প্রধান নির্বাচন কমিশনারও চাননি।’
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের কলাবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে জাল ভোট দিতে সুযোগ দেওয়ার জন্য প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে চাপ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম নিজেই সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগটি করেন।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
নাটোর-৪ আসনে বড়াইগ্রামের জোয়াড়ী ইউনিয়নের ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালটে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারায় সহযোগিতা করার অভিযোগে এক সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে। সাতক্ষীরা-১ আসনে তালার মানিকহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার ঘটনায় একজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জামালপুর-২ ইসলামপুর আসনে কুলকান্দি ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে ২৫ হাজার টাকা নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আইয়ুব আলীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছেন স্থানীয়রা। ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে প্রকাশ্যে সিল মারা এবং নৌকার পক্ষে কাজ করায় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অনেক চোখরাঙানি উপেক্ষা করে ভোট
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ শরিক ও সমমনা বিরোধী দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে তারা ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে লাগাতার কর্মসূচি দিচ্ছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে দেশজুড়ে দুই শতাধিক যানবাহনে আগুন দেওয়াসহ বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ট্রেনেও আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গত ১৩ ডিসেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুরে কাটা রেললাইনে লাইনচ্যুত হয় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাতটি বগি, প্রাণ যায় একজনের। এরপর ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে একই ট্রেনে আগুনে মা-সন্তানসহ চারজন নিহত হন। এরপর গত শুক্রবার রাতে আগুনে পোড়ে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের চারটি বগি। প্রাণ যায় চারজনের।
এই অবস্থায় এবারের জাতীয় নির্বাচন অনেকটাই আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ভোটের আগে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন দলগুলোর সঙ্গে। বাংলাদেশ সফরে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক প্রতিনিধিদল। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নও ছিল তৎপর। এই তৎপরতার মধ্যেই গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তারা বাংলাদেশের জন্য ঘোষিত ভিসানীতি প্রয়োগ করতে শুরু করেছে। এর আগে গত বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণা করে।
এই অবস্থার মধ্যেই গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র নতুন শ্রমনীতি ঘোষণা করে। সেই ঘোষণার পর বাংলাদেশের পোশাক খাত নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়; পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কাও তৈরি হয়। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররাও অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে এসেছে। চীনও বসে ছিল না। আর ভারত তো বরাবরই বড় ফ্যাক্টর বাংলাদেশের রাজনীতিতে।
সব সমালোচনার জবাব
তবে ভোটের সকালে রাজধানীতে নিজের ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে সব সমালোচনার জবাব দিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আর কে কী করবে, না করবে; এটা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই।’ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা হচ্ছে—এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কে কী বলল, সেটা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন না। কারণ, বাংলাদেশ একটা সার্বভৌম রাষ্ট্র। আর জনগণ আমাদের মূল শক্তি।’

ক্ষমতার ধারাবাহিকতা বজায় থাকল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বিএনপিসহ সমমনা বিরোধীদের ভোট বর্জন আর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চোখরাঙানির মধ্যেও ভোট করে বিজয় ছিনিয়ে নিল দলটি। ফলে টানা চতুর্থ জয়ে আবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে গতকাল রোববার দিনভর ভোট গ্রহণ করা হয়। বিকেল থেকে শুরু হয় গণনা। রাতে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন ২২৩টিতে। তাঁদের পরে সবচেয়ে বেশি আসনে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাঁদের দখলে গেছে ৬২টি আসন। আর লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা জিতেছেন ১১টি আসনে। আওয়ামী লীগের শরিক জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টি ১টি করে আসন জিতেছে।
এই নির্বাচনে ভোট পড়ার হার তুলনামূলক কম। রাজধানীতে ভোটারের সারি সেভাবে চোখে পড়েনি। সেই তুলনায় ঢাকার বাইরে গ্রামাঞ্চলে মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে আগ্রহ ছিল। দিন শেষে নির্বাচন কমিশন বলেছে, সারা দেশে ভোট পড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।
ভোটে আগ্রহের মতো এবার নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতাও অন্যবারের তুলনায় কম। যদিও ভোট চলাকালে কয়েকটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষসহ কিছু ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ভোলার লালমোহনে শনিবার দিবাগত রাতে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের সময় স্ট্রোকে মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রাম-১০ আসনে নৌকা ও ফুলকপি প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভোটকেন্দ্র এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। অনেক আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া অন্য প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টের দেখা মেলেনি। কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরে খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নিজেই বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
বেশ কিছু জায়গায় জাল ভোট, ব্যালটে সিল মারাসহ বিভিন্ন অভিযোগও উঠেছে। এর মধ্যে জোর করে ব্যালটে সিল মারার অভিযোগে নরসিংদী-৪ আসনের একটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। কুমিল্লা-৪ আসনের একটি কেন্দ্রেও একই ঘটনা ঘটায় সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অব্যাহতি এবং সিল মারা ব্যালট পেপারগুলো বাতিল করা হয়েছে।
ভোট গ্রহণ চলাকালে এজেন্টদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করা, ব্যালটে সিল মারাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ২৩ আসনে ৩০ জন প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন কয়েকজন।
এড়ানো যায়নি সহিংসতা
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকেই বলে আসছেন, নির্বাচনে কোনো ধরনের সহিংসতা চান না তিনি। তারপরও সহিংসতা ঠেকানো যায়নি। তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের আগপর্যন্ত সহিংসতায় নিহত হন ৮ জন। আর ভোটের দিনে সহিংসতায় ঝরেছে দুজনের প্রাণ। তাঁদের একজন মুন্সিগঞ্জে নিহত হয়েছেন, অপরজন কুমিল্লায়। এ ছাড়া দেশজুড়ে গুলি ও সহিংসতায় আহত হয়েছেন প্রায় দেড় শ জন। ভোটে অনিয়মের অভিযোগ তুলে কুমিল্লায় মহাসড়ক অবরোধ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। অনেক ভোটকেন্দ্র ও আশপাশের এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।
অনিয়মের যত অভিযোগ
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে ভোটকেন্দ্র ছিল ৮২ হাজার ২৪টি। এগুলোর মধ্যে ১৪০টি কেন্দ্রে অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪২ জনকে। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টার সময়।
জোর করে ব্যালট পেপার ছিনতাই, হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনের দুটি কেন্দ্র দুলালপুর ফাজিল মাদ্রাসা ও ভিটি চিনাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। বেলা আড়াইটার দিকে কেন্দ্র দুটি বাতিল ঘোষণা করা হয়।
এদিকে নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাব) আসনে বেলাব উপজেলার সল্লাবাদ ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার কারণে ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. বদিউল আলম নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় সূত্র বলেছে, নৌকার প্রার্থীর পক্ষে জোর করে কেন্দ্রে ঢুকে ১২টি বইয়ে নৌকার সিল মারেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের ছেলে মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদী।
এ ছাড়া ব্যালটে সিল মারা, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নানা ঘটনাও ঘটেছে। চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে ৫০টি কেন্দ্র থেকে প্রায় ৩০০ এজেন্টকে মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘পটিয়া আসনে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। এ ধরনের নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চাননি, প্রধান নির্বাচন কমিশনারও চাননি।’
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের কলাবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে জাল ভোট দিতে সুযোগ দেওয়ার জন্য প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে চাপ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম নিজেই সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগটি করেন।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
নাটোর-৪ আসনে বড়াইগ্রামের জোয়াড়ী ইউনিয়নের ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালটে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারায় সহযোগিতা করার অভিযোগে এক সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে। সাতক্ষীরা-১ আসনে তালার মানিকহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার ঘটনায় একজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জামালপুর-২ ইসলামপুর আসনে কুলকান্দি ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে ২৫ হাজার টাকা নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আইয়ুব আলীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছেন স্থানীয়রা। ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে প্রকাশ্যে সিল মারা এবং নৌকার পক্ষে কাজ করায় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
অনেক চোখরাঙানি উপেক্ষা করে ভোট
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ শরিক ও সমমনা বিরোধী দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে তারা ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে লাগাতার কর্মসূচি দিচ্ছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে দেশজুড়ে দুই শতাধিক যানবাহনে আগুন দেওয়াসহ বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ট্রেনেও আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গত ১৩ ডিসেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুরে কাটা রেললাইনে লাইনচ্যুত হয় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাতটি বগি, প্রাণ যায় একজনের। এরপর ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে একই ট্রেনে আগুনে মা-সন্তানসহ চারজন নিহত হন। এরপর গত শুক্রবার রাতে আগুনে পোড়ে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের চারটি বগি। প্রাণ যায় চারজনের।
এই অবস্থায় এবারের জাতীয় নির্বাচন অনেকটাই আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ভোটের আগে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন দলগুলোর সঙ্গে। বাংলাদেশ সফরে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক প্রতিনিধিদল। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নও ছিল তৎপর। এই তৎপরতার মধ্যেই গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তারা বাংলাদেশের জন্য ঘোষিত ভিসানীতি প্রয়োগ করতে শুরু করেছে। এর আগে গত বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণা করে।
এই অবস্থার মধ্যেই গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র নতুন শ্রমনীতি ঘোষণা করে। সেই ঘোষণার পর বাংলাদেশের পোশাক খাত নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়; পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কাও তৈরি হয়। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররাও অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে এসেছে। চীনও বসে ছিল না। আর ভারত তো বরাবরই বড় ফ্যাক্টর বাংলাদেশের রাজনীতিতে।
সব সমালোচনার জবাব
তবে ভোটের সকালে রাজধানীতে নিজের ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে সব সমালোচনার জবাব দিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আর কে কী করবে, না করবে; এটা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই।’ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা হচ্ছে—এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কে কী বলল, সেটা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন না। কারণ, বাংলাদেশ একটা সার্বভৌম রাষ্ট্র। আর জনগণ আমাদের মূল শক্তি।’

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
৫ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
১০ ঘণ্টা আগে
সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে...
১১ ঘণ্টা আগে
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
দলগুলোর পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সরকারের অনুরোধের এক দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অন্য দলগুলোর প্রতি আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল মুখে মুখে। কিন্তু এ আহ্বান বাস্তবায়নে গতকাল পর্যন্ত কার্যত কোনো উদ্যোগ নেয়নি দলটি।
জামায়াত তবু আহ্বান জানিয়েছে। বিএনপি নিজের দিক থেকে কোনো কথা বলেনি, উদ্যোগও নেয়নি। বরং সরকারের আহ্বানে দলটি সাড়া দিতে চাইছে না বলে দলটির সূত্র জানিয়েছে। আর সংকট সমাধানে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণতন্ত্র মঞ্চ।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সংকট কাটাতে গত সোমবার জরুরি বৈঠকে বসে উপদেষ্টা পরিষদ। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, এ নিয়ে সরকারের দিক থেকে আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে না। এখন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সমঝোতায় আসুক। এ জন্য দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। এর মধ্যে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে সরকার নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত দেবে।
জুলাই সনদ ইস্যুতে গত মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আলোচনা করছে। সেখানে অনেক ইস্যুতে একমত হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে বিএনপিসহ বেশ কিছু দলের আপত্তি ছিল। ৩১ আগস্ট শেষ হওয়া দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, নির্বাচনে বিজয়ী হলে আপত্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে দলগুলো। তবে সে সময় গণভোট নিয়ে আলোচনা হয়নি। বাস্তবায়ন প্রশ্নে তৃতীয় ধাপে পাঁচ দিন সংলাপ করে দলগুলো। সেখানে গণভোটের বিষয়ে একমত হয় তারা। তবে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলো সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
গত ৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সংলাপে জানানো হয়, দলগুলোর মত ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের কাছে কমিশন বাস্তবায়নের উপায় জমা দেবে; যেখানে বিশেষজ্ঞরা গণভোটে আপত্তি না রাখার বিষয়ে মত দেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, জনগণ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, সেখানে আপত্তির বিধান রাখা যুক্তিযুক্ত না। ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিশন। এরপর শুরু হয় নতুন বিতর্ক। ছয় মাসে যেখানে দলগুলো একমত হতে পারেনি, সেখানে এক সপ্তাহে দলগুলো আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ হবে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
আলোচনার উদ্যোগ নেবে না বিএনপি
আলোচনা করে সমঝোতায় আসতে সরকারের অনুরোধে বিএনপি কোনো উদ্যোগ নেবে না বলে দলটির একাধিক সূত্র গতকাল জানিয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলছেন, বাস্তবায়ন আদেশে তাদের ওপর অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এখন আলোচনার নামে দায়ভার চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
সরকারের এমন অনুরোধে তাদের দল সাড়া দেবে না। এ জন্য আলোচনায় বসার জন্য কোনো দলকে ডাকবে না বিএনপি। কেউ আলোচনার জন্য দাওয়াত দিলে বিবেচনা করা হবে কি না, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে বসার বিষয়ে যে অনুরোধ করেছে, এ ব্যাপারে আমরা কোনো আলোচনা করতে পারিনি। সোমবার দলের প্রার্থী মনোনয়ন এবং প্রেস ব্রিফিং নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আলোচনার সুযোগ হয়নি। আলোচনা করে তারপর জানানো হবে।’
আহ্বান জানিয়েছে জামায়াত
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত জামায়াতে ইসলামী। যদিও সরকারের আহ্বানের আগেই আলোচনার জন্য অন্য দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। তবে দলটির অনুরোধে গতকাল পর্যন্ত কোনো দল সাড়া দেয়নি বলে জানা গেছে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ গতকাল বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছে একসঙ্গে বসার। সরকারের আগেই আমরা আহ্বান করেছি। এখনো কারও সাড়া পাইনি আমরা, হয়তো সামনে পাব।’
এর আগে গত রোববার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে কোনো ঝগড়ায় লিপ্ত হতে চায় না। যা-ই করছেন, এবার বন্ধ করুন। আসুন, আমরা একসঙ্গে বসি। দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি।’
আর গতকাল মঙ্গলবার বিদেশ সফর শেষে ঢাকায় ফিরে বিমানবন্দরে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘সরকার অনুরোধ করেছে, এক সপ্তাহ সময়ের ভেতরে রাজনৈতিক দলগুলো বসে যদি একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে, সরকারের জন্য এটা ভালো। আমরাই সবার আগে আমাদের নায়েবে আমিরের মাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছি যে আসুন, আমরা খোলামেলা আলোচনা করে একটা সমাধানে পৌঁছাই দেশ ও জাতির স্বার্থে। আমরা আশা করি, অন্যরা আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দেবেন।’
সরকারের কোর্টে বল ঠেলছে এনসিপি
রাজনৈতিক দলগুলোর কোর্টে বল ঠেলে না দিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারির উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে এনসিপি। তবে প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনায় যেতে তাঁরা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। যদিও এখন পর্যন্ত এনসিপি কোনো রাজনৈতিক দলকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয়নি বলে জানা গেছে। আবার এনসিপিকেও কেউ প্রস্তাব দেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপ চলছে। বাস্তবায়ন আদেশ জারির জন্য সরকারের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপ প্রয়োগ করছে এনসিপি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকার বা ঐকমত্য কমিশনকে রেফারি করেছে অনেকে। কিন্তু আমরা দেখি, সরকার ও ঐকমত্য কমিশন সংস্কার বাস্তবায়নের ব্যাপারে রেফারি না। তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে সংস্কারের পক্ষে। যদি তারা সংস্কারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা তাদের ম্যান্ডেট থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে। সরকারের এখন দায়িত্ব হলো ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেই প্রস্তাবে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘জুলাই সনদের বিষয়ে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তবে প্রয়োজনে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত আছি।’
গণতন্ত্র মঞ্চের ভাবনা
জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্য ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারই দায়ী বলে জানিয়েছে ৬টি রাজনৈতিক দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। মঞ্চের নেতারা বলেছেন, এই সংকট সমাধানের দায়িত্বও সরকারকেই নিতে হবে। একই সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চ দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টায় ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘এই সংকট সমাধানের জন্য সরকারের যে উদ্যোগ নেওয়া দরকার ছিল, তা না নিয়ে সরকার অনেকটা মান-অভিমানের মতো অবস্থান নিয়েছে। সরকারের এমন মনোভাব মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সংস্কার কি হবে না? সংস্কার না হলে নির্বাচন কি হবে? যাদের আমরা পরাজিত করেছি, তারা আবার ফিরে আসবে?’
আর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমদুর রহমান মান্না এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারে না। সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারকে রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করে সমাধানের পথ তৈরি করতে হবে।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
দলগুলোর পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আলোচনার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সরকারের অনুরোধের এক দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অন্য দলগুলোর প্রতি আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল মুখে মুখে। কিন্তু এ আহ্বান বাস্তবায়নে গতকাল পর্যন্ত কার্যত কোনো উদ্যোগ নেয়নি দলটি।
জামায়াত তবু আহ্বান জানিয়েছে। বিএনপি নিজের দিক থেকে কোনো কথা বলেনি, উদ্যোগও নেয়নি। বরং সরকারের আহ্বানে দলটি সাড়া দিতে চাইছে না বলে দলটির সূত্র জানিয়েছে। আর সংকট সমাধানে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণতন্ত্র মঞ্চ।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সংকট কাটাতে গত সোমবার জরুরি বৈঠকে বসে উপদেষ্টা পরিষদ। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, এ নিয়ে সরকারের দিক থেকে আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে না। এখন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সমঝোতায় আসুক। এ জন্য দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। এর মধ্যে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে সরকার নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত দেবে।
জুলাই সনদ ইস্যুতে গত মার্চ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আলোচনা করছে। সেখানে অনেক ইস্যুতে একমত হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে বিএনপিসহ বেশ কিছু দলের আপত্তি ছিল। ৩১ আগস্ট শেষ হওয়া দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, নির্বাচনে বিজয়ী হলে আপত্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে দলগুলো। তবে সে সময় গণভোট নিয়ে আলোচনা হয়নি। বাস্তবায়ন প্রশ্নে তৃতীয় ধাপে পাঁচ দিন সংলাপ করে দলগুলো। সেখানে গণভোটের বিষয়ে একমত হয় তারা। তবে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলো সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
গত ৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সংলাপে জানানো হয়, দলগুলোর মত ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সরকারের কাছে কমিশন বাস্তবায়নের উপায় জমা দেবে; যেখানে বিশেষজ্ঞরা গণভোটে আপত্তি না রাখার বিষয়ে মত দেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, জনগণ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, সেখানে আপত্তির বিধান রাখা যুক্তিযুক্ত না। ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিশন। এরপর শুরু হয় নতুন বিতর্ক। ছয় মাসে যেখানে দলগুলো একমত হতে পারেনি, সেখানে এক সপ্তাহে দলগুলো আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ হবে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
আলোচনার উদ্যোগ নেবে না বিএনপি
আলোচনা করে সমঝোতায় আসতে সরকারের অনুরোধে বিএনপি কোনো উদ্যোগ নেবে না বলে দলটির একাধিক সূত্র গতকাল জানিয়েছে। দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলছেন, বাস্তবায়ন আদেশে তাদের ওপর অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এখন আলোচনার নামে দায়ভার চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
সরকারের এমন অনুরোধে তাদের দল সাড়া দেবে না। এ জন্য আলোচনায় বসার জন্য কোনো দলকে ডাকবে না বিএনপি। কেউ আলোচনার জন্য দাওয়াত দিলে বিবেচনা করা হবে কি না, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে বসার বিষয়ে যে অনুরোধ করেছে, এ ব্যাপারে আমরা কোনো আলোচনা করতে পারিনি। সোমবার দলের প্রার্থী মনোনয়ন এবং প্রেস ব্রিফিং নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আলোচনার সুযোগ হয়নি। আলোচনা করে তারপর জানানো হবে।’
আহ্বান জানিয়েছে জামায়াত
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত জামায়াতে ইসলামী। যদিও সরকারের আহ্বানের আগেই আলোচনার জন্য অন্য দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। তবে দলটির অনুরোধে গতকাল পর্যন্ত কোনো দল সাড়া দেয়নি বলে জানা গেছে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ গতকাল বলেন, ‘সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছে একসঙ্গে বসার। সরকারের আগেই আমরা আহ্বান করেছি। এখনো কারও সাড়া পাইনি আমরা, হয়তো সামনে পাব।’
এর আগে গত রোববার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে কোনো ঝগড়ায় লিপ্ত হতে চায় না। যা-ই করছেন, এবার বন্ধ করুন। আসুন, আমরা একসঙ্গে বসি। দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি।’
আর গতকাল মঙ্গলবার বিদেশ সফর শেষে ঢাকায় ফিরে বিমানবন্দরে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘সরকার অনুরোধ করেছে, এক সপ্তাহ সময়ের ভেতরে রাজনৈতিক দলগুলো বসে যদি একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে, সরকারের জন্য এটা ভালো। আমরাই সবার আগে আমাদের নায়েবে আমিরের মাধ্যমে আহ্বান জানিয়েছি যে আসুন, আমরা খোলামেলা আলোচনা করে একটা সমাধানে পৌঁছাই দেশ ও জাতির স্বার্থে। আমরা আশা করি, অন্যরা আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দেবেন।’
সরকারের কোর্টে বল ঠেলছে এনসিপি
রাজনৈতিক দলগুলোর কোর্টে বল ঠেলে না দিয়ে সরকারকেই জুলাই সনদ আদেশ জারির উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করে এনসিপি। তবে প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনায় যেতে তাঁরা প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। যদিও এখন পর্যন্ত এনসিপি কোনো রাজনৈতিক দলকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয়নি বলে জানা গেছে। আবার এনসিপিকেও কেউ প্রস্তাব দেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপ চলছে। বাস্তবায়ন আদেশ জারির জন্য সরকারের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপ প্রয়োগ করছে এনসিপি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকার বা ঐকমত্য কমিশনকে রেফারি করেছে অনেকে। কিন্তু আমরা দেখি, সরকার ও ঐকমত্য কমিশন সংস্কার বাস্তবায়নের ব্যাপারে রেফারি না। তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে সংস্কারের পক্ষে। যদি তারা সংস্কারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা তাদের ম্যান্ডেট থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে। সরকারের এখন দায়িত্ব হলো ঐকমত্য কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেই প্রস্তাবে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা।’
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘জুলাই সনদের বিষয়ে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তবে প্রয়োজনে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত আছি।’
গণতন্ত্র মঞ্চের ভাবনা
জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অচলাবস্থার জন্য ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারই দায়ী বলে জানিয়েছে ৬টি রাজনৈতিক দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। মঞ্চের নেতারা বলেছেন, এই সংকট সমাধানের দায়িত্বও সরকারকেই নিতে হবে। একই সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চ দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির চেষ্টায় ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘এই সংকট সমাধানের জন্য সরকারের যে উদ্যোগ নেওয়া দরকার ছিল, তা না নিয়ে সরকার অনেকটা মান-অভিমানের মতো অবস্থান নিয়েছে। সরকারের এমন মনোভাব মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। সংস্কার কি হবে না? সংস্কার না হলে নির্বাচন কি হবে? যাদের আমরা পরাজিত করেছি, তারা আবার ফিরে আসবে?’
আর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমদুর রহমান মান্না এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারে না। সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারকে রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করে সমাধানের পথ তৈরি করতে হবে।

ক্ষমতার ধারাবাহিকতা বজায় থাকল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বিএনপিসহ সমমনা বিরোধীদের ভোট বর্জন আর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চোখরাঙানির মধ্যেও ভোট করে বিজয় ছিনিয়ে নিল দলটি। ফলে টানা চতুর্থ জয়ে আবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
০৮ জানুয়ারি ২০২৪
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
১০ ঘণ্টা আগে
সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে...
১১ ঘণ্টা আগে
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটি জানানো হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।
সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সচিব কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
সচিব কমিটি মনে করে, প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল। এত অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না এবং এতে বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশেই প্রস্তাবিত নিয়োগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলে একই শিক্ষককে ২০টির বেশি বিদ্যালয়ে যুগপৎভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর ফলে তাঁর পক্ষে কর্মঘণ্টা ম্যানেজ করা সম্ভব হবে না বলে সচিব কমিটি মনে করে।
পরে অর্থের সংস্থান সাপেক্ষে সব স্কুলে এ রকম নতুন বিষয়ের শিক্ষকের পদ সৃজন ও সেসব পদে নিয়োগদানের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে কমিটি অভিমত ব্যক্ত করেছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটি জানানো হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।
সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ ক্লাস্টারে সমসংখ্যক শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সচিব কমিটির সুপারিশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
সচিব কমিটি মনে করে, প্রকল্পটির পরিকল্পনায় ত্রুটি ছিল। এত অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না এবং এতে বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের অধিকাংশেই প্রস্তাবিত নিয়োগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। ক্লাস্টারভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলে একই শিক্ষককে ২০টির বেশি বিদ্যালয়ে যুগপৎভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এর ফলে তাঁর পক্ষে কর্মঘণ্টা ম্যানেজ করা সম্ভব হবে না বলে সচিব কমিটি মনে করে।
পরে অর্থের সংস্থান সাপেক্ষে সব স্কুলে এ রকম নতুন বিষয়ের শিক্ষকের পদ সৃজন ও সেসব পদে নিয়োগদানের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে কমিটি অভিমত ব্যক্ত করেছে।

ক্ষমতার ধারাবাহিকতা বজায় থাকল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বিএনপিসহ সমমনা বিরোধীদের ভোট বর্জন আর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চোখরাঙানির মধ্যেও ভোট করে বিজয় ছিনিয়ে নিল দলটি। ফলে টানা চতুর্থ জয়ে আবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
০৮ জানুয়ারি ২০২৪
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
৫ ঘণ্টা আগে
সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে...
১১ ঘণ্টা আগে
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে ফুল কোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় তাঁদের পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদোন্নতির জন্য প্যানেলে ছিলেন– অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদের জন্য ৩৪৫ জন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ এবং সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন। সব মিলিয়ে পদোন্নতির প্যানেলে ১ হাজার ১০৩ জন বিচারিক কর্মকর্তার নাম থাকলেও নানা কারণে বেশ কয়েকজনের নাম অনুমোদন হয়নি।
২০২৬ সালের সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডারও ফুল কোর্ট সভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তবে সরকারি ক্যালেন্ডার এখনো প্রকাশিত না হওয়ায় তা অনুমোদিত হয়নি।
সম্প্রতি ১ হাজার ১০৩ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পদোন্নতির প্যানেলে ছিল কয়েকজন বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নাম, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান।
বিচারকদের পদোন্নতি যেভাবে হয়
সব মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির জন্য ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) থাকে। ওই কমিটি পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এক দিনেই প্যানেলের সবার পদোন্নতির জিও জারি করা হয়।
তবে বিচারকদের ক্ষেত্রে প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। বাছাই কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় ওঠে। সভায় অনুমোদন পাওয়ার পর তা আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে ওই প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকে এবং পদ খালি হওয়ার পর সময়ে সময়ে জিও জারি করা হয়।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী জজদের এই পদে চার বছর দায়িত্ব পালনের শর্ত পূরণ করতে হয়। সিনিয়র সহকারী জজদের যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর এবং অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছরের শর্ত পূরণ করতে হয়। তবে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয় না। অনেকেই বছরের পর বছর প্যানেলভুক্ত হয়ে থাকেন।

সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে ফুল কোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় তাঁদের পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদোন্নতির জন্য প্যানেলে ছিলেন– অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদের জন্য ৩৪৫ জন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ এবং সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন। সব মিলিয়ে পদোন্নতির প্যানেলে ১ হাজার ১০৩ জন বিচারিক কর্মকর্তার নাম থাকলেও নানা কারণে বেশ কয়েকজনের নাম অনুমোদন হয়নি।
২০২৬ সালের সুপ্রিম কোর্টের ক্যালেন্ডারও ফুল কোর্ট সভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। তবে সরকারি ক্যালেন্ডার এখনো প্রকাশিত না হওয়ায় তা অনুমোদিত হয়নি।
সম্প্রতি ১ হাজার ১০৩ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পদোন্নতির প্যানেলে ছিল কয়েকজন বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নাম, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান।
বিচারকদের পদোন্নতি যেভাবে হয়
সব মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির জন্য ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) থাকে। ওই কমিটি পদোন্নতির প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে এক দিনেই প্যানেলের সবার পদোন্নতির জিও জারি করা হয়।
তবে বিচারকদের ক্ষেত্রে প্যানেল চূড়ান্ত করার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। বাছাই কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় ওঠে। সভায় অনুমোদন পাওয়ার পর তা আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে ওই প্যানেল আইন মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকে এবং পদ খালি হওয়ার পর সময়ে সময়ে জিও জারি করা হয়।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী জজদের এই পদে চার বছর দায়িত্ব পালনের শর্ত পূরণ করতে হয়। সিনিয়র সহকারী জজদের যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছর এবং অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য দুই বছরের শর্ত পূরণ করতে হয়। তবে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয় না। অনেকেই বছরের পর বছর প্যানেলভুক্ত হয়ে থাকেন।

ক্ষমতার ধারাবাহিকতা বজায় থাকল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বিএনপিসহ সমমনা বিরোধীদের ভোট বর্জন আর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চোখরাঙানির মধ্যেও ভোট করে বিজয় ছিনিয়ে নিল দলটি। ফলে টানা চতুর্থ জয়ে আবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
০৮ জানুয়ারি ২০২৪
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
৫ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
১০ ঘণ্টা আগে
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারীর স্ত্রী নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে ৪৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও ৪৩ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ মঙ্গলবার দুদকের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
দুদক মহাপরিচালক বলেন, অভিযুক্ত নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সন্দেহজনক লেনদেনের পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।
এ ছাড়া ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত নুরজাহান বেগমের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি হিসাবে ৪৩ কোটি ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৮০৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করেছে দুদক।
এ তথ্য আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যাচাই করা হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে এর আগেও অবৈধ সম্পদ অর্জন, ফেনী ও ঢাকায় নামে-বেনামে জমি ও ভবন ক্রয় এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে একাধিক তদন্ত চলছে।
সূত্রটি আরও জানায়, দুদকে পাঠানো সম্পদ বিবরণীতে ঘোষিত তথ্য ও বাস্তব সম্পদের মধ্যে বিশাল অমিল পাওয়া যায়। এর ধারাবাহিকতায় নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ফেনী-২ আসন থেকে টানা তিনবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নিজাম উদ্দিন হাজারী। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দখলদারত্বের অভিযোগ রয়েছে।

ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারীর স্ত্রী নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে ৪৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও ৪৩ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ মঙ্গলবার দুদকের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
দুদক মহাপরিচালক বলেন, অভিযুক্ত নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সন্দেহজনক লেনদেনের পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, নুরজাহান বেগম দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। তবে যাচাই-বাছাইয়ে দেখা যায়, তাঁর আয় ও পারিবারিক ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ মেলে।
এ ছাড়া ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত নুরজাহান বেগমের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি হিসাবে ৪৩ কোটি ৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৮০৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করেছে দুদক।
এ তথ্য আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যাচাই করা হয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে এর আগেও অবৈধ সম্পদ অর্জন, ফেনী ও ঢাকায় নামে-বেনামে জমি ও ভবন ক্রয় এবং বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে একাধিক তদন্ত চলছে।
সূত্রটি আরও জানায়, দুদকে পাঠানো সম্পদ বিবরণীতে ঘোষিত তথ্য ও বাস্তব সম্পদের মধ্যে বিশাল অমিল পাওয়া যায়। এর ধারাবাহিকতায় নুরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ফেনী-২ আসন থেকে টানা তিনবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নিজাম উদ্দিন হাজারী। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দখলদারত্বের অভিযোগ রয়েছে।

ক্ষমতার ধারাবাহিকতা বজায় থাকল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বিএনপিসহ সমমনা বিরোধীদের ভোট বর্জন আর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চোখরাঙানির মধ্যেও ভোট করে বিজয় ছিনিয়ে নিল দলটি। ফলে টানা চতুর্থ জয়ে আবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
০৮ জানুয়ারি ২০২৪
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নিয়ে নিজেদের অনৈক্য-বিভেদ দূর করে সমঝোতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে আজ বুধবার কেটে যাচ্ছে দুই দিন। কিন্তু এ সংকট নিরসনে দলগুলোর মধ্যে কোনো হেলদোল আছে বলে মনে হচ্ছে না।
৫ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে কার্যকর কোনো সুফল বয়ে আনবে না বিধায় এটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে জানানো হয়।
১০ ঘণ্টা আগে
সারা দেশের অধস্তন আদালতের হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত হয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে...
১১ ঘণ্টা আগে