গ্যাস-সংকট চরমে
আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা

দেশে দৈনিক ৪৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে পেট্রোবাংলা দৈনিক ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে। এতে সারা বছরই গ্যাস-সংকটে ভোগে শিল্পকারখানাগুলো। চলমান শীতে সংকট আরও বেড়েছে। গ্যাসের চাপ কমায় রাজধানীর বড় অংশে সারা দিন বাসাবাড়িতে গ্যাস থাকছে না। এতে জ্বলছে না রান্নার চুলা। গ্যাস না পেয়ে ধুঁকছে ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রামসহ প্রধান শিল্পাঞ্চলগুলোর অনেক কারখানা।
সারা দিনে গ্যাস না মেলায় রান্নার কাজ সারতে গলদঘর্ম অবস্থা রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলের গৃহিণীদের। সন্ধ্যার পর গ্যাসের চুলা জ্বললেও সেই আঁচে রান্না করতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে বনশ্রী, মিরপুর, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, বাসাবো, আজিমপুর, কমলাপুর, গোলাপবাগ, গোপীবাগ, মানিকনগর, ওয়ারী, পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর বড় একটি এলাকার বাসিন্দাদের। এসব এলাকায় গ্যাসের চাপ অনেক কম।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মো. এনায়েত করিম বলেন, গ্যাস না থাকায় বাসায় রান্নার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। চুলায় এত কম চাপ থাকে যে রান্নার কাজ শেষ করা যায় না। একই রকম অভিজ্ঞতা পশ্চিম ধানমন্ডির বাসিন্দা কাজী রাকিবউদ্দীনের। তিনি বলেন, বাসায় রান্না হচ্ছে না। কারণ, গ্যাসের চাপ না থাকায় চুলা জ্বলছে না।
রাজধানীর কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা মো. শফিউল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সারা দিন গ্যাস আসে না। রাতে চুলা যতটুকু জ্বলে সেই আঁচে রান্না করতে অনেক সময় লাগে। হোটেল থেকে কেনা খাবারই এখন ভরসা।
সংকট সমাধান কবে নাগাদ হবে—জানতে চাইলে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিতাস গ্যাস এলাকায় ২৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। পেট্রোবাংলা আমাদের এই চাহিদার বিপরীতে ১৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস দিত। সেটা এই শীতে নেমে এসেছে ১৪০ কোটি ঘনফুটে। যদি গ্যাসের উৎপাদন না বাড়ানো যায়, তাহলে গ্যাস-সংকটের স্থায়ী সমাধান হবে না।’
ধুঁকছে শিল্পকারখানা
দেশের শিল্পকারখানায় গ্যাসের সংকট অনেক দিন ধরে। বড় তদবির না হলে শিল্পকারখানায় গ্যাস-সংযোগ মেলে না। আর চালু থাকা কলকারখানায় গ্যাসের চাপও ঠিক নেই। জ্বালানি সংকটের কারণে বেশির ভাগ কারখানা মাত্র ৩০ শতাংশ সক্ষমতা নিয়ে চলছে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে গ্যাস-সংকটে নাকাল বস্ত্র খাতের কারখানাগুলো। এখন সংকট আরও বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিস্থিতি খারাপ নারায়ণগঞ্জের ভুলতা, গাউছিয়া, রূপগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ শহর এলাকার কারখানাগুলোর। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, গাজীপুর, ঢাকার সাভার, চট্টগ্রাম, নরসিংদীসহ দেশের শিল্পাঞ্চলগুলোতে এই সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে বস্ত্র খাতে বেশি গ্যাস ব্যবহৃত হয়। বস্ত্র কারখানায় বাস্প তৈরিতে গ্যাসের ব্যবহার করা হয়। কারখানায় গ্যাসের চাপ থাকার কথা অন্তত ১৫ পিএসআই (পাউন্ড পার স্কয়ার ইঞ্চি), সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ১ থেকে ২ পিএসআই। এত কম চাপে জেনারেটর ও বয়লার চালানো যাচ্ছে না। সে কারণে বস্ত্র কারখানাগুলো বন্ধ থাকছে। এর বিকল্প হিসেবে কোনো কোনো কারখানা ডিজেল জেনারেটর দিয়ে চালু রেখেছে। এতে খরচ অনেক বেশি পড়ে যাচ্ছে। বাড়তি খরচের কারণে প্রতিযোগিতামূলক এই শিল্পে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
বস্ত্র কারখানার মালিকেরা বলছেন, এই খাতের কারখানাগুলোতে ব্যবহৃত গ্যাসের ৭৫ শতাংশই বাষ্প তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়, বাকিটা বিদ্যুৎ উৎপাদনে। গ্যাস-সংকটের কারণে কারখানা চালু করা যাচ্ছে না। আর এ কারণে নিটের রপ্তানি পোশাকের উৎপাদন অন্তত ৪০ শতাংশ কমেছে।
ঢাকার পাশেই গাজীপুরে এখন তৈরি পোশাকশিল্পের বড় হাব। এই জেলার বোর্ডবাজার, বাসন সড়ক, জয়দেবপুর, কড্ডা, কোনাবাড়ী, কাশিমপুর ও কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর, মৌচাক, কালিয়াকৈর বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস-সংকট রয়েছে।
চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) চট্টগ্রাম নগর, নয়টি উপজেলা ও রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পেপার মিলে গ্যাস সরবরাহ করে। কোম্পানিটির গ্রাহক সংযোগ আছে ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা, আগ্রাবাদ, চান্দগাঁও, বায়েজিদ বাকলিয়া, চকবাজার, চাক্তাই, বহদ্দারহাট, জামালখান, কাজীর দেউড়ি, আন্দরকিল্লা এলাকায় গ্যাসের চাপ না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
সংকটের মূলে এলএনজিনির্ভরতা
গ্যাস-সংকটের সমাধানে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের ওপর জোর না দিয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ওপর জোর দিয়েছিল বিগত সরকার। দুটি এলএনজি টার্মিনাল দিয়ে দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছিল। এতে চাপ বাড়ে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর। এলএনজিনির্ভরতা সংকট আরও বাড়িয়েছে জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলএনজির পক্ষে প্রচার চালাতে গিয়ে বলা হয়েছিল, দেশে গ্যাস নেই। অথচ দেশের স্থলভাগে মাত্র ১০ শতাংশ এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধান হয়েছে, ৯০ শতাংশ এলাকায় অনুসন্ধান করা হয়নি। অনুসন্ধান বাকি থাকা এলাকায় বড় গ্যাসের সন্ধান মিলতে পারে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে কাজ করে এমন তিনটি বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষা বলেছে, বাংলাদেশে অনাবিষ্কৃত গ্যাসের মজুত ৩২ থেকে ৪২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। দেশে প্রতিবছর গ্যাসের চাহিদা ১ টিসিএফ। এ হিসাবে অন্তত ৩০ বছরের গ্যাসের মজুত রয়েছে দেশে। এই বিপুল পরিমাণ গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা না করেই কয়েক বছর ধরে বলা হচ্ছে দেশে আর গ্যাস নেই, বিদেশ থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিই একমাত্র ভরসা।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, দেশের মাত্র ১০ ভাগ এলাকা অনুসন্ধানের আওতায় এসেছে, বাকি এলাকায় অনুসন্ধান না করেই যারা বলছেন গ্যাস নেই। বেঙ্গল বেসিন বা ব-দ্বীপ এলাকার ত্রিমাত্রিক জরিপ বলছে, সমতলে প্রচুর পরিমাণ গ্যাস রয়েছে। তিন পার্বত্য জেলা ও সাগর ভাগে নিশ্চিত গ্যাস আছে। এসব গ্যাস তোলার বাস্তবসম্মত কোনো পদক্ষেপ নেই। অথচ এলএনজি কেনার হিড়িক পড়েছে। দেশীয় গ্যাস উত্তোলনের ওপর বড় নজর দেওয়ার পরামর্শ এই বিশেষজ্ঞের।
এলএনজিনির্ভরতায় কার লাভ
গত সরকার দেশীয় গ্যাস উৎপাদনের চেয়ে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির দিকে বেশি নজর দিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, অ্যাকসিলারেট এনার্জি ২০১৮ সালের মে মাসে বাংলাদেশে সাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল সেবা শুরু করে। এই কাজটি তারা পায় বিনা দরপত্রে বিশেষ আইনে। সেবা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে অ্যাকসিলারেট এনার্জিকে প্রতিবছর প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা রয়েছে সরকারের। সে হিসাবে ১৫ বছরে এ বাবদ দিতে হবে ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। ১৩ বছরের পুরোনো এলএনজি জাহাজ দিয়ে এই সেবা শুরু করায় শুরুতেই প্রশ্ন উঠেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, জাহাজ না কিনে ভাড়া নিয়ে মূলত সরকার বিদেশি কোম্পানিকে বিশেষ সেবা দিচ্ছে। অ্যাকসিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ থেকে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিন বছরে ফিক্সড কস্ট (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) পেয়েছে ২৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪৯ হাজার ডলার।
২০১৭ সালে সামিট গ্রুপ বিনা দরপত্রে এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের অনুমতি পায়। এরপর তারা টার্মিনালটি অ্যাকসিলারেট এনার্জিকে দিয়ে দেয়। ২০১৯ সালের এপ্রিলে এই টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু করে সামিট। প্রতিবছর সামিট গ্রুপ সরকারের কাছ থেকে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা এলএনজির টার্মিনাল ভাড়া বাবদ নেয়। এর একটি অংশ তারা অ্যাকসিলারেট এনার্জিকে দেয় জাহাজভাড়ার অংশ হিসেবে। এ ছাড়া সরকারের সঙ্গে অ্যাকসিলারেট এনার্জির থেকে ১৫ বছর মেয়াদে এলএনজি আমদানির চুক্তিও রয়েছে।

দেশে দৈনিক ৪৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে পেট্রোবাংলা দৈনিক ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে। এতে সারা বছরই গ্যাস-সংকটে ভোগে শিল্পকারখানাগুলো। চলমান শীতে সংকট আরও বেড়েছে। গ্যাসের চাপ কমায় রাজধানীর বড় অংশে সারা দিন বাসাবাড়িতে গ্যাস থাকছে না। এতে জ্বলছে না রান্নার চুলা। গ্যাস না পেয়ে ধুঁকছে ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রামসহ প্রধান শিল্পাঞ্চলগুলোর অনেক কারখানা।
সারা দিনে গ্যাস না মেলায় রান্নার কাজ সারতে গলদঘর্ম অবস্থা রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলের গৃহিণীদের। সন্ধ্যার পর গ্যাসের চুলা জ্বললেও সেই আঁচে রান্না করতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে বনশ্রী, মিরপুর, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, বাসাবো, আজিমপুর, কমলাপুর, গোলাপবাগ, গোপীবাগ, মানিকনগর, ওয়ারী, পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর বড় একটি এলাকার বাসিন্দাদের। এসব এলাকায় গ্যাসের চাপ অনেক কম।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মো. এনায়েত করিম বলেন, গ্যাস না থাকায় বাসায় রান্নার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। চুলায় এত কম চাপ থাকে যে রান্নার কাজ শেষ করা যায় না। একই রকম অভিজ্ঞতা পশ্চিম ধানমন্ডির বাসিন্দা কাজী রাকিবউদ্দীনের। তিনি বলেন, বাসায় রান্না হচ্ছে না। কারণ, গ্যাসের চাপ না থাকায় চুলা জ্বলছে না।
রাজধানীর কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা মো. শফিউল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সারা দিন গ্যাস আসে না। রাতে চুলা যতটুকু জ্বলে সেই আঁচে রান্না করতে অনেক সময় লাগে। হোটেল থেকে কেনা খাবারই এখন ভরসা।
সংকট সমাধান কবে নাগাদ হবে—জানতে চাইলে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিতাস গ্যাস এলাকায় ২৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। পেট্রোবাংলা আমাদের এই চাহিদার বিপরীতে ১৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস দিত। সেটা এই শীতে নেমে এসেছে ১৪০ কোটি ঘনফুটে। যদি গ্যাসের উৎপাদন না বাড়ানো যায়, তাহলে গ্যাস-সংকটের স্থায়ী সমাধান হবে না।’
ধুঁকছে শিল্পকারখানা
দেশের শিল্পকারখানায় গ্যাসের সংকট অনেক দিন ধরে। বড় তদবির না হলে শিল্পকারখানায় গ্যাস-সংযোগ মেলে না। আর চালু থাকা কলকারখানায় গ্যাসের চাপও ঠিক নেই। জ্বালানি সংকটের কারণে বেশির ভাগ কারখানা মাত্র ৩০ শতাংশ সক্ষমতা নিয়ে চলছে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে গ্যাস-সংকটে নাকাল বস্ত্র খাতের কারখানাগুলো। এখন সংকট আরও বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিস্থিতি খারাপ নারায়ণগঞ্জের ভুলতা, গাউছিয়া, রূপগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ শহর এলাকার কারখানাগুলোর। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, গাজীপুর, ঢাকার সাভার, চট্টগ্রাম, নরসিংদীসহ দেশের শিল্পাঞ্চলগুলোতে এই সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে বস্ত্র খাতে বেশি গ্যাস ব্যবহৃত হয়। বস্ত্র কারখানায় বাস্প তৈরিতে গ্যাসের ব্যবহার করা হয়। কারখানায় গ্যাসের চাপ থাকার কথা অন্তত ১৫ পিএসআই (পাউন্ড পার স্কয়ার ইঞ্চি), সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ১ থেকে ২ পিএসআই। এত কম চাপে জেনারেটর ও বয়লার চালানো যাচ্ছে না। সে কারণে বস্ত্র কারখানাগুলো বন্ধ থাকছে। এর বিকল্প হিসেবে কোনো কোনো কারখানা ডিজেল জেনারেটর দিয়ে চালু রেখেছে। এতে খরচ অনেক বেশি পড়ে যাচ্ছে। বাড়তি খরচের কারণে প্রতিযোগিতামূলক এই শিল্পে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
বস্ত্র কারখানার মালিকেরা বলছেন, এই খাতের কারখানাগুলোতে ব্যবহৃত গ্যাসের ৭৫ শতাংশই বাষ্প তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়, বাকিটা বিদ্যুৎ উৎপাদনে। গ্যাস-সংকটের কারণে কারখানা চালু করা যাচ্ছে না। আর এ কারণে নিটের রপ্তানি পোশাকের উৎপাদন অন্তত ৪০ শতাংশ কমেছে।
ঢাকার পাশেই গাজীপুরে এখন তৈরি পোশাকশিল্পের বড় হাব। এই জেলার বোর্ডবাজার, বাসন সড়ক, জয়দেবপুর, কড্ডা, কোনাবাড়ী, কাশিমপুর ও কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর, মৌচাক, কালিয়াকৈর বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস-সংকট রয়েছে।
চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) চট্টগ্রাম নগর, নয়টি উপজেলা ও রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পেপার মিলে গ্যাস সরবরাহ করে। কোম্পানিটির গ্রাহক সংযোগ আছে ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা, আগ্রাবাদ, চান্দগাঁও, বায়েজিদ বাকলিয়া, চকবাজার, চাক্তাই, বহদ্দারহাট, জামালখান, কাজীর দেউড়ি, আন্দরকিল্লা এলাকায় গ্যাসের চাপ না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
সংকটের মূলে এলএনজিনির্ভরতা
গ্যাস-সংকটের সমাধানে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের ওপর জোর না দিয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ওপর জোর দিয়েছিল বিগত সরকার। দুটি এলএনজি টার্মিনাল দিয়ে দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছিল। এতে চাপ বাড়ে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর। এলএনজিনির্ভরতা সংকট আরও বাড়িয়েছে জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলএনজির পক্ষে প্রচার চালাতে গিয়ে বলা হয়েছিল, দেশে গ্যাস নেই। অথচ দেশের স্থলভাগে মাত্র ১০ শতাংশ এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধান হয়েছে, ৯০ শতাংশ এলাকায় অনুসন্ধান করা হয়নি। অনুসন্ধান বাকি থাকা এলাকায় বড় গ্যাসের সন্ধান মিলতে পারে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে কাজ করে এমন তিনটি বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষা বলেছে, বাংলাদেশে অনাবিষ্কৃত গ্যাসের মজুত ৩২ থেকে ৪২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। দেশে প্রতিবছর গ্যাসের চাহিদা ১ টিসিএফ। এ হিসাবে অন্তত ৩০ বছরের গ্যাসের মজুত রয়েছে দেশে। এই বিপুল পরিমাণ গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা না করেই কয়েক বছর ধরে বলা হচ্ছে দেশে আর গ্যাস নেই, বিদেশ থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিই একমাত্র ভরসা।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, দেশের মাত্র ১০ ভাগ এলাকা অনুসন্ধানের আওতায় এসেছে, বাকি এলাকায় অনুসন্ধান না করেই যারা বলছেন গ্যাস নেই। বেঙ্গল বেসিন বা ব-দ্বীপ এলাকার ত্রিমাত্রিক জরিপ বলছে, সমতলে প্রচুর পরিমাণ গ্যাস রয়েছে। তিন পার্বত্য জেলা ও সাগর ভাগে নিশ্চিত গ্যাস আছে। এসব গ্যাস তোলার বাস্তবসম্মত কোনো পদক্ষেপ নেই। অথচ এলএনজি কেনার হিড়িক পড়েছে। দেশীয় গ্যাস উত্তোলনের ওপর বড় নজর দেওয়ার পরামর্শ এই বিশেষজ্ঞের।
এলএনজিনির্ভরতায় কার লাভ
গত সরকার দেশীয় গ্যাস উৎপাদনের চেয়ে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির দিকে বেশি নজর দিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, অ্যাকসিলারেট এনার্জি ২০১৮ সালের মে মাসে বাংলাদেশে সাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল সেবা শুরু করে। এই কাজটি তারা পায় বিনা দরপত্রে বিশেষ আইনে। সেবা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে অ্যাকসিলারেট এনার্জিকে প্রতিবছর প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা রয়েছে সরকারের। সে হিসাবে ১৫ বছরে এ বাবদ দিতে হবে ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। ১৩ বছরের পুরোনো এলএনজি জাহাজ দিয়ে এই সেবা শুরু করায় শুরুতেই প্রশ্ন উঠেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, জাহাজ না কিনে ভাড়া নিয়ে মূলত সরকার বিদেশি কোম্পানিকে বিশেষ সেবা দিচ্ছে। অ্যাকসিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ থেকে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিন বছরে ফিক্সড কস্ট (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) পেয়েছে ২৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪৯ হাজার ডলার।
২০১৭ সালে সামিট গ্রুপ বিনা দরপত্রে এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের অনুমতি পায়। এরপর তারা টার্মিনালটি অ্যাকসিলারেট এনার্জিকে দিয়ে দেয়। ২০১৯ সালের এপ্রিলে এই টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু করে সামিট। প্রতিবছর সামিট গ্রুপ সরকারের কাছ থেকে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা এলএনজির টার্মিনাল ভাড়া বাবদ নেয়। এর একটি অংশ তারা অ্যাকসিলারেট এনার্জিকে দেয় জাহাজভাড়ার অংশ হিসেবে। এ ছাড়া সরকারের সঙ্গে অ্যাকসিলারেট এনার্জির থেকে ১৫ বছর মেয়াদে এলএনজি আমদানির চুক্তিও রয়েছে।
গ্যাস-সংকট চরমে
আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা

দেশে দৈনিক ৪৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে পেট্রোবাংলা দৈনিক ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে। এতে সারা বছরই গ্যাস-সংকটে ভোগে শিল্পকারখানাগুলো। চলমান শীতে সংকট আরও বেড়েছে। গ্যাসের চাপ কমায় রাজধানীর বড় অংশে সারা দিন বাসাবাড়িতে গ্যাস থাকছে না। এতে জ্বলছে না রান্নার চুলা। গ্যাস না পেয়ে ধুঁকছে ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রামসহ প্রধান শিল্পাঞ্চলগুলোর অনেক কারখানা।
সারা দিনে গ্যাস না মেলায় রান্নার কাজ সারতে গলদঘর্ম অবস্থা রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলের গৃহিণীদের। সন্ধ্যার পর গ্যাসের চুলা জ্বললেও সেই আঁচে রান্না করতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে বনশ্রী, মিরপুর, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, বাসাবো, আজিমপুর, কমলাপুর, গোলাপবাগ, গোপীবাগ, মানিকনগর, ওয়ারী, পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর বড় একটি এলাকার বাসিন্দাদের। এসব এলাকায় গ্যাসের চাপ অনেক কম।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মো. এনায়েত করিম বলেন, গ্যাস না থাকায় বাসায় রান্নার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। চুলায় এত কম চাপ থাকে যে রান্নার কাজ শেষ করা যায় না। একই রকম অভিজ্ঞতা পশ্চিম ধানমন্ডির বাসিন্দা কাজী রাকিবউদ্দীনের। তিনি বলেন, বাসায় রান্না হচ্ছে না। কারণ, গ্যাসের চাপ না থাকায় চুলা জ্বলছে না।
রাজধানীর কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা মো. শফিউল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সারা দিন গ্যাস আসে না। রাতে চুলা যতটুকু জ্বলে সেই আঁচে রান্না করতে অনেক সময় লাগে। হোটেল থেকে কেনা খাবারই এখন ভরসা।
সংকট সমাধান কবে নাগাদ হবে—জানতে চাইলে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিতাস গ্যাস এলাকায় ২৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। পেট্রোবাংলা আমাদের এই চাহিদার বিপরীতে ১৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস দিত। সেটা এই শীতে নেমে এসেছে ১৪০ কোটি ঘনফুটে। যদি গ্যাসের উৎপাদন না বাড়ানো যায়, তাহলে গ্যাস-সংকটের স্থায়ী সমাধান হবে না।’
ধুঁকছে শিল্পকারখানা
দেশের শিল্পকারখানায় গ্যাসের সংকট অনেক দিন ধরে। বড় তদবির না হলে শিল্পকারখানায় গ্যাস-সংযোগ মেলে না। আর চালু থাকা কলকারখানায় গ্যাসের চাপও ঠিক নেই। জ্বালানি সংকটের কারণে বেশির ভাগ কারখানা মাত্র ৩০ শতাংশ সক্ষমতা নিয়ে চলছে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে গ্যাস-সংকটে নাকাল বস্ত্র খাতের কারখানাগুলো। এখন সংকট আরও বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিস্থিতি খারাপ নারায়ণগঞ্জের ভুলতা, গাউছিয়া, রূপগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ শহর এলাকার কারখানাগুলোর। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, গাজীপুর, ঢাকার সাভার, চট্টগ্রাম, নরসিংদীসহ দেশের শিল্পাঞ্চলগুলোতে এই সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে বস্ত্র খাতে বেশি গ্যাস ব্যবহৃত হয়। বস্ত্র কারখানায় বাস্প তৈরিতে গ্যাসের ব্যবহার করা হয়। কারখানায় গ্যাসের চাপ থাকার কথা অন্তত ১৫ পিএসআই (পাউন্ড পার স্কয়ার ইঞ্চি), সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ১ থেকে ২ পিএসআই। এত কম চাপে জেনারেটর ও বয়লার চালানো যাচ্ছে না। সে কারণে বস্ত্র কারখানাগুলো বন্ধ থাকছে। এর বিকল্প হিসেবে কোনো কোনো কারখানা ডিজেল জেনারেটর দিয়ে চালু রেখেছে। এতে খরচ অনেক বেশি পড়ে যাচ্ছে। বাড়তি খরচের কারণে প্রতিযোগিতামূলক এই শিল্পে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
বস্ত্র কারখানার মালিকেরা বলছেন, এই খাতের কারখানাগুলোতে ব্যবহৃত গ্যাসের ৭৫ শতাংশই বাষ্প তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়, বাকিটা বিদ্যুৎ উৎপাদনে। গ্যাস-সংকটের কারণে কারখানা চালু করা যাচ্ছে না। আর এ কারণে নিটের রপ্তানি পোশাকের উৎপাদন অন্তত ৪০ শতাংশ কমেছে।
ঢাকার পাশেই গাজীপুরে এখন তৈরি পোশাকশিল্পের বড় হাব। এই জেলার বোর্ডবাজার, বাসন সড়ক, জয়দেবপুর, কড্ডা, কোনাবাড়ী, কাশিমপুর ও কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর, মৌচাক, কালিয়াকৈর বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস-সংকট রয়েছে।
চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) চট্টগ্রাম নগর, নয়টি উপজেলা ও রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পেপার মিলে গ্যাস সরবরাহ করে। কোম্পানিটির গ্রাহক সংযোগ আছে ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা, আগ্রাবাদ, চান্দগাঁও, বায়েজিদ বাকলিয়া, চকবাজার, চাক্তাই, বহদ্দারহাট, জামালখান, কাজীর দেউড়ি, আন্দরকিল্লা এলাকায় গ্যাসের চাপ না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
সংকটের মূলে এলএনজিনির্ভরতা
গ্যাস-সংকটের সমাধানে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের ওপর জোর না দিয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ওপর জোর দিয়েছিল বিগত সরকার। দুটি এলএনজি টার্মিনাল দিয়ে দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছিল। এতে চাপ বাড়ে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর। এলএনজিনির্ভরতা সংকট আরও বাড়িয়েছে জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলএনজির পক্ষে প্রচার চালাতে গিয়ে বলা হয়েছিল, দেশে গ্যাস নেই। অথচ দেশের স্থলভাগে মাত্র ১০ শতাংশ এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধান হয়েছে, ৯০ শতাংশ এলাকায় অনুসন্ধান করা হয়নি। অনুসন্ধান বাকি থাকা এলাকায় বড় গ্যাসের সন্ধান মিলতে পারে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে কাজ করে এমন তিনটি বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষা বলেছে, বাংলাদেশে অনাবিষ্কৃত গ্যাসের মজুত ৩২ থেকে ৪২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। দেশে প্রতিবছর গ্যাসের চাহিদা ১ টিসিএফ। এ হিসাবে অন্তত ৩০ বছরের গ্যাসের মজুত রয়েছে দেশে। এই বিপুল পরিমাণ গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা না করেই কয়েক বছর ধরে বলা হচ্ছে দেশে আর গ্যাস নেই, বিদেশ থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিই একমাত্র ভরসা।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, দেশের মাত্র ১০ ভাগ এলাকা অনুসন্ধানের আওতায় এসেছে, বাকি এলাকায় অনুসন্ধান না করেই যারা বলছেন গ্যাস নেই। বেঙ্গল বেসিন বা ব-দ্বীপ এলাকার ত্রিমাত্রিক জরিপ বলছে, সমতলে প্রচুর পরিমাণ গ্যাস রয়েছে। তিন পার্বত্য জেলা ও সাগর ভাগে নিশ্চিত গ্যাস আছে। এসব গ্যাস তোলার বাস্তবসম্মত কোনো পদক্ষেপ নেই। অথচ এলএনজি কেনার হিড়িক পড়েছে। দেশীয় গ্যাস উত্তোলনের ওপর বড় নজর দেওয়ার পরামর্শ এই বিশেষজ্ঞের।
এলএনজিনির্ভরতায় কার লাভ
গত সরকার দেশীয় গ্যাস উৎপাদনের চেয়ে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির দিকে বেশি নজর দিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, অ্যাকসিলারেট এনার্জি ২০১৮ সালের মে মাসে বাংলাদেশে সাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল সেবা শুরু করে। এই কাজটি তারা পায় বিনা দরপত্রে বিশেষ আইনে। সেবা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে অ্যাকসিলারেট এনার্জিকে প্রতিবছর প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা রয়েছে সরকারের। সে হিসাবে ১৫ বছরে এ বাবদ দিতে হবে ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। ১৩ বছরের পুরোনো এলএনজি জাহাজ দিয়ে এই সেবা শুরু করায় শুরুতেই প্রশ্ন উঠেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, জাহাজ না কিনে ভাড়া নিয়ে মূলত সরকার বিদেশি কোম্পানিকে বিশেষ সেবা দিচ্ছে। অ্যাকসিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ থেকে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিন বছরে ফিক্সড কস্ট (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) পেয়েছে ২৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪৯ হাজার ডলার।
২০১৭ সালে সামিট গ্রুপ বিনা দরপত্রে এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের অনুমতি পায়। এরপর তারা টার্মিনালটি অ্যাকসিলারেট এনার্জিকে দিয়ে দেয়। ২০১৯ সালের এপ্রিলে এই টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু করে সামিট। প্রতিবছর সামিট গ্রুপ সরকারের কাছ থেকে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা এলএনজির টার্মিনাল ভাড়া বাবদ নেয়। এর একটি অংশ তারা অ্যাকসিলারেট এনার্জিকে দেয় জাহাজভাড়ার অংশ হিসেবে। এ ছাড়া সরকারের সঙ্গে অ্যাকসিলারেট এনার্জির থেকে ১৫ বছর মেয়াদে এলএনজি আমদানির চুক্তিও রয়েছে।

দেশে দৈনিক ৪৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে পেট্রোবাংলা দৈনিক ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে। এতে সারা বছরই গ্যাস-সংকটে ভোগে শিল্পকারখানাগুলো। চলমান শীতে সংকট আরও বেড়েছে। গ্যাসের চাপ কমায় রাজধানীর বড় অংশে সারা দিন বাসাবাড়িতে গ্যাস থাকছে না। এতে জ্বলছে না রান্নার চুলা। গ্যাস না পেয়ে ধুঁকছে ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রামসহ প্রধান শিল্পাঞ্চলগুলোর অনেক কারখানা।
সারা দিনে গ্যাস না মেলায় রান্নার কাজ সারতে গলদঘর্ম অবস্থা রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলের গৃহিণীদের। সন্ধ্যার পর গ্যাসের চুলা জ্বললেও সেই আঁচে রান্না করতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে বনশ্রী, মিরপুর, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, বাসাবো, আজিমপুর, কমলাপুর, গোলাপবাগ, গোপীবাগ, মানিকনগর, ওয়ারী, পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর বড় একটি এলাকার বাসিন্দাদের। এসব এলাকায় গ্যাসের চাপ অনেক কম।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মো. এনায়েত করিম বলেন, গ্যাস না থাকায় বাসায় রান্নার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। চুলায় এত কম চাপ থাকে যে রান্নার কাজ শেষ করা যায় না। একই রকম অভিজ্ঞতা পশ্চিম ধানমন্ডির বাসিন্দা কাজী রাকিবউদ্দীনের। তিনি বলেন, বাসায় রান্না হচ্ছে না। কারণ, গ্যাসের চাপ না থাকায় চুলা জ্বলছে না।
রাজধানীর কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা মো. শফিউল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সারা দিন গ্যাস আসে না। রাতে চুলা যতটুকু জ্বলে সেই আঁচে রান্না করতে অনেক সময় লাগে। হোটেল থেকে কেনা খাবারই এখন ভরসা।
সংকট সমাধান কবে নাগাদ হবে—জানতে চাইলে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তিতাস গ্যাস এলাকায় ২৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। পেট্রোবাংলা আমাদের এই চাহিদার বিপরীতে ১৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস দিত। সেটা এই শীতে নেমে এসেছে ১৪০ কোটি ঘনফুটে। যদি গ্যাসের উৎপাদন না বাড়ানো যায়, তাহলে গ্যাস-সংকটের স্থায়ী সমাধান হবে না।’
ধুঁকছে শিল্পকারখানা
দেশের শিল্পকারখানায় গ্যাসের সংকট অনেক দিন ধরে। বড় তদবির না হলে শিল্পকারখানায় গ্যাস-সংযোগ মেলে না। আর চালু থাকা কলকারখানায় গ্যাসের চাপও ঠিক নেই। জ্বালানি সংকটের কারণে বেশির ভাগ কারখানা মাত্র ৩০ শতাংশ সক্ষমতা নিয়ে চলছে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে গ্যাস-সংকটে নাকাল বস্ত্র খাতের কারখানাগুলো। এখন সংকট আরও বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিস্থিতি খারাপ নারায়ণগঞ্জের ভুলতা, গাউছিয়া, রূপগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ শহর এলাকার কারখানাগুলোর। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, গাজীপুর, ঢাকার সাভার, চট্টগ্রাম, নরসিংদীসহ দেশের শিল্পাঞ্চলগুলোতে এই সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে বস্ত্র খাতে বেশি গ্যাস ব্যবহৃত হয়। বস্ত্র কারখানায় বাস্প তৈরিতে গ্যাসের ব্যবহার করা হয়। কারখানায় গ্যাসের চাপ থাকার কথা অন্তত ১৫ পিএসআই (পাউন্ড পার স্কয়ার ইঞ্চি), সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ১ থেকে ২ পিএসআই। এত কম চাপে জেনারেটর ও বয়লার চালানো যাচ্ছে না। সে কারণে বস্ত্র কারখানাগুলো বন্ধ থাকছে। এর বিকল্প হিসেবে কোনো কোনো কারখানা ডিজেল জেনারেটর দিয়ে চালু রেখেছে। এতে খরচ অনেক বেশি পড়ে যাচ্ছে। বাড়তি খরচের কারণে প্রতিযোগিতামূলক এই শিল্পে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
বস্ত্র কারখানার মালিকেরা বলছেন, এই খাতের কারখানাগুলোতে ব্যবহৃত গ্যাসের ৭৫ শতাংশই বাষ্প তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়, বাকিটা বিদ্যুৎ উৎপাদনে। গ্যাস-সংকটের কারণে কারখানা চালু করা যাচ্ছে না। আর এ কারণে নিটের রপ্তানি পোশাকের উৎপাদন অন্তত ৪০ শতাংশ কমেছে।
ঢাকার পাশেই গাজীপুরে এখন তৈরি পোশাকশিল্পের বড় হাব। এই জেলার বোর্ডবাজার, বাসন সড়ক, জয়দেবপুর, কড্ডা, কোনাবাড়ী, কাশিমপুর ও কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর, মৌচাক, কালিয়াকৈর বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস-সংকট রয়েছে।
চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) চট্টগ্রাম নগর, নয়টি উপজেলা ও রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পেপার মিলে গ্যাস সরবরাহ করে। কোম্পানিটির গ্রাহক সংযোগ আছে ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা, আগ্রাবাদ, চান্দগাঁও, বায়েজিদ বাকলিয়া, চকবাজার, চাক্তাই, বহদ্দারহাট, জামালখান, কাজীর দেউড়ি, আন্দরকিল্লা এলাকায় গ্যাসের চাপ না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
সংকটের মূলে এলএনজিনির্ভরতা
গ্যাস-সংকটের সমাধানে দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের ওপর জোর না দিয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ওপর জোর দিয়েছিল বিগত সরকার। দুটি এলএনজি টার্মিনাল দিয়ে দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছিল। এতে চাপ বাড়ে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর। এলএনজিনির্ভরতা সংকট আরও বাড়িয়েছে জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলএনজির পক্ষে প্রচার চালাতে গিয়ে বলা হয়েছিল, দেশে গ্যাস নেই। অথচ দেশের স্থলভাগে মাত্র ১০ শতাংশ এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধান হয়েছে, ৯০ শতাংশ এলাকায় অনুসন্ধান করা হয়নি। অনুসন্ধান বাকি থাকা এলাকায় বড় গ্যাসের সন্ধান মিলতে পারে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে কাজ করে এমন তিনটি বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষা বলেছে, বাংলাদেশে অনাবিষ্কৃত গ্যাসের মজুত ৩২ থেকে ৪২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ)। দেশে প্রতিবছর গ্যাসের চাহিদা ১ টিসিএফ। এ হিসাবে অন্তত ৩০ বছরের গ্যাসের মজুত রয়েছে দেশে। এই বিপুল পরিমাণ গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা না করেই কয়েক বছর ধরে বলা হচ্ছে দেশে আর গ্যাস নেই, বিদেশ থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিই একমাত্র ভরসা।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, দেশের মাত্র ১০ ভাগ এলাকা অনুসন্ধানের আওতায় এসেছে, বাকি এলাকায় অনুসন্ধান না করেই যারা বলছেন গ্যাস নেই। বেঙ্গল বেসিন বা ব-দ্বীপ এলাকার ত্রিমাত্রিক জরিপ বলছে, সমতলে প্রচুর পরিমাণ গ্যাস রয়েছে। তিন পার্বত্য জেলা ও সাগর ভাগে নিশ্চিত গ্যাস আছে। এসব গ্যাস তোলার বাস্তবসম্মত কোনো পদক্ষেপ নেই। অথচ এলএনজি কেনার হিড়িক পড়েছে। দেশীয় গ্যাস উত্তোলনের ওপর বড় নজর দেওয়ার পরামর্শ এই বিশেষজ্ঞের।
এলএনজিনির্ভরতায় কার লাভ
গত সরকার দেশীয় গ্যাস উৎপাদনের চেয়ে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির দিকে বেশি নজর দিয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, অ্যাকসিলারেট এনার্জি ২০১৮ সালের মে মাসে বাংলাদেশে সাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল সেবা শুরু করে। এই কাজটি তারা পায় বিনা দরপত্রে বিশেষ আইনে। সেবা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে অ্যাকসিলারেট এনার্জিকে প্রতিবছর প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা রয়েছে সরকারের। সে হিসাবে ১৫ বছরে এ বাবদ দিতে হবে ৪৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। ১৩ বছরের পুরোনো এলএনজি জাহাজ দিয়ে এই সেবা শুরু করায় শুরুতেই প্রশ্ন উঠেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, জাহাজ না কিনে ভাড়া নিয়ে মূলত সরকার বিদেশি কোম্পানিকে বিশেষ সেবা দিচ্ছে। অ্যাকসিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ থেকে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিন বছরে ফিক্সড কস্ট (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) পেয়েছে ২৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪৯ হাজার ডলার।
২০১৭ সালে সামিট গ্রুপ বিনা দরপত্রে এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের অনুমতি পায়। এরপর তারা টার্মিনালটি অ্যাকসিলারেট এনার্জিকে দিয়ে দেয়। ২০১৯ সালের এপ্রিলে এই টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু করে সামিট। প্রতিবছর সামিট গ্রুপ সরকারের কাছ থেকে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা এলএনজির টার্মিনাল ভাড়া বাবদ নেয়। এর একটি অংশ তারা অ্যাকসিলারেট এনার্জিকে দেয় জাহাজভাড়ার অংশ হিসেবে। এ ছাড়া সরকারের সঙ্গে অ্যাকসিলারেট এনার্জির থেকে ১৫ বছর মেয়াদে এলএনজি আমদানির চুক্তিও রয়েছে।

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি চলতি নভেম্বরেই সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেনাকাটাও প্রায় শেষ। তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে। কয়েক দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে।
৪ ঘণ্টা আগে
সুপ্রিম কোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আজ রোববার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘এখন প্রশ্ন, বাংলা একাডেমি কি জাহানারা ইমাম, আহমদ শরীফ, মুক্তাগাছা সংগ্রহ বা অন্য কোনো তালিকার বই বিক্রি করেছে? আসলে এ ধরনের কিছুই ঘটেনি। কয়েক বছর আগে থেকে জাহানারা ইমামসহ অন্যদের দেওয়া বইগুলো যেভাবে ছিল, ঠিক সেভাবেই আছে।
৮ ঘণ্টা আগে
সরকারের আশ্বাসে কর্মবিরতির কর্মসূচি ‘আপাতত’ স্থগিত করেছেন আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। তবে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে। সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে...
৯ ঘণ্টা আগেমো. হুমায়ূন কবীর, ঢাকা

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি চলতি নভেম্বরেই সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেনাকাটাও প্রায় শেষ। তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে। কয়েক দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে।
নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়ে বলেছে, ইসি কোনো ঘাটতি রাখতে চায় না। তবে গণভোটের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় এ নিয়ে কিছু করছে না ইসি।
জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখা হবে। গণভোটের কারণে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গণভোটের বিষয়ে এখনো কিছু জানি না।’
সূত্র বলেছে, নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ১৩ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ইসির সংলাপ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের আচরণ বিধিমালা পেতে দেরি হলে সংলাপের তারিখ কিছুটা পেছাতে পারে। সংলাপে প্রতি পর্বে পাঁচটি দল রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। সকাল ও বিকেলে দুই পর্বে হবে সংলাপ। সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, নারীনেত্রী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে এরই মধ্যে মতবিনিময় করেছে কমিশন।
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে ইসির সচিব বলেন, প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের আচরণ বিধিমালা হাতে পেলেই সংলাপের নথি কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। কমিশন সিদ্ধান্ত দিলেই সংলাপ শুরু করা হবে। নিবন্ধিত সব দলকে সংলাপে ডাকা হবে কি না, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, সব দলের নাম দিয়েই নথি উপস্থাপন করা হবে। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকলে দলটি আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক অন্য দলগুলোর ভোটে অংশ নেওয়ায় এখনো কোনো আইনি বাধা দেখছে না কমিশন।
সূত্র জানায়, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী মালপত্র কেনাকাটা প্রায় শেষ করেছে ইসি। প্রায় এক লাখ বড় হেসিয়ান ব্যাগ, প্রায় ৬০ হাজার ছোট হেসিয়ান ব্যাগ, প্রায় ১ লাখ গানি ব্যাগ, প্রায় ২০ হাজার কেজি গালা ও ৪০ লাখ ব্যালট বাক্সের লক কিনেছে ইসি। পর্যাপ্ত ব্যালট বাক্স ইসির সংগ্রহে থাকায় এবার ব্যালট বাক্স কিনতে হবে না। ব্যালট পেপার, ২১ প্রকার ফরম, ১৭ প্রকার প্যাকেট, পাঁচ প্রকার পরিচয়পত্র, আচরণবিধি, প্রতীকের পোস্টার, নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল, নির্দেশিকাসহ ৫৩ ধরনের নির্বাচনী সামগ্রী ছাপানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ সংগ্রহ করে রেখেছে বিজি প্রেস। অমোচনীয় কালি ইউএনডিপির সহায়তায় ২০ নভেম্বরের মধ্যে ইসির কাছে পৌঁছার কথা রয়েছে। তবে সংসদ নির্বাচন করার মতো প্রয়োজনীয় অমোচনীয় কালি ইসির সংগ্রহে রয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলকে (মার্ক্সবাদী) নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ১২ নভেম্বর পর্যন্ত এসব দলের বিরুদ্ধে দাবি-আপত্তি জানানো যাবে। এরপর সেগুলো নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। ইতিমধ্যে ৬৬টি দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়েছে কমিশন। ১৬টিকে প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ করে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। ২৭ নভেম্বরের মধ্যে এগুলোর বিষয়ে দাবি-আপত্তি থাকলে ইসিতে জানানো যাবে। তারপর তা নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত করবে কমিশন।
সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ৩০০ আসনে মোট ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্রও চূড়ান্ত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে মোট ভোটকক্ষ থাকবে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি। এ ছাড়া অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে ১৪টি এবং অস্থায়ী ভোটকক্ষ ১২ হাজারের মতো। ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হবে ১৮ নভেম্বর। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করা হয়েছে। প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধনের জন্য পোস্টাল ভোটবিডি অ্যাপ ১৮ নভেম্বর উদ্বোধন করা হবে। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের খসড়া প্যানেল প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও শুরু হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রবাসী ভোটারদের জন্য চলতি মাসেই ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। কারাবন্দীদের জন্য ভোটের দুই সপ্তাহ আগে ব্যালট পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, আপাতত কমিশনের সব মনোযোগ সংসদ নির্বাচনে। গণভোটের বিষয়ে সরকার থেকে কিছু না জানানোয় ইসি কিছু করছে না। সরকারের নির্দেশ পেলে সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন করবে। সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট হলে ইসিকে তেমন বেগ পেতে হবে না। এ ক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্র কিছুটা বাড়ানো লাগতে পারে। আর গণভোটের জন্য আলাদা ব্যালট এবং বাড়তি কিছু ব্যালট বাক্স লাগবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন গতকাল রোববার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে আমাদের জন্য একটা মাইলফলক। আপনার ভোট আপনার শক্তি। নিজে ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন এবং অন্যকেও ভোটদানে উৎসাহিত করুন।’
সূত্র জানায়, পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ৮ হাজার ২২৬টি কেন্দ্রকে ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’, ২০ হাজার ৪৩৭টি কেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সাড়ে ১০ হাজারের মতো ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্র ছিল।
সূত্র আরও জানায়, পুরো দেশকে লাল, হলুদ ও সবুজ—এই তিন জোনে ভাগ করে নিরাপত্তা ছক সাজানো হবে। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দেওয়ার তথ্যের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত দিয়েছে ইসি। এ ছাড়া নির্বাচন-পূর্ব সময়েও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। এখন থেকে সব বাহিনীকে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার রোধে আগাম প্রস্তুতিও রাখতে বলা হয়।

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি চলতি নভেম্বরেই সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেনাকাটাও প্রায় শেষ। তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে। কয়েক দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে।
নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়ে বলেছে, ইসি কোনো ঘাটতি রাখতে চায় না। তবে গণভোটের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় এ নিয়ে কিছু করছে না ইসি।
জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখা হবে। গণভোটের কারণে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গণভোটের বিষয়ে এখনো কিছু জানি না।’
সূত্র বলেছে, নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ১৩ নভেম্বর থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ইসির সংলাপ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের আচরণ বিধিমালা পেতে দেরি হলে সংলাপের তারিখ কিছুটা পেছাতে পারে। সংলাপে প্রতি পর্বে পাঁচটি দল রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। সকাল ও বিকেলে দুই পর্বে হবে সংলাপ। সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, নারীনেত্রী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে এরই মধ্যে মতবিনিময় করেছে কমিশন।
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে ইসির সচিব বলেন, প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের আচরণ বিধিমালা হাতে পেলেই সংলাপের নথি কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। কমিশন সিদ্ধান্ত দিলেই সংলাপ শুরু করা হবে। নিবন্ধিত সব দলকে সংলাপে ডাকা হবে কি না, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, সব দলের নাম দিয়েই নথি উপস্থাপন করা হবে। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকলে দলটি আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক অন্য দলগুলোর ভোটে অংশ নেওয়ায় এখনো কোনো আইনি বাধা দেখছে না কমিশন।
সূত্র জানায়, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী মালপত্র কেনাকাটা প্রায় শেষ করেছে ইসি। প্রায় এক লাখ বড় হেসিয়ান ব্যাগ, প্রায় ৬০ হাজার ছোট হেসিয়ান ব্যাগ, প্রায় ১ লাখ গানি ব্যাগ, প্রায় ২০ হাজার কেজি গালা ও ৪০ লাখ ব্যালট বাক্সের লক কিনেছে ইসি। পর্যাপ্ত ব্যালট বাক্স ইসির সংগ্রহে থাকায় এবার ব্যালট বাক্স কিনতে হবে না। ব্যালট পেপার, ২১ প্রকার ফরম, ১৭ প্রকার প্যাকেট, পাঁচ প্রকার পরিচয়পত্র, আচরণবিধি, প্রতীকের পোস্টার, নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল, নির্দেশিকাসহ ৫৩ ধরনের নির্বাচনী সামগ্রী ছাপানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ সংগ্রহ করে রেখেছে বিজি প্রেস। অমোচনীয় কালি ইউএনডিপির সহায়তায় ২০ নভেম্বরের মধ্যে ইসির কাছে পৌঁছার কথা রয়েছে। তবে সংসদ নির্বাচন করার মতো প্রয়োজনীয় অমোচনীয় কালি ইসির সংগ্রহে রয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলকে (মার্ক্সবাদী) নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ১২ নভেম্বর পর্যন্ত এসব দলের বিরুদ্ধে দাবি-আপত্তি জানানো যাবে। এরপর সেগুলো নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। ইতিমধ্যে ৬৬টি দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়েছে কমিশন। ১৬টিকে প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ করে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। ২৭ নভেম্বরের মধ্যে এগুলোর বিষয়ে দাবি-আপত্তি থাকলে ইসিতে জানানো যাবে। তারপর তা নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত করবে কমিশন।
সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ৩০০ আসনে মোট ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্রও চূড়ান্ত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে মোট ভোটকক্ষ থাকবে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি। এ ছাড়া অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রাথমিকভাবে ১৪টি এবং অস্থায়ী ভোটকক্ষ ১২ হাজারের মতো। ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হবে ১৮ নভেম্বর। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করা হয়েছে। প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধনের জন্য পোস্টাল ভোটবিডি অ্যাপ ১৮ নভেম্বর উদ্বোধন করা হবে। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের খসড়া প্যানেল প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও শুরু হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রবাসী ভোটারদের জন্য চলতি মাসেই ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। কারাবন্দীদের জন্য ভোটের দুই সপ্তাহ আগে ব্যালট পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, আপাতত কমিশনের সব মনোযোগ সংসদ নির্বাচনে। গণভোটের বিষয়ে সরকার থেকে কিছু না জানানোয় ইসি কিছু করছে না। সরকারের নির্দেশ পেলে সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন করবে। সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট হলে ইসিকে তেমন বেগ পেতে হবে না। এ ক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্র কিছুটা বাড়ানো লাগতে পারে। আর গণভোটের জন্য আলাদা ব্যালট এবং বাড়তি কিছু ব্যালট বাক্স লাগবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন গতকাল রোববার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে আমাদের জন্য একটা মাইলফলক। আপনার ভোট আপনার শক্তি। নিজে ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন এবং অন্যকেও ভোটদানে উৎসাহিত করুন।’
সূত্র জানায়, পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ৮ হাজার ২২৬টি কেন্দ্রকে ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’, ২০ হাজার ৪৩৭টি কেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সাড়ে ১০ হাজারের মতো ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্র ছিল।
সূত্র আরও জানায়, পুরো দেশকে লাল, হলুদ ও সবুজ—এই তিন জোনে ভাগ করে নিরাপত্তা ছক সাজানো হবে। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দেওয়ার তথ্যের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত দিয়েছে ইসি। এ ছাড়া নির্বাচন-পূর্ব সময়েও অস্বাভাবিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। এখন থেকে সব বাহিনীকে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার রোধে আগাম প্রস্তুতিও রাখতে বলা হয়।

দেশে দৈনিক ৪৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে পেট্রোবাংলা দৈনিক ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে। এতে সারা বছরই গ্যাস-সংকটে ভোগে শিল্পকারখানাগুলো। চলমান শীতে সংকট আরও বেড়েছে। গ্যাসের চাপ কমায় রাজধানীর বড় অংশে সারা দিন বাসাবাড়িতে গ্যাস থাকছে না। এতে জ্বলছে না রান্নার চুলা।
১৭ জানুয়ারি ২০২৫
সুপ্রিম কোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আজ রোববার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘এখন প্রশ্ন, বাংলা একাডেমি কি জাহানারা ইমাম, আহমদ শরীফ, মুক্তাগাছা সংগ্রহ বা অন্য কোনো তালিকার বই বিক্রি করেছে? আসলে এ ধরনের কিছুই ঘটেনি। কয়েক বছর আগে থেকে জাহানারা ইমামসহ অন্যদের দেওয়া বইগুলো যেভাবে ছিল, ঠিক সেভাবেই আছে।
৮ ঘণ্টা আগে
সরকারের আশ্বাসে কর্মবিরতির কর্মসূচি ‘আপাতত’ স্থগিত করেছেন আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। তবে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে। সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে...
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সুপ্রিম কোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই বিষয়ে আজ রোববার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিচার অঙ্গনের সর্বোচ্চ স্থান। প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে বিচারকার্য পরিচালনা করে থাকেন। এ ছাড়া দেশের বহুল আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মামলার নথিসহ কয়েক লাখ মামলার নথি এই কোর্টে রক্ষিত আছে।
সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে সুপ্রিম কোর্টের মালিকানাধীন জাতীয় ঈদগাহ মাঠ ও সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের জন্য ব্যবহৃত মূল ফটকসংলগ্ন ফোয়ারা এলাকায় বহিরাগত ও অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে; যা সুপ্রিম কোর্ট ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট এলাকা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হলো।

সুপ্রিম কোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই বিষয়ে আজ রোববার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিচার অঙ্গনের সর্বোচ্চ স্থান। প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে বিচারকার্য পরিচালনা করে থাকেন। এ ছাড়া দেশের বহুল আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মামলার নথিসহ কয়েক লাখ মামলার নথি এই কোর্টে রক্ষিত আছে।
সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে সুপ্রিম কোর্টের মালিকানাধীন জাতীয় ঈদগাহ মাঠ ও সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের জন্য ব্যবহৃত মূল ফটকসংলগ্ন ফোয়ারা এলাকায় বহিরাগত ও অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে; যা সুপ্রিম কোর্ট ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট এলাকা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হলো।

দেশে দৈনিক ৪৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে পেট্রোবাংলা দৈনিক ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে। এতে সারা বছরই গ্যাস-সংকটে ভোগে শিল্পকারখানাগুলো। চলমান শীতে সংকট আরও বেড়েছে। গ্যাসের চাপ কমায় রাজধানীর বড় অংশে সারা দিন বাসাবাড়িতে গ্যাস থাকছে না। এতে জ্বলছে না রান্নার চুলা।
১৭ জানুয়ারি ২০২৫
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি চলতি নভেম্বরেই সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেনাকাটাও প্রায় শেষ। তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে। কয়েক দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে।
৪ ঘণ্টা আগে
মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘এখন প্রশ্ন, বাংলা একাডেমি কি জাহানারা ইমাম, আহমদ শরীফ, মুক্তাগাছা সংগ্রহ বা অন্য কোনো তালিকার বই বিক্রি করেছে? আসলে এ ধরনের কিছুই ঘটেনি। কয়েক বছর আগে থেকে জাহানারা ইমামসহ অন্যদের দেওয়া বইগুলো যেভাবে ছিল, ঠিক সেভাবেই আছে।
৮ ঘণ্টা আগে
সরকারের আশ্বাসে কর্মবিরতির কর্মসূচি ‘আপাতত’ স্থগিত করেছেন আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। তবে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে। সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে...
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

সংগ্রহে থাকা শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই নিলামে বিক্রি করা নিয়ে সম্প্রতি যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছে বাংলা একাডেমি।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেছেন, ‘দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনে ৮ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে “জাহানারা ইমামের দেওয়া বই বিক্রি করেছে বাংলা একাডেমি, এখন দাম হাঁকা হচ্ছে লাখ টাকা” শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে কিছু আংশিক সত্য উপস্থাপন করা হয়েছে; কিছু অংশ এমনভাবে হাইলাইট করা হয়েছে, যাতে প্রতিবেদনে অন্য রকম উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও পাঠক বিভ্রান্তির মধ্যে পড়বেন।
অনলাইনে বিভ্রান্তিকর শিরোনাম ও হাইলাইটস ব্যাপকভাবে টেমপ্লেট আকারে প্রচারিত হয়েছে। অন্য অনেকে একই ধরনের হাইলাইট ব্যবহার করে সংবাদ প্রচার করেছে। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বভাবতই এ স্পর্শকাতর বিষয়ে বহুজন নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন। বহুজনের মনোযোগের বিষয় হয়ে ওঠার কারণে আমরা শুধু সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় বাংলা একাডেমির বক্তব্য না পাঠিয়ে সাধারণ বিবৃতি আকারে দিচ্ছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট পত্রিকা বিষয়টি যথাযথভাবে উপস্থাপন করবে এবং অন্যরাও বিষয়টি সম্পর্কে পুনর্মূল্যায়ন করতে পারবেন। প্রয়োজনে প্রকৃত তথ্য-উপাত্তসহ সংবাদ পরিবেশনেরও সুযোগ তৈরি হবে।’
মোহাম্মদ আজম বলেন, বাংলা একাডেমি গত ২৫/৬/২৫ থেকে ২৩/১০/২৫ তারিখে পরিত্যক্ত হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে মজুত করা কয়েক হাজার বই ও অন্য কাগজপত্র বিধিমোতাবেক নিলামে বিক্রি করে। এর মধ্যে আছে বইমেলায় জমা হওয়া বিপুলসংখ্যক বই, যে বইগুলো প্রতি বছর কমিটির মাধ্যমে বাছাই করে মানহীন ও পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়; আছে গ্রন্থাগারের যে বইগুলো ব্যবহার অযোগ্য ঘোষিত হয়, সেগুলো এবং বাংলা একাডেমির নিজস্ব প্রকাশনার যেসব বই নানা কারণে বিক্রয় অযোগ্য হয়ে ওঠে, সেগুলো। এ ধরনের বইপুস্তক বহুদিন ধরে গ্রন্থাগারসংলগ্ন একটি ঘরে গুদামজাত করা হয়। এটি পরিত্যক্ত বইয়ের গুদাম। এখানকার বইগুলোই সম্প্রতি নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। এসব বই এখন বিক্রি করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে এ জন্য যে, এ ঘর সম্পূর্ণ ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। আগামী মেলায় প্রাপ্ত বই ও অন্য সব কারণে পরিত্যক্ত হওয়া সম্ভাব্য বই রাখার কোনো জায়গা ওই ঘরে আর অবশিষ্ট ছিল না। ফলে ঘর খালি করার প্রয়োজন হয়েছিল। বিক্রির আগে গ্রন্থাগার ও সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়া হয়েছিল। তারা নিশ্চিত করেছে যে, এগুলো বহু বছর ধরে জমা হওয়া পরিত্যক্ত বই।
মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘এখন প্রশ্ন, বাংলা একাডেমি কি জাহানারা ইমাম, আহমদ শরীফ, মুক্তাগাছা সংগ্রহ বা অন্য কোনো তালিকার বই বিক্রি করেছে? আসলে এ ধরনের কিছুই ঘটেনি। কয়েক বছর আগে থেকে জাহানারা ইমামসহ অন্যদের দেওয়া বইগুলো যেভাবে ছিল ঠিক সেভাবেই আছে। এ বিষয়ে কোনো নতুন কমিটি গঠিত হয়নি, বা সংগ্রহশালা পুনর্মূল্যায়নের কোনো ঘটনাও ঘটেনি। অন্তত এক দশক ধরে জমা হওয়া পরিত্যক্ত বইগুলোই কেবল বিক্রি করা হয়েছে। এর মধ্যে গত এক বছরে নতুন যুক্ত হয়েছে কেবল গত বছরের বইমেলায় প্রাপ্ত মানহীন ও পরিত্যক্ত ঘোষিত বইগুলো। বর্তমান বিতর্কের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে জরুরি প্রশ্নটি হলো, তাহলে এ তালিকায় জাহানারা ইমাম সংগ্রহের বেশ কিছু বই কীভাবে যুক্ত হয়েছে?’
তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে “বাংলা একাডেমি গ্রন্থাগার পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত কমিটি” গঠিত হয়। এ কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ১৩. ০১. ২০১৪ তারিখ সোমবার বিকাল ৫ টায়। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন জনাব শামসুজ্জামান খান, অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ, অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, ফরিদা পারভীন, রেজিনা আক্তার ও মো. মোবারক হোসেন। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের ২য়টি ছিল–“একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে সে অনুযায়ী গ্রন্থাগার থেকে কিছু বই ছাঁটাই করতে হবে। এজন্য মো. মোবারক হোসেন, অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ, সুব্রত বড়ুয়া, বিশ্বজিৎ ঘোষ ও রেজিনা আক্তার–এই পাঁচ ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি উপকমিটি গঠন করা হলো।” এ কমিটি দীর্ঘদিন ধরে অনেকগুলো সভা করেছে এবং কোন বইগুলো গ্রন্থাগারে থাকবে না তা নির্ধারণ করেছে।’
মহাপরিচালক বলেন, ‘বাংলা একাডেমিতে রক্ষিত তালিকা থেকে দেখা যায়, পরিবারের পক্ষ থেকে জাহানারা ইমামের মোট ৩৫৯টি বই দেওয়া হয়েছিল। বাছাইয়ের পরে অধিকাংশ বই সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট হয়। “বাংলা একাডেমি গ্রন্থাগারে সংরক্ষণার্থে গ্রন্থ বাছাই কমিটির বাছাইকৃত গ্রহণযোগ্য বইয়ের তালিকা (জাহানারা ইমাম)” প্রণয়ন করা হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে। ওই বইগুলো বাংলা একাডেমির নির্দিষ্ট সেলফে মজুদ আছে। সেখানে বইয়ের সংখ্যা ৩০৮টি। তিনতলার নির্ধারিত স্থানে যে কেউ বইগুলো দেখতে এবং ব্যবহার করতে পারবেন। জাহানারা ইমামসহ অন্য সংগ্রহের যেসব বই গ্রন্থাগারের জন্য উপযোগী বিবেচিত হয়নি, সেগুলো আলাদা করে আর্কাইভ করা যেত। কিন্তু এ ধরনের পরিকল্পনা তখনকার দায়িত্বশীলরা কেন করেননি তা এখন অনুমান করা কঠিন। তখন একাডেমি-প্রশাসনের প্রধান পদগুলোতে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অনেকেই গত হয়েছেন; অন্যরাও এখন আর একাডেমিতে কর্মরত নেই। তখন গ্রন্থাগারের দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁরাও কেউ নেই। ফলে এই পরিত্যক্ত বইয়ের ভান্ডারে জাহানারা ইমাম সংগ্রহের কোনো বই তো দূরের কথা, কোনো ব্যবহার্য বই থাকতে পারে এমন দূরতম অনুমান করারও বাস্তবতা ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলা একাডেমির বর্তমান দায়িত্বরতদের সম্পর্কে বলা যায়, বইগুলো বিক্রির আগে আরেকবার পরীক্ষা করা যেত। কিন্তু বইয়ের সংখ্যা ছিল আক্ষরিক অর্থেই হাজার হাজার। তদুপরি, গুরুত্বপূর্ণ কোনো বই এখানে থাকতে পারে, এমন সম্ভাবনাও সংশ্লিষ্ট কারো অভিজ্ঞতায় ছিল না। এমতাবস্থায়, প্রথম আলোর প্রতিবেদক সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমামের প্রতিবেদনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাংবাদিকতার একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এ প্রতিবেদকের সাথে আমার বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে। তাঁকে পুরো বিষয়টি অনেকবার বলা হয়েছে। তবু তিনি এমন শিরোনাম করেছেন, যাতে মনে হবে, জাহানারা ইমামের বই আলাদা করে অথবা শনাক্ত করে অথবা ইচ্ছা করে বিক্রি করা হয়েছে এবং কাজটা করেছে বর্তমান প্রশাসন। তিনি লিখেছেন, “বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম অবশ্য বলছেন, ২০১৪ সালে গঠিত একটি কমিটি একাডেমির সংগ্রহশালায় একাধিক কপি থাকা এবং অসংরক্ষণযোগ্য কিছু বই বাতিল বলে নির্ধারণ করেছিল, সেগুলোই বিক্রি করা হয়েছে।” এ বাক্য পড়লে যে কারো মনে হবে, বইগুলো আলাদা করে রাখা ছিল। মোটেই তা নয়। বইগুলো বহু বছর আগে থেকেই কয়েক হাজার বইয়ের পরিত্যক্ত মজুদের সাথে রাখা ছিল এবং সে তথ্য এখন কর্মরত একাডেমির কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে ছিল না।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একই ভঙ্গি অক্ষুণ্ন রেখে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, “বাড়তি কিংবা অসংরক্ষণযোগ্য বই বিক্রির যুক্তি বাংলা একাডেমি দিলেও এক্ষেত্রে গ্রন্থাগার বিজ্ঞানের নীতি পরিপন্থি কাজ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশে এবং বিদেশে গ্রন্থাগার পরিচালনার কাজে যুক্ত থাকা বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী।” তিনি বলছেন, বিশিষ্ট ব্যক্তির সংগ্রহশালার বই এভাবে বিক্রি করা “স্পষ্ট অন্যায়”। বাংলা একাডেমি আসলে “বাড়তি কিংবা অসংরক্ষণযোগ্য বই বিক্রির যুক্তি” দেয়নি। প্রায় এক যুগ আগে সংঘটিত একটা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে কেবল। যেখানে বইগুলো চিহ্নিতই ছিল না, সেখানে “স্পষ্ট অন্যায়”টা কার, তা স্পষ্ট না করে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যেন জাহানারা ইমামের বইগুলোই বিক্রি করা হয়েছে। তাঁর অসঙ্গত মনোভাব এবং উদ্দেশ্য প্রকাশ পেয়েছে প্রতিবেদনের এ অংশে–“বাংলা একাডেমির নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় জাহানারা ইমামসহ কয়েকজনের ব্যক্তিগত বইয়ের সংগ্রহ এখনো আছে। সেখানে আলমারির ওপর নাম লিখে রাখা আছে, কার সংগ্রহ কোনটি। তার কিছু বই–ই বিক্রি করা হয়েছে।” এ অংশ, বিশেষত শেষ লাইনটি পড়লে যে কারো মনে হবে, আলমারিতে রাখা বইগুলো থেকে কিছু বই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা উপরে ব্যাখ্যা করেছি যে, ঘটনা এর ধারেকাছেও কিছু নয়।’
মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘প্রতিবেদক ছাঁটাই কমিটি সম্পর্কেও মনগড়া তথ্য দিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার বাংলা একাডেমির গ্রন্থাগার বিভাগের ছিল বলে জানান ওই উপকমিটির সদস্য রেজিনা আক্তার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কোন বইটি বাতিল করা হবে বা সংরক্ষণযোগ্য না, সে সিদ্ধান্ত নেয় গ্রন্থাগার বিভাগ।” আসলে যাচাই-বাছাই না করে স্রেফ একজন সদস্যের কথার ভিত্তিতে এখানে যা বলা হয়েছে, তা মোটেই সত্য নয়। আমি এখানে ১৭/৭/২০১৪ তারিখ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত ছাঁটাই উপকমিটির ষষ্ঠ সভার উপস্থিতিপত্র যোগ করছি। কমিটি গঠিত হওয়ার এক মাসের মধ্যে এতগুলো সভায় সদস্যগণ বই বাছাইয়ের কাজ করেছিলেন বলে গ্রন্থাগারের তখনকার কর্মী এবং ছাঁটাই কমিটির একজন সদস্য নিশ্চিত করেছেন। প্রকৃতপক্ষে এ কমিটি পরে আরো বহুদিন কাজ করেছেন। যদি তাঁরা বই বাছাইয়ের কাজই না করবেন, তাহলে এতগুলো সভা কেন হলো?”
তিনি বলেন, ‘আমি এ প্রতিবেদককে ২০১৪ সালে গঠিত কমিটির রিপোর্টসহ আরো লিখিত তথ্য দিয়েছি। এবং অনুরোধ করেছি, তিনি যেন সরেজমিন ব্যাপারটা দেখেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর এত সময় নেই। স্পষ্টতই খুব স্পর্শকাতর একটি ইস্যুকে পুঁজি করে “ভাইরাল” প্রতিবেদন প্রণয়নই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। তার অন্যতম প্রমাণ এই যে, আহমদ শরীফ, সিকান্দার আবু জাফরসহ আরো কয়েকজনের বই পাওয়া গেলেও তিনি সে তথ্যটিকে উচ্চকিত হতে দেননি। আমরা সংবাদমাধ্যম এবং আগ্রহী সকলকে অনুরোধ করব, তাঁরা যেন বাংলা একাডেমির গ্রন্থাগারে এসে সংগ্রহশালা দেখেন। তাহলেই বোঝা যাবে, বহু বছর আগে এ সংগ্রহশালার যে তালিকা নির্দিষ্ট করা হয়েছিল, তা অক্ষত আছে। জাহানারা ইমামসহ আমাদের দেশের শ্রদ্ধেয় মানুষদের বেশ কিছু বই বাংলা একাডেমির সিলসহ নীলক্ষেতে কিংবা অনলাইন প্লাটফর্মে বিক্রি হচ্ছে–এ ঘটনায় নিঃসন্দেহে বাংলা একাডেমির দায় আছে। কিন্তু বহু বছর আগে ঘটে যাওয়া একটা দায় কৌশলে বহুগুণ বাড়িয়ে বর্তমান প্রশাসনের ওপর বর্তানো নিশ্চয়ই সুরুচির পরিচয় নয়, সাংবাদিকতার তো নয়ই।’

সংগ্রহে থাকা শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বই নিলামে বিক্রি করা নিয়ে সম্প্রতি যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছে বাংলা একাডেমি।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেছেন, ‘দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনে ৮ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে “জাহানারা ইমামের দেওয়া বই বিক্রি করেছে বাংলা একাডেমি, এখন দাম হাঁকা হচ্ছে লাখ টাকা” শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে কিছু আংশিক সত্য উপস্থাপন করা হয়েছে; কিছু অংশ এমনভাবে হাইলাইট করা হয়েছে, যাতে প্রতিবেদনে অন্য রকম উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও পাঠক বিভ্রান্তির মধ্যে পড়বেন।
অনলাইনে বিভ্রান্তিকর শিরোনাম ও হাইলাইটস ব্যাপকভাবে টেমপ্লেট আকারে প্রচারিত হয়েছে। অন্য অনেকে একই ধরনের হাইলাইট ব্যবহার করে সংবাদ প্রচার করেছে। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বভাবতই এ স্পর্শকাতর বিষয়ে বহুজন নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন। বহুজনের মনোযোগের বিষয় হয়ে ওঠার কারণে আমরা শুধু সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় বাংলা একাডেমির বক্তব্য না পাঠিয়ে সাধারণ বিবৃতি আকারে দিচ্ছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট পত্রিকা বিষয়টি যথাযথভাবে উপস্থাপন করবে এবং অন্যরাও বিষয়টি সম্পর্কে পুনর্মূল্যায়ন করতে পারবেন। প্রয়োজনে প্রকৃত তথ্য-উপাত্তসহ সংবাদ পরিবেশনেরও সুযোগ তৈরি হবে।’
মোহাম্মদ আজম বলেন, বাংলা একাডেমি গত ২৫/৬/২৫ থেকে ২৩/১০/২৫ তারিখে পরিত্যক্ত হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে মজুত করা কয়েক হাজার বই ও অন্য কাগজপত্র বিধিমোতাবেক নিলামে বিক্রি করে। এর মধ্যে আছে বইমেলায় জমা হওয়া বিপুলসংখ্যক বই, যে বইগুলো প্রতি বছর কমিটির মাধ্যমে বাছাই করে মানহীন ও পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়; আছে গ্রন্থাগারের যে বইগুলো ব্যবহার অযোগ্য ঘোষিত হয়, সেগুলো এবং বাংলা একাডেমির নিজস্ব প্রকাশনার যেসব বই নানা কারণে বিক্রয় অযোগ্য হয়ে ওঠে, সেগুলো। এ ধরনের বইপুস্তক বহুদিন ধরে গ্রন্থাগারসংলগ্ন একটি ঘরে গুদামজাত করা হয়। এটি পরিত্যক্ত বইয়ের গুদাম। এখানকার বইগুলোই সম্প্রতি নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। এসব বই এখন বিক্রি করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে এ জন্য যে, এ ঘর সম্পূর্ণ ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। আগামী মেলায় প্রাপ্ত বই ও অন্য সব কারণে পরিত্যক্ত হওয়া সম্ভাব্য বই রাখার কোনো জায়গা ওই ঘরে আর অবশিষ্ট ছিল না। ফলে ঘর খালি করার প্রয়োজন হয়েছিল। বিক্রির আগে গ্রন্থাগার ও সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়া হয়েছিল। তারা নিশ্চিত করেছে যে, এগুলো বহু বছর ধরে জমা হওয়া পরিত্যক্ত বই।
মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘এখন প্রশ্ন, বাংলা একাডেমি কি জাহানারা ইমাম, আহমদ শরীফ, মুক্তাগাছা সংগ্রহ বা অন্য কোনো তালিকার বই বিক্রি করেছে? আসলে এ ধরনের কিছুই ঘটেনি। কয়েক বছর আগে থেকে জাহানারা ইমামসহ অন্যদের দেওয়া বইগুলো যেভাবে ছিল ঠিক সেভাবেই আছে। এ বিষয়ে কোনো নতুন কমিটি গঠিত হয়নি, বা সংগ্রহশালা পুনর্মূল্যায়নের কোনো ঘটনাও ঘটেনি। অন্তত এক দশক ধরে জমা হওয়া পরিত্যক্ত বইগুলোই কেবল বিক্রি করা হয়েছে। এর মধ্যে গত এক বছরে নতুন যুক্ত হয়েছে কেবল গত বছরের বইমেলায় প্রাপ্ত মানহীন ও পরিত্যক্ত ঘোষিত বইগুলো। বর্তমান বিতর্কের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে জরুরি প্রশ্নটি হলো, তাহলে এ তালিকায় জাহানারা ইমাম সংগ্রহের বেশ কিছু বই কীভাবে যুক্ত হয়েছে?’
তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে “বাংলা একাডেমি গ্রন্থাগার পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত কমিটি” গঠিত হয়। এ কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ১৩. ০১. ২০১৪ তারিখ সোমবার বিকাল ৫ টায়। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন জনাব শামসুজ্জামান খান, অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ, অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, ফরিদা পারভীন, রেজিনা আক্তার ও মো. মোবারক হোসেন। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের ২য়টি ছিল–“একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে সে অনুযায়ী গ্রন্থাগার থেকে কিছু বই ছাঁটাই করতে হবে। এজন্য মো. মোবারক হোসেন, অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ, সুব্রত বড়ুয়া, বিশ্বজিৎ ঘোষ ও রেজিনা আক্তার–এই পাঁচ ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি উপকমিটি গঠন করা হলো।” এ কমিটি দীর্ঘদিন ধরে অনেকগুলো সভা করেছে এবং কোন বইগুলো গ্রন্থাগারে থাকবে না তা নির্ধারণ করেছে।’
মহাপরিচালক বলেন, ‘বাংলা একাডেমিতে রক্ষিত তালিকা থেকে দেখা যায়, পরিবারের পক্ষ থেকে জাহানারা ইমামের মোট ৩৫৯টি বই দেওয়া হয়েছিল। বাছাইয়ের পরে অধিকাংশ বই সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট হয়। “বাংলা একাডেমি গ্রন্থাগারে সংরক্ষণার্থে গ্রন্থ বাছাই কমিটির বাছাইকৃত গ্রহণযোগ্য বইয়ের তালিকা (জাহানারা ইমাম)” প্রণয়ন করা হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে। ওই বইগুলো বাংলা একাডেমির নির্দিষ্ট সেলফে মজুদ আছে। সেখানে বইয়ের সংখ্যা ৩০৮টি। তিনতলার নির্ধারিত স্থানে যে কেউ বইগুলো দেখতে এবং ব্যবহার করতে পারবেন। জাহানারা ইমামসহ অন্য সংগ্রহের যেসব বই গ্রন্থাগারের জন্য উপযোগী বিবেচিত হয়নি, সেগুলো আলাদা করে আর্কাইভ করা যেত। কিন্তু এ ধরনের পরিকল্পনা তখনকার দায়িত্বশীলরা কেন করেননি তা এখন অনুমান করা কঠিন। তখন একাডেমি-প্রশাসনের প্রধান পদগুলোতে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অনেকেই গত হয়েছেন; অন্যরাও এখন আর একাডেমিতে কর্মরত নেই। তখন গ্রন্থাগারের দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁরাও কেউ নেই। ফলে এই পরিত্যক্ত বইয়ের ভান্ডারে জাহানারা ইমাম সংগ্রহের কোনো বই তো দূরের কথা, কোনো ব্যবহার্য বই থাকতে পারে এমন দূরতম অনুমান করারও বাস্তবতা ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলা একাডেমির বর্তমান দায়িত্বরতদের সম্পর্কে বলা যায়, বইগুলো বিক্রির আগে আরেকবার পরীক্ষা করা যেত। কিন্তু বইয়ের সংখ্যা ছিল আক্ষরিক অর্থেই হাজার হাজার। তদুপরি, গুরুত্বপূর্ণ কোনো বই এখানে থাকতে পারে, এমন সম্ভাবনাও সংশ্লিষ্ট কারো অভিজ্ঞতায় ছিল না। এমতাবস্থায়, প্রথম আলোর প্রতিবেদক সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমামের প্রতিবেদনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাংবাদিকতার একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এ প্রতিবেদকের সাথে আমার বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে। তাঁকে পুরো বিষয়টি অনেকবার বলা হয়েছে। তবু তিনি এমন শিরোনাম করেছেন, যাতে মনে হবে, জাহানারা ইমামের বই আলাদা করে অথবা শনাক্ত করে অথবা ইচ্ছা করে বিক্রি করা হয়েছে এবং কাজটা করেছে বর্তমান প্রশাসন। তিনি লিখেছেন, “বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম অবশ্য বলছেন, ২০১৪ সালে গঠিত একটি কমিটি একাডেমির সংগ্রহশালায় একাধিক কপি থাকা এবং অসংরক্ষণযোগ্য কিছু বই বাতিল বলে নির্ধারণ করেছিল, সেগুলোই বিক্রি করা হয়েছে।” এ বাক্য পড়লে যে কারো মনে হবে, বইগুলো আলাদা করে রাখা ছিল। মোটেই তা নয়। বইগুলো বহু বছর আগে থেকেই কয়েক হাজার বইয়ের পরিত্যক্ত মজুদের সাথে রাখা ছিল এবং সে তথ্য এখন কর্মরত একাডেমির কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে ছিল না।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একই ভঙ্গি অক্ষুণ্ন রেখে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, “বাড়তি কিংবা অসংরক্ষণযোগ্য বই বিক্রির যুক্তি বাংলা একাডেমি দিলেও এক্ষেত্রে গ্রন্থাগার বিজ্ঞানের নীতি পরিপন্থি কাজ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশে এবং বিদেশে গ্রন্থাগার পরিচালনার কাজে যুক্ত থাকা বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী।” তিনি বলছেন, বিশিষ্ট ব্যক্তির সংগ্রহশালার বই এভাবে বিক্রি করা “স্পষ্ট অন্যায়”। বাংলা একাডেমি আসলে “বাড়তি কিংবা অসংরক্ষণযোগ্য বই বিক্রির যুক্তি” দেয়নি। প্রায় এক যুগ আগে সংঘটিত একটা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে কেবল। যেখানে বইগুলো চিহ্নিতই ছিল না, সেখানে “স্পষ্ট অন্যায়”টা কার, তা স্পষ্ট না করে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যেন জাহানারা ইমামের বইগুলোই বিক্রি করা হয়েছে। তাঁর অসঙ্গত মনোভাব এবং উদ্দেশ্য প্রকাশ পেয়েছে প্রতিবেদনের এ অংশে–“বাংলা একাডেমির নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় জাহানারা ইমামসহ কয়েকজনের ব্যক্তিগত বইয়ের সংগ্রহ এখনো আছে। সেখানে আলমারির ওপর নাম লিখে রাখা আছে, কার সংগ্রহ কোনটি। তার কিছু বই–ই বিক্রি করা হয়েছে।” এ অংশ, বিশেষত শেষ লাইনটি পড়লে যে কারো মনে হবে, আলমারিতে রাখা বইগুলো থেকে কিছু বই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা উপরে ব্যাখ্যা করেছি যে, ঘটনা এর ধারেকাছেও কিছু নয়।’
মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘প্রতিবেদক ছাঁটাই কমিটি সম্পর্কেও মনগড়া তথ্য দিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার বাংলা একাডেমির গ্রন্থাগার বিভাগের ছিল বলে জানান ওই উপকমিটির সদস্য রেজিনা আক্তার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কোন বইটি বাতিল করা হবে বা সংরক্ষণযোগ্য না, সে সিদ্ধান্ত নেয় গ্রন্থাগার বিভাগ।” আসলে যাচাই-বাছাই না করে স্রেফ একজন সদস্যের কথার ভিত্তিতে এখানে যা বলা হয়েছে, তা মোটেই সত্য নয়। আমি এখানে ১৭/৭/২০১৪ তারিখ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত ছাঁটাই উপকমিটির ষষ্ঠ সভার উপস্থিতিপত্র যোগ করছি। কমিটি গঠিত হওয়ার এক মাসের মধ্যে এতগুলো সভায় সদস্যগণ বই বাছাইয়ের কাজ করেছিলেন বলে গ্রন্থাগারের তখনকার কর্মী এবং ছাঁটাই কমিটির একজন সদস্য নিশ্চিত করেছেন। প্রকৃতপক্ষে এ কমিটি পরে আরো বহুদিন কাজ করেছেন। যদি তাঁরা বই বাছাইয়ের কাজই না করবেন, তাহলে এতগুলো সভা কেন হলো?”
তিনি বলেন, ‘আমি এ প্রতিবেদককে ২০১৪ সালে গঠিত কমিটির রিপোর্টসহ আরো লিখিত তথ্য দিয়েছি। এবং অনুরোধ করেছি, তিনি যেন সরেজমিন ব্যাপারটা দেখেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর এত সময় নেই। স্পষ্টতই খুব স্পর্শকাতর একটি ইস্যুকে পুঁজি করে “ভাইরাল” প্রতিবেদন প্রণয়নই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। তার অন্যতম প্রমাণ এই যে, আহমদ শরীফ, সিকান্দার আবু জাফরসহ আরো কয়েকজনের বই পাওয়া গেলেও তিনি সে তথ্যটিকে উচ্চকিত হতে দেননি। আমরা সংবাদমাধ্যম এবং আগ্রহী সকলকে অনুরোধ করব, তাঁরা যেন বাংলা একাডেমির গ্রন্থাগারে এসে সংগ্রহশালা দেখেন। তাহলেই বোঝা যাবে, বহু বছর আগে এ সংগ্রহশালার যে তালিকা নির্দিষ্ট করা হয়েছিল, তা অক্ষত আছে। জাহানারা ইমামসহ আমাদের দেশের শ্রদ্ধেয় মানুষদের বেশ কিছু বই বাংলা একাডেমির সিলসহ নীলক্ষেতে কিংবা অনলাইন প্লাটফর্মে বিক্রি হচ্ছে–এ ঘটনায় নিঃসন্দেহে বাংলা একাডেমির দায় আছে। কিন্তু বহু বছর আগে ঘটে যাওয়া একটা দায় কৌশলে বহুগুণ বাড়িয়ে বর্তমান প্রশাসনের ওপর বর্তানো নিশ্চয়ই সুরুচির পরিচয় নয়, সাংবাদিকতার তো নয়ই।’

দেশে দৈনিক ৪৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে পেট্রোবাংলা দৈনিক ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে। এতে সারা বছরই গ্যাস-সংকটে ভোগে শিল্পকারখানাগুলো। চলমান শীতে সংকট আরও বেড়েছে। গ্যাসের চাপ কমায় রাজধানীর বড় অংশে সারা দিন বাসাবাড়িতে গ্যাস থাকছে না। এতে জ্বলছে না রান্নার চুলা।
১৭ জানুয়ারি ২০২৫
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি চলতি নভেম্বরেই সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেনাকাটাও প্রায় শেষ। তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে। কয়েক দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে।
৪ ঘণ্টা আগে
সুপ্রিম কোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আজ রোববার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
সরকারের আশ্বাসে কর্মবিরতির কর্মসূচি ‘আপাতত’ স্থগিত করেছেন আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। তবে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে। সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে...
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারের আশ্বাসে কর্মবিরতির কর্মসূচি ‘আপাতত’ স্থগিত করেছেন আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। তবে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে এ তথ্য জানান প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ। তিনি বলেন, আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবার বৈঠক হবে। সরকারের আশ্বাসে আপাতত কর্মবিরতি কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তবে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর গতকাল শনিবার কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। ফলে দেশের অধিকাংশ বিদ্যালয়ে আজ বন্ধ ছিল পাঠদান কার্যক্রম।
কর্মবিরতির পাশাপাশি প্রধান কর্মসূচি হিসেবে রাজধানীর শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকেরা। এ সময় তাঁরা ‘পুলিশের হামলার প্রতিবাদে’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের পদত্যাগ দাবি করেন।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বিকেলে বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চালাব। তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না করা, শাহবাগে নিরীহ শিক্ষকদের ওপর অতর্কিতে হামলা, রাবার বুলেট, জলকামান, কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে শত শত শিক্ষককে আহত করার দায় হিসেবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করছি।’
শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ১১৪ নম্বর ওমর ব্যাপারীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, ‘দাবি আদায় বা কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত লাগাতার ক্লাস বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করা হবে। শিক্ষকদের ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
বরিশালের হিজলা উপজেলার পশ্চিম চরবাউশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ হাসান মাহমুদও জানিয়েছেন কর্মবিরতি চলার কথা।
এদিকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের আরেকাংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে একাদশ গ্রেডে বেতন, উচ্চতর গ্রেড নিয়ে জটিলতা নিরসন ও শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করতে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছে। এ মোর্চাভুক্ত সংগঠনগুলোর শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন না।
দশম গ্রেডে বেতন ছাড়াও শিক্ষকদের বাকি দুটি দাবি হলো চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা। দাবি আদায়ে শনিবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ওই দিন বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ‘কলমবিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় শাহবাগ থানার সামনে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস শেল নিক্ষেপে কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় শতাধিক আহত হওয়ার দাবি করেন শিক্ষকেরা।
পরে শহীদ মিনারে ফিরে এসে আজ থেকে কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকেরা। আর শনিবার মধ্যরাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে শিক্ষকেরা ‘পুলিশের হামলার’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার প্রস্তাব
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন দুই ধাপ বাড়িয়ে ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বছরে অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ৮৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৪ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে লিখিতভাবে এ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তার আগে একই প্রস্তাব অর্থ বিভাগেও পাঠানো হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কাজের গুণগত ও পরিমাণ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বাড়িয়ে ১০তম করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা সম্মতি দিয়েছেন। তাই যৌক্তিকতা বিবেচনা করে সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে উন্নীত করা প্রয়োজন।

সরকারের আশ্বাসে কর্মবিরতির কর্মসূচি ‘আপাতত’ স্থগিত করেছেন আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা। তবে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে এ তথ্য জানান প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ। তিনি বলেন, আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবার বৈঠক হবে। সরকারের আশ্বাসে আপাতত কর্মবিরতি কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তবে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর গতকাল শনিবার কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। ফলে দেশের অধিকাংশ বিদ্যালয়ে আজ বন্ধ ছিল পাঠদান কার্যক্রম।
কর্মবিরতির পাশাপাশি প্রধান কর্মসূচি হিসেবে রাজধানীর শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকেরা। এ সময় তাঁরা ‘পুলিশের হামলার প্রতিবাদে’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের পদত্যাগ দাবি করেন।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বিকেলে বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চালাব। তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না করা, শাহবাগে নিরীহ শিক্ষকদের ওপর অতর্কিতে হামলা, রাবার বুলেট, জলকামান, কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে শত শত শিক্ষককে আহত করার দায় হিসেবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করছি।’
শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ১১৪ নম্বর ওমর ব্যাপারীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, ‘দাবি আদায় বা কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত লাগাতার ক্লাস বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করা হবে। শিক্ষকদের ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
বরিশালের হিজলা উপজেলার পশ্চিম চরবাউশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ হাসান মাহমুদও জানিয়েছেন কর্মবিরতি চলার কথা।
এদিকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের আরেকাংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে একাদশ গ্রেডে বেতন, উচ্চতর গ্রেড নিয়ে জটিলতা নিরসন ও শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করতে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছে। এ মোর্চাভুক্ত সংগঠনগুলোর শিক্ষকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন না।
দশম গ্রেডে বেতন ছাড়াও শিক্ষকদের বাকি দুটি দাবি হলো চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা। দাবি আদায়ে শনিবার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ওই দিন বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ‘কলমবিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় শাহবাগ থানার সামনে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস শেল নিক্ষেপে কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় শতাধিক আহত হওয়ার দাবি করেন শিক্ষকেরা।
পরে শহীদ মিনারে ফিরে এসে আজ থেকে কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকেরা। আর শনিবার মধ্যরাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে শিক্ষকেরা ‘পুলিশের হামলার’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার প্রস্তাব
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন দুই ধাপ বাড়িয়ে ১১তম গ্রেডে উন্নীত করার প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বছরে অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ৮৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৪ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে লিখিতভাবে এ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তার আগে একই প্রস্তাব অর্থ বিভাগেও পাঠানো হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কাজের গুণগত ও পরিমাণ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বাড়িয়ে ১০তম করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা সম্মতি দিয়েছেন। তাই যৌক্তিকতা বিবেচনা করে সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১১তম গ্রেডে উন্নীত করা প্রয়োজন।

দেশে দৈনিক ৪৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে পেট্রোবাংলা দৈনিক ২৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে। এতে সারা বছরই গ্যাস-সংকটে ভোগে শিল্পকারখানাগুলো। চলমান শীতে সংকট আরও বেড়েছে। গ্যাসের চাপ কমায় রাজধানীর বড় অংশে সারা দিন বাসাবাড়িতে গ্যাস থাকছে না। এতে জ্বলছে না রান্নার চুলা।
১৭ জানুয়ারি ২০২৫
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি চলতি নভেম্বরেই সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেনাকাটাও প্রায় শেষ। তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে। কয়েক দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে।
৪ ঘণ্টা আগে
সুপ্রিম কোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনসংলগ্ন এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আজ রোববার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘এখন প্রশ্ন, বাংলা একাডেমি কি জাহানারা ইমাম, আহমদ শরীফ, মুক্তাগাছা সংগ্রহ বা অন্য কোনো তালিকার বই বিক্রি করেছে? আসলে এ ধরনের কিছুই ঘটেনি। কয়েক বছর আগে থেকে জাহানারা ইমামসহ অন্যদের দেওয়া বইগুলো যেভাবে ছিল, ঠিক সেভাবেই আছে।
৮ ঘণ্টা আগে