
দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে এসব অবৈধ গাড়িতে মহাসড়ক ভরে যাচ্ছে বলে যাত্রীসহ সচেতন নাগরিকেরা অভিযোগ করেছেন।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা গতি বাড়ানোর জন্যই কিন্তু এত টাকা বিনিয়োগ করে মহাসড়ক করছি। কিন্তু সেই মহাসড়কের যে প্রোডাকটিভিটি থাকার কথা, সেটা তো আমরা পাচ্ছি না। কারণ, এই ধরনের বিশৃঙ্খল, ফিটনেসবিহীন, অবৈজ্ঞানিক, অননুমোদিত এবং অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন মহাসড়কে চলছে।’
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬ হাজার ৯২৭টি। এগুলোর মধ্যে মহাসড়কে ঘটেছে ২ হাজার ৩৫৭টি, যা মোট সংখ্যার ৩৪ শতাংশ। তিন চাকার যানবাহনে দুর্ঘটনার সংখ্যা (ইজিবাইক-সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটো ভ্যান-মিশুক ইত্যাদি) ২ হাজার ১৮৫টি। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যায় শীর্ষ অবস্থানে আছে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের মতো যানবাহন, যা মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। এ ছাড়া অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৬৩৭টি। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এই অঞ্চলে ১ হাজার ৫৮২টি দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৮৪০ জন নিহত হয়েছে।
গত ২৭ মার্চ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গাবতলী থেকে নবীনগর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে দেখা যায়, একমুখী রাস্তায় উভয় দিকেই গাড়ি চলাচল করছে; বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও মোটরসাইকেলগুলোকে উল্টো সড়কে চলতে দেখা যায় বেশি। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন নিষিদ্ধ হলেও সড়কজুড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য রয়েছে। রাস্তার ওপর যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে কখনো কখনো রাস্তার মাঝ ধরেই উল্টো পথে আসতে দেখা যায়। আমিনবাজার থেকে সাভার পর্যন্ত এমন অনিয়ম বেশি দেখা যায়।
হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় একজন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক জানান, ইউটার্ন দূরে হওয়ার কারণে উল্টো পথ দিয়েই আসেন তাঁরা। এতে সময় বেঁচে যায়।
রিকশাচালক আলাউদ্দিন বলেন, ‘মহাসড়কে রিকশা অবৈধ, এটা আমি জানি না। আমি তো একা চালাই না, অনেকেই চালায়। তা ছাড়া আমরা তো পুলিশের সামনেই চালাচ্ছি। পুলিশ তো কিছু বলে না।’ পুলিশকে কোনো টাকা দিতে হয় কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না।’
ঢাকা-উত্তরবঙ্গ
জানা যায়, টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের অধীনে ১৩৩ দশমিক ২৫ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ৫৭ দশমিক ৯০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ৩৮৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার জেলা মহাসড়ক রয়েছে। এই মহাসড়কগুলোতে বাস, ট্রাকসহ ভারী যানবাহনের পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন চলাচল করছে অবাধে।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের আশেকপুর বাইপাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া গ্রামের প্রদীপ পাল। টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুরের গোলাবাড়ী নামক স্থানে বেপরোয়া ট্রাকের চাপায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক আব্দুল গফুর, শিক্ষার্থী রুহুল আমিন রনি ও রুহুল আমিন নিহত হন।
বগুড়া-ঢাকা, বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের বগুড়া জেলায় ছয় লেনের মহাসড়ক রয়েছে ৬৮ কিলোমিটার। এই মহাসড়কে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের জন্য পৃথক লেন রয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, সেই লেনে চলাচল না করে এসব যান মূল মহাসড়কেই চলছে। এ ছাড়া বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক ও বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কেও একই চিত্র। মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে নিষিদ্ধ এসব যানবাহনের সংখ্যাই বেশি। বগুড়ার শেরপুর ও নন্দীগ্রামে দুটি হাইওয়ে থানা থাকলেও হাইওয়ে পুলিশের তেমন তৎপরতা দেখা যায় না নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে। অনেক সময় দেখা যায়, হাইওয়ে পুলিশের সামনে দিয়েই এসব যানবাহন চলাচল করছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম
বুধবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘুরে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, মদনপুর পর্যন্ত সড়কে দাপটের সঙ্গে চলাচল করছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক। পুলিশের নজরদারি না থাকায় ইজিবাইকের এমন বেপরোয়া চলাচল।
চার লেনের মহাসড়কের সাইড লেন ছেড়ে দিতে হচ্ছে ইজিবাইকচালকদের জন্য। ফলে প্রশস্ত সড়ক পেয়েও তা ব্যবহার করতে পারছে না দ্রুতগতির যানবাহন। এ ছাড়া বিভিন্ন শাখা সড়কের মোড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় ইজিবাইক দাঁড় করিয়ে রাখা এবং যাত্রী ওঠানো-নামানো হচ্ছে।
মনজিল বাসের চালক আজিজ বলেন, ‘মহাসড়কে আমরা চলি অনেক দ্রুত। আর ইজিবাইক চলে আস্তে আস্তে। এর মধ্যে কয়েকটা উল্টো পথে চালায়। ওদের জন্য আমাদের চলাচলে সমস্যা হয়। রাস্তায় বারবার ব্রেক করা লাগে। দিনের বেলা দেখা যায়, রাতে তো অ্যাক্সিডেন্ট হয় প্রায়ই।’

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর ব্রিজে উল্টো পথে আসা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ইজিবাইক চালকসহ যাত্রী মা ও ছেলে নিহত হন। ৮ এপ্রিল রাত ৯টায় ঢাকাগামী ইম্পেরিয়াল এক্সপ্রেসের সঙ্গে উল্টো পথে আসা ইজিবাইকের সংঘর্ষ হয় ৷ এতে ইজিবাইকচালকসহ ৬ জন গুরুতর আহত হয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কুমিল্লার ১০৪ কিলোমিটার। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে আমজাদের বাজার পর্যন্ত এই অংশে ব্যস্ততম বাইপাস, চৌমুহনী, বাজার এবং বাস স্টপেজগুলোতে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার গাড়ির সংখ্যাই বেশি। কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই মহাসড়ক দাবড়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়কে।
কুমিল্লা জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটি জেলার তিন চাকার যানবাহনপ্রবণ ১২টি স্থান চিহিত করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজার, ইলিয়টগঞ্জ বাজার, বলদা খাল, গোমতী-মেঘনা সেতুর টোল পয়েন্ট, শহীদ নগর; চান্দিনা উপজেলার মাদাইয়া বাজার ও চান্দিনা বাগুর বাসস্ট্যান্ড; বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার; আদর্শ সদর উপজেলার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট মোড় ও আলেখারচর; সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, সুয়াগাজী বাজার ও কোটবাড়ি ইউটার্ন; চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চৌদ্দগ্রাম বাজার, চিওড়া বাজার, মিয়াবাজার ও বাবুর্চি বাজার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের ওই সব এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ যান। অনেক সময় চলন্ত গাড়ি সংকেত দিয়ে দাঁড় করিয়ে মহাসড়কে পারাপার হচ্ছে এসব যান।
ঢাকা-ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ বিআরটিএ কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৩২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে ৪৫৯ জন। বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে বাসের সঙ্গে থ্রি-হুইলারের।
গতকাল রোববার দিনভর মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ, ঢাকা বাইপাস, দীঘারকান্দা, চুরখাই, বইলর, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, রাঘামারা, ভরাডোবা, ভালুকা বাসস্ট্যান্ড, সীডস্টোর, মাস্টারবাড়ী, জয়নাবাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে রয়েছে অটোরিকশার জট। বাইপাস ও চরপাড়া মোড় থেকে ত্রিশাল অভিমুখে ছেড়ে যেতে দেখা যায় তিন চাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাহিন্দ্র নামে পরিচিত (কালো) অটোরিকশা। এসবের চালকেরা দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁদের বাহনটি চালাচ্ছেন মহাসড়কে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি বাজার থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কে গিজগিজ করে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। বিশেষ করে জৈনা বাজার, নয়নপুর, এমসি, মাওনা, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, মাধখলা বাজার বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে শত শত তিন চাকার যান। মহাসড়কের একটি লেন সব সময় অটোরিকশাচালকদের দখলে থাকে। সড়কের পুরোটাজুড়ে দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলাচল করে। সামনে অটোরিকশা পড়ায় দূরপাল্লার পরিবহনগুলোকে ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা যায়। অনেক বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়।
প্রভাতী পরিবহনের বাসচালক আব্দুল হাই বলেন, ‘আমরা সব সময় ভয়ে থাকি অটোরিকশার জন্য। ওদের নাই কোনো প্রশিক্ষণ। যত্রতত্র এদিক-সেদিক ঘুরিয়ে ফেলার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়।’
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী ব্রিজ থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে ৩০টি অটোরিকশার স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। মহাসড়ক পেরিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ঠাসা থাকে শাখা সড়কগুলো। টঙ্গী বাজার, স্টেশন রোড, টঙ্গী পূর্ব থানার প্রধান ফটকে, চেরাগ আলী, কলেজ গেট, হোসেন মার্কেট, এরশাদ নগর, খাঁ পাড়া সড়ক, গাজীপুরা বাসস্ট্যান্ড, তারগাছ, বোর্ডবাজার, কলমেশ্বর, ভোগড়া বাইপাস, চৌরাস্তা এলাকা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে এসব যানবাহনের জটলা দেখা যায়।
প্রযুক্তি নেই, সরাসরি নজরদারিও নেই
মহাসড়কে অব্যবস্থাপনা নিয়ে জানতে চাইলে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, মহাসড়কের অনিয়মগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা থাকতে হয়, স্পিড ক্যামেরা থাকতে হয়। প্রযুক্তির সাহায্য নিলে এগুলো সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু আমাদের মহাসড়কগুলোতে এর ব্যবস্থা খুব একটা নেই। তিনি বলেন, এখন প্রযুক্তিগত নজরদারিও হচ্ছে না, সরাসরি নজরদারিও করছে না পুলিশ। ফলে মানুষের মধ্যে আইন ভাঙার প্রবণতা বেশি। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। অতএব প্রযুক্তিগত নজরদারির ব্যবস্থা নিতে হবে, সে অনুযায়ী আইনও প্রয়োগ করতে হবে। আইন আসলে মানার বিষয়, মানুষ আইন মানতে চায় না। আইন মানার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন
শুধু অবকাঠামো তৈরি করে আসলেই দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয় জানিয়ে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ করতে আমাদের অবশ্যই সমন্বিত পদক্ষেপ লাগবে। কারণ, দুর্ঘটনা কোনো একক কারণে হয় না। যানবাহন থেকে শুরু করে যারা সড়কের ব্যবহারকারী আছে, সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি আমি সবচেয়ে বড় কথা বলব, সড়ক আমি যতই প্রশস্ত করি না কেন, সড়কের দুই পাশে ভূমি ব্যবস্থাপনার ওপর যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি, এই সড়ক সাময়িক কিছুটা স্বস্তি দিলেও এটা খুব দ্রুত ব্ল্যাক স্পটে পরিণত হয়ে যাবে। সেটা যেন না হতে পারে, তার জন্য অবশ্যই আমাদের পলিসি লাগবে। ভূমি ব্যবহারের ওপরে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। নতুবা শুধু সড়ক নড়াচড়া করে আসলে এই দুর্ঘটনা কমবে না।’
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান থাকার কথা না। যদি থাকে, তাহলে এসব গাড়ি উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্টো পথে গাড়ি চালালেই মামলা দেওয়া হবে।’
[প্রতিবেদন তৈরি করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রায়পুরা, টঙ্গী ও শ্রীপুর প্রতিনিধি]

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে এসব অবৈধ গাড়িতে মহাসড়ক ভরে যাচ্ছে বলে যাত্রীসহ সচেতন নাগরিকেরা অভিযোগ করেছেন।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা গতি বাড়ানোর জন্যই কিন্তু এত টাকা বিনিয়োগ করে মহাসড়ক করছি। কিন্তু সেই মহাসড়কের যে প্রোডাকটিভিটি থাকার কথা, সেটা তো আমরা পাচ্ছি না। কারণ, এই ধরনের বিশৃঙ্খল, ফিটনেসবিহীন, অবৈজ্ঞানিক, অননুমোদিত এবং অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন মহাসড়কে চলছে।’
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬ হাজার ৯২৭টি। এগুলোর মধ্যে মহাসড়কে ঘটেছে ২ হাজার ৩৫৭টি, যা মোট সংখ্যার ৩৪ শতাংশ। তিন চাকার যানবাহনে দুর্ঘটনার সংখ্যা (ইজিবাইক-সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটো ভ্যান-মিশুক ইত্যাদি) ২ হাজার ১৮৫টি। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যায় শীর্ষ অবস্থানে আছে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের মতো যানবাহন, যা মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। এ ছাড়া অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৬৩৭টি। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এই অঞ্চলে ১ হাজার ৫৮২টি দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৮৪০ জন নিহত হয়েছে।
গত ২৭ মার্চ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গাবতলী থেকে নবীনগর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে দেখা যায়, একমুখী রাস্তায় উভয় দিকেই গাড়ি চলাচল করছে; বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও মোটরসাইকেলগুলোকে উল্টো সড়কে চলতে দেখা যায় বেশি। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন নিষিদ্ধ হলেও সড়কজুড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য রয়েছে। রাস্তার ওপর যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে কখনো কখনো রাস্তার মাঝ ধরেই উল্টো পথে আসতে দেখা যায়। আমিনবাজার থেকে সাভার পর্যন্ত এমন অনিয়ম বেশি দেখা যায়।
হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় একজন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক জানান, ইউটার্ন দূরে হওয়ার কারণে উল্টো পথ দিয়েই আসেন তাঁরা। এতে সময় বেঁচে যায়।
রিকশাচালক আলাউদ্দিন বলেন, ‘মহাসড়কে রিকশা অবৈধ, এটা আমি জানি না। আমি তো একা চালাই না, অনেকেই চালায়। তা ছাড়া আমরা তো পুলিশের সামনেই চালাচ্ছি। পুলিশ তো কিছু বলে না।’ পুলিশকে কোনো টাকা দিতে হয় কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না।’
ঢাকা-উত্তরবঙ্গ
জানা যায়, টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের অধীনে ১৩৩ দশমিক ২৫ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ৫৭ দশমিক ৯০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ৩৮৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার জেলা মহাসড়ক রয়েছে। এই মহাসড়কগুলোতে বাস, ট্রাকসহ ভারী যানবাহনের পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন চলাচল করছে অবাধে।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের আশেকপুর বাইপাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া গ্রামের প্রদীপ পাল। টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুরের গোলাবাড়ী নামক স্থানে বেপরোয়া ট্রাকের চাপায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক আব্দুল গফুর, শিক্ষার্থী রুহুল আমিন রনি ও রুহুল আমিন নিহত হন।
বগুড়া-ঢাকা, বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের বগুড়া জেলায় ছয় লেনের মহাসড়ক রয়েছে ৬৮ কিলোমিটার। এই মহাসড়কে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের জন্য পৃথক লেন রয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, সেই লেনে চলাচল না করে এসব যান মূল মহাসড়কেই চলছে। এ ছাড়া বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক ও বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কেও একই চিত্র। মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে নিষিদ্ধ এসব যানবাহনের সংখ্যাই বেশি। বগুড়ার শেরপুর ও নন্দীগ্রামে দুটি হাইওয়ে থানা থাকলেও হাইওয়ে পুলিশের তেমন তৎপরতা দেখা যায় না নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে। অনেক সময় দেখা যায়, হাইওয়ে পুলিশের সামনে দিয়েই এসব যানবাহন চলাচল করছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম
বুধবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘুরে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, মদনপুর পর্যন্ত সড়কে দাপটের সঙ্গে চলাচল করছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক। পুলিশের নজরদারি না থাকায় ইজিবাইকের এমন বেপরোয়া চলাচল।
চার লেনের মহাসড়কের সাইড লেন ছেড়ে দিতে হচ্ছে ইজিবাইকচালকদের জন্য। ফলে প্রশস্ত সড়ক পেয়েও তা ব্যবহার করতে পারছে না দ্রুতগতির যানবাহন। এ ছাড়া বিভিন্ন শাখা সড়কের মোড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় ইজিবাইক দাঁড় করিয়ে রাখা এবং যাত্রী ওঠানো-নামানো হচ্ছে।
মনজিল বাসের চালক আজিজ বলেন, ‘মহাসড়কে আমরা চলি অনেক দ্রুত। আর ইজিবাইক চলে আস্তে আস্তে। এর মধ্যে কয়েকটা উল্টো পথে চালায়। ওদের জন্য আমাদের চলাচলে সমস্যা হয়। রাস্তায় বারবার ব্রেক করা লাগে। দিনের বেলা দেখা যায়, রাতে তো অ্যাক্সিডেন্ট হয় প্রায়ই।’

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর ব্রিজে উল্টো পথে আসা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ইজিবাইক চালকসহ যাত্রী মা ও ছেলে নিহত হন। ৮ এপ্রিল রাত ৯টায় ঢাকাগামী ইম্পেরিয়াল এক্সপ্রেসের সঙ্গে উল্টো পথে আসা ইজিবাইকের সংঘর্ষ হয় ৷ এতে ইজিবাইকচালকসহ ৬ জন গুরুতর আহত হয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কুমিল্লার ১০৪ কিলোমিটার। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে আমজাদের বাজার পর্যন্ত এই অংশে ব্যস্ততম বাইপাস, চৌমুহনী, বাজার এবং বাস স্টপেজগুলোতে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার গাড়ির সংখ্যাই বেশি। কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই মহাসড়ক দাবড়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়কে।
কুমিল্লা জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটি জেলার তিন চাকার যানবাহনপ্রবণ ১২টি স্থান চিহিত করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজার, ইলিয়টগঞ্জ বাজার, বলদা খাল, গোমতী-মেঘনা সেতুর টোল পয়েন্ট, শহীদ নগর; চান্দিনা উপজেলার মাদাইয়া বাজার ও চান্দিনা বাগুর বাসস্ট্যান্ড; বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার; আদর্শ সদর উপজেলার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট মোড় ও আলেখারচর; সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, সুয়াগাজী বাজার ও কোটবাড়ি ইউটার্ন; চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চৌদ্দগ্রাম বাজার, চিওড়া বাজার, মিয়াবাজার ও বাবুর্চি বাজার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের ওই সব এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ যান। অনেক সময় চলন্ত গাড়ি সংকেত দিয়ে দাঁড় করিয়ে মহাসড়কে পারাপার হচ্ছে এসব যান।
ঢাকা-ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ বিআরটিএ কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৩২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে ৪৫৯ জন। বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে বাসের সঙ্গে থ্রি-হুইলারের।
গতকাল রোববার দিনভর মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ, ঢাকা বাইপাস, দীঘারকান্দা, চুরখাই, বইলর, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, রাঘামারা, ভরাডোবা, ভালুকা বাসস্ট্যান্ড, সীডস্টোর, মাস্টারবাড়ী, জয়নাবাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে রয়েছে অটোরিকশার জট। বাইপাস ও চরপাড়া মোড় থেকে ত্রিশাল অভিমুখে ছেড়ে যেতে দেখা যায় তিন চাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাহিন্দ্র নামে পরিচিত (কালো) অটোরিকশা। এসবের চালকেরা দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁদের বাহনটি চালাচ্ছেন মহাসড়কে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি বাজার থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কে গিজগিজ করে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। বিশেষ করে জৈনা বাজার, নয়নপুর, এমসি, মাওনা, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, মাধখলা বাজার বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে শত শত তিন চাকার যান। মহাসড়কের একটি লেন সব সময় অটোরিকশাচালকদের দখলে থাকে। সড়কের পুরোটাজুড়ে দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলাচল করে। সামনে অটোরিকশা পড়ায় দূরপাল্লার পরিবহনগুলোকে ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা যায়। অনেক বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়।
প্রভাতী পরিবহনের বাসচালক আব্দুল হাই বলেন, ‘আমরা সব সময় ভয়ে থাকি অটোরিকশার জন্য। ওদের নাই কোনো প্রশিক্ষণ। যত্রতত্র এদিক-সেদিক ঘুরিয়ে ফেলার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়।’
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী ব্রিজ থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে ৩০টি অটোরিকশার স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। মহাসড়ক পেরিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ঠাসা থাকে শাখা সড়কগুলো। টঙ্গী বাজার, স্টেশন রোড, টঙ্গী পূর্ব থানার প্রধান ফটকে, চেরাগ আলী, কলেজ গেট, হোসেন মার্কেট, এরশাদ নগর, খাঁ পাড়া সড়ক, গাজীপুরা বাসস্ট্যান্ড, তারগাছ, বোর্ডবাজার, কলমেশ্বর, ভোগড়া বাইপাস, চৌরাস্তা এলাকা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে এসব যানবাহনের জটলা দেখা যায়।
প্রযুক্তি নেই, সরাসরি নজরদারিও নেই
মহাসড়কে অব্যবস্থাপনা নিয়ে জানতে চাইলে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, মহাসড়কের অনিয়মগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা থাকতে হয়, স্পিড ক্যামেরা থাকতে হয়। প্রযুক্তির সাহায্য নিলে এগুলো সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু আমাদের মহাসড়কগুলোতে এর ব্যবস্থা খুব একটা নেই। তিনি বলেন, এখন প্রযুক্তিগত নজরদারিও হচ্ছে না, সরাসরি নজরদারিও করছে না পুলিশ। ফলে মানুষের মধ্যে আইন ভাঙার প্রবণতা বেশি। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। অতএব প্রযুক্তিগত নজরদারির ব্যবস্থা নিতে হবে, সে অনুযায়ী আইনও প্রয়োগ করতে হবে। আইন আসলে মানার বিষয়, মানুষ আইন মানতে চায় না। আইন মানার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন
শুধু অবকাঠামো তৈরি করে আসলেই দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয় জানিয়ে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ করতে আমাদের অবশ্যই সমন্বিত পদক্ষেপ লাগবে। কারণ, দুর্ঘটনা কোনো একক কারণে হয় না। যানবাহন থেকে শুরু করে যারা সড়কের ব্যবহারকারী আছে, সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি আমি সবচেয়ে বড় কথা বলব, সড়ক আমি যতই প্রশস্ত করি না কেন, সড়কের দুই পাশে ভূমি ব্যবস্থাপনার ওপর যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি, এই সড়ক সাময়িক কিছুটা স্বস্তি দিলেও এটা খুব দ্রুত ব্ল্যাক স্পটে পরিণত হয়ে যাবে। সেটা যেন না হতে পারে, তার জন্য অবশ্যই আমাদের পলিসি লাগবে। ভূমি ব্যবহারের ওপরে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। নতুবা শুধু সড়ক নড়াচড়া করে আসলে এই দুর্ঘটনা কমবে না।’
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান থাকার কথা না। যদি থাকে, তাহলে এসব গাড়ি উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্টো পথে গাড়ি চালালেই মামলা দেওয়া হবে।’
[প্রতিবেদন তৈরি করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রায়পুরা, টঙ্গী ও শ্রীপুর প্রতিনিধি]

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে এসব অবৈধ গাড়িতে মহাসড়ক ভরে যাচ্ছে বলে যাত্রীসহ সচেতন নাগরিকেরা অভিযোগ করেছেন।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা গতি বাড়ানোর জন্যই কিন্তু এত টাকা বিনিয়োগ করে মহাসড়ক করছি। কিন্তু সেই মহাসড়কের যে প্রোডাকটিভিটি থাকার কথা, সেটা তো আমরা পাচ্ছি না। কারণ, এই ধরনের বিশৃঙ্খল, ফিটনেসবিহীন, অবৈজ্ঞানিক, অননুমোদিত এবং অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন মহাসড়কে চলছে।’
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬ হাজার ৯২৭টি। এগুলোর মধ্যে মহাসড়কে ঘটেছে ২ হাজার ৩৫৭টি, যা মোট সংখ্যার ৩৪ শতাংশ। তিন চাকার যানবাহনে দুর্ঘটনার সংখ্যা (ইজিবাইক-সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটো ভ্যান-মিশুক ইত্যাদি) ২ হাজার ১৮৫টি। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যায় শীর্ষ অবস্থানে আছে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের মতো যানবাহন, যা মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। এ ছাড়া অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৬৩৭টি। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এই অঞ্চলে ১ হাজার ৫৮২টি দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৮৪০ জন নিহত হয়েছে।
গত ২৭ মার্চ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গাবতলী থেকে নবীনগর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে দেখা যায়, একমুখী রাস্তায় উভয় দিকেই গাড়ি চলাচল করছে; বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও মোটরসাইকেলগুলোকে উল্টো সড়কে চলতে দেখা যায় বেশি। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন নিষিদ্ধ হলেও সড়কজুড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য রয়েছে। রাস্তার ওপর যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে কখনো কখনো রাস্তার মাঝ ধরেই উল্টো পথে আসতে দেখা যায়। আমিনবাজার থেকে সাভার পর্যন্ত এমন অনিয়ম বেশি দেখা যায়।
হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় একজন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক জানান, ইউটার্ন দূরে হওয়ার কারণে উল্টো পথ দিয়েই আসেন তাঁরা। এতে সময় বেঁচে যায়।
রিকশাচালক আলাউদ্দিন বলেন, ‘মহাসড়কে রিকশা অবৈধ, এটা আমি জানি না। আমি তো একা চালাই না, অনেকেই চালায়। তা ছাড়া আমরা তো পুলিশের সামনেই চালাচ্ছি। পুলিশ তো কিছু বলে না।’ পুলিশকে কোনো টাকা দিতে হয় কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না।’
ঢাকা-উত্তরবঙ্গ
জানা যায়, টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের অধীনে ১৩৩ দশমিক ২৫ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ৫৭ দশমিক ৯০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ৩৮৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার জেলা মহাসড়ক রয়েছে। এই মহাসড়কগুলোতে বাস, ট্রাকসহ ভারী যানবাহনের পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন চলাচল করছে অবাধে।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের আশেকপুর বাইপাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া গ্রামের প্রদীপ পাল। টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুরের গোলাবাড়ী নামক স্থানে বেপরোয়া ট্রাকের চাপায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক আব্দুল গফুর, শিক্ষার্থী রুহুল আমিন রনি ও রুহুল আমিন নিহত হন।
বগুড়া-ঢাকা, বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের বগুড়া জেলায় ছয় লেনের মহাসড়ক রয়েছে ৬৮ কিলোমিটার। এই মহাসড়কে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের জন্য পৃথক লেন রয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, সেই লেনে চলাচল না করে এসব যান মূল মহাসড়কেই চলছে। এ ছাড়া বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক ও বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কেও একই চিত্র। মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে নিষিদ্ধ এসব যানবাহনের সংখ্যাই বেশি। বগুড়ার শেরপুর ও নন্দীগ্রামে দুটি হাইওয়ে থানা থাকলেও হাইওয়ে পুলিশের তেমন তৎপরতা দেখা যায় না নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে। অনেক সময় দেখা যায়, হাইওয়ে পুলিশের সামনে দিয়েই এসব যানবাহন চলাচল করছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম
বুধবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘুরে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, মদনপুর পর্যন্ত সড়কে দাপটের সঙ্গে চলাচল করছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক। পুলিশের নজরদারি না থাকায় ইজিবাইকের এমন বেপরোয়া চলাচল।
চার লেনের মহাসড়কের সাইড লেন ছেড়ে দিতে হচ্ছে ইজিবাইকচালকদের জন্য। ফলে প্রশস্ত সড়ক পেয়েও তা ব্যবহার করতে পারছে না দ্রুতগতির যানবাহন। এ ছাড়া বিভিন্ন শাখা সড়কের মোড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় ইজিবাইক দাঁড় করিয়ে রাখা এবং যাত্রী ওঠানো-নামানো হচ্ছে।
মনজিল বাসের চালক আজিজ বলেন, ‘মহাসড়কে আমরা চলি অনেক দ্রুত। আর ইজিবাইক চলে আস্তে আস্তে। এর মধ্যে কয়েকটা উল্টো পথে চালায়। ওদের জন্য আমাদের চলাচলে সমস্যা হয়। রাস্তায় বারবার ব্রেক করা লাগে। দিনের বেলা দেখা যায়, রাতে তো অ্যাক্সিডেন্ট হয় প্রায়ই।’

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর ব্রিজে উল্টো পথে আসা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ইজিবাইক চালকসহ যাত্রী মা ও ছেলে নিহত হন। ৮ এপ্রিল রাত ৯টায় ঢাকাগামী ইম্পেরিয়াল এক্সপ্রেসের সঙ্গে উল্টো পথে আসা ইজিবাইকের সংঘর্ষ হয় ৷ এতে ইজিবাইকচালকসহ ৬ জন গুরুতর আহত হয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কুমিল্লার ১০৪ কিলোমিটার। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে আমজাদের বাজার পর্যন্ত এই অংশে ব্যস্ততম বাইপাস, চৌমুহনী, বাজার এবং বাস স্টপেজগুলোতে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার গাড়ির সংখ্যাই বেশি। কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই মহাসড়ক দাবড়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়কে।
কুমিল্লা জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটি জেলার তিন চাকার যানবাহনপ্রবণ ১২টি স্থান চিহিত করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজার, ইলিয়টগঞ্জ বাজার, বলদা খাল, গোমতী-মেঘনা সেতুর টোল পয়েন্ট, শহীদ নগর; চান্দিনা উপজেলার মাদাইয়া বাজার ও চান্দিনা বাগুর বাসস্ট্যান্ড; বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার; আদর্শ সদর উপজেলার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট মোড় ও আলেখারচর; সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, সুয়াগাজী বাজার ও কোটবাড়ি ইউটার্ন; চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চৌদ্দগ্রাম বাজার, চিওড়া বাজার, মিয়াবাজার ও বাবুর্চি বাজার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের ওই সব এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ যান। অনেক সময় চলন্ত গাড়ি সংকেত দিয়ে দাঁড় করিয়ে মহাসড়কে পারাপার হচ্ছে এসব যান।
ঢাকা-ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ বিআরটিএ কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৩২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে ৪৫৯ জন। বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে বাসের সঙ্গে থ্রি-হুইলারের।
গতকাল রোববার দিনভর মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ, ঢাকা বাইপাস, দীঘারকান্দা, চুরখাই, বইলর, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, রাঘামারা, ভরাডোবা, ভালুকা বাসস্ট্যান্ড, সীডস্টোর, মাস্টারবাড়ী, জয়নাবাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে রয়েছে অটোরিকশার জট। বাইপাস ও চরপাড়া মোড় থেকে ত্রিশাল অভিমুখে ছেড়ে যেতে দেখা যায় তিন চাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাহিন্দ্র নামে পরিচিত (কালো) অটোরিকশা। এসবের চালকেরা দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁদের বাহনটি চালাচ্ছেন মহাসড়কে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি বাজার থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কে গিজগিজ করে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। বিশেষ করে জৈনা বাজার, নয়নপুর, এমসি, মাওনা, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, মাধখলা বাজার বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে শত শত তিন চাকার যান। মহাসড়কের একটি লেন সব সময় অটোরিকশাচালকদের দখলে থাকে। সড়কের পুরোটাজুড়ে দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলাচল করে। সামনে অটোরিকশা পড়ায় দূরপাল্লার পরিবহনগুলোকে ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা যায়। অনেক বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়।
প্রভাতী পরিবহনের বাসচালক আব্দুল হাই বলেন, ‘আমরা সব সময় ভয়ে থাকি অটোরিকশার জন্য। ওদের নাই কোনো প্রশিক্ষণ। যত্রতত্র এদিক-সেদিক ঘুরিয়ে ফেলার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়।’
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী ব্রিজ থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে ৩০টি অটোরিকশার স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। মহাসড়ক পেরিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ঠাসা থাকে শাখা সড়কগুলো। টঙ্গী বাজার, স্টেশন রোড, টঙ্গী পূর্ব থানার প্রধান ফটকে, চেরাগ আলী, কলেজ গেট, হোসেন মার্কেট, এরশাদ নগর, খাঁ পাড়া সড়ক, গাজীপুরা বাসস্ট্যান্ড, তারগাছ, বোর্ডবাজার, কলমেশ্বর, ভোগড়া বাইপাস, চৌরাস্তা এলাকা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে এসব যানবাহনের জটলা দেখা যায়।
প্রযুক্তি নেই, সরাসরি নজরদারিও নেই
মহাসড়কে অব্যবস্থাপনা নিয়ে জানতে চাইলে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, মহাসড়কের অনিয়মগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা থাকতে হয়, স্পিড ক্যামেরা থাকতে হয়। প্রযুক্তির সাহায্য নিলে এগুলো সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু আমাদের মহাসড়কগুলোতে এর ব্যবস্থা খুব একটা নেই। তিনি বলেন, এখন প্রযুক্তিগত নজরদারিও হচ্ছে না, সরাসরি নজরদারিও করছে না পুলিশ। ফলে মানুষের মধ্যে আইন ভাঙার প্রবণতা বেশি। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। অতএব প্রযুক্তিগত নজরদারির ব্যবস্থা নিতে হবে, সে অনুযায়ী আইনও প্রয়োগ করতে হবে। আইন আসলে মানার বিষয়, মানুষ আইন মানতে চায় না। আইন মানার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন
শুধু অবকাঠামো তৈরি করে আসলেই দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয় জানিয়ে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ করতে আমাদের অবশ্যই সমন্বিত পদক্ষেপ লাগবে। কারণ, দুর্ঘটনা কোনো একক কারণে হয় না। যানবাহন থেকে শুরু করে যারা সড়কের ব্যবহারকারী আছে, সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি আমি সবচেয়ে বড় কথা বলব, সড়ক আমি যতই প্রশস্ত করি না কেন, সড়কের দুই পাশে ভূমি ব্যবস্থাপনার ওপর যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি, এই সড়ক সাময়িক কিছুটা স্বস্তি দিলেও এটা খুব দ্রুত ব্ল্যাক স্পটে পরিণত হয়ে যাবে। সেটা যেন না হতে পারে, তার জন্য অবশ্যই আমাদের পলিসি লাগবে। ভূমি ব্যবহারের ওপরে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। নতুবা শুধু সড়ক নড়াচড়া করে আসলে এই দুর্ঘটনা কমবে না।’
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান থাকার কথা না। যদি থাকে, তাহলে এসব গাড়ি উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্টো পথে গাড়ি চালালেই মামলা দেওয়া হবে।’
[প্রতিবেদন তৈরি করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রায়পুরা, টঙ্গী ও শ্রীপুর প্রতিনিধি]

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে এসব অবৈধ গাড়িতে মহাসড়ক ভরে যাচ্ছে বলে যাত্রীসহ সচেতন নাগরিকেরা অভিযোগ করেছেন।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা গতি বাড়ানোর জন্যই কিন্তু এত টাকা বিনিয়োগ করে মহাসড়ক করছি। কিন্তু সেই মহাসড়কের যে প্রোডাকটিভিটি থাকার কথা, সেটা তো আমরা পাচ্ছি না। কারণ, এই ধরনের বিশৃঙ্খল, ফিটনেসবিহীন, অবৈজ্ঞানিক, অননুমোদিত এবং অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন মহাসড়কে চলছে।’
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬ হাজার ৯২৭টি। এগুলোর মধ্যে মহাসড়কে ঘটেছে ২ হাজার ৩৫৭টি, যা মোট সংখ্যার ৩৪ শতাংশ। তিন চাকার যানবাহনে দুর্ঘটনার সংখ্যা (ইজিবাইক-সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-অটো ভ্যান-মিশুক ইত্যাদি) ২ হাজার ১৮৫টি। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যায় শীর্ষ অবস্থানে আছে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের মতো যানবাহন, যা মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ। এ ছাড়া অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৬৩৭টি। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এই অঞ্চলে ১ হাজার ৫৮২টি দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৮৪০ জন নিহত হয়েছে।
গত ২৭ মার্চ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গাবতলী থেকে নবীনগর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিয়ে দেখা যায়, একমুখী রাস্তায় উভয় দিকেই গাড়ি চলাচল করছে; বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও মোটরসাইকেলগুলোকে উল্টো সড়কে চলতে দেখা যায় বেশি। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন নিষিদ্ধ হলেও সড়কজুড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য রয়েছে। রাস্তার ওপর যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে কখনো কখনো রাস্তার মাঝ ধরেই উল্টো পথে আসতে দেখা যায়। আমিনবাজার থেকে সাভার পর্যন্ত এমন অনিয়ম বেশি দেখা যায়।
হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় একজন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক জানান, ইউটার্ন দূরে হওয়ার কারণে উল্টো পথ দিয়েই আসেন তাঁরা। এতে সময় বেঁচে যায়।
রিকশাচালক আলাউদ্দিন বলেন, ‘মহাসড়কে রিকশা অবৈধ, এটা আমি জানি না। আমি তো একা চালাই না, অনেকেই চালায়। তা ছাড়া আমরা তো পুলিশের সামনেই চালাচ্ছি। পুলিশ তো কিছু বলে না।’ পুলিশকে কোনো টাকা দিতে হয় কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না।’
ঢাকা-উত্তরবঙ্গ
জানা যায়, টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের অধীনে ১৩৩ দশমিক ২৫ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, ৫৭ দশমিক ৯০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ৩৮৭ দশমিক ৪০ কিলোমিটার জেলা মহাসড়ক রয়েছে। এই মহাসড়কগুলোতে বাস, ট্রাকসহ ভারী যানবাহনের পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন চলাচল করছে অবাধে।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের আশেকপুর বাইপাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া গ্রামের প্রদীপ পাল। টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুরের গোলাবাড়ী নামক স্থানে বেপরোয়া ট্রাকের চাপায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক আব্দুল গফুর, শিক্ষার্থী রুহুল আমিন রনি ও রুহুল আমিন নিহত হন।
বগুড়া-ঢাকা, বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের বগুড়া জেলায় ছয় লেনের মহাসড়ক রয়েছে ৬৮ কিলোমিটার। এই মহাসড়কে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলের জন্য পৃথক লেন রয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, সেই লেনে চলাচল না করে এসব যান মূল মহাসড়কেই চলছে। এ ছাড়া বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক ও বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কেও একই চিত্র। মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বাস-ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে নিষিদ্ধ এসব যানবাহনের সংখ্যাই বেশি। বগুড়ার শেরপুর ও নন্দীগ্রামে দুটি হাইওয়ে থানা থাকলেও হাইওয়ে পুলিশের তেমন তৎপরতা দেখা যায় না নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে। অনেক সময় দেখা যায়, হাইওয়ে পুলিশের সামনে দিয়েই এসব যানবাহন চলাচল করছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম
বুধবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘুরে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর, মদনপুর পর্যন্ত সড়কে দাপটের সঙ্গে চলাচল করছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক। পুলিশের নজরদারি না থাকায় ইজিবাইকের এমন বেপরোয়া চলাচল।
চার লেনের মহাসড়কের সাইড লেন ছেড়ে দিতে হচ্ছে ইজিবাইকচালকদের জন্য। ফলে প্রশস্ত সড়ক পেয়েও তা ব্যবহার করতে পারছে না দ্রুতগতির যানবাহন। এ ছাড়া বিভিন্ন শাখা সড়কের মোড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় ইজিবাইক দাঁড় করিয়ে রাখা এবং যাত্রী ওঠানো-নামানো হচ্ছে।
মনজিল বাসের চালক আজিজ বলেন, ‘মহাসড়কে আমরা চলি অনেক দ্রুত। আর ইজিবাইক চলে আস্তে আস্তে। এর মধ্যে কয়েকটা উল্টো পথে চালায়। ওদের জন্য আমাদের চলাচলে সমস্যা হয়। রাস্তায় বারবার ব্রেক করা লাগে। দিনের বেলা দেখা যায়, রাতে তো অ্যাক্সিডেন্ট হয় প্রায়ই।’

গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর ব্রিজে উল্টো পথে আসা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে ইজিবাইক চালকসহ যাত্রী মা ও ছেলে নিহত হন। ৮ এপ্রিল রাত ৯টায় ঢাকাগামী ইম্পেরিয়াল এক্সপ্রেসের সঙ্গে উল্টো পথে আসা ইজিবাইকের সংঘর্ষ হয় ৷ এতে ইজিবাইকচালকসহ ৬ জন গুরুতর আহত হয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কুমিল্লার ১০৪ কিলোমিটার। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা থেকে চৌদ্দগ্রামে আমজাদের বাজার পর্যন্ত এই অংশে ব্যস্ততম বাইপাস, চৌমুহনী, বাজার এবং বাস স্টপেজগুলোতে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার গাড়ির সংখ্যাই বেশি। কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই মহাসড়ক দাবড়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়কে।
কুমিল্লা জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটি জেলার তিন চাকার যানবাহনপ্রবণ ১২টি স্থান চিহিত করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজার, ইলিয়টগঞ্জ বাজার, বলদা খাল, গোমতী-মেঘনা সেতুর টোল পয়েন্ট, শহীদ নগর; চান্দিনা উপজেলার মাদাইয়া বাজার ও চান্দিনা বাগুর বাসস্ট্যান্ড; বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজার; আদর্শ সদর উপজেলার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট মোড় ও আলেখারচর; সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, সুয়াগাজী বাজার ও কোটবাড়ি ইউটার্ন; চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চৌদ্দগ্রাম বাজার, চিওড়া বাজার, মিয়াবাজার ও বাবুর্চি বাজার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের ওই সব এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ যান। অনেক সময় চলন্ত গাড়ি সংকেত দিয়ে দাঁড় করিয়ে মহাসড়কে পারাপার হচ্ছে এসব যান।
ঢাকা-ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ বিআরটিএ কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৩২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে ৪৫৯ জন। বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে বাসের সঙ্গে থ্রি-হুইলারের।
গতকাল রোববার দিনভর মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ, ঢাকা বাইপাস, দীঘারকান্দা, চুরখাই, বইলর, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, রাঘামারা, ভরাডোবা, ভালুকা বাসস্ট্যান্ড, সীডস্টোর, মাস্টারবাড়ী, জয়নাবাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে রয়েছে অটোরিকশার জট। বাইপাস ও চরপাড়া মোড় থেকে ত্রিশাল অভিমুখে ছেড়ে যেতে দেখা যায় তিন চাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাহিন্দ্র নামে পরিচিত (কালো) অটোরিকশা। এসবের চালকেরা দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাঁদের বাহনটি চালাচ্ছেন মহাসড়কে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি বাজার থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কে গিজগিজ করে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। বিশেষ করে জৈনা বাজার, নয়নপুর, এমসি, মাওনা, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, মাধখলা বাজার বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকে শত শত তিন চাকার যান। মহাসড়কের একটি লেন সব সময় অটোরিকশাচালকদের দখলে থাকে। সড়কের পুরোটাজুড়ে দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলাচল করে। সামনে অটোরিকশা পড়ায় দূরপাল্লার পরিবহনগুলোকে ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা যায়। অনেক বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয়।
প্রভাতী পরিবহনের বাসচালক আব্দুল হাই বলেন, ‘আমরা সব সময় ভয়ে থাকি অটোরিকশার জন্য। ওদের নাই কোনো প্রশিক্ষণ। যত্রতত্র এদিক-সেদিক ঘুরিয়ে ফেলার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়।’
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী ব্রিজ থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে ৩০টি অটোরিকশার স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। মহাসড়ক পেরিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ঠাসা থাকে শাখা সড়কগুলো। টঙ্গী বাজার, স্টেশন রোড, টঙ্গী পূর্ব থানার প্রধান ফটকে, চেরাগ আলী, কলেজ গেট, হোসেন মার্কেট, এরশাদ নগর, খাঁ পাড়া সড়ক, গাজীপুরা বাসস্ট্যান্ড, তারগাছ, বোর্ডবাজার, কলমেশ্বর, ভোগড়া বাইপাস, চৌরাস্তা এলাকা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে এসব যানবাহনের জটলা দেখা যায়।
প্রযুক্তি নেই, সরাসরি নজরদারিও নেই
মহাসড়কে অব্যবস্থাপনা নিয়ে জানতে চাইলে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, মহাসড়কের অনিয়মগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা থাকতে হয়, স্পিড ক্যামেরা থাকতে হয়। প্রযুক্তির সাহায্য নিলে এগুলো সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু আমাদের মহাসড়কগুলোতে এর ব্যবস্থা খুব একটা নেই। তিনি বলেন, এখন প্রযুক্তিগত নজরদারিও হচ্ছে না, সরাসরি নজরদারিও করছে না পুলিশ। ফলে মানুষের মধ্যে আইন ভাঙার প্রবণতা বেশি। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। অতএব প্রযুক্তিগত নজরদারির ব্যবস্থা নিতে হবে, সে অনুযায়ী আইনও প্রয়োগ করতে হবে। আইন আসলে মানার বিষয়, মানুষ আইন মানতে চায় না। আইন মানার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন
শুধু অবকাঠামো তৈরি করে আসলেই দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয় জানিয়ে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ করতে আমাদের অবশ্যই সমন্বিত পদক্ষেপ লাগবে। কারণ, দুর্ঘটনা কোনো একক কারণে হয় না। যানবাহন থেকে শুরু করে যারা সড়কের ব্যবহারকারী আছে, সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি আমি সবচেয়ে বড় কথা বলব, সড়ক আমি যতই প্রশস্ত করি না কেন, সড়কের দুই পাশে ভূমি ব্যবস্থাপনার ওপর যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি, এই সড়ক সাময়িক কিছুটা স্বস্তি দিলেও এটা খুব দ্রুত ব্ল্যাক স্পটে পরিণত হয়ে যাবে। সেটা যেন না হতে পারে, তার জন্য অবশ্যই আমাদের পলিসি লাগবে। ভূমি ব্যবহারের ওপরে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। নতুবা শুধু সড়ক নড়াচড়া করে আসলে এই দুর্ঘটনা কমবে না।’
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান থাকার কথা না। যদি থাকে, তাহলে এসব গাড়ি উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্টো পথে গাড়ি চালালেই মামলা দেওয়া হবে।’
[প্রতিবেদন তৈরি করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রায়পুরা, টঙ্গী ও শ্রীপুর প্রতিনিধি]

রাজনৈতিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শক্ত ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। দলটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে জাতির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য ‘অস্তিত্বের হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
১ ঘণ্টা আগে
চার দিনের শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ পিএনএস সাইফ (PNS SAIF)। আজ শনিবার জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছালে কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলের পক্ষ থেকে চিফ স্টাফ অফিসার জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর সুসজ্জিত বাদকদল ঐতিহ্যবাহী রীতি অনুযায়ী
১ ঘণ্টা আগে
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করা সুদূরপ্রসারী চক্রান্তমূলক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অংশ। পাঠ্যক্রম থেকে চারুকলা, সংগীত, নৃত্যকলা, নাট্যকলাও বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। উদীচী মনে করে, এসব সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী, সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সংকীর্ণতাপ্রসূত
২ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আরও ১৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নতুন ঘোষণার ফলে মোট নিবন্ধিত দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার সংখ্যা ৮২-তে পৌঁছানোর পথে।
৩ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

রাজনৈতিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শক্ত ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। দলটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে জাতির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য ‘অস্তিত্বের হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
আজ শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ট্রেস কনসাল্টিং আয়োজিত ‘রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিফলিত করতে পারে’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, “শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে এখন সবার একটি স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া জরুরি। তিনি এখনো জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রেস সচিব বলেন, “তিনি বাংলাদেশের জনগণকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আমি মনে করি, এই বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য অস্তিত্বের হুমকি। একজন মানুষকে যখন ‘সন্ত্রাসী’ বলা হয়, তখন আসলে তাঁকে হত্যাযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তিনি কি ১৮ কোটি মানুষকে শত্রু ঘোষণা করে আবার ক্ষমতায় ফেরার চেষ্টা করছেন?”
সাংবাদিক এনায়েতুল্লাহ খানের বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘এনায়েতুল্লাহ খান একসময় লিখেছিলেন— ১৯৭৪ সালে শেখ মুজিব ৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষকে কোলাবরেটরস বা রাজাকার বানিয়েছিলেন, আর এখন তাঁর মেয়ে ১৮ কোটি মানুষকে সন্ত্রাসী বলছেন! এটা কল্পনাতীত।’
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, ‘সরকার ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ নিয়ে কোনো দ্বিধা-সংকোচ থাকা উচিত নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘শাসন ব্যবস্থা ও জুলাই সনদ নিয়ে বিতর্ক সুস্থ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। সারা বিশ্বে সংবিধান সংক্রান্ত বিতর্কে সময় লাগে, কখনো তা দশক ধরেও চলে। রাতারাতি কোনো সমাধান চাপিয়ে দেওয়া যায় না।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত না নিতে পারে, তাহলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনিশ্চয়তা দূর করতে ম্যান্ডেট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা এখন একটি ফ্র্যাকচারড পলিটিক্যাল সিচুয়েশন দেখছি। এখন ডান, বাম ও মধ্যপন্থী সব পক্ষের অংশগ্রহণে গণতান্ত্রিক সমাধান প্রয়োজন।’
অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ট্রেস-এর সিইও ফুয়াদ এম খালিদ হোসেন, বাংলাদেশ কটন ও কনফেকশনরি এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)-এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম।
প্যানেল আলোচনায় সঞ্চালনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাব এনাম খান। এতে কূটনীতিক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা ছিলেন।

রাজনৈতিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শক্ত ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। দলটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে জাতির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য ‘অস্তিত্বের হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
আজ শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ট্রেস কনসাল্টিং আয়োজিত ‘রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিফলিত করতে পারে’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, “শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে এখন সবার একটি স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া জরুরি। তিনি এখনো জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে প্রেস সচিব বলেন, “তিনি বাংলাদেশের জনগণকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আমি মনে করি, এই বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য অস্তিত্বের হুমকি। একজন মানুষকে যখন ‘সন্ত্রাসী’ বলা হয়, তখন আসলে তাঁকে হত্যাযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তিনি কি ১৮ কোটি মানুষকে শত্রু ঘোষণা করে আবার ক্ষমতায় ফেরার চেষ্টা করছেন?”
সাংবাদিক এনায়েতুল্লাহ খানের বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘এনায়েতুল্লাহ খান একসময় লিখেছিলেন— ১৯৭৪ সালে শেখ মুজিব ৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষকে কোলাবরেটরস বা রাজাকার বানিয়েছিলেন, আর এখন তাঁর মেয়ে ১৮ কোটি মানুষকে সন্ত্রাসী বলছেন! এটা কল্পনাতীত।’
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, ‘সরকার ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ নিয়ে কোনো দ্বিধা-সংকোচ থাকা উচিত নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘শাসন ব্যবস্থা ও জুলাই সনদ নিয়ে বিতর্ক সুস্থ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। সারা বিশ্বে সংবিধান সংক্রান্ত বিতর্কে সময় লাগে, কখনো তা দশক ধরেও চলে। রাতারাতি কোনো সমাধান চাপিয়ে দেওয়া যায় না।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত না নিতে পারে, তাহলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনিশ্চয়তা দূর করতে ম্যান্ডেট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা এখন একটি ফ্র্যাকচারড পলিটিক্যাল সিচুয়েশন দেখছি। এখন ডান, বাম ও মধ্যপন্থী সব পক্ষের অংশগ্রহণে গণতান্ত্রিক সমাধান প্রয়োজন।’
অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ট্রেস-এর সিইও ফুয়াদ এম খালিদ হোসেন, বাংলাদেশ কটন ও কনফেকশনরি এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)-এর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম।
প্যানেল আলোচনায় সঞ্চালনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাব এনাম খান। এতে কূটনীতিক, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা ছিলেন।

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ
১৪ এপ্রিল ২০২৫
চার দিনের শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ পিএনএস সাইফ (PNS SAIF)। আজ শনিবার জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছালে কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলের পক্ষ থেকে চিফ স্টাফ অফিসার জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর সুসজ্জিত বাদকদল ঐতিহ্যবাহী রীতি অনুযায়ী
১ ঘণ্টা আগে
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করা সুদূরপ্রসারী চক্রান্তমূলক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অংশ। পাঠ্যক্রম থেকে চারুকলা, সংগীত, নৃত্যকলা, নাট্যকলাও বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। উদীচী মনে করে, এসব সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী, সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সংকীর্ণতাপ্রসূত
২ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আরও ১৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নতুন ঘোষণার ফলে মোট নিবন্ধিত দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার সংখ্যা ৮২-তে পৌঁছানোর পথে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চার দিনের শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ পিএনএস সাইফ (PNS SAIF)। আজ শনিবার জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছালে কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলের পক্ষ থেকে চিফ স্টাফ অফিসার জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর সুসজ্জিত বাদকদল ঐতিহ্যবাহী রীতি অনুযায়ী ব্যান্ড পরিবেশন করে।
জাহাজটিকে স্বাগত জানাতে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রতিনিধিসহ নৌবাহিনীর স্থানীয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বানৌজা স্বাধীনতা তাদের অভ্যর্থনা জানায়। বিকেলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অবস্থানকালে জাহাজটির অধিনায়ক ও অন্যান্য কর্মকর্তাসহ একটি প্রতিনিধিদল কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চল, কমান্ডার বিএন ফ্লিট, এরিয়া সুপারিনটেনডেন্ট ডকইয়ার্ডের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলে অবস্থানকালে জাহাজের অফিসার, নাবিক ও প্রশিক্ষণার্থীগণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান, নৌবাহিনী জাহাজ ও ঘাঁটি পরিদর্শন করবেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকেরা পাকিস্তানের জাহাজটি পরিদর্শন করবেন।
পাকিস্তান নৌবাহিনী জাহাজের এই বাংলাদেশ সফরের ফলে দুই দেশের মধ্যকার সৌহার্দ্যপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। শুভেচ্ছা সফর শেষে জাহাজটি ১২ নভেম্বর বাংলাদেশ ত্যাগ করবে।

চার দিনের শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ পিএনএস সাইফ (PNS SAIF)। আজ শনিবার জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছালে কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলের পক্ষ থেকে চিফ স্টাফ অফিসার জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর সুসজ্জিত বাদকদল ঐতিহ্যবাহী রীতি অনুযায়ী ব্যান্ড পরিবেশন করে।
জাহাজটিকে স্বাগত জানাতে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রতিনিধিসহ নৌবাহিনীর স্থানীয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমায় এসে পৌঁছালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বানৌজা স্বাধীনতা তাদের অভ্যর্থনা জানায়। বিকেলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অবস্থানকালে জাহাজটির অধিনায়ক ও অন্যান্য কর্মকর্তাসহ একটি প্রতিনিধিদল কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চল, কমান্ডার বিএন ফ্লিট, এরিয়া সুপারিনটেনডেন্ট ডকইয়ার্ডের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলে অবস্থানকালে জাহাজের অফিসার, নাবিক ও প্রশিক্ষণার্থীগণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান, নৌবাহিনী জাহাজ ও ঘাঁটি পরিদর্শন করবেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকেরা পাকিস্তানের জাহাজটি পরিদর্শন করবেন।
পাকিস্তান নৌবাহিনী জাহাজের এই বাংলাদেশ সফরের ফলে দুই দেশের মধ্যকার সৌহার্দ্যপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে। শুভেচ্ছা সফর শেষে জাহাজটি ১২ নভেম্বর বাংলাদেশ ত্যাগ করবে।

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ
১৪ এপ্রিল ২০২৫
রাজনৈতিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শক্ত ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। দলটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে জাতির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য ‘অস্তিত্বের হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
১ ঘণ্টা আগে
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করা সুদূরপ্রসারী চক্রান্তমূলক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অংশ। পাঠ্যক্রম থেকে চারুকলা, সংগীত, নৃত্যকলা, নাট্যকলাও বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। উদীচী মনে করে, এসব সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী, সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সংকীর্ণতাপ্রসূত
২ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আরও ১৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নতুন ঘোষণার ফলে মোট নিবন্ধিত দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার সংখ্যা ৮২-তে পৌঁছানোর পথে।
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিলের প্রতিবাদে দেশজুড়ে দুই সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ মিলনায়তনে আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করা সুদূরপ্রসারী চক্রান্তমূলক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অংশ। পাঠ্যক্রম থেকে চারুকলা, সংগীত, নৃত্যকলা, নাট্যকলাও বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। উদীচী মনে করে, এসব সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী, সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সংকীর্ণতাপ্রসূত।
সংবাদ সম্মেলনে অমিত রঞ্জন দে বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি ও জাতীয় শিক্ষাক্রমে শিশুর মানসিক ও মানবিক বিকাশে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীত শিক্ষা অপরিহার্য বলা হয়েছে। বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য টোল চতুষ্পাঠের গুরুকেন্দ্রিক শিক্ষা থেকে অদ্যাবধি প্রচলিত পাশ্চাত্য শিক্ষাধারা পর্যন্ত সব কালে এবং সরকারের সময় শারীরিক শিক্ষা পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত ছিল। জাতীয় শিক্ষানীতি সংগীত শিক্ষাকে শিক্ষার অপরিহার্য অনুষঙ্গ বিবেচনা করেছে। তাই এই দুই বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাহুল্য হতে পারে না।
তিনি বলেন, উদীচী বিশ্বাস করে, আর্থসামাজিক প্রেক্ষিত বাংলাদেশের প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হতাশা ও নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এখান থেকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষার উপায় সৃজনশীলতা, শারীরিক সক্ষমতা ও মানবিক হিসেবে গড়ে তোলা। এই মানবিক কাজটি করতে পারেন শারীরিক শিক্ষার শিক্ষকসহ শিল্পকলার শিক্ষকেরা। তাই তাঁরা প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় অপরিহার্য। উদীচী সরকারের অনধিকারচর্চাপ্রবণ এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জোর দাবি জানাচ্ছে। একই সঙ্গে অপরাপর সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিল্পীদের নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।
কর্মসূচি সম্পর্কে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক বলেন, আগামী দুই সপ্তাহ অপরাপর সমমনা প্রগতিশীল সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে নিয়ে উদীচীর সব জেলা ও শাখা সংসদের উদ্যোগে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ, মানববন্ধন, গানের মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান, গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন, বিশিষ্টজনদের বিবৃতি প্রদান ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উদীচীর নেতারা ছাড়াও সমমনা প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিলের প্রতিবাদে দেশজুড়ে দুই সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ মিলনায়তনে আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করা সুদূরপ্রসারী চক্রান্তমূলক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অংশ। পাঠ্যক্রম থেকে চারুকলা, সংগীত, নৃত্যকলা, নাট্যকলাও বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। উদীচী মনে করে, এসব সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী, সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সংকীর্ণতাপ্রসূত।
সংবাদ সম্মেলনে অমিত রঞ্জন দে বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি ও জাতীয় শিক্ষাক্রমে শিশুর মানসিক ও মানবিক বিকাশে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীত শিক্ষা অপরিহার্য বলা হয়েছে। বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য টোল চতুষ্পাঠের গুরুকেন্দ্রিক শিক্ষা থেকে অদ্যাবধি প্রচলিত পাশ্চাত্য শিক্ষাধারা পর্যন্ত সব কালে এবং সরকারের সময় শারীরিক শিক্ষা পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত ছিল। জাতীয় শিক্ষানীতি সংগীত শিক্ষাকে শিক্ষার অপরিহার্য অনুষঙ্গ বিবেচনা করেছে। তাই এই দুই বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাহুল্য হতে পারে না।
তিনি বলেন, উদীচী বিশ্বাস করে, আর্থসামাজিক প্রেক্ষিত বাংলাদেশের প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হতাশা ও নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এখান থেকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষার উপায় সৃজনশীলতা, শারীরিক সক্ষমতা ও মানবিক হিসেবে গড়ে তোলা। এই মানবিক কাজটি করতে পারেন শারীরিক শিক্ষার শিক্ষকসহ শিল্পকলার শিক্ষকেরা। তাই তাঁরা প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় অপরিহার্য। উদীচী সরকারের অনধিকারচর্চাপ্রবণ এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জোর দাবি জানাচ্ছে। একই সঙ্গে অপরাপর সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিল্পীদের নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।
কর্মসূচি সম্পর্কে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক বলেন, আগামী দুই সপ্তাহ অপরাপর সমমনা প্রগতিশীল সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে নিয়ে উদীচীর সব জেলা ও শাখা সংসদের উদ্যোগে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ, মানববন্ধন, গানের মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান, গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন, বিশিষ্টজনদের বিবৃতি প্রদান ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উদীচীর নেতারা ছাড়াও সমমনা প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ
১৪ এপ্রিল ২০২৫
রাজনৈতিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শক্ত ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। দলটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে জাতির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য ‘অস্তিত্বের হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
১ ঘণ্টা আগে
চার দিনের শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ পিএনএস সাইফ (PNS SAIF)। আজ শনিবার জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছালে কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলের পক্ষ থেকে চিফ স্টাফ অফিসার জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর সুসজ্জিত বাদকদল ঐতিহ্যবাহী রীতি অনুযায়ী
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আরও ১৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নতুন ঘোষণার ফলে মোট নিবন্ধিত দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার সংখ্যা ৮২-তে পৌঁছানোর পথে।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আরও ১৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নতুন ঘোষণার ফলে মোট নিবন্ধিত দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার সংখ্যা ৮২-তে পৌঁছানোর পথে।
আজ শনিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে এই ১৬টি সংস্থাকে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনযোগ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
এই ১৬টি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কারও কোনো দাবি, আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে তা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ (পনেরো) কার্যদিবসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিতভাবে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
যে ১৬টি বেসরকারি সংস্থাকে প্রাথমিকভাবে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, সেগুলো হলো:
এর আগে, গত ৬ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন প্রথম দফায় ৬৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। নতুন ১৬টি সংস্থাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হলে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মোট ৮২টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা কাজ করার সুযোগ পাবে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আরও ১৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নতুন ঘোষণার ফলে মোট নিবন্ধিত দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার সংখ্যা ৮২-তে পৌঁছানোর পথে।
আজ শনিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে এই ১৬টি সংস্থাকে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনযোগ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
এই ১৬টি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কারও কোনো দাবি, আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে তা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ (পনেরো) কার্যদিবসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিতভাবে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
যে ১৬টি বেসরকারি সংস্থাকে প্রাথমিকভাবে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, সেগুলো হলো:
এর আগে, গত ৬ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন প্রথম দফায় ৬৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। নতুন ১৬টি সংস্থাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হলে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মোট ৮২টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা কাজ করার সুযোগ পাবে।

দেশের মহাসড়কগুলোতে এখন আতঙ্কের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ তিন চাকার যান। এসব নিষিদ্ধ যানবাহন প্রায়ই দূরপাল্লার বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে। অনেক সড়কে উল্টো পথে চলছে বেপরোয়া গতিতে। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনের গতি কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। হাইওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ
১৪ এপ্রিল ২০২৫
রাজনৈতিক দলগুলোকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শক্ত ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। দলটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে জাতির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য ‘অস্তিত্বের হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
১ ঘণ্টা আগে
চার দিনের শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ পিএনএস সাইফ (PNS SAIF)। আজ শনিবার জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছালে কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ-অঞ্চলের পক্ষ থেকে চিফ স্টাফ অফিসার জাহাজের কর্মকর্তা ও নাবিকদের স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর সুসজ্জিত বাদকদল ঐতিহ্যবাহী রীতি অনুযায়ী
১ ঘণ্টা আগে
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করা সুদূরপ্রসারী চক্রান্তমূলক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অংশ। পাঠ্যক্রম থেকে চারুকলা, সংগীত, নৃত্যকলা, নাট্যকলাও বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। উদীচী মনে করে, এসব সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী, সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক সংকীর্ণতাপ্রসূত
২ ঘণ্টা আগে