Ajker Patrika

২৭% ভূমি হবে গাছে ছাওয়া

শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৭
২৭% ভূমি হবে গাছে ছাওয়া
ছবি: আজকের পত্রিকা

বনের ভেতরে ও বাইরে গাছের সংখ্যা বাড়িয়ে আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশে বৃক্ষাচ্ছাদিত (গাছপালা আছে এমন স্থান) ভূমির পরিমাণ ২৭ শতাংশে উন্নীতের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। অর্থাৎ, সরকারি বনভূমি, গ্রামীণ বনকুঞ্জসহ গাছে ঢাকা ভূমির পরিমাণ হবে দেশের মোট আয়তনের অন্তত ২৭ শতাংশ। সরকারি হিসাবে দেশের ২৪ শতাংশ এলাকা এখন বৃক্ষাচ্ছাদিত। তবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বন উজাড়সহ নানা কারণে বনভূমির একটি বিরাট অংশ বৃক্ষহীন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। কিন্তু এ দেশে বনভূমির পরিমাণ কমে আসা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন পরিবেশবিদ ও আন্দোলনকর্মীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্যের জন্য যে পরিমাণ বনভূমি থাকা দরকার, বাংলাদেশে তার চেয়ে অনেক কম বনভূমি রয়েছে। সে বনও প্রতিনিয়ত নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এমন প্রেক্ষাপটে ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে বৃক্ষাচ্ছাদনের পরিমাণ ২৭ শতাংশে উন্নীতের লক্ষ্যমাত্রা রেখে জাতীয় বননীতি, ২০২৫-এর খসড়া প্রকাশ করেছে সরকার।

নতুন জাতীয় বননীতি অনুমোদন হওয়ার পর বন অধিদপ্তরকে দেশে বৃক্ষাচ্ছাদনের পরিমাণ বর্তমান থেকে ৩ শতাংশ বাড়ানোর কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। এর আগে ২০১৬ সালের বননীতির খসড়ায় ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে বৃক্ষাচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ ২০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল। তবে সে খসড়াটি আর চূড়ান্ত করেনি সরকার।

নতুন বননীতি গৃহীত হলে বন অধিদপ্তর এই নীতির আলোকে পাঁচ বছরের কর্মপরিকল্পনা ও কৌশলপত্র প্রণয়ন করবে। এতে বন পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে।

বন অধিদপ্তরের উপপ্রধান বন সংরক্ষক (বন ব্যবস্থাপনা উইং) মো. মঈনুদ্দিন খান সম্প্রতি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নীতিমালার খসড়া করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সবার কাছ থেকে মতামত পাওয়ার পর আন্তমন্ত্রণালয় সভা

করে নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে। আমরা এখন পর্যন্ত ১৯৯৪ সালের বননীতি অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করছি।...আমরা আমাদের অবস্থার উন্নয়ন করতে যাচ্ছি। এখন দেশে বৃক্ষাচ্ছাদনের পরিমাণ ২৪ শতাংশের কিছুটা ওপরে আছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে একে আমরা ২৭ শতাংশে নিয়ে যাব।’

বৃক্ষাচ্ছাদন বাড়বে যেভাবে

নতুন বননীতি প্রণয়নের পর পাহাড়ি বন, শালবন, উপকূলীয় বন, বিদ্যমান ও ক্ষয়িষ্ণু বন, সব অবক্ষয়িত বনসহ দখল করা বনাঞ্চল পুনরুদ্ধার এবং সমৃদ্ধ করতে সময়ভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবে বন অধিদপ্তর। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রজাতির বৃক্ষ এবং সহায়তামূলক প্রাকৃতিক পুনর্জন্ম ও সমৃদ্ধকরণ বনায়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

নীতির খসড়ায় বলা হয়েছে, অন্যান্য বনভূমির পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলে ঘন ম্যানগ্রোভ ও জলবায়ুসহিষ্ণু সবুজ বেষ্টনী সম্প্রসারণ, তিন পার্বত্য জেলার অশ্রেণিভুক্ত রাষ্ট্রীয় বনাঞ্চলে বন অধিদপ্তরের নেতৃত্বে বনায়ন, চকরিয়া সুন্দরবন ও আটিয়া বনসহ অন্যান্য ক্ষয়িষ্ণু বনে গ্রামের বনের রূপরেখায় বন পুনরুদ্ধার, নগর বনায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, নদী, হ্রদ, হাওর ও অন্যান্য জলাভূমির জলবিভাজিকায় তীরবর্তী বনাঞ্চল ও জলাভূমি বন গড়ে তোলা, রাস্তা ও রেললাইনের পাশে বাঁধের ঢাল এবং সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিমালিকানাধীন ভূমিতে নির্ধারিত লক্ষ্যের বিপরীতে গাছ লাগানো হবে।

এর বাইরে অশ্রেণিভুক্ত রাষ্ট্রীয় বনাঞ্চলে বন বিভাগের নেতৃত্বে বনায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে বন অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করবে। এ ছাড়া চা-বাগানসহ দেশের সব পতিত ও প্রান্তিক ভূমিসহ বনায়ন উপযোগী অন্যান্য খালি জায়গায় বনায়ন বা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করা হবে।

নতুন বননীতি জারি হলে বজ্রপাতের মতো দুর্যোগ থেকে মৃত্যুরোধে সারা দেশে রাস্তার পাশে, হাওর এলাকায় বা নদীর তীরে তালগাছের মতো উঁচু বৃক্ষরোপণ করা হবে। এ ছাড়া সারা দেশে ভেষজ ও সুগন্ধি উদ্ভিদ রোপণ উৎসাহিত করা হবে। খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, নগর সবুজায়ন বাড়াতে সরকারকে স্থপতি, নগর-পরিকল্পনাবিদ, উদ্যানতত্ত্ববিদদের সম্পৃক্ত করে নগর এলাকার পতিত ভূমি, সড়ক বিভাজিকা ও সড়কের পাশে গাছ লাগানোর কার্যক্রম হাতে নিতে হবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নতুন বননীতির খসড়ায় যেসব পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তার অনেক কিছুই ২০১৬ সালের নীতির খসড়ায়ও ছিল। তবে সেই খসড়াটি নীতিতে পরিণত হয়নি। আবার এখন পর্যন্ত চলমান ১৯৯৪ সালের বননীতিতে যেসব বিষয় বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছিল, তার বেশির ভাগই বাস্তবায়িত হয়নি।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছাই আসল। সরকার চাইলে সহজে এগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে। সরকার আদৌ বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন চায় কি না, সেটি হচ্ছে মূল কথা।’

কেন নতুন বননীতি

আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য সনদ ও গ্লোবাল বায়োডাইভারসিটি ফ্রেমওয়ার্ক, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি), জীববৈচিত্র্য কৌশলপত্র ও কর্মপরিকল্পনা, প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তিসহ আন্তর্জাতিক বন, বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যবিষয়ক কনভেনশন এবং সমঝোতায় স্বাক্ষর ও অনুসমর্থন করেছে বাংলাদেশ। এসব কিছুতে থাকা দায়দায়িত্ব মানতে সহায়ক বিভিন্ন উদ্যোগের কথা থাকবে নতুন নীতিতে।

বন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, কাঠের চাহিদা ও শিল্পায়ন বেড়ে যাওয়া, দখল, অবৈধ বন নিধন ও নগরায়ণসহ বিভিন্ন কারণে বনভূমি কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ও পরিবেশ দূষণের কারণে বনজ সম্পদের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। বন্য প্রাণীর আবাসস্থল সংকুচিত হচ্ছে। বননির্ভর জনগোষ্ঠীর ওপরও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে‌। এসব সমস্যার সমাধান এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিপরীতে সুরক্ষা ঢাল তৈরিতে সারা দেশে গাছ রোপণের কোনো বিকল্প নেই।

একজন কর্মকর্তা বলেন, নতুন বননীতি জারি হলে বিদ্যমান বনের সম্পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কমাতে উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেষ্টনী সৃজনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং নতুন জেগে ওঠা চর, অশ্রেণিভুক্ত বন ও পতিত জমিতে বন সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া ‘কুনমিং-মন্ট্রিয়ল গ্লোবাল বায়োডাইভারসিটি ফ্রেমওয়ার্ক’ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পরিমাণ দেশের মোট ভূমির ৪ শতাংশে উন্নীত করা হবে।

বননীতির খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, বন সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে অংশগ্রহণমূলক উদ্যোগের রূপরেখা তৈরি করা হবে। জ্বালানি কাঠের চাহিদা মেটাতে বনের আশপাশের গ্রামে সুপরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। কাঠের বিকল্প সামগ্রী উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করা হবে। বনের ওপর চাপ কমাতে কাঠ আমদানি সহজ করা হবে।

খসড়ায় বন সংরক্ষণে যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন, ‘জিন ব্যাংক’ স্থাপনসহ বিভিন্নভাবে বিপদাপন্ন ও বিলুপ্ত উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি পুনঃপ্রবর্তন বা সংরক্ষণের উদ্যোগ, বিদেশি আগ্রাসী প্রজাতি সীমিতকরণ ও নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনাও রয়েছে। এ ছাড়া গ্রামীণ বন বিধিমালা প্রণয়ন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের গ্রামীণ বনসহ দেশের অন্য সফল অংশীদারত্বমূলক বনায়নের রূপরেখার আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে বননীতির খসড়ায় জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর এখন দেশের মাটিতে। আজ বৃহস্পতিবার ১১টায় ৫৪ মিনিটে তিনি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রথমেই তিনি বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জড়িয়ে ধরেন। পরে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তারেক রহমানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

এরপর তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কুশল-বিনিয়ম করেন। নিরাপত্তা ও বিভিন্ন ধরনের সহায়তার জন্য এ সময় তিনি সরকারপ্রধানের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কথোপকথনে তারেককে বলতে শোনা যায়, ‘জি জি...আমার জন্য আমার...জি জি...আপনার শরীর কেমন আছে?’

...

‘হ্যাঁ, দোয়া করবেন, দোয়া করবেন।’ ...

‘আমি আমার পক্ষ থেকে এবং আমার পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনি আপনার পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম আয়োজন করেছেন, বিশেষ করে আমার নিরাপত্তার জন্য। অ্যান্ড উই আর থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ...থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। সব রকম আয়োজনের জন্য।’

...

‘নিশ্চয়ই, নিশ্চয়ই। জি নিশ্চয়ই...ইনশাল্লাহ...ইনশাল্লাহ।’

ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তারেক রহমানের সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান।

এরপরই তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ফুলের মালা পরিয়ে জামাতাকে বরণ করেন নেন। নাতনি জাইমাকেও আদর করতে দেখা যায়। তারেক রহমান এ সময় তাঁর পাশে কিছু সময় বসে থাকেন। এরপর বেলা ১২টা ২০ মিনিটে তারেক রহমানে স্ত্রী ও তাঁর মেয়ে সাদা রঙের একটি জিপ গাড়িতে উঠে বসেন।

দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে তারেক রহমান বেলা ১২টা মিনিটে ৩২ মিনিটে লাল সবুজ রঙে একটি বুলেটপ্রুফ বাসে উঠেন। ২ মিনিট পরে বাসটি বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের ৩০০ ফিটের সংবর্ধনা মঞ্চের দিকে যেতে শুরু করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত